বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না।
তাকে ‘উন্নত চিকিৎসার’ জন্য ‘বিদেশ না পাঠালে বাঁচানো দুষ্কর’ হবে বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আর সেই জন্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এই সমাবেশ করে বিএনপি।
কাঁদতে কাঁদতে মির্জা ফখরুল বলেন, রোববার খালেদা জিয়াকে যেমনটি দেখেছেন, এমন অবস্থা আগে দেখেননি। প্রথমবারের মতো মনে হয়েছে, চেয়ারপারসন অনেক বেশি অসুস্থ।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন, আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না। অবিলম্বে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পারলে বাঁচানো দুষ্কর হবে।’
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্যথায় ম্যাডামের কিছু হলে তার সব দায়-দায়িত্ব আপনাদের (সরকারকে) নিতে হবে’, বলে হুঁশিয়ারিও দেন ফখরুল।
বিদেশে যেতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এ রকম বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এসব ছলচাতুরি করে কোন লাভ নেই। পরিবার থেকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। সেই চিঠিতে তার মুক্তির কথা বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল।’
‘আপনারা এখন বেমালুম চেপে গিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন। আমি বলবো, আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। গণতন্ত্রের মাতাকে মুক্তি দিয়ে এখন প্রমাণ করে যে, আপনারা গণতন্ত্রে কিছুটা হলেও বিশ্বাস করেন,’ বলেন ফখরুল।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার, ফুসফুস ও হৃদরোগ ভুগছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। গত ৯ আগস্ট অসুস্থ অবস্থায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেয় আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। দুর্নীতি মামলায় দন্ড পাওয়ার পর তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদন্ডের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছে হাইকোর্ট।
২৫ মাস কারাভোগের পর করোনার সময় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পান দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নিবেন। বিদেশে যেতে পারবেন না। তখন থেকে প্রতি ছয়মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার এই মুক্তির মেয়াদ আরও ছয়মাস বাড়ানো হয়েছে।
রোববারের সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এখন থেকে আন্দোলন “ডু ওর ডাই” (মরো, না হয় বাঁচো), এর মাঝামাঝিতে কোন ঠাঁই নাই।’ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মরতে হলে মরতে হবে, গুলি খেতে হয় খেতে হবে, এরপরও এ সরকারকে সরাতেই হবে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন। এমন মামলায় জামিন দেয়ার হাজারও উদাহরণ আছে। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান হলে খালেদা জিয়া কেন জামিন পাবেন না।
সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের তিন নেতা জামিন পেয়েছেন। আর খালেদা জিয়ার বেলায় বললেন মুক্তি দেবেন না। দেশের মানুষ এর বিচার করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনতে সাবেক আমলারা গোপনে সভা করেছেন উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সেখানে তারা বলেছেন, রক্তপাতের বিনিময়ে হলেও আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও গোপনে সভা করছেন দাবি করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘ওই সভায় তারা বলছেন খুনখারাবি করে হলেও বিএনপিকে প্রতিহত করতে হবে।’ গোপনে এসব সভা না করে প্রকাশ্যে এসব সভা করার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম সমাবেশে সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান প্রমুখ।
রোববার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না।
তাকে ‘উন্নত চিকিৎসার’ জন্য ‘বিদেশ না পাঠালে বাঁচানো দুষ্কর’ হবে বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আর সেই জন্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এই সমাবেশ করে বিএনপি।
কাঁদতে কাঁদতে মির্জা ফখরুল বলেন, রোববার খালেদা জিয়াকে যেমনটি দেখেছেন, এমন অবস্থা আগে দেখেননি। প্রথমবারের মতো মনে হয়েছে, চেয়ারপারসন অনেক বেশি অসুস্থ।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন, আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না। অবিলম্বে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পারলে বাঁচানো দুষ্কর হবে।’
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্যথায় ম্যাডামের কিছু হলে তার সব দায়-দায়িত্ব আপনাদের (সরকারকে) নিতে হবে’, বলে হুঁশিয়ারিও দেন ফখরুল।
বিদেশে যেতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এ রকম বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এসব ছলচাতুরি করে কোন লাভ নেই। পরিবার থেকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। সেই চিঠিতে তার মুক্তির কথা বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল।’
‘আপনারা এখন বেমালুম চেপে গিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন। আমি বলবো, আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। গণতন্ত্রের মাতাকে মুক্তি দিয়ে এখন প্রমাণ করে যে, আপনারা গণতন্ত্রে কিছুটা হলেও বিশ্বাস করেন,’ বলেন ফখরুল।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার, ফুসফুস ও হৃদরোগ ভুগছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। গত ৯ আগস্ট অসুস্থ অবস্থায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেয় আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। দুর্নীতি মামলায় দন্ড পাওয়ার পর তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদন্ডের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছে হাইকোর্ট।
২৫ মাস কারাভোগের পর করোনার সময় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পান দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নিবেন। বিদেশে যেতে পারবেন না। তখন থেকে প্রতি ছয়মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার এই মুক্তির মেয়াদ আরও ছয়মাস বাড়ানো হয়েছে।
রোববারের সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এখন থেকে আন্দোলন “ডু ওর ডাই” (মরো, না হয় বাঁচো), এর মাঝামাঝিতে কোন ঠাঁই নাই।’ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মরতে হলে মরতে হবে, গুলি খেতে হয় খেতে হবে, এরপরও এ সরকারকে সরাতেই হবে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন। এমন মামলায় জামিন দেয়ার হাজারও উদাহরণ আছে। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান হলে খালেদা জিয়া কেন জামিন পাবেন না।
সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের তিন নেতা জামিন পেয়েছেন। আর খালেদা জিয়ার বেলায় বললেন মুক্তি দেবেন না। দেশের মানুষ এর বিচার করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনতে সাবেক আমলারা গোপনে সভা করেছেন উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সেখানে তারা বলেছেন, রক্তপাতের বিনিময়ে হলেও আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও গোপনে সভা করছেন দাবি করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘ওই সভায় তারা বলছেন খুনখারাবি করে হলেও বিএনপিকে প্রতিহত করতে হবে।’ গোপনে এসব সভা না করে প্রকাশ্যে এসব সভা করার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম সমাবেশে সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান প্রমুখ।