পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিষয়ে সেনা প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সবকিছুর সমাধান চাই। তবে কেউ মরণকামড় দিলে আমরাও প্রতিহত করবো, এটিই স্বাভাবিক। আজ রোববার দুপুরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান রিজিয়ন পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেনা প্রধান এ কথা বলেন।
সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলে সহিংস হয়ে উঠে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশন্যাল ফ্রন্ট( কেএনএফ)। কুকি চিনের আর্মিদের সন্ত্রাসী হামলায় কয়েকদিনে ৩ সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়। আহত হয় কর্মকর্তারা কয়েকজন। এছাড়া আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় কুকিচিনেরও কয়েকজন সদস্য মারা যায়। চাঁদাবাজি, অস্ত্র মহড়া, সাধারণ পাহাড়ীদের বাড়িঘরে হামলাসহ নানাভাবে পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিতিশীর পরিস্থিতি তৈরী করার অভিযোগ কুকি চিনের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে বান্দরবনে সেনা রিজিয়ন পরির্দশন করেছেন সেনা প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ।
সেনা প্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খুবই মানবিক। সারাবিশ্বে মানবিকতার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিখ্যাত। জাতিসংঘে অনেকদিন ধরে আমরা এক নম্বর শান্তিরক্ষাকারী দেশ। এটি অর্জনের পেছনে যতগুলো গুণাবলি আছে তার মধ্যে অন্যতম মানুষের প্রতি দরদ ও সহনশীলতা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি। এটি আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি। কেউ যদি দেশের ক্ষতি করে, দেশের জনগণের ক্ষতি করে, সেটি রোধ করতে গিয়ে যদি আমাদের শক্ত অবস্থানে যেতে হয়, অবশ্যই যাবো। কিন্তু তা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই সবকিছুর সমাধান চাই। কেউ মরণকামড় দিলে আমরাও প্রতিহত করবো, এটিই স্বাভাবিক।
জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ড বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পেশাল অপারেশন কন্ডাক্ট করছি। সন্ত্রাসীদের তৎপড়তা এত বেশি বেড়েছে যার ফলশ্রুতিতে আমাদের কিছু সেনাসদস্যকে হারিয়েছি, যা আমাদের চলমান অপারেশনকে থামাতে পারেনি। আমরা আমাদের অপারেশন কন্টিনিউ (চলমান) করছি, সরেজমিনে দেখতে এসেছি। যে সাহসিকতা নিয়ে আমাদের অফিসার ও সৈনিকরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তাতে আমি আশাবাদী। যে অভিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে আমরা এ অপারেশন করছি সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো।
সেনা প্রধান বলেন, আপনারা সবাই জানেন, এটি খুবই দুরূহ অঞ্চল। একটা পাহাড় দেখা যাচ্ছে কাছে, কিন্তু সেটিতে পৌঁছাতে সময় লাগবে কয়েক ঘণ্টা। হেঁটে হেঁটে গিয়ে আমরা সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাচ্ছি, তা দখল করেছি। তাদের মূল ঘাঁটি ও মূল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দখল করেছি। তারা এ এলাকায় এখন আর নেই। তাদের কিছু কিছু জনগণের সঙ্গে মিশে আছে। আপাতত আমরা সিচুয়েশন স্টাবিলাইজ করেছি। আরও কিছু এলাকা ক্লিয়ার করবো। সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিজিবি তারা ধীরে ধীরে তাদের দায়িত্বগুলো করতে থাকবে। সেনাবাহিনীর যে অভিযান তা প্রায় শেষ করে এনেছি। আশা করছি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে শেষ করতে পারবো।
পাহাড়ি জঙ্গলে শক্তিশালী বোমা আইইডি পুঁতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে সেনা প্রধান বলেন, আইইডি একটি নতুন মাত্রা। আইইডি মাটির ভেতর কোথায় পুঁতে রাখা হয়েছে এগুলো ডিটেক্ট (শনাক্ত) করা খুবই খুবই ডিফিকাল্ট (কঠিন)। খুব জঙ্গলাকীর্ণ রাতের অন্ধকারে বের করা আরও কঠিন। এ বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে চেষ্টা করছি আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে। আইইডি শনাক্তে প্রয়োজনে ডগ স্কোয়াডসহ অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করা হবে। আমি আশা রাখছি, ভবিষ্যতে আইইডিতে হতাহতের সংখ্যা কমে আসবে ইনশাআল্লাহ।এর মধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যদি আত্মসমর্পণ কিংবা আলোচনায় বসতে চায়, এ বিষয়ে পদক্ষেপ কী হবে- জানতে চাইলে সেনাপ্রধান বলেন, অবশ্যই, কেউ যদি আসতে চায় তাদের স্বাগত। শান্তিতে যা সমাধান হবে সেটা সহিংসতায় কেন যাবো?
