alt

রাজনীতি

মুক্তি পেলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া

মোস্তাফিজুর রহমান : বুধবার, ০৭ আগস্ট ২০২৪

সরকার পতনের একদিন পরই মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তিনি দুদকের একটি মামলায় সাজা পেয়ে ছয় বছর আগে কারাবন্দী হয়েছিলেন। দুই বছর জেল খেটেছেন। এরপর থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

এর মধ্যেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারত যান শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পরপরই বিকেলে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

পরে সেদিন রাতেই জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপতি।

বঙ্গভবন প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) তার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এতে বলা হয়, ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপির চেয়ারপারসনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

আশির দশকে জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া। এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে বিএনপি ক্ষমতায় বসে তার নেতৃত্বে। হন প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী।

খালেদা জিয়া পরে ১৯৯৬ সালেও কয়েকদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তবে ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে আবারও প্রধানমন্ত্রী হোন তিনি। সেবার থাকেন ২০০৬ সাল পর্যন্ত। তবে ওয়ান এলিভ্যানের সময় ব্যাপক জটিলতায় পড়েন তিনি। তখন আটকও হয়েছিলেন তিনি।

পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি হেরে গেলে আরও জটিলতায় পড়েন খালেদা জিয়া। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা সক্রিয় করে ততকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

সেসব মামলার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির একটি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে ৫ বছরের কারাদ- দেয় ঢাকার একটি আদালত। ওই রায়ের পরই কারাবন্দী হন তিনি। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করেন তিনি। কিন্তু অন্যদিকে সাজা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে দুদক আবেদন করলে ১০ বছরের কারাদ- দেয় আদালত।

এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির আরেকটি মামলায় ৭ বছরের কারাদ- এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে ঢাকার একটি আদালত। দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১৭ বছরের কারাদ- আসে। পরে দুই বছর কারাবন্দী থাকার পর তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে কারাগারের বাইরে আসেন।

কিন্তু নানা বিধিনিষেধ পালন করতে হয় তাকে। এই সময়ে রাজনীতিতে অংশ না নিতে পারেননি। শরীরের অবস্থা অবনতি হলে অনেকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসার জন্য বিদেশেও যেতে চাইলেও পারেননি। গত তিন বছরে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে কয়েক দফা অনুমতি চাইলেও প্রতিবারই তা নাকচ করে সরকার।

যেসব মামলা ছিল

২০০৮ সালে তৎকালীন সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলাতেই সাজা পেয়ে প্রথমবারের মতো কারাগারে যেতে হয় তাকে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের মামলা হলেও তদন্ত শেষ হয়ে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছিল ২০০৯ সালে। আর অভিযোগ গঠন হয় ২০১৪ সালের মার্চ মাসে। বকশীবাজারের বিশেষ জজ আদালতে এই মামলার বিচার কার্যক্রম চলে। মামলার রায়ে খালেদা জিয়া ছাড়াও তার ছেলে তারেক রহমানসহ আরও পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদ- ও দুই কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছিল।

বিএনপি চেয়ারপাসনের বিরুদ্ধে রায় হওয়া আরও মামলা ছিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর মামলাটির রায় দেয় আদালত। ২০১১ সালের আগস্ট মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে এই মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়েছিল।

ওই দুই মামলা ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপাসনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত সরকারের করা নাইকো মামলা, গ্যাটকো মামলা, বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলা সক্রিয় ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। সে সরকারের আমলে ১৫ অগাস্ট ‘ভুয়া জন্মদিন’ জন্মদিন পালনসহ আরও কিছু মামলা দায়ের হয়েছিল।

যদিও বিএনপি সবসময় অভিযোগ করে আসছে, এই সব দুর্নীতির মামলা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং হয়রানিমূলক’। তবে ততকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছে।

তাছাড়া শুরু থেকেই বিএনপির চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ ও ‘সাজানো রায়’ দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে আসছিলেন তার আইনজীবী ও বিএনপির নেতারা।

কারাবন্দী হওয়ার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন সংবাদকে বলেছিলেন, ‘রাজনীতি থেকে বাইরে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে (খালেদা জিয়া) একের পর এক মামলায় জড়ানো হচ্ছে। ফরমায়েশি রায়ও দিচ্ছে। অথচ এসব মামলার অভিযোগ সবই মিথ্যা।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সংবাদকে বলেছিলেন, ‘জনপ্রিয়তার কারণে খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে এবং রায় দিয়ে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।’ বিএনপি চেয়ারপারসনকে সরকার সহজেই মুক্ত হতে দেবে না বলেও মন্ত্রব্য ছিল জয়নুল আবেদীনের।

