অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এই তরুণ দায়িত্ব পেয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি সংবাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাদের লক্ষ্য, মেয়াদ এবং অন্যান্য প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রাথমিক কী আলোচনা হয়েছে?
নাহিদ: আইনশৃঙ্খলা কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়, সংস্কার করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু সংস্কারের দাবি এসেছে সেটি নিয়েও কথা হয়েছে। ছাত্ররাও রাস্তায় আছে তাদেরকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা করছি। আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। আহত-নিহতদের তালিকাও করা হচ্ছে।
প্রশ্ন: সরকারে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বাড়ানোর বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে?
নাহিদ: ছাত্রদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে। সেজন্য শিক্ষার্থীদেরও নেতৃত্বে আসা উচিত। প্রতিজন উপদেষ্টার সাথে আমরা একজন ছাত্র প্রতিনিধি থাকার বিষয়ে আলোচনা করছি।
প্রশ্ন: সরকারের মেয়াদ নিয়ে কোনও আলোচনা?
নাহিদ: মেয়াদ এখনো ঠিক হয়নি। কিছু প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে এ সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠন তথা সংস্কার আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। এটি ছাড়া নির্বাচন দিলে সবকিছু আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। পুনর্গঠনের প্রস্তাবনা আমরা তৈরী করছি। সেটি অনুযায়ী মেয়াদ নির্ধারিত হবে। অন্যান্য রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সাথে আলোচনা করেই সব ঠিক করা হবে।
প্রশ্ন: আপনার মন্ত্রণালয় নিয়ে কী পরিকল্পনা?
নাহিদ: আমাদের আন্দোলনে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন চালানো হয়েছিল। এই ইন্টারনেটের দায়িত্বই আমার কাছে চলে এসেছে। আমার প্রথম কাজ হবে এটার তদন্ত করা। কেন ঐ সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখা বিশ্লেষণ দেওয়া উচিত, সে সুযোগটা আমার আছে। যেহেতু এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এর ভূমিকা থাকবে। অফিসিয়ালি যেহেতু এখনো যাইনি, যাওয়ার পর পরিকল্পনা সাজাবো। তবে এই মন্ত্রণালয় নিয়ে যে সমালোচনাগুলো আছে, যেমন আড়িপাতা, সিকিউরিটি এ্যাক্ট — এই সমালোচনাগুলোকে আমলে নেওয়ার চেষ্টা করব। এটা নিয়ে নতুন ধরনের পলিসি নেওয়ার চিন্তা রয়েছে।
প্রশ্ন: সরকারি নিয়োগে কোটাসংস্কার নিয়ে কী ভাবছেন?
নাহিদ: কোটা সংস্কার যেটা হয়েছে সেটা আমরা চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করিনি। আমরা একটি কমিশনের কথা বলছি, সংসদে আইনের কথা বলছি। এখন সেটা অবশ্যই সুযোগ আছে। তবে সংসদ যেহেতু নাই, নির্বাহী আদেশের সুযোগ আছে। কমিশন যাতে গঠন করা হয় সে প্রস্তাবনা আমরা দিব। কোটা নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা আমরা করব।
প্রশ্ন: এ সরকারের মূল লক্ষ্য কী হবে?
নাহিদ: যে যে প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে এই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে এবং সরকার গঠিত হয়েছে, সে লক্ষ্যগুলোকে সামনে রেখে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পুনর্গঠন এবং এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য। এছাড়া ন্যায় বিচার, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গণহত্যাসহ ফ্যাসিজমের অপকর্ম রয়েছে তার বিচার করা এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমাদের সরকারের লক্ষ্য।
প্রশ্ন: যারা সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত?
নাহিদ: শহীদ পরিবার এবং যারা আহত তাদেরকে সুযোগ সুবিধা অবশ্যই দেওয়া হবে। এজন্য পূর্ণাঙ্গ তালিকাটা প্রয়োজন, সেটা আমরা করব। তারপর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এই আন্দোলনে ত্যাগ স্বীকার করেছে সবাই থাকবে এর আওতায়।
প্রশ্ন: পুলিশ পুনর্গঠন বিষয়ে কী চিন্তা?
নাহিদ: পুলিশ কাজে আসাটা শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাজারবাগ গিয়ে কথা বলার আলোচনা চলছে। পুলিশের প্রধান পদগুলোতে ইতিমধ্যে পরিবর্তন হচ্ছে, আরো হবে। যারা নির্দেশ দাতা যারা ছিলেন, বিশেষ করে আন্দোলনে গুলি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুনর্গঠনের কিছু দাবি পুলিশের পক্ষ থেকেও এসেছে, আমাদের জায়গা থেকেও আসছে। যেকোন সরকার পুলিশকে নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে ব্যবহার করে, বিরোধী দলকে দমনের কাছে ব্যবহার করে। শেষ পর্যন্ত দোষটা প্রতিষ্ঠানের উপর যায়। এই বিষয়গুলো সংশোধন করতে আরেকটু সময় লাগবে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে একটা আস্থায় জায়গা নিতে চাচ্ছি।
শুক্রবার, ০৯ আগস্ট ২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এই তরুণ দায়িত্ব পেয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি সংবাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাদের লক্ষ্য, মেয়াদ এবং অন্যান্য প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রাথমিক কী আলোচনা হয়েছে?
