alt

রাজনীতি

কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়, যা খুবই অমানবিক : প্রধানমন্ত্রী

বাসস : মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন, পাশে তিন বাহিনী প্রধান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের কথা ভাবছে, যা খুবই অমানবিক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা জনগণকে হত্যা করে লাশের ওপরে পাড়া দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করে তাদের মতো অমানবিকতা আমি আর কোথাও দেখি না।’

প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন। তিনি বলেন, জনগণের জন্য যদি কাজ করতে হয় তাহলে জনগণকে হত্যা করে লাশের ওপরে পাড়া দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার যারা চিন্তা করে তাদের মতো অমানবিকতা আমি আর কোথাও দেখি না। এটা আমাদের কাছে ভাবতেও অবাক লাগে। কাজেই আমরা শান্তি চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যখন একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, একটু আশার আলো দেখছিল এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে এই অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ মানুষের জীবনটাকে আবার ব্যাহত করছে। একটা শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে কষ্টের বিষয়।

যারা এই ধ্বংসাত্মক কাজ করছে তাদের বোধোদয় হবে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ না করে গণতান্ত্রিক ধারায় যোগ দিক, জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখুক।

তার সরকার একটার পর একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ আমরা যেভাবে মোকাবিলা করলাম এরপরে অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঝামেলা মাঝে মাঝে শুরু হয়- সাধারণ মানুষকে কেন পুড়িয়ে মারা হয় সেটাই আমার প্রশ্ন?

তিনি বলেন, এই সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন দেয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা এটা কি কারণে? আমার কাছে এটা এখনো বোধগম্য নয়। বাংলাদেশকে শান্তির অন্বেষক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তি শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয় আঞ্চলিক এবং সারা বিশ্বব্যাপী আমরা শান্তি চাই।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এর এর উল্লেখ করে বলেন, অন্তত আমি এটুকু দাবি করতে পারি এ পর্যন্ত আমরা আমাদের এই পররাষ্ট্র নীতি নিয়েই চলেছি। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে, আঞ্চলিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে আমাদের সমুদ্রসীমা, আমাদের স্থল সীমা, পার্বত্য শান্তি চুক্তি করে আমাদের রিফিউজিদের ফিরিয়ে আনার মতো ব্যবস্থা আমরা করেছি। সুচারুভাবে আমরা এগুলো করতে পেরেছি। এমনকি ছিটমহলগুলো আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিনিময় করতে পেরেছি। কাজেই বাংলাদেশ শান্তির দেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে সরকার এসেই আওয়ামী লীগ সরকার সশস্ত্র বাহিনীতে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের দেশের নারী সদস্যরা অনেক সুনাম করেছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে তার কথা হয়েছে এবং তিনি শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আরো নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশা করেছেন।

‘এটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর যে কর্ম ক্ষমতা সেটা আমরা বৃদ্ধি করতে পেরেছি। সমাজের কোনো স্তরের মানুষই পেছনে পড়ে থাকবে না,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, হিজড়া, বেদে, কুষ্ঠ রোগীর থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে তার সরকার। তাদের বিনামূল্যে ঘর করে দেয়া হচ্ছে, জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে এবং আয় উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে সরকার।

তার সরকারের উন্নয়ন কেবল রাজধানী কেন্দ্রিক নয়, কেবল ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল বা কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়ন করা হচ্ছে। যাতে গ্রামে বসে প্রত্যেকটি গ্রামের মানুষ শহরের সব রকমের সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি বলেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান করা হচ্ছে ফলে সারাবিশ্বে আজকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য গর্বে তার বুকটা ভরে ওঠে।

শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করতে গিয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন এ সময় তিনি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, এ দেশটা আমাদের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যেকোনো রকমের দুর্যোগ দেখা দিলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সীমিত সম্পদের দেশ হলেও যেখানে দুর্যোগ হোক সে জায়গায় বাংলাদেশ ছুটে যায় এবং মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সেখানে ভূমিকা রাখে।

’৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করিয়ে দিয়ে দেশের ভাগ্যহত মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্যই তার পথচলা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বাবা-মা ভাই সব হারিয়েছি, আমার আর হারাবার কিছু নেই। পাওয়ারও কিছু নেই। এই বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার বাবা যেহেতু সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন তাই বাংলাদেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

তিনি বলেন, ২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি, সেই সময় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। যেটা ২০০৮ এর নির্বাচন ইশতেহার আমরা ঘোষণা করেছিলাম এবং সেই মোতাবেক কাজ করে আমরা এই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে ২০২৬ সালে। ২০২৬ সালের এই যাত্রা যেন আমরা ভালোভাবে করতে পারি সেজন্য ইতোমধ্যে আমরা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা যেন কেউ বন্ধ করতে না পারে। সেটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

