দলীয় একাধিক প্রার্থীর কারণে স্থানীয় কোন্দল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার মধ্যেই উপজেলা নির্বাচন উৎসবমুখর করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। লক্ষ্য একটাই, বিএনপির নির্বাচন বর্জনের পরও ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো।
সম্প্রতি রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পৃথক বৈঠক হয়। সেখানে তৃণমূলের নেতারা উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দিলেও একক প্রার্থীর সমর্থনে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের প্রস্তাব করেন। অনেকে দলীয় প্রতীক দেয়ার অনুরোধও জানান। অন্যথায়, কোন্দল, সংঘাত নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে বলেও মন্তব্য করেন কয়েকজন নেতা। পছন্দের লোককে একক প্রার্থী করতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগও তোলেন স্থানীয় একাধিক নেতা।
বিবাদ মীমাংসায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় কয়েকজন নেতা। মতবিনিময় সভা দুটিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে পরের সংঘাতের চিত্রও তুলে ধরেন তারা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একক প্রার্থী মনোনয়ন দিতে তৃণমূলের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বুধবার বিবৃতি আকারে সাংগঠনিক নির্দেশনা গণমাধ্যমে পাঠায় দলটি। একক প্রার্থীর প্রস্তাব নাকচ করে বিবৃতিতে বলা হয়, মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। একই সঙ্গে নৌকা প্রতীকও দেয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাজধানী বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক জেলা শাখাগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মুজিবনগর দিবস সামনে রেখে এই সভার আয়োজন করা হয়।
গত দুটি মতবিনিময় সভার মতো এই সভায় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা এবং স্থানীয় নেতারা একক প্রার্থী দেয়ার দাবি তুলেছেন কি না, বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘না। কেন্দ্র থেকে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা একক প্রার্থী দেবো না। সুতরাং এটা নিয়ে আর কেউ কিছু বলেননি।’
একই প্রশ্নের জবাবে বি এম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘এটা কী বিএনপি নাকি! আমাদের কেউ কেন্দ্রীয় নির্দেশের বাইরে কোন কথা বলেনি।’
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে বক্তব্যে মূলত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির নেতৃত্বের সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। নেতাকর্মীদের সতর্ক করার উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নিজস্ব কায়দায় নানাভাবে অপরাধীদের শাস্তি দেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলে কিছু শাস্তি শেখ হাসিনা নানাভাবে দিয়ে দিয়েছেন। কতজন অনেক বড় জায়গা থেকে নেমে গেছে। দলের মধ্যে কেউ ফ্রি স্টাইল করলে শাস্তি কিন্তু পেতেই হবে। নেত্রী সব নোট করে রাখেন, সময়মত ব্যবস্থা নেবেন।’ সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ইলেকশন হয়ে গেছে, সামনে উপজেলা নির্বাচন, আমাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাত, মনোমালিন্য এসব যদি দৃশ্যপটে হাজির করা হয় তাহলে আমাদের চলার পথ কঠিন হয়ে যাবে।’
সংসদ সদস্য বা মন্ত্রীরা কেউ যেন উপজেলা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা না করেন, সে বিষয়েও সবাইকে সতর্ক করে দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা কেউ করবেন না। কেউ প্রার্থী হতে চাইলে হবে, বাধা নেই। নৌকা দেয়া হচ্ছে না কিছু বাস্তব পরিস্থিতির কারণে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি করে নাই, তারপরও ৪২.৮ শতাংশ টার্ন আউট (ভোটের হার)। এটা সারা পৃথিবীর স্ট্যান্ডার্ডে সন্তোষজনক।’
যা কিছুই ঘটুক, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একজনকে নেতা মানি, তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনিই সঠিক ক্রাইসিস ম্যানেজার। তাকে হাল ধরতে দিন। তার পেছনে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি।’ দলের সবাইকে ‘দায়িত্ব নিয়ে’ কথা বলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অনেককে দেখি ফেইসবুক লাইভে এসে বলতে থাকেন, যার যা খুশি। এগুলো ঠিক নয়। দল করলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।’ ফ্রি স্টাইল কোনো কথা বলবে, আর দলকে সেগুলো নিতে হবে এটা ঠিক নয়।’
১৭ এপ্রিল মুজিব নগর দিবসে মেহেরপুরের মুজিবনগরে মূল অনুষ্ঠান হবে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই দিবসটি উপলক্ষে বিএনপিসহ বড় বড় দলগুলো কারো অনুষ্ঠানমালা আছে এমনটা জানা নেই। আমরা পালন করব। কারণ এটি আমাদের জন্মের চেতনা।’