ছবি

দুদকের আবেদনে লতিফ বিশ্বাস ও পরিবারের বিদেশযাত্রা স্থগিত

ছবি

‘সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ আসবে না’ — বরগুনায় এনসিপির পথসভায় আহ্বায়ক

ছবি

বিএনপির বিক্ষোভে ব্যবসায়ী হত্যা তদন্তের দাবি ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ

ছবি

বিএনপির বিক্ষোভে ব্যবসায়ী হত্যা তদন্তের দাবি ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ

ছবি

জাতীয় পার্টির বিভক্তির জন্য ক্ষমতাসীনদের দায় দেখছেন কিছু নেতা

ছবি

‘গুপ্ত সংগঠনের মব’ এর বিরুদ্ধে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

বিএনপি এখন চাঁদাবাজের দলে পরিণত হয়েছে: নাহিদ

ছবি

‘তুমি টানতেছ কেন?’—পুলিশকে ধমক সাবেক মন্ত্রী কামরুলের

ছবি

সোহাগ হত্যা: আসামিদের পক্ষে লড়বেন না বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা

ছবি

জয়-পুতুলের দান-অনুদান সংক্রান্ত নথি চেয়ে এনবিআরকে দুদকের চিঠি

ছবি

সোহাগ হত্যাকে ‘রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ ফখরুলের

ছবি

হাতিরঝিলে গ্রেপ্তার শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট

ছবি

জরুরি অবস্থার অপব্যবহার ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট আইন চায় এনসিপি

অপপ্রচারের জবাব দিতে তরুণদের সাইবার যুদ্ধে নামতে হবে’

ছবি

ইসি পুনর্গঠন ও শাপলা প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নিলো এনসিপি

ছবি

মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর বিএনপি কর্মীদের হামলা চেষ্টা, গাড়ি ভাঙচুর

ছবি

ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মশাল মিছিল

ছবি

‘৯ লাখের শেয়ার লেনদেন, দিয়েছেন ২৫ হাজার’ — খাগড়াছড়িতে এনসিপি নেত্রীকে অভিযুক্ত করলেন সহকর্মী

ছবি

‘গণতান্ত্রিক অধিকারের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি’ — সজাগ থাকার আহ্বান তারেকের

ছবি

‘অন্তর্বর্তী সরকার অন্যায়কারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে কি না?’ – প্রশ্ন তারেক রহমানের

ছবি

সহিংসতা বন্ধ না করলে আওয়ামী লীগের পরিণতি ভোগ করবে বিএনপি’ — হুঁশিয়ারি যুবশক্তির

ছবি

পরিকল্পিত প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তায় দেশে অরাজকতা, নির্বাচন বিলম্বের সুযোগ তৈরি করছে : যুবদল সভাপতি

ছবি

সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বিএনপির কড়া প্রতিক্রিয়া, জড়িতদের শাস্তির দাবি

ছবি

‘নৃশংসতার রাজনীতি চলতে পারে না’ — সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে দুই দলের বিবৃতি

ছবি

জাতিসংঘ কার্যালয়কে ‘সার্বভৌমত্বের হুমকি’ আখ্যা দিয়ে তিন দাবি হেফাজতে ইসলামের

ছবি

সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বললেন জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল

ছবি

“পাগলও বোঝে কারা ক্ষমতায় যাবে,” প্রতিবাদ সভায় দুদু

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক, জরুরি অবস্থা ও বিচারপতি নিয়োগে আংশিক ঐকমত্য,আলোচনা চল‌বে : আলী রীয়াজ

ছবি

বিএনপি চায় না ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সংবিধানের মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত হোক: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

তরুণ ভোটার, সীমানা, পোস্টাল ব্যালট ও আইন সংশোধনে নানা প্রস্তাব ইসির

ছবি

“বিএনপি কি পাঁচ নম্বর দল?” ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যাচ্ছিলেন সালাহউদ্দিন, অনুরোধে ফিরে আসেন

অনলাইন নিবন্ধনে প্রবাসীদের ভোট, সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে আর ইভিএম নয়

ছবি

ছাত্রদলের অভিযোগ অস্বীকার, সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের

ছবি

শেখ হাসিনার গুলির নির্দেশের অডিও নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনকে একপেশে বললেন জয়

ছবি

বড়লেখায় জামায়াত নেতার ‘পাকিস্তান খ্যাত’ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ছাত্রদল, আইনগত ব্যবস্থার দাবি

