দলের অভ্যান্তরীণ ‘বিভেদ’ না মিটিয়েই ‘একক’ নির্বাচনের পথে হাঁটছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের নেতৃত্বে প্রায় তিনশ’ আসনে লাঙ্গলের মনোনিত প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
সেই লক্ষ্যেই নির্বাচনের কর্মকৌশল সাজাচ্ছে বলে দলটির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়। দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংবাদকে জানিয়েছেন, তাদের অবস্থান ‘পরিষ্কার’।
তবে ৩২ বছর পর এবারই প্রথম দলের বর্তমান প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশান এরশাদ ছাড়া নির্বাচনে যাচ্ছে জাপা। প্রার্থী ঘোষণায় রওশানের ‘সম্মানে’ তার আসনটি ফাঁকা রেখেছিল পার্টি। নির্ধারিত সময়ের পরও তার দলীয় মনোনয়ন ফরম নিয়ে অপেক্ষাও করেছিল পার্টির নেতারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ফরম নেননি।
‘অসহযোগিতা’ ও ‘অবমূল্যায়নের’ অভিযোগ এনে শেষ মূহূর্তে নির্বাচনের বাইরে থাকার ঘোষণা দেন রওশন এরশাদ। তার ছেলে সাদ এরশাদও এই নির্বাচনে প্রার্থী হোননি। তবে জাপার মনোনয়ন না পেয়ে মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ রওশনপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত কয়েকজন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন অংশ নিচ্ছেন।
এর মধ্যে মসিউর রহমান রংপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাঙ্গার আসনে জাপার মনোনীত প্রার্থী মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। তিনি এরশাদের ভাতিজা ও সাবেক সংসদ সদস্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন রওশনপন্থি আরেক নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক। এই আসনে জাপার প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, যিনি ও জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব। আবার জিয়াউল-রেজাউল একে অন্যের সম্পর্কে জামাই-শুশ্বর। এই আসন থেকে আবদুল হামিদ ভাসানী নামে আরেক নেতাও জাপার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে।
দলটি সূত্র জানায়, দ্বাদশ নির্বাচন প্রশ্নে ‘পছন্দের’ আসনে নিজের অনুসারী কয়েকজন নেতার দলীয় মনোনয়নের নিশ্চিয়তা চেয়েছিলেন রওশন এরশাদ। রওশন ও জিএম কাদের মধ্যে দলের কর্তৃত্ব নিয়েও ‘টানাটানি’ ছিল দীর্ঘদিনের। মহাজোটের অধীন ও জোটের বাইরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারেও দুই নেতার মধ্যে অমিল ছিল। এসব কারণে দলটির নেতারা ‘দুই ধারায়’ পরিণত হয়।
রওশনপন্থি অংশ শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে ‘সমঝোতায়’ আগের মতো নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহের কথা জানিয়ে আসছিল। তবে জিএম কাদেরের নেতৃত্বে দলের অন্য নেতারা ছিল ‘দোটানায়’। দুই পক্ষকে ‘ঐক্যমত’ পৌঁছাতে দফা দফায় বৈঠক হয়।
‘জটিলতা’ নিরসনে ‘তৃতীয় পক্ষের’ চেষ্টাও আলোচনায় ছিল। দুই পক্ষকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বসতে পারেন, এমন আলোচনাও ছিল দলের ভেতর। অতীতের মতো দলটির নেতারা শেষ পর্যন্ত ‘মিরাকেল’ কিছু ঘটারও আশা করছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জটিলতা থেকেই গেল।
এমন পরিস্থিতিতে দ্বাদশ নির্বাচন প্রশ্নে জাপার ‘কৌশল’ এবং ‘সমীকরণ’ শেষ পর্যন্ত কোনো দিকে মোড় নিল, তা নিয়ে ‘ধোঁয়াশা’ এখনও কাটেনি। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে জাপায়।