তিনি বলেন, শান্তিতে সমরে সব জায়গায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদা সচেষ্ট এবং শক্তিশালী। সেই শক্তিশালী হিসেবেই একে আমরা গড়ে তুলছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ চাই না আমরা শান্তিতে বাস করতে চাই। কিন্তু আমার দেশকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য, আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যেন যথাযথ প্রস্তুতি আমাদের থাকে সেটাই আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে।

‘আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা প্রস্তুত হিসেবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কাজ করবে,’ বলেন তিনি।

পাশাপাশি আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনেও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী যথাযথ অবদান রেখে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটা মনে রাখতে হবে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমাদের এই সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছিল। যুদ্ধে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই সেই বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখে দক্ষ জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে উঠবে। অর্থাৎ স্মার্ট পপুলেশন, স্মার্ট গভমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি এবং স্মার্ট সোসাইটি। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা এভাবেই বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো এবং এগিয়ে নিয়ে যাব।

অগ্নিসন্ত্রাস করে কিছুই অর্জন করা যায় না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের অবসান ঘটিয়ে চেতনায় ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে কিছুই অর্জন করা যায় না।

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষকে পুড়িয়ে, হত্যা করে কিছুই অর্জন করা যায় না। এটা অন্যায়। কোনো কিছু অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তির প্রয়োজন। সে জন্য অগ্নিসন্ত্রাসের পথ পরিহার করে এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করার এবং তাদের পাশে থাকা প্রয়োজন।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টি পারপাস কমপ্লেক্সে ‘মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান’ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ২০২২-২৩ সালে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ শান্তিকালীন পদকপ্রাপ্ত সদস্যদেরকে পদকে ভূষিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আমি জানি না, একজন মানুষ কীভাবে আরেকটা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। এমনটি দেখেছিলাম ’৭১ সালে। তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বস্তিতে আগুন দিত। আর মানুষ বেরিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারত। দুঃখের বিষয় এরপর ২০১৩-১৪ সালে এবং এখন ইদানিং সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। পোড়া মানুষগুলোর ক্ষতবিক্ষত দেহ এবং তাদের আত্মচিৎকার ও পরিবারগুলো কী অবস্থায় আছে।

’৭৫ এর হারাতে বসা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তার সরকার আবার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে লাখো বাঙালি স্বাধীনতার জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর সেই স্লোগানও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যে ৭ মার্চের ভাষণ এ দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল, সেই ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আজ সেই ভাষণ আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্থান পেয়েছে। আড়াই হাজার বছরে সামরিক-বেসামরিক নেতারা যত ভাষণ দিয়েছে, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এটুকু আমরা করতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলো চিহ্নিত করা, যেখানে গণকবর আছে সেগুলো সংরক্ষণ করা, স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রত্যেকটি উপজেলায় আমরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরি করেছি। সেখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মিউজিয়াম হবে।

‘ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতি অব্যাহত রেখেই দেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতের দিকে আমরা এগিয়ে যাব জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে আমরা শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যাব। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে আমাদের স্থান করে নেব।

‘বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, আমাদের উন্নয়ন শহর কেন্দ্রিক নয়, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যায় পর্যন্ত আমরা উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে পেরেছি।

তিনি বলেন, তার সরকার নানা ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিতে পেরেছে।

বাংলাদেশ ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এর প্রস্তুতি নিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

ছবি

শেখ হাসিনা দিল্লির সুরক্ষিত এলাকায় অবস্থান করছেন, ভারতের প্রিন্টের প্রতিবেদন

ছবি

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ, হাসনাত লিখলেন ‘ঈদ মোবারক’

ছবি

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে উচ্ছ্বাস

ছবি

আওয়ামী লীগ-জাপাসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধের দাবি বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের

ছবি

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ মামলায় খালাস

ছবি

রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা সৃষ্টি করতে ফ্যাসিবাদের দোসররা চক্রান্ত করছে: সালাহ উদ্দিন

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানোর দাবি: জামায়াতের আপিল বিভাগে আবেদন

ছবি

দেশে নতুন সংকট তৈরি হোক চাই না : নজরুল ইসলাম খান

ছবি

৮ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন বাবর

ছবি

বিএনপির আহ্বান: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ঘিরে রাজনৈতিক সংকট এড়াতে সতর্কতা প্রয়োজন

ছবি

নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার পথে এক ধাপ এগোল জামায়াত

ছবি

আইনজীবীদের কাছে ক্ষমা চাইলেন ব্যারিস্টার সুমন

ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র হামলা

ছবি

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল

ছবি

শেখ হাসিনার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে ঢাকায় ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ নমুনা দিলেন মেয়ে

ছবি

নতুন এমডি আসছে সরকারি ১০ ব্যাংকে

ছবি

সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ গ্রেপ্তার

ছবি

দাবি আদায়ের আন্দোলনে ছুটির দিনে সরগরম ঢাকা

ছবি

সংলাপের বাইরে আওয়ামী লীগ, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তুতি