ছবি

আইনশৃঙ্খলা থেকে পর্যবেক্ষক পর্যন্ত দায়িত্বে চার নির্বাচন কমিশনার

tab

রাজনীতি

মুক্তি পেলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া

মোস্তাফিজুর রহমান

বুধবার, ০৭ আগস্ট ২০২৪

সরকার পতনের একদিন পরই মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তিনি দুদকের একটি মামলায় সাজা পেয়ে ছয় বছর আগে কারাবন্দী হয়েছিলেন। দুই বছর জেল খেটেছেন। এরপর থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

এর মধ্যেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারত যান শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পরপরই বিকেলে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

পরে সেদিন রাতেই জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপতি।

বঙ্গভবন প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) তার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এতে বলা হয়, ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপির চেয়ারপারসনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

আশির দশকে জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া। এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে বিএনপি ক্ষমতায় বসে তার নেতৃত্বে। হন প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী।

খালেদা জিয়া পরে ১৯৯৬ সালেও কয়েকদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তবে ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে আবারও প্রধানমন্ত্রী হোন তিনি। সেবার থাকেন ২০০৬ সাল পর্যন্ত। তবে ওয়ান এলিভ্যানের সময় ব্যাপক জটিলতায় পড়েন তিনি। তখন আটকও হয়েছিলেন তিনি।

পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি হেরে গেলে আরও জটিলতায় পড়েন খালেদা জিয়া। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা সক্রিয় করে ততকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

সেসব মামলার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির একটি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে ৫ বছরের কারাদ- দেয় ঢাকার একটি আদালত। ওই রায়ের পরই কারাবন্দী হন তিনি। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করেন তিনি। কিন্তু অন্যদিকে সাজা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে দুদক আবেদন করলে ১০ বছরের কারাদ- দেয় আদালত।

এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির আরেকটি মামলায় ৭ বছরের কারাদ- এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে ঢাকার একটি আদালত। দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১৭ বছরের কারাদ- আসে। পরে দুই বছর কারাবন্দী থাকার পর তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে কারাগারের বাইরে আসেন।

কিন্তু নানা বিধিনিষেধ পালন করতে হয় তাকে। এই সময়ে রাজনীতিতে অংশ না নিতে পারেননি। শরীরের অবস্থা অবনতি হলে অনেকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসার জন্য বিদেশেও যেতে চাইলেও পারেননি। গত তিন বছরে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে কয়েক দফা অনুমতি চাইলেও প্রতিবারই তা নাকচ করে সরকার।

যেসব মামলা ছিল

২০০৮ সালে তৎকালীন সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলাতেই সাজা পেয়ে প্রথমবারের মতো কারাগারে যেতে হয় তাকে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের মামলা হলেও তদন্ত শেষ হয়ে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছিল ২০০৯ সালে। আর অভিযোগ গঠন হয় ২০১৪ সালের মার্চ মাসে। বকশীবাজারের বিশেষ জজ আদালতে এই মামলার বিচার কার্যক্রম চলে। মামলার রায়ে খালেদা জিয়া ছাড়াও তার ছেলে তারেক রহমানসহ আরও পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদ- ও দুই কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছিল।

বিএনপি চেয়ারপাসনের বিরুদ্ধে রায় হওয়া আরও মামলা ছিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর মামলাটির রায় দেয় আদালত। ২০১১ সালের আগস্ট মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে এই মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়েছিল।

ওই দুই মামলা ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপাসনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত সরকারের করা নাইকো মামলা, গ্যাটকো মামলা, বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলা সক্রিয় ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। সে সরকারের আমলে ১৫ অগাস্ট ‘ভুয়া জন্মদিন’ জন্মদিন পালনসহ আরও কিছু মামলা দায়ের হয়েছিল।

যদিও বিএনপি সবসময় অভিযোগ করে আসছে, এই সব দুর্নীতির মামলা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং হয়রানিমূলক’। তবে ততকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছে।

তাছাড়া শুরু থেকেই বিএনপির চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ ও ‘সাজানো রায়’ দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে আসছিলেন তার আইনজীবী ও বিএনপির নেতারা।

কারাবন্দী হওয়ার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন সংবাদকে বলেছিলেন, ‘রাজনীতি থেকে বাইরে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে (খালেদা জিয়া) একের পর এক মামলায় জড়ানো হচ্ছে। ফরমায়েশি রায়ও দিচ্ছে। অথচ এসব মামলার অভিযোগ সবই মিথ্যা।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সংবাদকে বলেছিলেন, ‘জনপ্রিয়তার কারণে খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে এবং রায় দিয়ে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।’ বিএনপি চেয়ারপারসনকে সরকার সহজেই মুক্ত হতে দেবে না বলেও মন্ত্রব্য ছিল জয়নুল আবেদীনের।

back to top