নাহিদ: আইনশৃঙ্খলা কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়, সংস্কার করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু সংস্কারের দাবি এসেছে সেটি নিয়েও কথা হয়েছে। ছাত্ররাও রাস্তায় আছে তাদেরকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা করছি। আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। আহত-নিহতদের তালিকাও করা হচ্ছে।
প্রশ্ন: সরকারে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বাড়ানোর বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে?
নাহিদ: ছাত্রদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে। সেজন্য শিক্ষার্থীদেরও নেতৃত্বে আসা উচিত। প্রতিজন উপদেষ্টার সাথে আমরা একজন ছাত্র প্রতিনিধি থাকার বিষয়ে আলোচনা করছি।
প্রশ্ন: সরকারের মেয়াদ নিয়ে কোনও আলোচনা?
নাহিদ: মেয়াদ এখনো ঠিক হয়নি। কিছু প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে এ সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠন তথা সংস্কার আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। এটি ছাড়া নির্বাচন দিলে সবকিছু আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। পুনর্গঠনের প্রস্তাবনা আমরা তৈরী করছি। সেটি অনুযায়ী মেয়াদ নির্ধারিত হবে। অন্যান্য রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সাথে আলোচনা করেই সব ঠিক করা হবে।
প্রশ্ন: আপনার মন্ত্রণালয় নিয়ে কী পরিকল্পনা?
নাহিদ: আমাদের আন্দোলনে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন চালানো হয়েছিল। এই ইন্টারনেটের দায়িত্বই আমার কাছে চলে এসেছে। আমার প্রথম কাজ হবে এটার তদন্ত করা। কেন ঐ সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখা বিশ্লেষণ দেওয়া উচিত, সে সুযোগটা আমার আছে। যেহেতু এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এর ভূমিকা থাকবে। অফিসিয়ালি যেহেতু এখনো যাইনি, যাওয়ার পর পরিকল্পনা সাজাবো। তবে এই মন্ত্রণালয় নিয়ে যে সমালোচনাগুলো আছে, যেমন আড়িপাতা, সিকিউরিটি এ্যাক্ট — এই সমালোচনাগুলোকে আমলে নেওয়ার চেষ্টা করব। এটা নিয়ে নতুন ধরনের পলিসি নেওয়ার চিন্তা রয়েছে।
প্রশ্ন: সরকারি নিয়োগে কোটাসংস্কার নিয়ে কী ভাবছেন?
নাহিদ: কোটা সংস্কার যেটা হয়েছে সেটা আমরা চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করিনি। আমরা একটি কমিশনের কথা বলছি, সংসদে আইনের কথা বলছি। এখন সেটা অবশ্যই সুযোগ আছে। তবে সংসদ যেহেতু নাই, নির্বাহী আদেশের সুযোগ আছে। কমিশন যাতে গঠন করা হয় সে প্রস্তাবনা আমরা দিব। কোটা নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা আমরা করব।
প্রশ্ন: এ সরকারের মূল লক্ষ্য কী হবে?
নাহিদ: যে যে প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে এই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে এবং সরকার গঠিত হয়েছে, সে লক্ষ্যগুলোকে সামনে রেখে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পুনর্গঠন এবং এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য। এছাড়া ন্যায় বিচার, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গণহত্যাসহ ফ্যাসিজমের অপকর্ম রয়েছে তার বিচার করা এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমাদের সরকারের লক্ষ্য।
প্রশ্ন: যারা সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত?
নাহিদ: শহীদ পরিবার এবং যারা আহত তাদেরকে সুযোগ সুবিধা অবশ্যই দেওয়া হবে। এজন্য পূর্ণাঙ্গ তালিকাটা প্রয়োজন, সেটা আমরা করব। তারপর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এই আন্দোলনে ত্যাগ স্বীকার করেছে সবাই থাকবে এর আওতায়।
প্রশ্ন: পুলিশ পুনর্গঠন বিষয়ে কী চিন্তা?
নাহিদ: পুলিশ কাজে আসাটা শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাজারবাগ গিয়ে কথা বলার আলোচনা চলছে। পুলিশের প্রধান পদগুলোতে ইতিমধ্যে পরিবর্তন হচ্ছে, আরো হবে। যারা নির্দেশ দাতা যারা ছিলেন, বিশেষ করে আন্দোলনে গুলি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুনর্গঠনের কিছু দাবি পুলিশের পক্ষ থেকেও এসেছে, আমাদের জায়গা থেকেও আসছে। যেকোন সরকার পুলিশকে নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে ব্যবহার করে, বিরোধী দলকে দমনের কাছে ব্যবহার করে। শেষ পর্যন্ত দোষটা প্রতিষ্ঠানের উপর যায়। এই বিষয়গুলো সংশোধন করতে আরেকটু সময় লাগবে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে একটা আস্থায় জায়গা নিতে চাচ্ছি।