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতায় সমালোচনা: রিজভী

ছবি

প্রয়োজন পড়েনি, তাই ডাকেনি: চুন্নু

ছবি

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া মানে খুনিকে আশ্রয় দেয়া: রিজভী

ছবি

শমসের মবিন চৌধুরীর বাসায় অভিযান চালাচ্ছে ডিবি

অনভিজ্ঞ সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনায় পরামর্শ দিতে চায় বিএনপি

ছবি

পাঁচবিবিতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে ১৪৪ ধারা জারি

ছবি

শমসের মবিন চৌধুরীকে বিদেশ যেতে বাধা, আদালত অবমাননার অভিযোগ

ছবি

বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক মনে করে না এ সরকার : উপদেষ্টা নাহিদ

ছবি

‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন

ছবি

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের দুই সমন্ময়ককে রংপুরে অবাঞ্চিত করার নেপথ্যে

ছবি

হাসনাত-সারজিসকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

ছবি

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি: সরকারের উদাসীনতায় উদ্বেগ প্রকাশ বিএনপির

ছবি

আওয়ামী লীগের তৈরি আইনেই তাদের বিচার করতে হবে: জামায়াতের আমির

ছবি

নারায়ণগঞ্জে দখল ও চাঁদাবাজি : ওসমানদের শুন্যস্থানে বিএনপির লোক

ছবি

আমি আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে নেই : এম এ মান্নান

ছবি

কারাগারে সাবেক এমপি বোমা মানিক

tab

রাজনীতি

কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়, যা খুবই অমানবিক : প্রধানমন্ত্রী

বাসস

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন, পাশে তিন বাহিনী প্রধান

মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের কথা ভাবছে, যা খুবই অমানবিক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা জনগণকে হত্যা করে লাশের ওপরে পাড়া দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করে তাদের মতো অমানবিকতা আমি আর কোথাও দেখি না।’

প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন। তিনি বলেন, জনগণের জন্য যদি কাজ করতে হয় তাহলে জনগণকে হত্যা করে লাশের ওপরে পাড়া দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার যারা চিন্তা করে তাদের মতো অমানবিকতা আমি আর কোথাও দেখি না। এটা আমাদের কাছে ভাবতেও অবাক লাগে। কাজেই আমরা শান্তি চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যখন একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, একটু আশার আলো দেখছিল এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে এই অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ মানুষের জীবনটাকে আবার ব্যাহত করছে। একটা শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে কষ্টের বিষয়।

যারা এই ধ্বংসাত্মক কাজ করছে তাদের বোধোদয় হবে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ না করে গণতান্ত্রিক ধারায় যোগ দিক, জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখুক।

তার সরকার একটার পর একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ আমরা যেভাবে মোকাবিলা করলাম এরপরে অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঝামেলা মাঝে মাঝে শুরু হয়- সাধারণ মানুষকে কেন পুড়িয়ে মারা হয় সেটাই আমার প্রশ্ন?

তিনি বলেন, এই সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন দেয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা এটা কি কারণে? আমার কাছে এটা এখনো বোধগম্য নয়। বাংলাদেশকে শান্তির অন্বেষক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তি শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয় আঞ্চলিক এবং সারা বিশ্বব্যাপী আমরা শান্তি চাই।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এর এর উল্লেখ করে বলেন, অন্তত আমি এটুকু দাবি করতে পারি এ পর্যন্ত আমরা আমাদের এই পররাষ্ট্র নীতি নিয়েই চলেছি। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে, আঞ্চলিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে আমাদের সমুদ্রসীমা, আমাদের স্থল সীমা, পার্বত্য শান্তি চুক্তি করে আমাদের রিফিউজিদের ফিরিয়ে আনার মতো ব্যবস্থা আমরা করেছি। সুচারুভাবে আমরা এগুলো করতে পেরেছি। এমনকি ছিটমহলগুলো আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিনিময় করতে পেরেছি। কাজেই বাংলাদেশ শান্তির দেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে সরকার এসেই আওয়ামী লীগ সরকার সশস্ত্র বাহিনীতে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের দেশের নারী সদস্যরা অনেক সুনাম করেছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে তার কথা হয়েছে এবং তিনি শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আরো নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশা করেছেন।

‘এটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর যে কর্ম ক্ষমতা সেটা আমরা বৃদ্ধি করতে পেরেছি। সমাজের কোনো স্তরের মানুষই পেছনে পড়ে থাকবে না,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, হিজড়া, বেদে, কুষ্ঠ রোগীর থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে তার সরকার। তাদের বিনামূল্যে ঘর করে দেয়া হচ্ছে, জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে এবং আয় উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে সরকার।

