alt

জাতীয়

জ্বালাও-পোড়াও করলে আমেরিকার ভিসা পাবে না : প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজ আন্দোলন করবে, সংগ্রাম করবে। আর আমাদের উৎখাত করবে। একদিকে ভালো হয়েছে, সেটা হলো এখন যদি জ্বালাও-পোড়াও করে, অগ্নিসন্ত্রাস করে, মানুষ খুন করে তাহলে আমেরিকার ভিসা পাবে না।’

বুধবার (৭ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যাদের কথায় নাচে, তারাই খাবে। আমাদের কিছু করা লাগবে না। ওইটা নিয়ে আমাদের চিন্তার কিছু নাই।’

বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তারা কিছু লোক জোগাড় করবে, বসে থাকবে, আন্দোলন করবে। করতে দাও, করতে দেবেন। আমি বলে দিয়েছি যত আন্দোলন করতে চাইবে করুক। আমরা কিছু করব না।’

২০১৩, ১৪, ১৫ -এর মতো দলটি যাতে আগুন সন্ত্রাস করতে না পারে সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের চোখ, ক্যামেরা সবসময় ঠিক রাখতে হবে। কারণ ওদের আবার ওই দোষ আছে তো। একটা উস্কানি দিয়ে তারপর ছবি উঠিয়ে ওই বাইরের কাছে কানতে থাকবে।’

বিএনপি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করে কোথা থেকে এসে নাগারদোলা চাপিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কেউ দেবে না। দেয় না কখনো। ব্যবহার করে। ব্যবহার করবে, কিন্তু ক্ষমতা দেবে না। এটা হলো বাস্তবতা, বাস্তব কথা। ক্ষমতা একমাত্র জনগণই দিতে পারে। জনগণের সেই অধিকার, সচেতনতা আমরাই দিতে পেরেছি।’

এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে গিয়ে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।

ভোটের অধিকার কেড়ে নিলে মানুষ ছেড়ে দেয় না

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটের অধিকারের কথা বলে। খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করেছিল। কত ভোট পড়েছিল? ২-৩ শতাংশ ভোটও পড়ে নাই। কিন্তু ঘোষণা দেয়া হলো সব ভোট নিয়ে তিনি তৃতীয়বারের (দ্বিতীয়বার হবে) মতো প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার নিয়ে এখন সচেতন। সেই সচেতনতা আমরা সৃষ্টি করেছি। বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার কেউ যদি কেড়ে নেয়, মানুষ তাদের ছেড়ে দেয় না। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করেছিল বলেই এই দেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছিল, আন্দোলন করেছিল। এর ফলে ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। এই কথাটা সবার মনে রাখা উচিত।’

মিলিটারি ডিকটেটরের পকেট থেকে বের হওয়া দল থেকে গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ভোট চুরি ও ডাকাতি যারা করেছিল আজ তাদের মুখে ভোটের কথা শুনি, গণতন্ত্রের কথা শুনি। মিলিটারি ডিকটেটরের পকেট থেকে বের হওয়া দল থেকে গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘যারা আজ গণতন্ত্র হরণ করে, হত্যা, ক্যু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। তাদের পকেট থেকে তৈরি হওয়া দল আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে। নির্বাচনের কারচুপির কথা বলে। আরে কারচুপি না, তোরা তো ভোট ডাকাত। তোরা তো গণতন্ত্রই জানিস না। তোরা জানিস কারফিউ গণতন্ত্র। তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। এটাই বাঙালির দুর্ভাগ্য। যারা গণতন্ত্র আনল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনল। তাদের ওপর অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা। এটা কিছুই না। দেশের মানুষের উন্নয়ন তাদের পছন্দ না। বাঙালির হাড্ডিসার, কঙ্কালসার শরীর দেখিয়ে বিদেশ থেকে টাকা আনে। এটাই তারা করতে চায়।’

আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতা দখল করে নাই

এ সময় ২০০১ সালের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছিল দাবি করেন দলটির সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে সবসময় জয়ী হয়েছে। জনগণ ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগ কোনদিন পরাজিত হয় নাই। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোটেই এসেছে। তার বাইরে কখনো ক্ষমতা দখল করে নাই। আজ তারা বলে ভোটারবিহীন। কে ভোটারবিহীন? ভোটারবিহীন তো ছিল খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান। ভোটারবিহীন ছিল এরশাদ। এটা তারা ভুলে গেছে? তারা তো ভোটারবিহীন হিসেবেই ক্ষমতা দখল করেছে। খালেদা জিয়াকে উপযুক্ত জবাব দিয়ে দিয়েছে এই দেশের জনগণ।’

