alt

রাজনীতি

বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান করার পরই নির্বাচনের পক্ষে এনসিপি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনের সময় ‘হত্যা ও দমন-পীড়নের’ অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাদের বিচার এবং রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ দৃশ্যমান করার পরই নির্বাচন চেয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

বিচার ও সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘যৌক্তিক’ সময় দেওয়ার কথাও বলেছে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের গঠন করা দলটি।

শনিবার দুপুর দেড়টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠকের মধ্যবর্তী বিরতিতে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এসব কথা বলেন।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে সংলাপের শুরুতে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত আমূল পরিবর্তনের জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন, তা গঠনে ঐকমত্য কমিশনের কাছে পথ তৈরির আহ্বান জানান তিনি।

গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপির আত্মপ্রকাশ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কীভাবে রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে, সেরকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।”

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় ও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এই বৈঠক শুরু হয়। সংলাপে অংশ নেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান।

এনসিপির পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন।

আখতার হোসেন বলেন, “এনসিপি মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে এজেন্ডা-ম্যানডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, বিচার এবং সংস্কার দৃশ্যমান করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে।

নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে, কিন্তু তার আগে বিচার এবং সংস্কার সরকারকে দৃশ্যমান করতে হবে৷ এটার জন্য যেটুকু সময় পাওয়া প্রয়োজন, সরকার সে সময়টুকু পেতে পারে। কোনওভাবেই কাজ ব্যতিরেকে সময় পেতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত সংবিধানের বিষয়ে আলোচনা করেছি৷ বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, দুদক ও পুলিশ সংস্কার কমিশনের মত বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে পারিনি৷

তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন কেন অন্তর্ভুক্ত হয়নি, সে বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছি। আমাদের মতামতগুলো জানাতে চেয়েছি।”

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে দুই ধাপে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে।

রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একীভূত সুপারিশ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির জন্য কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চেয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এরপর সেই মতামত ধরে সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে সংলাপ করছে কমিশন।

আখতার বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে সংবিধানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বরং এখানে প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতায়ন করা হয়েছে৷ তার মধ্য দিয়েই সাংবিধানিকভাবে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ রয়েছে৷

আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলছি এবং বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলছি৷ সেই প্রেক্ষাপটে কীভাবে সংবিধান পুনর্লিখন করা যায় এবং গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেছি৷”

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে আমরা ১২৯টির সাথে একমত হয়েছি৷ যেসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি সেগুলোর বিষয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ রয়েছে।

মূলত এখন পর্যন্ত আমরা তিনটি বিষয়ে কথা বলেছি৷ প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, প্রটেকশন অব সিটিজেন বা নাগরিকদের নিরাপত্তা। আমরা দেখেছি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরঙ্কুশ অধিকার নিশ্চিত হয়নি৷ সেসব বিষয়ে আমরা বিস্তারিত কথা বলেছি।

দ্বিতীয় বিষয় পিসফুল ট্রানজেকশন অব পাওয়ার বা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর। আমরা দেখেছি, যখনই রাষ্ট্রের পাওয়ার ট্রানজেকশনের সময় এসেছে তখনই দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷

একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে আরেকটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর কীভাবে হবে, এই বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। যাতে আমাদের অতীতের যেসব দুঃখ স্মৃতি রয়েছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি আর না হয়৷

তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে, সংসদের স্থিতিশীলতার নাম করে ৭০ অনুচ্ছেদ দিয়ে কণ্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে। সেটি নিয়ে কথা হচ্ছে৷ যেটির মধ্য দিয়ে আমরা একসাথে সংসদে স্থিতিশীলতা, সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা, আমাদের সংসদকে কীভাবে আরও বেশি কার্যকর করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।”

ছবি

উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে অনড় থাকার ঘোষণা এনসিপির

ছবি

জামায়াত-ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপিকে হুঁশিয়ার করল স্বেচ্ছাসেবক দল

ছবি

“পতিত স্বৈরাচার অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিচ্ছে”—চরমোনাই পীরের হুঁশিয়ারি

ছবি

দ্বিকক্ষ সংসদে পিআর পদ্ধতির পক্ষে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত জামায়াতের

ছবি

দুর্নীতির মামলায় খালাস, বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলল হাই কোর্ট

ছবি

দ্বিকক্ষ সংসদে রাজি বিএনপি, তবে ব্যয় ও পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন

ছবি

উচ্চকক্ষ গঠনে মতানৈক্য, ঐকমত্য হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে: জাহিদ

ছবি

তারেক-জুবাইদার মামলার বিচার নিরপেক্ষ ছিল না : হাইকোর্ট

ছবি

দুদকের আবেদনে লতিফ বিশ্বাস ও পরিবারের বিদেশযাত্রা স্থগিত

ছবি

‘সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ আসবে না’ — বরগুনায় এনসিপির পথসভায় আহ্বায়ক

ছবি

বিএনপির বিক্ষোভে ব্যবসায়ী হত্যা তদন্তের দাবি ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ

ছবি

বিএনপির বিক্ষোভে ব্যবসায়ী হত্যা তদন্তের দাবি ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ

ছবি

জাতীয় পার্টির বিভক্তির জন্য ক্ষমতাসীনদের দায় দেখছেন কিছু নেতা

ছবি

‘গুপ্ত সংগঠনের মব’ এর বিরুদ্ধে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

