alt

রাজনীতি

ইস্তফা দিয়েছেন ৬ টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩

সরকারের টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

সোমবার বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাদের অফিস করতে বাধা নেই।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে টেকেনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র কার্যকর করার পদ্ধতি আছে, সেই প্রক্রিয়াটা আমরা শুরু করেছি। প্রক্রিয়া সম্পন্নের পরে সেটা কার্যকর হবে।”

পদত্যাগপত্র কবে কার্যকর করা হবে, সেই প্রশ্নে মাহবুব বলেন, “ধরা বাধা কোনো আইন নেই যে এতদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রক্রিয়া আছে, অনুমোদন নিতে হবে। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে গেজেট হবে, পদ যখন খালি হবে তখন শূন্য পদ… মন্ত্রণালয় ভাগ করা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।”

পদত্যাগ করা তিন উপদেষ্টা ছাড়াও মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং সালমান ফজলুর রহমান বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাদের মধ্যে সালমান ফজলুর রহমান ছাড়া অন্যরা সংসদ সদস্য নন।

প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, “উনার নিয়োগ পুরোটাই অবৈতনিক। উনি তো কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে, তাদেরটা এখান থেকে (প্রক্রিয়া) হচ্ছে। যাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।”

মন্ত্রিসভা ছোট হবে কিনা এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর দিন সোমবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম অফিসে আসেননি। তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এদিন অফিস করেছেন, সই করেছেন চারটি ফাইলে।

মন্ত্রী পদের মেয়াদ সংক্রান্ত সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, মন্ত্রীর পদ শূন্য হবে যদি তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দেন। তবে সংসদ সদস্য না হয়েও যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে ‘বাধা নেই’ বলে সোমবার সচিবালয়ে মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন, “গত নির্বাচনের আগেও প্রধানমন্ত্রী টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এবারও সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। বলা হয়েছে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা নেই। আজকেও (সোমবার) আমি চারটি ফাইল সই করেছি। পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাব, গতবারও তাই করেছি।”

পদত্যাগপত্র দেওয়ার পরেও অফিস করার বিষয়ে জব্বার বলেন, “প্রথমত পদত্যাগপত্র যতদিন গৃহীত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তা কার্যকর হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালেও আমাদের ডেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলেছিলেন। তখন ৬ নভেম্বর আমি পদত্যাগপত্র জমা দিলে ডিসেম্বরের ৬-৭ তারিখে সেটি কার্যকর করা হয়েছিল। পদত্যাগপত্র যেদিন গৃহীত হবে, সেদিন থেকে আমার কাজ করার কিছু থাকবে না।

“আমাকে তো বলা হয়নি আপনি দায়িত্ব পালন করবেন না, তাহলে আমি কী কারণে দায়িত্ব পালন করব না? ২০১৮ সালে আমি জেনেছি, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়ে আসে।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমরা যখন (পদত্যাগপত্র) কার্যকর করব, তখন আর অফিস করতে পারবেন না।”

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার মন্ত্রী অফিসে আসেননি। তবে এই মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর মন্ত্রী আর অফিস করবেন না বলে তাদেরকে জানিয়েছেন।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব আবদুল আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিমন্ত্রী সোমবার অফিস করেননি। এরপর আর অফিসে আসবেন কিনা, তা আমাদের বলেননি।”

সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে কিছু বলা নেই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হয় এবং তারা পদত্যাগপত্র জমাও দেন। বাকি মন্ত্রীরা সবাই রুটিন কাজ করে গেছেন।

সেসময় যেসব মন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন, তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয় এক মাস পর, অর্থাৎ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর ঠিক আগের দিন।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরোনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়।

গত ৩১ অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা করা হয়েছিল, এবারও একই রকম পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ও প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।

ছবি

মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর বিএনপি কর্মীদের হামলা চেষ্টা, গাড়ি ভাঙচুর

ছবি

ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মশাল মিছিল

ছবি

‘৯ লাখের শেয়ার লেনদেন, দিয়েছেন ২৫ হাজার’ — খাগড়াছড়িতে এনসিপি নেত্রীকে অভিযুক্ত করলেন সহকর্মী