২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোটের কর্মকান্ডের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যে ?নির্বাচন (২০০৭ সালের বাতিল হওয়া নির্বাচন) ঘোষণা দিয়েছিল সেখানেও তাদের অনেকেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ ওই ভোট চুরি করা মানে নাই। আন্দোলন করেছে, সংগ্রাম করেছে, খালেদা জিয়ার পতন ঘটেছে। কাজেই দুই-দুইবার ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়ার পতন ঘটেছে। এই কথা দেশের মানুষকে মনে রাখতে হবে।’

বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে মনে হাসি পায়

এ সময় বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে মনে হাসি পায় বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ওরা আবার গণতন্ত্রের কথা কয়। গণতন্ত্রকে সুরক্ষা করেছে আওয়ামী লীগ। শুধু গণতন্ত্র না, জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষা করেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়ে এসেছে।’

বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের কারণে দেশে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা এসেছিল বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জরুরি অবস্থা এসে ভোটার তালিকা সংশোধন করেছে এটা ঠিক। আমাদের দাবিই ছিল এটা। স্বচ্ছ ব্যালট বক্স। এটাও আমাদের দাবি ছিল। নির্বাচন কমিশন যাতে নিরপেক্ষ হয় এর জন্য আমরা আইন করে দিয়েছি। তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচিত হচ্ছে, আমরা সরকার করছি না। তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও আমরা দিয়েছি। যাতে জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত থাকে। এই দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা যাতে থাকে তার ব্যবস্থা আওয়ামী লীগই করেছে। হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে আমরা সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করেছি।’

মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যেকটা দেশে

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পারলেও দুর্ভাগ্য একদিকে করোনা ভাইরাসের তিনটা বছর। সবকিছুর চলাচল বন্ধ। অর্থনীতির চালিকা স্থবির। উন্নত দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি, পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। এরপর আসলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তারপর নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় প্রতিটি দ্রব্যের দাম বেড়ে গেল। প্রতিটি জিনিসের দাম এমনভাবে বেড়ে গেছে সেটা কেনা, আনা, পরিবহন করা। আবার এ জাহাজে আসল কেন? সেটা আসতে দেবে না, ভিড়তে দেবে না। ওই জাহাজে আসল কেন সেটা ভিড়তে দেবে না। খালি দেশের ওপর না, জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বসে থাকল আমেরিকা। যার ফলে প্রত্যেকটা দেশে মুদ্রাস্ফীতি।’

কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারব এটা জেনেই বাজেট দিয়েছি

এ সময় বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের যারা জ্ঞানী-গুণী আছেন বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করে যাহারা-বুদ্ধিজীবী। অনেক পড়াশোনা জানে এটা ঠিক। অনেক কিতাব পড়ে। ওই কিতাবই পড়েছে। আমি বিদ্যুৎ দিয়েছি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে তারা বক্তৃতা করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। সেটার সুযোগ নেয়। প্রাইভেট টেলিভিশন আওয়ামী লীগ দিয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে টকশো করে বলে দেবে এই বাজেট আওয়ামী লীগ কোনদিনই বাস্তবায়ন করতে পারবে না।

লোডশেডিংয়ে মানুষের কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছি

এ সময় লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্টটা আমি উপলব্ধি করতে পারি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই দু’একদিনের মধ্যে ৫০০ মেগাওয়াট যুক্ত হবে। আর ১৫ দিন পর আর কষ্ট থাকবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে অস্বাভাবিক গরম পড়েছে। বাংলাদেশে ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা হবে তা আমরা ভাবতে পারি না। আর বৃষ্টি নাই। সেখানেও আরেকটা কষ্ট। এ কষ্টটা সবার হচ্ছে। তা আমরা জানি। তারপরও আমরা বার বার বসে এ কষ্টটা লাঘব করার চেষ্টা করছি।’

মজুদদাররা অপকর্ম না করলে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়েই হতো

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সীমিত আয়ের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কিছু লোক আছে সুযোগটা নেয়, মজুদ করে রাখে। পেঁয়াজ উৎপাদন যখন করেছি তখন দাম হু হু করে বেড়ে গেল। আমদানি করার কারণে এমনিই দাম কমে গেছে। মজুদদাররা অপকর্ম না করলে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়েই আমাদের হতো। আমারও জানি কখন কোন জবাবটা দিতে হয়, কখন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়।’