এর আগে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান রিজিয়ন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি বান্দরবান রিজিয়ন সদর দপ্তরের সকল স্তরের সেনাসদস্যদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন। তিনি গত শনিবার বান্দরবানে গমন করেন এবং গতকাল পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ, জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম এরিয়া, বিজিবি মহাপরিচালক এবং ১০ পদাতিক ডিভিশন ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার, সেনাসদর ও ২৪ পদাতিক ডিভিশনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বান্দরবান রিজিয়ন সদর দপ্তরের সামরিক কর্মকর্তা; জেসিও এবং অন্যান্য পদবীর সেনা সদস্য ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধগণ উপস্থিত ছিলেন। সেনাবাহিনী প্রধানের এ সফর পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল স্তরের সেনা সদস্যদের মনোবল সুদৃঢ করবে এবং নতুন উদ্যমে দায়িত্ব পালনের অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে জানিয়েছে আই্এসপিআর।
রোববার, ০৪ জুন ২০২৩
পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিষয়ে সেনা প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সবকিছুর সমাধান চাই। তবে কেউ মরণকামড় দিলে আমরাও প্রতিহত করবো, এটিই স্বাভাবিক। আজ রোববার দুপুরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান রিজিয়ন পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেনা প্রধান এ কথা বলেন।
সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলে সহিংস হয়ে উঠে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশন্যাল ফ্রন্ট( কেএনএফ)। কুকি চিনের আর্মিদের সন্ত্রাসী হামলায় কয়েকদিনে ৩ সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়। আহত হয় কর্মকর্তারা কয়েকজন। এছাড়া আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় কুকিচিনেরও কয়েকজন সদস্য মারা যায়। চাঁদাবাজি, অস্ত্র মহড়া, সাধারণ পাহাড়ীদের বাড়িঘরে হামলাসহ নানাভাবে পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিতিশীর পরিস্থিতি তৈরী করার অভিযোগ কুকি চিনের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে বান্দরবনে সেনা রিজিয়ন পরির্দশন করেছেন সেনা প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ।
সেনা প্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খুবই মানবিক। সারাবিশ্বে মানবিকতার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিখ্যাত। জাতিসংঘে অনেকদিন ধরে আমরা এক নম্বর শান্তিরক্ষাকারী দেশ। এটি অর্জনের পেছনে যতগুলো গুণাবলি আছে তার মধ্যে অন্যতম মানুষের প্রতি দরদ ও সহনশীলতা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি। এটি আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি। কেউ যদি দেশের ক্ষতি করে, দেশের জনগণের ক্ষতি করে, সেটি রোধ করতে গিয়ে যদি আমাদের শক্ত অবস্থানে যেতে হয়, অবশ্যই যাবো। কিন্তু তা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই সবকিছুর সমাধান চাই। কেউ মরণকামড় দিলে আমরাও প্রতিহত করবো, এটিই স্বাভাবিক।
জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ড বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পেশাল অপারেশন কন্ডাক্ট করছি। সন্ত্রাসীদের তৎপড়তা এত বেশি বেড়েছে যার ফলশ্রুতিতে আমাদের কিছু সেনাসদস্যকে হারিয়েছি, যা আমাদের চলমান অপারেশনকে থামাতে পারেনি। আমরা আমাদের অপারেশন কন্টিনিউ (চলমান) করছি, সরেজমিনে দেখতে এসেছি। যে সাহসিকতা নিয়ে আমাদের অফিসার ও সৈনিকরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তাতে আমি আশাবাদী। যে অভিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে আমরা এ অপারেশন করছি সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো।
সেনা প্রধান বলেন, আপনারা সবাই জানেন, এটি খুবই দুরূহ অঞ্চল। একটা পাহাড় দেখা যাচ্ছে কাছে, কিন্তু সেটিতে পৌঁছাতে সময় লাগবে কয়েক ঘণ্টা। হেঁটে হেঁটে গিয়ে আমরা সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাচ্ছি, তা দখল করেছি। তাদের মূল ঘাঁটি ও মূল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দখল করেছি। তারা এ এলাকায় এখন আর নেই। তাদের কিছু কিছু জনগণের সঙ্গে মিশে আছে। আপাতত আমরা সিচুয়েশন স্টাবিলাইজ করেছি। আরও কিছু এলাকা ক্লিয়ার করবো। সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিজিবি তারা ধীরে ধীরে তাদের দায়িত্বগুলো করতে থাকবে। সেনাবাহিনীর যে অভিযান তা প্রায় শেষ করে এনেছি। আশা করছি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে শেষ করতে পারবো।
পাহাড়ি জঙ্গলে শক্তিশালী বোমা আইইডি পুঁতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে সেনা প্রধান বলেন, আইইডি একটি নতুন মাত্রা। আইইডি মাটির ভেতর কোথায় পুঁতে রাখা হয়েছে এগুলো ডিটেক্ট (শনাক্ত) করা খুবই খুবই ডিফিকাল্ট (কঠিন)। খুব জঙ্গলাকীর্ণ রাতের অন্ধকারে বের করা আরও কঠিন। এ বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে চেষ্টা করছি আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে। আইইডি শনাক্তে প্রয়োজনে ডগ স্কোয়াডসহ অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করা হবে। আমি আশা রাখছি, ভবিষ্যতে আইইডিতে হতাহতের সংখ্যা কমে আসবে ইনশাআল্লাহ।এর মধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যদি আত্মসমর্পণ কিংবা আলোচনায় বসতে চায়, এ বিষয়ে পদক্ষেপ কী হবে- জানতে চাইলে সেনাপ্রধান বলেন, অবশ্যই, কেউ যদি আসতে চায় তাদের স্বাগত। শান্তিতে যা সমাধান হবে সেটা সহিংসতায় কেন যাবো?
এর আগে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান রিজিয়ন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি বান্দরবান রিজিয়ন সদর দপ্তরের সকল স্তরের সেনাসদস্যদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন। তিনি গত শনিবার বান্দরবানে গমন করেন এবং গতকাল পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ, জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম এরিয়া, বিজিবি মহাপরিচালক এবং ১০ পদাতিক ডিভিশন ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার, সেনাসদর ও ২৪ পদাতিক ডিভিশনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বান্দরবান রিজিয়ন সদর দপ্তরের সামরিক কর্মকর্তা; জেসিও এবং অন্যান্য পদবীর সেনা সদস্য ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধগণ উপস্থিত ছিলেন। সেনাবাহিনী প্রধানের এ সফর পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল স্তরের সেনা সদস্যদের মনোবল সুদৃঢ করবে এবং নতুন উদ্যমে দায়িত্ব পালনের অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে জানিয়েছে আই্এসপিআর।