তার সরকারের উন্নয়ন কেবল রাজধানী কেন্দ্রিক নয়, কেবল ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল বা কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়ন করা হচ্ছে। যাতে গ্রামে বসে প্রত্যেকটি গ্রামের মানুষ শহরের সব রকমের সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি বলেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান করা হচ্ছে ফলে সারাবিশ্বে আজকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য গর্বে তার বুকটা ভরে ওঠে।

শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করতে গিয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন এ সময় তিনি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, এ দেশটা আমাদের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যেকোনো রকমের দুর্যোগ দেখা দিলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সীমিত সম্পদের দেশ হলেও যেখানে দুর্যোগ হোক সে জায়গায় বাংলাদেশ ছুটে যায় এবং মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সেখানে ভূমিকা রাখে।

’৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করিয়ে দিয়ে দেশের ভাগ্যহত মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্যই তার পথচলা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বাবা-মা ভাই সব হারিয়েছি, আমার আর হারাবার কিছু নেই। পাওয়ারও কিছু নেই। এই বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার বাবা যেহেতু সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন তাই বাংলাদেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

তিনি বলেন, ২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি, সেই সময় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। যেটা ২০০৮ এর নির্বাচন ইশতেহার আমরা ঘোষণা করেছিলাম এবং সেই মোতাবেক কাজ করে আমরা এই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে ২০২৬ সালে। ২০২৬ সালের এই যাত্রা যেন আমরা ভালোভাবে করতে পারি সেজন্য ইতোমধ্যে আমরা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা যেন কেউ বন্ধ করতে না পারে। সেটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

তিনি বলেন, শান্তিতে সমরে সব জায়গায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদা সচেষ্ট এবং শক্তিশালী। সেই শক্তিশালী হিসেবেই একে আমরা গড়ে তুলছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ চাই না আমরা শান্তিতে বাস করতে চাই। কিন্তু আমার দেশকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য, আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যেন যথাযথ প্রস্তুতি আমাদের থাকে সেটাই আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে।

‘আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা প্রস্তুত হিসেবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কাজ করবে,’ বলেন তিনি।

পাশাপাশি আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনেও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী যথাযথ অবদান রেখে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটা মনে রাখতে হবে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমাদের এই সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছিল। যুদ্ধে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই সেই বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখে দক্ষ জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে উঠবে। অর্থাৎ স্মার্ট পপুলেশন, স্মার্ট গভমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি এবং স্মার্ট সোসাইটি। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা এভাবেই বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো এবং এগিয়ে নিয়ে যাব।

অগ্নিসন্ত্রাস করে কিছুই অর্জন করা যায় না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের অবসান ঘটিয়ে চেতনায় ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে কিছুই অর্জন করা যায় না।

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষকে পুড়িয়ে, হত্যা করে কিছুই অর্জন করা যায় না। এটা অন্যায়। কোনো কিছু অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তির প্রয়োজন। সে জন্য অগ্নিসন্ত্রাসের পথ পরিহার করে এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করার এবং তাদের পাশে থাকা প্রয়োজন।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টি পারপাস কমপ্লেক্সে ‘মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান’ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ২০২২-২৩ সালে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ শান্তিকালীন পদকপ্রাপ্ত সদস্যদেরকে পদকে ভূষিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আমি জানি না, একজন মানুষ কীভাবে আরেকটা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। এমনটি দেখেছিলাম ’৭১ সালে। তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বস্তিতে আগুন দিত। আর মানুষ বেরিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারত। দুঃখের বিষয় এরপর ২০১৩-১৪ সালে এবং এখন ইদানিং সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। পোড়া মানুষগুলোর ক্ষতবিক্ষত দেহ এবং তাদের আত্মচিৎকার ও পরিবারগুলো কী অবস্থায় আছে।

’৭৫ এর হারাতে বসা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তার সরকার আবার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে লাখো বাঙালি স্বাধীনতার জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর সেই স্লোগানও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যে ৭ মার্চের ভাষণ এ দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল, সেই ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আজ সেই ভাষণ আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্থান পেয়েছে। আড়াই হাজার বছরে সামরিক-বেসামরিক নেতারা যত ভাষণ দিয়েছে, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এটুকু আমরা করতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলো চিহ্নিত করা, যেখানে গণকবর আছে সেগুলো সংরক্ষণ করা, স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রত্যেকটি উপজেলায় আমরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরি করেছি। সেখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মিউজিয়াম হবে।

‘ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতি অব্যাহত রেখেই দেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতের দিকে আমরা এগিয়ে যাব জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে আমরা শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যাব। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে আমাদের স্থান করে নেব।

‘বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, আমাদের উন্নয়ন শহর কেন্দ্রিক নয়, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যায় পর্যন্ত আমরা উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে পেরেছি।

তিনি বলেন, তার সরকার নানা ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিতে পেরেছে।

বাংলাদেশ ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এর প্রস্তুতি নিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

back to top