ছবি

‘গুম’ থেকে ফিরে আসাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি বৈঠকে আলোচনায়

লিবিয়ায় ‘মাফিয়াদের হাতে’ বিক্রি হওয়া দুই তরুণ দেশে ফিরেছেন

বেইমানির কারণেই ৭ বার ভেঙেছে জাতীয় পার্টি: শামীম

রিজার্ভ চুরির ঘটনা পর্যালোচনায় কমিটির সময় তিন মাস বাড়লো

যুবদল কর্মী হত্যায় সুব্রত বাইন ৭ দিনের রিমান্ডে

ছবি

সীমান্তে ‘পুশইন’: আইন ভেঙেও ভারত কেন এত নির্বিকার?

বৃহস্পতিবার এসএসসির ফল প্রকাশ হবে, জানা যাবে যেভাবে

ছবি

বেনাপোল স্থলবন্দরে টানা বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত কোটি টাকার মালামাল

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

রসিক-এ চাকরিচ্যুতদের ‘অসাধারণ ছুটি’ দেখিয়ে পুনঃনিয়োগের অভিযোগ!

ছবি

ফেনীতে বাঁধের ১৭ স্থানে ভাঙন, ৩০ গ্রাম প্লাবিত, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

ছবি

রাজধানীতে দিনভর বৃষ্টি, চরম দুর্ভোগ সাধারণ মানুষের

দুদকের শরীফকে চাকরি ফেরত দেয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি

ডেঙ্গুতে একদিনে আক্রান্ত আরও ৪০৬ জন, একজনের মৃত্যু

শেখ হাসিনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগেরও ‘বিচার হওয়া উচিত’: মির্জা ফখরুল

জুলাই-আগস্ট আন্দোলন: সারাদেশে ১৪শ’ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা, আইজিপিসহ গ্রেপ্তার ৬১ জন

নির্বাচন নিয়ে সংশয় কাটেনি, অগ্রগতি নেই ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায়ও

ছবি

শেখ হাসিনার ‘গুলির নির্দেশের’ অডিও, যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের ‘নির্বিচার গুলি’র ভিডিও যাচাই বিবিসির

যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক: ঝুঁকিতে বাংলাদেশের যেসব খাত

ছবি

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২, হাসপাতালে ভর্তি ছাড়াল ১৩ হাজার

পাঁচই আগস্টের ভয়াবহতা: গুলিতে ছিন্নভিন্ন যাত্রাবাড়ী, শেখ হাসিনার অডিও, বিবিসির প্রতিবেদন

ছবি

দুদক থেকে শরীফের চাকরিচ্যুতি অবৈধ, ৩০ দিনের মধ্যে পুনর্বহালের নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি

দেশে ফিরলেন লিবিয়ায় মাফিয়ার হাতে বিক্রি হওয়া দুই তরুণ

ছবি

চার বিভাগে অতি ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা, ঢাকাসহ নগরীতে জলাবদ্ধতার সতর্কতা

ছবি

নারীর প্রতি সহিংসতায় আশঙ্কাজনক চিত্র, সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান

ছবি

গত বছর ধর্ষণের ঘটনা ৫১৬টি, এ বছর ছয় মাসেই ৪৮১টি

ডিপজলের বিরুদ্ধে তরুণীর মামলা, মারধর-অ্যাসিড নিক্ষেপের অভিযোগ

শিবলী রুবাইয়াতের জমিসহ ১০ তলা ভবন জব্দের আদেশ

সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদারসহ ৪ জনের নামে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলা

শার্শায় গণধর্ষণ: ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১

টিকটকে পরিচয়, ইমোতে ব্ল্যাকমেইল, গ্রেপ্তার ১

আবারও যমুনা, সচিবালয় ও আশপাশের এলাকায় সমাবেশ নিষিদ্ধ

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোবারকের আপিল শুনানি বুধবার

ছবি

মায়ের বানানো লোহার খাঁচায় ৩ শিশু, ক্ষুধা নিবারণই লক্ষ্য

ছবি

নার্স সংকটে চমেক হাসপাতালের আইসিইউ, ঝুঁকিতে রোগীরা

tab

জাতীয়

জ্বালাও-পোড়াও করলে আমেরিকার ভিসা পাবে না : প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজ আন্দোলন করবে, সংগ্রাম করবে। আর আমাদের উৎখাত করবে। একদিকে ভালো হয়েছে, সেটা হলো এখন যদি জ্বালাও-পোড়াও করে, অগ্নিসন্ত্রাস করে, মানুষ খুন করে তাহলে আমেরিকার ভিসা পাবে না।’

