মেডিকেল ও ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষায় ‘অযৌক্তিক’ কোটা ব্যবস্থার নিরসন ও ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে পুনরায় প্রকাশের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘অবিলম্বে ফলাফল বাতিল করো করতে হবে’, ‘কোটা না মেধা-মেধা মেধা’, ‘মেডিকেলের ফলাফল-পুনঃপ্রকাশ করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী তানবীর আহসান বলেন, “ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গেলে, ডাক্তারের দোষ হয়। মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা হয় ডাক্তার তৈরির জন্য, সেখানে যদি কোটার মাধ্যমে অযোগ্যদের নেওয়া হয় তাহলে তো রোগী মারা যাবে ভুল চিকিৎসায়। প্রয়োজনে সারা দেশের সব মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নামবো। সুতরাং এই আন্দোলনকে হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। আজকের মধ্যেই ফল বাতিল করতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ আহসান বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরকার পতনের আন্দোলনের মূল ভিত্তি ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলন। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কোটা প্রথার পতন হয়েছে। কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় যে কোটা ব্যবস্থা আমরা দেখলাম, এটা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। এই কোটা ব্যবস্থাকে আমরা আবারও প্রত্যাখ্যান করছি।’
এ সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা এসে সংহতি জানান। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে নিটোরের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইদ্রিস আলী বলেন, “আমার একজন ছেলে বা মেয়ে ৭৩ পেয়েও মেডিকেলে চান্স পাচ্ছে না অথচ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩৬ বা ৩৭ পেয়েও চান্স পেয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তিত বাংলাদেশে কেনো এই বৈষম্য থাকবে। আমরা এই ফল মানি না।”
এর আগে রোববার (১৯ জানুয়ারি) মেডিকেলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর রাত ১১টার দিকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতি রাখার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ভিসি চত্বর ও টিএসসি হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এ ছাড়াও রাত ১০টায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার প্রতিবাদে ঢাকা কলেজে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এই ঘটনার পর সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারি-বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেবল অনগ্রসর শ্রেণীর উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কোটা রেখে অন্যান্য সকল অযৌক্তিক কোটা বিলোপের পক্ষে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনঃপ্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টার নিকট ‘সর্বস্তরের সাধারন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এর ব্যানারে ২০২৪-২৫ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনঃনিরীক্ষণ করে ফলাফল পুনঃপ্রকাশের আবেদন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে এবার পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। অংশগ্রহণকারী এক লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
জানা যায়, এমবিবিএস ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭৩ নম্বর পেয়েও অনেক শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে কোটায় ৪১ নম্বর পেয়েও প্রায় আড়াইশো শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেশি নম্বর পেয়েও বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।
সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
মেডিকেল ও ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষায় ‘অযৌক্তিক’ কোটা ব্যবস্থার নিরসন ও ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে পুনরায় প্রকাশের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘অবিলম্বে ফলাফল বাতিল করো করতে হবে’, ‘কোটা না মেধা-মেধা মেধা’, ‘মেডিকেলের ফলাফল-পুনঃপ্রকাশ করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী তানবীর আহসান বলেন, “ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গেলে, ডাক্তারের দোষ হয়। মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা হয় ডাক্তার তৈরির জন্য, সেখানে যদি কোটার মাধ্যমে অযোগ্যদের নেওয়া হয় তাহলে তো রোগী মারা যাবে ভুল চিকিৎসায়। প্রয়োজনে সারা দেশের সব মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নামবো। সুতরাং এই আন্দোলনকে হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। আজকের মধ্যেই ফল বাতিল করতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ আহসান বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরকার পতনের আন্দোলনের মূল ভিত্তি ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলন। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কোটা প্রথার পতন হয়েছে। কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় যে কোটা ব্যবস্থা আমরা দেখলাম, এটা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। এই কোটা ব্যবস্থাকে আমরা আবারও প্রত্যাখ্যান করছি।’
এ সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা এসে সংহতি জানান। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে নিটোরের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইদ্রিস আলী বলেন, “আমার একজন ছেলে বা মেয়ে ৭৩ পেয়েও মেডিকেলে চান্স পাচ্ছে না অথচ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩৬ বা ৩৭ পেয়েও চান্স পেয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তিত বাংলাদেশে কেনো এই বৈষম্য থাকবে। আমরা এই ফল মানি না।”
এর আগে রোববার (১৯ জানুয়ারি) মেডিকেলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর রাত ১১টার দিকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতি রাখার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ভিসি চত্বর ও টিএসসি হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এ ছাড়াও রাত ১০টায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার প্রতিবাদে ঢাকা কলেজে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এই ঘটনার পর সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারি-বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেবল অনগ্রসর শ্রেণীর উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কোটা রেখে অন্যান্য সকল অযৌক্তিক কোটা বিলোপের পক্ষে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনঃপ্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টার নিকট ‘সর্বস্তরের সাধারন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এর ব্যানারে ২০২৪-২৫ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনঃনিরীক্ষণ করে ফলাফল পুনঃপ্রকাশের আবেদন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে এবার পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। অংশগ্রহণকারী এক লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
জানা যায়, এমবিবিএস ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭৩ নম্বর পেয়েও অনেক শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে কোটায় ৪১ নম্বর পেয়েও প্রায় আড়াইশো শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেশি নম্বর পেয়েও বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।