alt

সেক্টর কমান্ডার সফিউল্লাহর শেষ বিদায়

বীরত্বপূর্ণ অবদান স্মরণে শোকাহত জাতি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহকে ঢাকা সেনানিবাসে শেষ বিদায় জানালেন তার রণাঙ্গনের সহকর্মী ও বর্তমান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। রোববার আর্মি কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয় বনানীর সামরিক কবরস্থানে।

জানাজায় অংশ নেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান।

মুক্তিযুদ্ধে সফিউল্লাহর অবদান:

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় কে এম সফিউল্লাহ ছিলেন ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। পরে ‘এস ফোর্স’ নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিগেডের নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসীম সাহসিকতার জন্য তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭১ সালের জয়দেবপুরের বিদ্রোহ তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

জানাজায় অংশ নিয়ে তার সহযোদ্ধা ও সাব সেক্টর কমান্ডার গোলাম হেলাল মোর্শেদ বলেন, “১৯ মার্চ জয়দেবপুরে পাকিস্তানিদের প্রতিরোধের ভূমিকার জন্য তিনি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যরা বিদ্রোহ করে, যা মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি রচনা করে।”

স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী গঠনে ভূমিকা:

স্বাধীনতার পর সফিউল্লাহ সেনাবাহিনীর প্রথম প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠনের প্রাথমিক কাঠামো তৈরি হয়। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, “সফিউল্লাহ শুধু মুক্তিযুদ্ধে নয়, স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী গঠনে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। এ জাতি আজীবন তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।”

ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক ভূমিকা:

১৯৩৪ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্ম নেওয়া কে এম সফিউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের পর কূটনীতিক হিসেবে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন ও ইংল্যান্ডে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তবে তার জীবনের একটি বিতর্কিত অধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে। ১৯৭৫ সালে সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। তার ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও সফিউল্লাহ দাবি করেছিলেন, সেসময়ে তার কাছে কোনো বিকল্প ছিল না।

শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধা ও শোক:

নবতিপর এই বীর মুক্তিযোদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। রোববার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার অবদানের কথা স্মরণ করে গোলাম হেলাল মোর্শেদ বলেন, “বাংলাদেশের জন্মযুদ্ধে তার নেতৃত্ব ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তার বীরত্ব ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।”

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় এই বীর সেনানায়ককে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছে পুরো জাতি।

ছবি

সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকীর মৃত্যু, প্রধান উপদেষ্টার শোক

ছবি

সিরাজগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় সাংবাদিক নিহত

ছবি

ঝালকাঠিতে বাসের ধাক্কায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিহত

ছবি

আণবিক বিজ্ঞানী রেজাউর রহমান আর নেই

ছবি

ম হামিদ ও ফাল্গুনী হামিদের ছেলে প্রান্তর জ্যোতির মৃত্যু

ছবি

ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের প্রয়াত সম্পাদকের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

ছবি

আদমদীঘির সাবেক এমপি কছিম উদ্দিন আহম্মেদের ইন্তেকাল

ছবি

বাগাতিপাড়ায় সাংবাদিকের মায়ের ইন্তেকাল

ছবি

তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসানের চিরবিদায়

ছবি

চলে গেলেন প্রবীণ সাংবাদিক সরওয়ার উদ্দিন আহমেদ

ছবি

বৃষ্টিতে ভিজে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন সর্বস্তরের মানুষ

ছবি

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহে ঢাবিতে শ্রদ্ধা, মিরপুরে দাফন আজ

ছবি

সাবেক নৌপ্রধান সরওয়ার জাহান নিজামের মৃত্যু

ছবি

সাবেক প্রধান শিক্ষক ইসহাক আলী আর নেই

ছবি

গণতন্ত্র ও স্থানীয় সরকারের অগ্রদূত তোফায়েল আহমেদ আর নেই

ছবি

আহমদ রফিককে অশ্রুজলে চিরবিদায়

ছবি

শনিবার শহীদ মিনারে ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে

ছবি

সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের জানাজায় মানুষের ঢল

ছবি

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্যামসন এইচ চৌধুরীকে স্মরণ করলো পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীরা

ছবি

ইমারত নির্মাণ শ্রমিক নেতা আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন

ছবি

স্কুবা ডাইভিং দুর্ঘটনায় ‘ইয়া আলী’র গায়ক জুবিনের ‘অকালমৃত্যু’, বিশ্বজুড়ে শোক

ছবি

ফরিদা পারভীন: অচিনের পথে শ্রদ্ধাস্নাত প্রস্থান

ছবি

লেখনিতে মাটি মানুষ আর শেকড়ের কথা তুলে আনতেন রুকুনউদ্দৌলাহ্

ছবি

সাংবাদিক কাজী খলিলুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা

ছবি

শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধায় বদরুদ্দীন উমরের শেষ বিদায়

বদরুদ্দীন উমরকে শেষ বিদায় ফুলেল শ্রদ্ধা ও স্মৃতিচারণে

ছবি

লেখক, গবেষক ও মার্কসবাদী তাত্ত্বিক বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেন

গণতন্ত্রী পার্টির নেতা মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বাবুর চেহলাম অনুষ্ঠিত

ছবি

মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী নিতাই চন্দ্র ঘোষের পরলোকগমন

ছবি

চান্দিনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মনিরুল ইসলামের মৃত্যু, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

ছবি

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: দগ্ধ শিক্ষক মাহফুজার মৃত্যু

ছবি

সাংবাদিক নিরুপম দাশগুপ্তের মা ছবি দাশগুপ্তা পরলোকে

ছবি

শনিবার বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী

ছবি

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরকুমার মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদুর রহমান বাবুর বিদায়

ছবি

মধুমিতা গ্রুপের সাবেক এমডি সালাহউদ্দিন ফারুকের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

ছবি

আজ মধুমিতা গ্রুপের সাবেক এমডি সালাহউদ্দিন ফারুকের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী

tab

সেক্টর কমান্ডার সফিউল্লাহর শেষ বিদায়

বীরত্বপূর্ণ অবদান স্মরণে শোকাহত জাতি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহকে ঢাকা সেনানিবাসে শেষ বিদায় জানালেন তার রণাঙ্গনের সহকর্মী ও বর্তমান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। রোববার আর্মি কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয় বনানীর সামরিক কবরস্থানে।

জানাজায় অংশ নেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান।

মুক্তিযুদ্ধে সফিউল্লাহর অবদান:

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় কে এম সফিউল্লাহ ছিলেন ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। পরে ‘এস ফোর্স’ নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিগেডের নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসীম সাহসিকতার জন্য তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭১ সালের জয়দেবপুরের বিদ্রোহ তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

জানাজায় অংশ নিয়ে তার সহযোদ্ধা ও সাব সেক্টর কমান্ডার গোলাম হেলাল মোর্শেদ বলেন, “১৯ মার্চ জয়দেবপুরে পাকিস্তানিদের প্রতিরোধের ভূমিকার জন্য তিনি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যরা বিদ্রোহ করে, যা মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি রচনা করে।”

স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী গঠনে ভূমিকা:

স্বাধীনতার পর সফিউল্লাহ সেনাবাহিনীর প্রথম প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠনের প্রাথমিক কাঠামো তৈরি হয়। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, “সফিউল্লাহ শুধু মুক্তিযুদ্ধে নয়, স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী গঠনে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। এ জাতি আজীবন তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।”

ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক ভূমিকা:

১৯৩৪ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্ম নেওয়া কে এম সফিউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের পর কূটনীতিক হিসেবে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন ও ইংল্যান্ডে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তবে তার জীবনের একটি বিতর্কিত অধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে। ১৯৭৫ সালে সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। তার ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও সফিউল্লাহ দাবি করেছিলেন, সেসময়ে তার কাছে কোনো বিকল্প ছিল না।

শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধা ও শোক:

নবতিপর এই বীর মুক্তিযোদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। রোববার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার অবদানের কথা স্মরণ করে গোলাম হেলাল মোর্শেদ বলেন, “বাংলাদেশের জন্মযুদ্ধে তার নেতৃত্ব ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তার বীরত্ব ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।”

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় এই বীর সেনানায়ককে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছে পুরো জাতি।

back to top