বুধবার (৭ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যাদের কথায় নাচে, তারাই খাবে। আমাদের কিছু করা লাগবে না। ওইটা নিয়ে আমাদের চিন্তার কিছু নাই।’

বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তারা কিছু লোক জোগাড় করবে, বসে থাকবে, আন্দোলন করবে। করতে দাও, করতে দেবেন। আমি বলে দিয়েছি যত আন্দোলন করতে চাইবে করুক। আমরা কিছু করব না।’

২০১৩, ১৪, ১৫ -এর মতো দলটি যাতে আগুন সন্ত্রাস করতে না পারে সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের চোখ, ক্যামেরা সবসময় ঠিক রাখতে হবে। কারণ ওদের আবার ওই দোষ আছে তো। একটা উস্কানি দিয়ে তারপর ছবি উঠিয়ে ওই বাইরের কাছে কানতে থাকবে।’

বিএনপি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করে কোথা থেকে এসে নাগারদোলা চাপিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কেউ দেবে না। দেয় না কখনো। ব্যবহার করে। ব্যবহার করবে, কিন্তু ক্ষমতা দেবে না। এটা হলো বাস্তবতা, বাস্তব কথা। ক্ষমতা একমাত্র জনগণই দিতে পারে। জনগণের সেই অধিকার, সচেতনতা আমরাই দিতে পেরেছি।’

এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে গিয়ে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।

ভোটের অধিকার কেড়ে নিলে মানুষ ছেড়ে দেয় না

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটের অধিকারের কথা বলে। খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করেছিল। কত ভোট পড়েছিল? ২-৩ শতাংশ ভোটও পড়ে নাই। কিন্তু ঘোষণা দেয়া হলো সব ভোট নিয়ে তিনি তৃতীয়বারের (দ্বিতীয়বার হবে) মতো প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার নিয়ে এখন সচেতন। সেই সচেতনতা আমরা সৃষ্টি করেছি। বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার কেউ যদি কেড়ে নেয়, মানুষ তাদের ছেড়ে দেয় না। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করেছিল বলেই এই দেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছিল, আন্দোলন করেছিল। এর ফলে ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। এই কথাটা সবার মনে রাখা উচিত।’

মিলিটারি ডিকটেটরের পকেট থেকে বের হওয়া দল থেকে গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ভোট চুরি ও ডাকাতি যারা করেছিল আজ তাদের মুখে ভোটের কথা শুনি, গণতন্ত্রের কথা শুনি। মিলিটারি ডিকটেটরের পকেট থেকে বের হওয়া দল থেকে গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘যারা আজ গণতন্ত্র হরণ করে, হত্যা, ক্যু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। তাদের পকেট থেকে তৈরি হওয়া দল আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে। নির্বাচনের কারচুপির কথা বলে। আরে কারচুপি না, তোরা তো ভোট ডাকাত। তোরা তো গণতন্ত্রই জানিস না। তোরা জানিস কারফিউ গণতন্ত্র। তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। এটাই বাঙালির দুর্ভাগ্য। যারা গণতন্ত্র আনল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনল। তাদের ওপর অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা। এটা কিছুই না। দেশের মানুষের উন্নয়ন তাদের পছন্দ না। বাঙালির হাড্ডিসার, কঙ্কালসার শরীর দেখিয়ে বিদেশ থেকে টাকা আনে। এটাই তারা করতে চায়।’

আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতা দখল করে নাই

এ সময় ২০০১ সালের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছিল দাবি করেন দলটির সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে সবসময় জয়ী হয়েছে। জনগণ ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগ কোনদিন পরাজিত হয় নাই। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোটেই এসেছে। তার বাইরে কখনো ক্ষমতা দখল করে নাই। আজ তারা বলে ভোটারবিহীন। কে ভোটারবিহীন? ভোটারবিহীন তো ছিল খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান। ভোটারবিহীন ছিল এরশাদ। এটা তারা ভুলে গেছে? তারা তো ভোটারবিহীন হিসেবেই ক্ষমতা দখল করেছে। খালেদা জিয়াকে উপযুক্ত জবাব দিয়ে দিয়েছে এই দেশের জনগণ।’