বৃহস্পতিবার মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় টিম সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি. এম মোজাম্মেল হক। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা এবং খুলনা বিভাগের অন্তর্গত সাংগঠনিক জেলাসমূহের নেতারা, জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সদস্যরা এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিরা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বুধবার দেয়া সাংগঠনিক নির্দেশনায় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিয়োজিত প্রশাসনও শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে। কেউ কোনো ধরনের অবৈধ হস্তক্ষেপ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করলেও দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।’
এ বিষয়ে তিনি দলীয় নির্দেশনায় বলেন, ‘আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনগণের মতামতের সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটবে এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে নিজেদের ভোট প্রদান করবে। নির্বাচনে কোনো প্রকার অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বিনষ্ট করার কর্মকা-ে জড়িত না থাকার জন্য মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য ও নেতাকর্মীদের প্রতি সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।’
এরপরও , মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা স্থানীয় পর্যায়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীর জন্য প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করা থেকে বিরত থাকবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলের মধ্যেই।
প্রার্থীতা উন্মুক্ত করে দেয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ে আছেন এমন অনেকেই এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রচারণায় নেমেছেন। নিজ দলের একই পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও ভাগ হয়ে গেছেন নিজের পছন্দের নেতার প্রচারণায়। এছাড়াও, প্রচারণায় আছে এমন অনেকে যারা, মন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন নেতা।
প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেয়ায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের প্রভাব ভোটের ফলাফলেও পড়েছিল। নির্বাচনের আগে পরে সংঘাত সংর্ঘষও হয়েছে অনেকে স্থানে। উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক না দেয়ার সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের তৃণমূলে চলমান দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৪
দলীয় একাধিক প্রার্থীর কারণে স্থানীয় কোন্দল বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার মধ্যেই উপজেলা নির্বাচন উৎসবমুখর করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। লক্ষ্য একটাই, বিএনপির নির্বাচন বর্জনের পরও ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো।
সম্প্রতি রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পৃথক বৈঠক হয়। সেখানে তৃণমূলের নেতারা উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দিলেও একক প্রার্থীর সমর্থনে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের প্রস্তাব করেন। অনেকে দলীয় প্রতীক দেয়ার অনুরোধও জানান। অন্যথায়, কোন্দল, সংঘাত নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে বলেও মন্তব্য করেন কয়েকজন নেতা। পছন্দের লোককে একক প্রার্থী করতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগও তোলেন স্থানীয় একাধিক নেতা।
বিবাদ মীমাংসায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় কয়েকজন নেতা। মতবিনিময় সভা দুটিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে পরের সংঘাতের চিত্রও তুলে ধরেন তারা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একক প্রার্থী মনোনয়ন দিতে তৃণমূলের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বুধবার বিবৃতি আকারে সাংগঠনিক নির্দেশনা গণমাধ্যমে পাঠায় দলটি। একক প্রার্থীর প্রস্তাব নাকচ করে বিবৃতিতে বলা হয়, মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। একই সঙ্গে নৌকা প্রতীকও দেয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাজধানী বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক জেলা শাখাগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মুজিবনগর দিবস সামনে রেখে এই সভার আয়োজন করা হয়।
গত দুটি মতবিনিময় সভার মতো এই সভায় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা এবং স্থানীয় নেতারা একক প্রার্থী দেয়ার দাবি তুলেছেন কি না, বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘না। কেন্দ্র থেকে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা একক প্রার্থী দেবো না। সুতরাং এটা নিয়ে আর কেউ কিছু বলেননি।’
একই প্রশ্নের জবাবে বি এম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘এটা কী বিএনপি নাকি! আমাদের কেউ কেন্দ্রীয় নির্দেশের বাইরে কোন কথা বলেনি।’
