প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে দীর্ঘ এক চিঠি লিখেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার হাতে চিঠিটি পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
‘দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দ্রুত করণীয় কিছু বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ’ শীর্ষক এই চিঠিতে ‘আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র’ এবং ‘আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্র’ এই দুই ‘তত্ত্বকেই ভ্রান্ত’ আখ্যায়িত করা হয়েছে। ‘বিএনপি মনে করে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার মাধ্যমেই সবার জন্য উন্নয়ন সম্ভব এবং এর জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইন ও নীতির সংস্কার জরুরি।’
চিঠিতে দাবি করা হয়, ‘দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির ইতিহাসে প্রায় সবগুলো যুগান্তকারী সংস্কার বিএনপির হাত ধরেই এসেছে। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা, খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০ এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা ও অন্যান্য দলের মতামত নিয়ে ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচির’ কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া ‘তাদের ঘোষণারই অংশ’ এবং যেকোনো ‘যুক্তিগ্রাহ্য আলোচনা’ বিএনপি স্বাগত জানায় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
‘তবে দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থে সময়ক্ষেপণ করে জনগণের ভোটাধিকার বঞ্চিত করার কৌশল তারা সমর্থন করে না।’
বিএনপির মহাসচিব চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা হলো দ্রুত ফ্যাসিবাদী দল, তাদের দলীয় সরকার ও সহযোগীদের আইনের আওতায় এনে গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিচার এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা, নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ঘটানো এবং দ্রুত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া।’
‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে অব্যাহত আন্দোলনের কথা তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, ‘দীর্ঘ ১৬ বছরের লড়াইয়ে ১৭শ’র বেশি বিরোধী নেতাকর্মী গুম, সহস্রাধিক খুন এবং ৬০ লাখের বেশি নেতাকর্মী আহত, পঙ্গু ও গায়েবি মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন। এছাড়াও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে দুই সহস্রাধিক তরুণ, ছাত্র, শ্রমিক ও নারী-শিশু জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং আরও কয়েক হাজার আহত ও পঙ্গু হয়েছেন। বিএনপি এই ফ্যাসিবাদের পতন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইকে অসীম আত্মত্যাগ ও সাহসী লড়াইয়ের এক গৌরবজনক ইতিহাস বলে অভিহিত করেছে।’
চিঠিতে আরও দাবি করা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র ও মানবিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিটি লড়াইয়ের নেতৃত্ব দানকারী বা সক্রিয় অংশীদার হিসেবে বিএনপি সর্বদা জনগণের কল্যাণে কাজ করে এসেছে। সেই লক্ষ্যে বিএনপি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে এবং তাদের আকাক্সক্ষা পূরণে একটি টেকসই ক্ষেত্র তৈরির জন্য সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার ভার গ্রহণে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে এবং পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।’
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে দীর্ঘ এক চিঠি লিখেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার হাতে চিঠিটি পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
‘দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দ্রুত করণীয় কিছু বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ’ শীর্ষক এই চিঠিতে ‘আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র’ এবং ‘আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্র’ এই দুই ‘তত্ত্বকেই ভ্রান্ত’ আখ্যায়িত করা হয়েছে। ‘বিএনপি মনে করে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার মাধ্যমেই সবার জন্য উন্নয়ন সম্ভব এবং এর জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইন ও নীতির সংস্কার জরুরি।’
চিঠিতে দাবি করা হয়, ‘দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির ইতিহাসে প্রায় সবগুলো যুগান্তকারী সংস্কার বিএনপির হাত ধরেই এসেছে। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা, খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০ এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা ও অন্যান্য দলের মতামত নিয়ে ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচির’ কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া ‘তাদের ঘোষণারই অংশ’ এবং যেকোনো ‘যুক্তিগ্রাহ্য আলোচনা’ বিএনপি স্বাগত জানায় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
‘তবে দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থে সময়ক্ষেপণ করে জনগণের ভোটাধিকার বঞ্চিত করার কৌশল তারা সমর্থন করে না।’
বিএনপির মহাসচিব চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা হলো দ্রুত ফ্যাসিবাদী দল, তাদের দলীয় সরকার ও সহযোগীদের আইনের আওতায় এনে গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিচার এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা, নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ঘটানো এবং দ্রুত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া।’
‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে অব্যাহত আন্দোলনের কথা তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, ‘দীর্ঘ ১৬ বছরের লড়াইয়ে ১৭শ’র বেশি বিরোধী নেতাকর্মী গুম, সহস্রাধিক খুন এবং ৬০ লাখের বেশি নেতাকর্মী আহত, পঙ্গু ও গায়েবি মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন। এছাড়াও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে দুই সহস্রাধিক তরুণ, ছাত্র, শ্রমিক ও নারী-শিশু জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং আরও কয়েক হাজার আহত ও পঙ্গু হয়েছেন। বিএনপি এই ফ্যাসিবাদের পতন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইকে অসীম আত্মত্যাগ ও সাহসী লড়াইয়ের এক গৌরবজনক ইতিহাস বলে অভিহিত করেছে।’
চিঠিতে আরও দাবি করা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র ও মানবিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিটি লড়াইয়ের নেতৃত্ব দানকারী বা সক্রিয় অংশীদার হিসেবে বিএনপি সর্বদা জনগণের কল্যাণে কাজ করে এসেছে। সেই লক্ষ্যে বিএনপি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে এবং তাদের আকাক্সক্ষা পূরণে একটি টেকসই ক্ষেত্র তৈরির জন্য সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার ভার গ্রহণে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে এবং পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।’