২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোটের কর্মকান্ডের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যে ?নির্বাচন (২০০৭ সালের বাতিল হওয়া নির্বাচন) ঘোষণা দিয়েছিল সেখানেও তাদের অনেকেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ ওই ভোট চুরি করা মানে নাই। আন্দোলন করেছে, সংগ্রাম করেছে, খালেদা জিয়ার পতন ঘটেছে। কাজেই দুই-দুইবার ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়ার পতন ঘটেছে। এই কথা দেশের মানুষকে মনে রাখতে হবে।’

বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে মনে হাসি পায়

এ সময় বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে মনে হাসি পায় বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ওরা আবার গণতন্ত্রের কথা কয়। গণতন্ত্রকে সুরক্ষা করেছে আওয়ামী লীগ। শুধু গণতন্ত্র না, জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষা করেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়ে এসেছে।’

বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের কারণে দেশে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা এসেছিল বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জরুরি অবস্থা এসে ভোটার তালিকা সংশোধন করেছে এটা ঠিক। আমাদের দাবিই ছিল এটা। স্বচ্ছ ব্যালট বক্স। এটাও আমাদের দাবি ছিল। নির্বাচন কমিশন যাতে নিরপেক্ষ হয় এর জন্য আমরা আইন করে দিয়েছি। তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচিত হচ্ছে, আমরা সরকার করছি না। তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও আমরা দিয়েছি। যাতে জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত থাকে। এই দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা যাতে থাকে তার ব্যবস্থা আওয়ামী লীগই করেছে। হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে আমরা সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করেছি।’

মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যেকটা দেশে

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পারলেও দুর্ভাগ্য একদিকে করোনা ভাইরাসের তিনটা বছর। সবকিছুর চলাচল বন্ধ। অর্থনীতির চালিকা স্থবির। উন্নত দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি, পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। এরপর আসলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তারপর নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় প্রতিটি দ্রব্যের দাম বেড়ে গেল। প্রতিটি জিনিসের দাম এমনভাবে বেড়ে গেছে সেটা কেনা, আনা, পরিবহন করা। আবার এ জাহাজে আসল কেন? সেটা আসতে দেবে না, ভিড়তে দেবে না। ওই জাহাজে আসল কেন সেটা ভিড়তে দেবে না। খালি দেশের ওপর না, জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বসে থাকল আমেরিকা। যার ফলে প্রত্যেকটা দেশে মুদ্রাস্ফীতি।’

কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারব এটা জেনেই বাজেট দিয়েছি

এ সময় বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের যারা জ্ঞানী-গুণী আছেন বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করে যাহারা-বুদ্ধিজীবী। অনেক পড়াশোনা জানে এটা ঠিক। অনেক কিতাব পড়ে। ওই কিতাবই পড়েছে। আমি বিদ্যুৎ দিয়েছি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে তারা বক্তৃতা করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। সেটার সুযোগ নেয়। প্রাইভেট টেলিভিশন আওয়ামী লীগ দিয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে টকশো করে বলে দেবে এই বাজেট আওয়ামী লীগ কোনদিনই বাস্তবায়ন করতে পারবে না।

লোডশেডিংয়ে মানুষের কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছি

এ সময় লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্টটা আমি উপলব্ধি করতে পারি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই দু’একদিনের মধ্যে ৫০০ মেগাওয়াট যুক্ত হবে। আর ১৫ দিন পর আর কষ্ট থাকবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে অস্বাভাবিক গরম পড়েছে। বাংলাদেশে ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা হবে তা আমরা ভাবতে পারি না। আর বৃষ্টি নাই। সেখানেও আরেকটা কষ্ট। এ কষ্টটা সবার হচ্ছে। তা আমরা জানি। তারপরও আমরা বার বার বসে এ কষ্টটা লাঘব করার চেষ্টা করছি।’

মজুদদাররা অপকর্ম না করলে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়েই হতো

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সীমিত আয়ের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কিছু লোক আছে সুযোগটা নেয়, মজুদ করে রাখে। পেঁয়াজ উৎপাদন যখন করেছি তখন দাম হু হু করে বেড়ে গেল। আমদানি করার কারণে এমনিই দাম কমে গেছে। মজুদদাররা অপকর্ম না করলে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়েই আমাদের হতো। আমারও জানি কখন কোন জবাবটা দিতে হয়, কখন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়।’

back to top