বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল নোমানকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও অশ্রুসিক্ত চোখে চট্টগ্রামে শেষ বিদায় জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিএনপি ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কও মানুষের ভিড়ে পূর্ণ হয়ে যায়।
স্মৃতিচারণে সহকর্মীরা :
নোমানের রাজনৈতিক সতীর্থরা তাঁর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, তিনি একজন পরিচ্ছন্ন ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "নোমান ভাই ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। শ্রমিক রাজনীতি করেছেন। দলে যখন যে দায়িত্ব পেয়েছেন, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। কর্মীদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই প্রমাণ করে তিনি কতটা গণমানুষের নেতা ছিলেন।"
প্রয়াত নেতার ছেলে সাঈদ আল নোমান তূর্য বলেন,
"আমার বাবার ৬৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে হাজারো মানুষের উপকারের গল্প শুনেছি। মাত্র দুইবার মন্ত্রী হয়েও তিনি এত মানুষের কাজ কীভাবে করলেন, আমি জানি না!"
তূর্য আরও বলেন, "তিনি মানুষের সেবা ছাড়া কিছুই চাননি। বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।"
কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি শাহ আলম স্মরণ করে বলেন,
"১৯৬৮ সালে আমরা একসঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছিলাম, ৮ মাস কারাবন্দি ছিলাম। আজ তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন, আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাত দান করেন।"
নোমানের রাজনৈতিক যাত্রা :
১৯৪৫ সালে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে জন্ম নেওয়া আবদুল্লাহ আল নোমান ছাত্রজীবনে বামপন্থী রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ষাটের দশকে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা হিসেবে শিক্ষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এরপর ১৯৮১ সালে বিএনপিতে যোগ দেন এবং দ্রুত দলীয় নেতৃত্বে উঠে আসেন।
তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে তিনি মৎস্য ও পশুসম্পদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান, বন ও পরিবেশ এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শুক্রবার দুপুরে নোমানের মরদেহ চট্টগ্রাম বিএনপি কার্যালয় নাসিমন ভবনে নেওয়া হয়, যেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। পরে মরদেহ রাউজানের গহিরা গ্রামে নেওয়া হয় এবং বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রাজনীতিতে তাঁর দীর্ঘ ছয় দশকের পথচলা আজ স্মৃতির অংশ হয়ে গেলেও, নেতাকর্মীরা আশা করেন, তাঁর আদর্শ ও সংগ্রামের চেতনা আগামীর প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল নোমানকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও অশ্রুসিক্ত চোখে চট্টগ্রামে শেষ বিদায় জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিএনপি ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কও মানুষের ভিড়ে পূর্ণ হয়ে যায়।
স্মৃতিচারণে সহকর্মীরা :
নোমানের রাজনৈতিক সতীর্থরা তাঁর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, তিনি একজন পরিচ্ছন্ন ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "নোমান ভাই ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। শ্রমিক রাজনীতি করেছেন। দলে যখন যে দায়িত্ব পেয়েছেন, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। কর্মীদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই প্রমাণ করে তিনি কতটা গণমানুষের নেতা ছিলেন।"
প্রয়াত নেতার ছেলে সাঈদ আল নোমান তূর্য বলেন,
"আমার বাবার ৬৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে হাজারো মানুষের উপকারের গল্প শুনেছি। মাত্র দুইবার মন্ত্রী হয়েও তিনি এত মানুষের কাজ কীভাবে করলেন, আমি জানি না!"
তূর্য আরও বলেন, "তিনি মানুষের সেবা ছাড়া কিছুই চাননি। বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।"
কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি শাহ আলম স্মরণ করে বলেন,
"১৯৬৮ সালে আমরা একসঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছিলাম, ৮ মাস কারাবন্দি ছিলাম। আজ তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন, আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাত দান করেন।"
নোমানের রাজনৈতিক যাত্রা :
১৯৪৫ সালে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে জন্ম নেওয়া আবদুল্লাহ আল নোমান ছাত্রজীবনে বামপন্থী রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ষাটের দশকে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা হিসেবে শিক্ষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এরপর ১৯৮১ সালে বিএনপিতে যোগ দেন এবং দ্রুত দলীয় নেতৃত্বে উঠে আসেন।
তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে তিনি মৎস্য ও পশুসম্পদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান, বন ও পরিবেশ এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শুক্রবার দুপুরে নোমানের মরদেহ চট্টগ্রাম বিএনপি কার্যালয় নাসিমন ভবনে নেওয়া হয়, যেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। পরে মরদেহ রাউজানের গহিরা গ্রামে নেওয়া হয় এবং বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রাজনীতিতে তাঁর দীর্ঘ ছয় দশকের পথচলা আজ স্মৃতির অংশ হয়ে গেলেও, নেতাকর্মীরা আশা করেন, তাঁর আদর্শ ও সংগ্রামের চেতনা আগামীর প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।