রওশন এরশাদের নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণার আগে দলের চলমান পরিস্থিতিকে ‘ভাঙ্গণের’ সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ। রওশন এরশাদের ‘নেতৃত্বে’ পার্টি আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলেও ইঙ্গিত করেছিলেন। পরবর্তীতে নির্বাচনে না যাওয়ারই ঘোষণা আসে। কিন্তু নির্বাচনে তাদের অনুসারী দের দেখা যাচ্ছে।
এই নেতাদের মধ্যে একজন সংবাদকে জানিয়েছেন, তিনি রওশন এরশাদের ‘অনুমতি নিয়েই’ নির্বাচন প্রার্থী হচ্ছেন। ফলে নির্বাচনে জাপার ‘দুই মেরুই’ থেকে গেল। যদিও শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দলটির জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংবাদকে জানিয়েছেন, দলের অবস্থান পরিষ্কার। ‘এককভাবেই’ নির্বাচন করবেন তারা। আর যারা নির্বাচনে যাচ্ছেন তারা ‘দলের কেউ নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘আমরা ঘোষণা দিয়ে যাচাইবাচাই করে দলের প্রার্থী দিয়েছি। তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এর বাইরে কারা নির্বাচন করলো বা কে কোন মার্কা নিয়ে দাঁড়ালো তা আমাদের দেখার ব্যাপার না।’
রাঙ্গা-জিয়াউলসহ কয়েকজন নেতাদের অংশগ্রহণ নিয়ে এক প্রশ্নে চুন্নু বলেন, ‘তারা দলের কেউ না।’
নানা নাটকীয়তা শেষে বিগত তিনটি নির্বাচনে মহাজোটের অধীনে অংশ নিয়েছে জাপা। আলোচনা ছিল বিএনপি নির্বাচনে এলে এবারও ‘মহাজোটের অধীনেই’ নির্বাচন করবে দলটি। আলোচনা আছে জোটের বিষয়ে ‘দরকষাকষি’ হচ্ছে।
তবে বিষয়টি নাকজ করে দিয়ে জাপা মহাসচিব বলেন, ‘এসব খবর আমার কাছে নাই। আমরা এককভাবে নির্বাচন করবো। এটাই আমাদের অবস্থান। দল সেভাবেই এগোচ্ছে।’
শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩
দলের অভ্যান্তরীণ ‘বিভেদ’ না মিটিয়েই ‘একক’ নির্বাচনের পথে হাঁটছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের নেতৃত্বে প্রায় তিনশ’ আসনে লাঙ্গলের মনোনিত প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
সেই লক্ষ্যেই নির্বাচনের কর্মকৌশল সাজাচ্ছে বলে দলটির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়। দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংবাদকে জানিয়েছেন, তাদের অবস্থান ‘পরিষ্কার’।
তবে ৩২ বছর পর এবারই প্রথম দলের বর্তমান প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশান এরশাদ ছাড়া নির্বাচনে যাচ্ছে জাপা। প্রার্থী ঘোষণায় রওশানের ‘সম্মানে’ তার আসনটি ফাঁকা রেখেছিল পার্টি। নির্ধারিত সময়ের পরও তার দলীয় মনোনয়ন ফরম নিয়ে অপেক্ষাও করেছিল পার্টির নেতারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ফরম নেননি।
‘অসহযোগিতা’ ও ‘অবমূল্যায়নের’ অভিযোগ এনে শেষ মূহূর্তে নির্বাচনের বাইরে থাকার ঘোষণা দেন রওশন এরশাদ। তার ছেলে সাদ এরশাদও এই নির্বাচনে প্রার্থী হোননি। তবে জাপার মনোনয়ন না পেয়ে মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ রওশনপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত কয়েকজন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন অংশ নিচ্ছেন।
