alt

রাজনীতি

ইস্তফা দিয়েছেন ৬ টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩

সরকারের টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

সোমবার বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাদের অফিস করতে বাধা নেই।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে টেকেনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র কার্যকর করার পদ্ধতি আছে, সেই প্রক্রিয়াটা আমরা শুরু করেছি। প্রক্রিয়া সম্পন্নের পরে সেটা কার্যকর হবে।”

পদত্যাগপত্র কবে কার্যকর করা হবে, সেই প্রশ্নে মাহবুব বলেন, “ধরা বাধা কোনো আইন নেই যে এতদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রক্রিয়া আছে, অনুমোদন নিতে হবে। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে গেজেট হবে, পদ যখন খালি হবে তখন শূন্য পদ… মন্ত্রণালয় ভাগ করা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।”

পদত্যাগ করা তিন উপদেষ্টা ছাড়াও মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং সালমান ফজলুর রহমান বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাদের মধ্যে সালমান ফজলুর রহমান ছাড়া অন্যরা সংসদ সদস্য নন।

প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, “উনার নিয়োগ পুরোটাই অবৈতনিক। উনি তো কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে, তাদেরটা এখান থেকে (প্রক্রিয়া) হচ্ছে। যাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।”

মন্ত্রিসভা ছোট হবে কিনা এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর দিন সোমবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম অফিসে আসেননি। তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এদিন অফিস করেছেন, সই করেছেন চারটি ফাইলে।

মন্ত্রী পদের মেয়াদ সংক্রান্ত সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, মন্ত্রীর পদ শূন্য হবে যদি তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দেন। তবে সংসদ সদস্য না হয়েও যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে ‘বাধা নেই’ বলে সোমবার সচিবালয়ে মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন, “গত নির্বাচনের আগেও প্রধানমন্ত্রী টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এবারও সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। বলা হয়েছে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা নেই। আজকেও (সোমবার) আমি চারটি ফাইল সই করেছি। পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাব, গতবারও তাই করেছি।”

পদত্যাগপত্র দেওয়ার পরেও অফিস করার বিষয়ে জব্বার বলেন, “প্রথমত পদত্যাগপত্র যতদিন গৃহীত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তা কার্যকর হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালেও আমাদের ডেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলেছিলেন। তখন ৬ নভেম্বর আমি পদত্যাগপত্র জমা দিলে ডিসেম্বরের ৬-৭ তারিখে সেটি কার্যকর করা হয়েছিল। পদত্যাগপত্র যেদিন গৃহীত হবে, সেদিন থেকে আমার কাজ করার কিছু থাকবে না।

“আমাকে তো বলা হয়নি আপনি দায়িত্ব পালন করবেন না, তাহলে আমি কী কারণে দায়িত্ব পালন করব না? ২০১৮ সালে আমি জেনেছি, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়ে আসে।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমরা যখন (পদত্যাগপত্র) কার্যকর করব, তখন আর অফিস করতে পারবেন না।”

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার মন্ত্রী অফিসে আসেননি। তবে এই মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর মন্ত্রী আর অফিস করবেন না বলে তাদেরকে জানিয়েছেন।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব আবদুল আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিমন্ত্রী সোমবার অফিস করেননি। এরপর আর অফিসে আসবেন কিনা, তা আমাদের বলেননি।”

সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে কিছু বলা নেই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হয় এবং তারা পদত্যাগপত্র জমাও দেন। বাকি মন্ত্রীরা সবাই রুটিন কাজ করে গেছেন।

সেসময় যেসব মন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন, তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয় এক মাস পর, অর্থাৎ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর ঠিক আগের দিন।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরোনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়।

গত ৩১ অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা করা হয়েছিল, এবারও একই রকম পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ও প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।

ছবি

কিশোর হত্যা: সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান কারাগারে

ছবি

কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হবে : ফয়জুল করিম

ছবি

‘যুবলীগ-শ্রমিক লীগই’ পরিবহনে বোমা মেরে বিরোধীদের মামলা দিত

ছবি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ আজ

ছবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি ভারতের শ্রদ্ধা প্রয়োজন: রুহুল কবির রিজভী

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত যথাযথ ও সময়োপযোগী: মির্জা ফখরুল

ছবি

আশুলিয়ায় বিএনপি’র শ্রমিক সমাবেশে হট্টগোল,আহত-৫

ছবি

এক ফ্যাসিবাদ গেলেও আরেক ফ্যাসিবাদ তৈরি করা হচ্ছে - শিবচরে নুরুল হক নূর

নারায়ণগঞ্জে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিবকে দলীয় কর্মীদের মারধর

ছবি

সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও স্বামী–সন্তানের ব্যাংকের তথ্য তলব

ছবি

বিএনপির আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ

ছবি

নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ: পদত্যাগের সম্ভাবনা

ছবি

মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত ও সংবিধানের ওপর আঘাতকারীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান সিপিবির

ছবি

বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ফখর উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ

ছবি

বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলেন তারেক রহমান

একে একে নিবন্ধন পাচ্ছে আগে বাতিল দলগুলো

ছবি

বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার কাছে ব্যাখ্যা তলব

ছবি

ইসির নিবন্ধন পেল নাগরিক ঐক্য

ছবি

ইসিতে নিবন্ধন পেল গণ অধিকার পরিষদ

ছবি

ফের ৩ দিনের রিমান্ডে গোলাপ

ছবি

এস আলম গ্রুপের গাড়িতে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন, নিলেন সংবর্ধনা

ছবি

বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথ

ছবি

নতুন স্বাধীনতা অর্জনে ১৫ বছর সংগ্রাম করেছে বিএনপি : মির্জা ফখরুল

ছবি

নগদ টাকা উত্তোলনের সীমা বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা

‘যৌক্তিক সময়ের’ মধ্যে নির্বাচন দাবি বেশিরভাগ দলের

ছবি

সংলাপে একাধিক দাবি, কিন্তু নির্বাচনের সময় নিয়ে আলোচনা হয়নি

ছবি

বিএনপির নামে কেউ চাঁদাবাজি করলে তাকে পুলিশে দিন: মির্জা ফখরুল

ছবি

ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পেলে স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর আঘাত করবে : ফখরুল

ছবি

ভোট ছাড়া দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা অসম্ভব : দুদু

ছবি

গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা

ছবি

টাকা দিয়ে ভোট কিনে ক্ষমতায় আসা দুর্ভাগ্য

ছবি

বিএনপিতে দুষ্কৃতকারীর স্থান নেই: তারেক রহমান

ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগী মন্ত্রীদের শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে: ফখরুল

tab

রাজনীতি

ইস্তফা দিয়েছেন ৬ টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩

সরকারের টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

সোমবার বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাদের অফিস করতে বাধা নেই।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে টেকেনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র কার্যকর করার পদ্ধতি আছে, সেই প্রক্রিয়াটা আমরা শুরু করেছি। প্রক্রিয়া সম্পন্নের পরে সেটা কার্যকর হবে।”

পদত্যাগপত্র কবে কার্যকর করা হবে, সেই প্রশ্নে মাহবুব বলেন, “ধরা বাধা কোনো আইন নেই যে এতদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রক্রিয়া আছে, অনুমোদন নিতে হবে। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে গেজেট হবে, পদ যখন খালি হবে তখন শূন্য পদ… মন্ত্রণালয় ভাগ করা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।”

পদত্যাগ করা তিন উপদেষ্টা ছাড়াও মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং সালমান ফজলুর রহমান বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাদের মধ্যে সালমান ফজলুর রহমান ছাড়া অন্যরা সংসদ সদস্য নন।

প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, “উনার নিয়োগ পুরোটাই অবৈতনিক। উনি তো কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে, তাদেরটা এখান থেকে (প্রক্রিয়া) হচ্ছে। যাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।”

মন্ত্রিসভা ছোট হবে কিনা এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর দিন সোমবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম অফিসে আসেননি। তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এদিন অফিস করেছেন, সই করেছেন চারটি ফাইলে।

মন্ত্রী পদের মেয়াদ সংক্রান্ত সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, মন্ত্রীর পদ শূন্য হবে যদি তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দেন। তবে সংসদ সদস্য না হয়েও যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে ‘বাধা নেই’ বলে সোমবার সচিবালয়ে মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন, “গত নির্বাচনের আগেও প্রধানমন্ত্রী টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এবারও সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। বলা হয়েছে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা নেই। আজকেও (সোমবার) আমি চারটি ফাইল সই করেছি। পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাব, গতবারও তাই করেছি।”

পদত্যাগপত্র দেওয়ার পরেও অফিস করার বিষয়ে জব্বার বলেন, “প্রথমত পদত্যাগপত্র যতদিন গৃহীত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তা কার্যকর হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালেও আমাদের ডেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলেছিলেন। তখন ৬ নভেম্বর আমি পদত্যাগপত্র জমা দিলে ডিসেম্বরের ৬-৭ তারিখে সেটি কার্যকর করা হয়েছিল। পদত্যাগপত্র যেদিন গৃহীত হবে, সেদিন থেকে আমার কাজ করার কিছু থাকবে না।

“আমাকে তো বলা হয়নি আপনি দায়িত্ব পালন করবেন না, তাহলে আমি কী কারণে দায়িত্ব পালন করব না? ২০১৮ সালে আমি জেনেছি, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়ে আসে।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমরা যখন (পদত্যাগপত্র) কার্যকর করব, তখন আর অফিস করতে পারবেন না।”

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার মন্ত্রী অফিসে আসেননি। তবে এই মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর মন্ত্রী আর অফিস করবেন না বলে তাদেরকে জানিয়েছেন।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব আবদুল আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিমন্ত্রী সোমবার অফিস করেননি। এরপর আর অফিসে আসবেন কিনা, তা আমাদের বলেননি।”

সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে কিছু বলা নেই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হয় এবং তারা পদত্যাগপত্র জমাও দেন। বাকি মন্ত্রীরা সবাই রুটিন কাজ করে গেছেন।

সেসময় যেসব মন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন, তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয় এক মাস পর, অর্থাৎ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর ঠিক আগের দিন।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরোনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়।

গত ৩১ অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা করা হয়েছিল, এবারও একই রকম পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ও প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।

back to top