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে বক্তব্যে মূলত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির নেতৃত্বের সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। নেতাকর্মীদের সতর্ক করার উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নিজস্ব কায়দায় নানাভাবে অপরাধীদের শাস্তি দেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলে কিছু শাস্তি শেখ হাসিনা নানাভাবে দিয়ে দিয়েছেন। কতজন অনেক বড় জায়গা থেকে নেমে গেছে। দলের মধ্যে কেউ ফ্রি স্টাইল করলে শাস্তি কিন্তু পেতেই হবে। নেত্রী সব নোট করে রাখেন, সময়মত ব্যবস্থা নেবেন।’ সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ইলেকশন হয়ে গেছে, সামনে উপজেলা নির্বাচন, আমাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাত, মনোমালিন্য এসব যদি দৃশ্যপটে হাজির করা হয় তাহলে আমাদের চলার পথ কঠিন হয়ে যাবে।’
সংসদ সদস্য বা মন্ত্রীরা কেউ যেন উপজেলা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা না করেন, সে বিষয়েও সবাইকে সতর্ক করে দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা কেউ করবেন না। কেউ প্রার্থী হতে চাইলে হবে, বাধা নেই। নৌকা দেয়া হচ্ছে না কিছু বাস্তব পরিস্থিতির কারণে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি করে নাই, তারপরও ৪২.৮ শতাংশ টার্ন আউট (ভোটের হার)। এটা সারা পৃথিবীর স্ট্যান্ডার্ডে সন্তোষজনক।’
যা কিছুই ঘটুক, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একজনকে নেতা মানি, তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনিই সঠিক ক্রাইসিস ম্যানেজার। তাকে হাল ধরতে দিন। তার পেছনে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি।’ দলের সবাইকে ‘দায়িত্ব নিয়ে’ কথা বলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অনেককে দেখি ফেইসবুক লাইভে এসে বলতে থাকেন, যার যা খুশি। এগুলো ঠিক নয়। দল করলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।’ ফ্রি স্টাইল কোনো কথা বলবে, আর দলকে সেগুলো নিতে হবে এটা ঠিক নয়।’
১৭ এপ্রিল মুজিব নগর দিবসে মেহেরপুরের মুজিবনগরে মূল অনুষ্ঠান হবে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই দিবসটি উপলক্ষে বিএনপিসহ বড় বড় দলগুলো কারো অনুষ্ঠানমালা আছে এমনটা জানা নেই। আমরা পালন করব। কারণ এটি আমাদের জন্মের চেতনা।’
বৃহস্পতিবার মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় টিম সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি. এম মোজাম্মেল হক। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা এবং খুলনা বিভাগের অন্তর্গত সাংগঠনিক জেলাসমূহের নেতারা, জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সদস্যরা এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিরা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বুধবার দেয়া সাংগঠনিক নির্দেশনায় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিয়োজিত প্রশাসনও শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে। কেউ কোনো ধরনের অবৈধ হস্তক্ষেপ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করলেও দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।’
এ বিষয়ে তিনি দলীয় নির্দেশনায় বলেন, ‘আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনগণের মতামতের সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটবে এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে নিজেদের ভোট প্রদান করবে। নির্বাচনে কোনো প্রকার অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বিনষ্ট করার কর্মকা-ে জড়িত না থাকার জন্য মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য ও নেতাকর্মীদের প্রতি সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।’
এরপরও , মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা স্থানীয় পর্যায়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীর জন্য প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করা থেকে বিরত থাকবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলের মধ্যেই।
প্রার্থীতা উন্মুক্ত করে দেয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ে আছেন এমন অনেকেই এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রচারণায় নেমেছেন। নিজ দলের একই পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও ভাগ হয়ে গেছেন নিজের পছন্দের নেতার প্রচারণায়। এছাড়াও, প্রচারণায় আছে এমন অনেকে যারা, মন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন নেতা।
প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেয়ায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের প্রভাব ভোটের ফলাফলেও পড়েছিল। নির্বাচনের আগে পরে সংঘাত সংর্ঘষও হয়েছে অনেকে স্থানে। উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক না দেয়ার সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের তৃণমূলে চলমান দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।