এর মধ্যে মসিউর রহমান রংপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাঙ্গার আসনে জাপার মনোনীত প্রার্থী মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। তিনি এরশাদের ভাতিজা ও সাবেক সংসদ সদস্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন রওশনপন্থি আরেক নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক। এই আসনে জাপার প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, যিনি ও জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব। আবার জিয়াউল-রেজাউল একে অন্যের সম্পর্কে জামাই-শুশ্বর। এই আসন থেকে আবদুল হামিদ ভাসানী নামে আরেক নেতাও জাপার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে।
দলটি সূত্র জানায়, দ্বাদশ নির্বাচন প্রশ্নে ‘পছন্দের’ আসনে নিজের অনুসারী কয়েকজন নেতার দলীয় মনোনয়নের নিশ্চিয়তা চেয়েছিলেন রওশন এরশাদ। রওশন ও জিএম কাদের মধ্যে দলের কর্তৃত্ব নিয়েও ‘টানাটানি’ ছিল দীর্ঘদিনের। মহাজোটের অধীন ও জোটের বাইরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারেও দুই নেতার মধ্যে অমিল ছিল। এসব কারণে দলটির নেতারা ‘দুই ধারায়’ পরিণত হয়।
রওশনপন্থি অংশ শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে ‘সমঝোতায়’ আগের মতো নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহের কথা জানিয়ে আসছিল। তবে জিএম কাদেরের নেতৃত্বে দলের অন্য নেতারা ছিল ‘দোটানায়’। দুই পক্ষকে ‘ঐক্যমত’ পৌঁছাতে দফা দফায় বৈঠক হয়।
‘জটিলতা’ নিরসনে ‘তৃতীয় পক্ষের’ চেষ্টাও আলোচনায় ছিল। দুই পক্ষকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বসতে পারেন, এমন আলোচনাও ছিল দলের ভেতর। অতীতের মতো দলটির নেতারা শেষ পর্যন্ত ‘মিরাকেল’ কিছু ঘটারও আশা করছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জটিলতা থেকেই গেল।
এমন পরিস্থিতিতে দ্বাদশ নির্বাচন প্রশ্নে জাপার ‘কৌশল’ এবং ‘সমীকরণ’ শেষ পর্যন্ত কোনো দিকে মোড় নিল, তা নিয়ে ‘ধোঁয়াশা’ এখনও কাটেনি। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে জাপায়।
রওশন এরশাদের নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণার আগে দলের চলমান পরিস্থিতিকে ‘ভাঙ্গণের’ সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ। রওশন এরশাদের ‘নেতৃত্বে’ পার্টি আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলেও ইঙ্গিত করেছিলেন। পরবর্তীতে নির্বাচনে না যাওয়ারই ঘোষণা আসে। কিন্তু নির্বাচনে তাদের অনুসারী দের দেখা যাচ্ছে।
এই নেতাদের মধ্যে একজন সংবাদকে জানিয়েছেন, তিনি রওশন এরশাদের ‘অনুমতি নিয়েই’ নির্বাচন প্রার্থী হচ্ছেন। ফলে নির্বাচনে জাপার ‘দুই মেরুই’ থেকে গেল। যদিও শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দলটির জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংবাদকে জানিয়েছেন, দলের অবস্থান পরিষ্কার। ‘এককভাবেই’ নির্বাচন করবেন তারা। আর যারা নির্বাচনে যাচ্ছেন তারা ‘দলের কেউ নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘আমরা ঘোষণা দিয়ে যাচাইবাচাই করে দলের প্রার্থী দিয়েছি। তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এর বাইরে কারা নির্বাচন করলো বা কে কোন মার্কা নিয়ে দাঁড়ালো তা আমাদের দেখার ব্যাপার না।’
রাঙ্গা-জিয়াউলসহ কয়েকজন নেতাদের অংশগ্রহণ নিয়ে এক প্রশ্নে চুন্নু বলেন, ‘তারা দলের কেউ না।’
নানা নাটকীয়তা শেষে বিগত তিনটি নির্বাচনে মহাজোটের অধীনে অংশ নিয়েছে জাপা। আলোচনা ছিল বিএনপি নির্বাচনে এলে এবারও ‘মহাজোটের অধীনেই’ নির্বাচন করবে দলটি। আলোচনা আছে জোটের বিষয়ে ‘দরকষাকষি’ হচ্ছে।
তবে বিষয়টি নাকজ করে দিয়ে জাপা মহাসচিব বলেন, ‘এসব খবর আমার কাছে নাই। আমরা এককভাবে নির্বাচন করবো। এটাই আমাদের অবস্থান। দল সেভাবেই এগোচ্ছে।’