যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে শীর্ষ জামায়াত নেতাদের আইনজীবী দলের নেতৃত্ব দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন।
তার সহযোগী আইনজীবী, ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শিশির মনির জানান, “আমার সিনিয়র জনাব ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক স্যার ইবনে সিনা হাসপাতালে আজ বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন।”
৮১ বছর বয়সী ব্যারিস্টার রাজ্জাক ক্যান্সারে ভুগছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে গত ১৯ এপ্রিল তাকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের ডেপুটি ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি আইসিইউতে ছিলেন। তার ক্যান্সার ছিল, পাশাপাশি নিউমোনিয়া হয়। কিডনি রোগসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি।
শিশির মনির জানান, এশার নামাজের পর রাত সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে এবং সোমবার বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আব্দুর রাজ্জাকের জানাজা হবে।
লন্ডনে আইন পড়া রাজ্জাক ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে অ্যাডভোকেট হিসেবে এনরোলমেন্ট নেন। ওই সময় থেকেই তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
তবে আইনজীবী হিসেবে রাজ্জাকের নাম আলোচনায় আসে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হলে তাদের প্রধান আইনজীবী হিসেবে আদালতে দাঁড়ান রাজ্জাক।
আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির ৫ দিন পর ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা ছাড়েন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রাজ্জাক। ব্রিটিশ নাগরিকত্বধারী এই আইনজীবী ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেখান থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন দলের কাছে।
জামায়াত ছাড়ার কারণ হিসেবে সেখানে তিনি দুটি বিষয়ের কথা লেখেন—“জামায়াত ৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চায়নি এবং একবিংশ শতাব্দির বাস্তবতার আলোকে এবং অন্যান্য মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনকে বিবেচনায় এনে নিজেদের সংস্কার করতে পারেনি।”
এরপর ২০২১ সালের ৩ মে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আব্দুর রাজ্জাককে দলের প্রধান উপদেষ্টা করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে ‘ভিন্নমত পোষণ করা’ একদল নেতাকর্মী ২০১৯ সালে বেরিয়ে এসে প্রথমে ‘জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন মঞ্চ গঠন করেছিলেন। পরে তারাই ২০২০ সালের ২ মে এবি পার্টি নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
গণ অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ১৭ অগাস্ট এবি পার্টি থেকেও পদত্যাগ করেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক।
দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর তিনি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন এবং সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়মিত হন।
১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে আব্দুর রাজ্জাকের জন্ম। ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টারি ডিগ্রি পান।
১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৯০ সালে তিনি ‘দ্য ল’ কাউন্সেল’ নামে একটি ল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দুই ছেলেও পেশায় আইনজীবী।
রোববার, ০৪ মে ২০২৫
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে শীর্ষ জামায়াত নেতাদের আইনজীবী দলের নেতৃত্ব দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন।
তার সহযোগী আইনজীবী, ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শিশির মনির জানান, “আমার সিনিয়র জনাব ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক স্যার ইবনে সিনা হাসপাতালে আজ বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন।”
৮১ বছর বয়সী ব্যারিস্টার রাজ্জাক ক্যান্সারে ভুগছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে গত ১৯ এপ্রিল তাকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের ডেপুটি ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি আইসিইউতে ছিলেন। তার ক্যান্সার ছিল, পাশাপাশি নিউমোনিয়া হয়। কিডনি রোগসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি।
শিশির মনির জানান, এশার নামাজের পর রাত সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে এবং সোমবার বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আব্দুর রাজ্জাকের জানাজা হবে।
লন্ডনে আইন পড়া রাজ্জাক ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে অ্যাডভোকেট হিসেবে এনরোলমেন্ট নেন। ওই সময় থেকেই তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
তবে আইনজীবী হিসেবে রাজ্জাকের নাম আলোচনায় আসে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হলে তাদের প্রধান আইনজীবী হিসেবে আদালতে দাঁড়ান রাজ্জাক।
আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির ৫ দিন পর ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা ছাড়েন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রাজ্জাক। ব্রিটিশ নাগরিকত্বধারী এই আইনজীবী ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেখান থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন দলের কাছে।
জামায়াত ছাড়ার কারণ হিসেবে সেখানে তিনি দুটি বিষয়ের কথা লেখেন—“জামায়াত ৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চায়নি এবং একবিংশ শতাব্দির বাস্তবতার আলোকে এবং অন্যান্য মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনকে বিবেচনায় এনে নিজেদের সংস্কার করতে পারেনি।”
এরপর ২০২১ সালের ৩ মে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আব্দুর রাজ্জাককে দলের প্রধান উপদেষ্টা করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে ‘ভিন্নমত পোষণ করা’ একদল নেতাকর্মী ২০১৯ সালে বেরিয়ে এসে প্রথমে ‘জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন মঞ্চ গঠন করেছিলেন। পরে তারাই ২০২০ সালের ২ মে এবি পার্টি নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
গণ অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ১৭ অগাস্ট এবি পার্টি থেকেও পদত্যাগ করেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক।
দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর তিনি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন এবং সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়মিত হন।
১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে আব্দুর রাজ্জাকের জন্ম। ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টারি ডিগ্রি পান।
১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৯০ সালে তিনি ‘দ্য ল’ কাউন্সেল’ নামে একটি ল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দুই ছেলেও পেশায় আইনজীবী।