ছবি

‘গণতান্ত্রিক অধিকারের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি’ — সজাগ থাকার আহ্বান তারেকের

ছবি

‘অন্তর্বর্তী সরকার অন্যায়কারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে কি না?’ – প্রশ্ন তারেক রহমানের

ছবি

সহিংসতা বন্ধ না করলে আওয়ামী লীগের পরিণতি ভোগ করবে বিএনপি’ — হুঁশিয়ারি যুবশক্তির

ছবি

পরিকল্পিত প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তায় দেশে অরাজকতা, নির্বাচন বিলম্বের সুযোগ তৈরি করছে : যুবদল সভাপতি

ছবি

সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বিএনপির কড়া প্রতিক্রিয়া, জড়িতদের শাস্তির দাবি

ছবি

‘নৃশংসতার রাজনীতি চলতে পারে না’ — সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে দুই দলের বিবৃতি

ছবি

জাতিসংঘ কার্যালয়কে ‘সার্বভৌমত্বের হুমকি’ আখ্যা দিয়ে তিন দাবি হেফাজতে ইসলামের

ছবি

সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বললেন জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল

ছবি

“পাগলও বোঝে কারা ক্ষমতায় যাবে,” প্রতিবাদ সভায় দুদু

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক, জরুরি অবস্থা ও বিচারপতি নিয়োগে আংশিক ঐকমত্য,আলোচনা চল‌বে : আলী রীয়াজ

ছবি

বিএনপি চায় না ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সংবিধানের মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত হোক: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

তরুণ ভোটার, সীমানা, পোস্টাল ব্যালট ও আইন সংশোধনে নানা প্রস্তাব ইসির

ছবি

“বিএনপি কি পাঁচ নম্বর দল?” ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যাচ্ছিলেন সালাহউদ্দিন, অনুরোধে ফিরে আসেন

অনলাইন নিবন্ধনে প্রবাসীদের ভোট, সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে আর ইভিএম নয়

ছবি

ছাত্রদলের অভিযোগ অস্বীকার, সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের

ছবি

শেখ হাসিনার গুলির নির্দেশের অডিও নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনকে একপেশে বললেন জয়

ছবি

বড়লেখায় জামায়াত নেতার ‘পাকিস্তান খ্যাত’ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ছাত্রদল, আইনগত ব্যবস্থার দাবি

ছবি

আইনশৃঙ্খলা থেকে পর্যবেক্ষক পর্যন্ত দায়িত্বে চার নির্বাচন কমিশনার

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের ভূমিকা চায় গণসংহতি আন্দোলন

ছবি

শাপলা না হলে ধানের শীষও প্রতীক হতে পারবে না: সারজিস

ছবি

‘শাপলা’ প্রতীক পাচ্ছে না এনসিপি, নীতিগত সিদ্ধান্ত

ছবি

সীমান্ত হত্যা মেনে নেওয়া হবে না, প্রতিবাদে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা চুয়াডাঙ্গায়

ছবি

মঙ্গলের জন্য দেশকে দ্রুত নির্বাচনের ট্র্যাকে তুলতে হবে: বিএনপি মহাসচিব

ছবি

মেহেরপুরে পদযাত্রায় জনগণকেই ক্ষমতার উৎস বললেন হাসনাত আবদুল্লাহ

ছবি

কাঠগড়ায় অঝোরে কাঁদলেন পলক, দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখালো আদালত

ছবি

শফিকুরের নেতৃত্বে চীন সফরে যাচ্ছেন জামায়াতের নেতারা

ছবি

‘মাননীয়’ শব্দ থেকে অটোক্রেসির জন্ম হয়: মির্জা ফখরুল

ভিন্ন মত নিয়েই সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

ফেসবুক পোস্টে বসুন্ধরা ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝাড়লেন হাসনাত আবদুল্লাহ

ছবি

জি এম কাদেরের সিদ্ধান্ত মানেন না আনিসুল, হাওলাদার ও মুজিবুল হক

ছবি

‘সার্টিফিকেট’ দেওয়া পর্যবেক্ষক আর নয়, এআই রোধে কানাডার অভিজ্ঞতা চায় ইসি

সাংগঠনিক দায়িত্বে অবহেলায় ছাত্রদল থেকে অব্যাহতি ১২ নেতার

ছবি

নির্বাচনের সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগ পেতে পারে ১৫% ভোট : সানেম জরিপ

tab

রাজনীতি

ইস্তফা দিয়েছেন ৬ টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩

সরকারের টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

সোমবার বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাদের অফিস করতে বাধা নেই।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে টেকেনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র কার্যকর করার পদ্ধতি আছে, সেই প্রক্রিয়াটা আমরা শুরু করেছি। প্রক্রিয়া সম্পন্নের পরে সেটা কার্যকর হবে।”

পদত্যাগপত্র কবে কার্যকর করা হবে, সেই প্রশ্নে মাহবুব বলেন, “ধরা বাধা কোনো আইন নেই যে এতদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রক্রিয়া আছে, অনুমোদন নিতে হবে। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে গেজেট হবে, পদ যখন খালি হবে তখন শূন্য পদ… মন্ত্রণালয় ভাগ করা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।”

পদত্যাগ করা তিন উপদেষ্টা ছাড়াও মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং সালমান ফজলুর রহমান বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাদের মধ্যে সালমান ফজলুর রহমান ছাড়া অন্যরা সংসদ সদস্য নন।

প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, “উনার নিয়োগ পুরোটাই অবৈতনিক। উনি তো কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে, তাদেরটা এখান থেকে (প্রক্রিয়া) হচ্ছে। যাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।”

মন্ত্রিসভা ছোট হবে কিনা এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর দিন সোমবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম অফিসে আসেননি। তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এদিন অফিস করেছেন, সই করেছেন চারটি ফাইলে।

মন্ত্রী পদের মেয়াদ সংক্রান্ত সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, মন্ত্রীর পদ শূন্য হবে যদি তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দেন। তবে সংসদ সদস্য না হয়েও যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে ‘বাধা নেই’ বলে সোমবার সচিবালয়ে মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন, “গত নির্বাচনের আগেও প্রধানমন্ত্রী টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এবারও সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। বলা হয়েছে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা নেই। আজকেও (সোমবার) আমি চারটি ফাইল সই করেছি। পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাব, গতবারও তাই করেছি।”

পদত্যাগপত্র দেওয়ার পরেও অফিস করার বিষয়ে জব্বার বলেন, “প্রথমত পদত্যাগপত্র যতদিন গৃহীত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তা কার্যকর হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালেও আমাদের ডেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলেছিলেন। তখন ৬ নভেম্বর আমি পদত্যাগপত্র জমা দিলে ডিসেম্বরের ৬-৭ তারিখে সেটি কার্যকর করা হয়েছিল। পদত্যাগপত্র যেদিন গৃহীত হবে, সেদিন থেকে আমার কাজ করার কিছু থাকবে না।

“আমাকে তো বলা হয়নি আপনি দায়িত্ব পালন করবেন না, তাহলে আমি কী কারণে দায়িত্ব পালন করব না? ২০১৮ সালে আমি জেনেছি, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়ে আসে।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমরা যখন (পদত্যাগপত্র) কার্যকর করব, তখন আর অফিস করতে পারবেন না।”

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার মন্ত্রী অফিসে আসেননি। তবে এই মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর মন্ত্রী আর অফিস করবেন না বলে তাদেরকে জানিয়েছেন।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব আবদুল আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিমন্ত্রী সোমবার অফিস করেননি। এরপর আর অফিসে আসবেন কিনা, তা আমাদের বলেননি।”

সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে কিছু বলা নেই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হয় এবং তারা পদত্যাগপত্র জমাও দেন। বাকি মন্ত্রীরা সবাই রুটিন কাজ করে গেছেন।

সেসময় যেসব মন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন, তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয় এক মাস পর, অর্থাৎ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর ঠিক আগের দিন।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরোনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়।

গত ৩১ অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা করা হয়েছিল, এবারও একই রকম পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ও প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।

back to top