বিএনপি এখন চাঁদাবাজের দলে পরিণত হয়েছে: নাহিদ

ছবি

‘তুমি টানতেছ কেন?’—পুলিশকে ধমক সাবেক মন্ত্রী কামরুলের

ছবি

সোহাগ হত্যা: আসামিদের পক্ষে লড়বেন না বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা

ছবি

জয়-পুতুলের দান-অনুদান সংক্রান্ত নথি চেয়ে এনবিআরকে দুদকের চিঠি

ছবি

সোহাগ হত্যাকে ‘রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ ফখরুলের

ছবি

হাতিরঝিলে গ্রেপ্তার শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট

ছবি

জরুরি অবস্থার অপব্যবহার ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট আইন চায় এনসিপি

অপপ্রচারের জবাব দিতে তরুণদের সাইবার যুদ্ধে নামতে হবে’

ছবি

ইসি পুনর্গঠন ও শাপলা প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নিলো এনসিপি

ছবি

মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর বিএনপি কর্মীদের হামলা চেষ্টা, গাড়ি ভাঙচুর

ছবি

ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মশাল মিছিল

ছবি

‘৯ লাখের শেয়ার লেনদেন, দিয়েছেন ২৫ হাজার’ — খাগড়াছড়িতে এনসিপি নেত্রীকে অভিযুক্ত করলেন সহকর্মী

ছবি

‘গণতান্ত্রিক অধিকারের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি’ — সজাগ থাকার আহ্বান তারেকের

ছবি

‘অন্তর্বর্তী সরকার অন্যায়কারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে কি না?’ – প্রশ্ন তারেক রহমানের

ছবি

সহিংসতা বন্ধ না করলে আওয়ামী লীগের পরিণতি ভোগ করবে বিএনপি’ — হুঁশিয়ারি যুবশক্তির

ছবি

পরিকল্পিত প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তায় দেশে অরাজকতা, নির্বাচন বিলম্বের সুযোগ তৈরি করছে : যুবদল সভাপতি

ছবি

সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বিএনপির কড়া প্রতিক্রিয়া, জড়িতদের শাস্তির দাবি

ছবি

‘নৃশংসতার রাজনীতি চলতে পারে না’ — সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে দুই দলের বিবৃতি

ছবি

জাতিসংঘ কার্যালয়কে ‘সার্বভৌমত্বের হুমকি’ আখ্যা দিয়ে তিন দাবি হেফাজতে ইসলামের

ছবি

সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বললেন জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল

ছবি

“পাগলও বোঝে কারা ক্ষমতায় যাবে,” প্রতিবাদ সভায় দুদু

tab

রাজনীতি

বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান করার পরই নির্বাচনের পক্ষে এনসিপি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনের সময় ‘হত্যা ও দমন-পীড়নের’ অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাদের বিচার এবং রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ দৃশ্যমান করার পরই নির্বাচন চেয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

বিচার ও সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘যৌক্তিক’ সময় দেওয়ার কথাও বলেছে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের গঠন করা দলটি।

শনিবার দুপুর দেড়টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠকের মধ্যবর্তী বিরতিতে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এসব কথা বলেন।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে সংলাপের শুরুতে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত আমূল পরিবর্তনের জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন, তা গঠনে ঐকমত্য কমিশনের কাছে পথ তৈরির আহ্বান জানান তিনি।

গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপির আত্মপ্রকাশ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কীভাবে রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে, সেরকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।”

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় ও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এই বৈঠক শুরু হয়। সংলাপে অংশ নেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান।

এনসিপির পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন।

আখতার হোসেন বলেন, “এনসিপি মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে এজেন্ডা-ম্যানডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, বিচার এবং সংস্কার দৃশ্যমান করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে।

নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে, কিন্তু তার আগে বিচার এবং সংস্কার সরকারকে দৃশ্যমান করতে হবে৷ এটার জন্য যেটুকু সময় পাওয়া প্রয়োজন, সরকার সে সময়টুকু পেতে পারে। কোনওভাবেই কাজ ব্যতিরেকে সময় পেতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত সংবিধানের বিষয়ে আলোচনা করেছি৷ বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, দুদক ও পুলিশ সংস্কার কমিশনের মত বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে পারিনি৷

তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন কেন অন্তর্ভুক্ত হয়নি, সে বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছি। আমাদের মতামতগুলো জানাতে চেয়েছি।”

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে দুই ধাপে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে।

রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একীভূত সুপারিশ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির জন্য কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চেয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এরপর সেই মতামত ধরে সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে সংলাপ করছে কমিশন।

আখতার বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে সংবিধানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বরং এখানে প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতায়ন করা হয়েছে৷ তার মধ্য দিয়েই সাংবিধানিকভাবে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ রয়েছে৷

আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলছি এবং বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলছি৷ সেই প্রেক্ষাপটে কীভাবে সংবিধান পুনর্লিখন করা যায় এবং গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেছি৷”

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে আমরা ১২৯টির সাথে একমত হয়েছি৷ যেসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি সেগুলোর বিষয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ রয়েছে।

মূলত এখন পর্যন্ত আমরা তিনটি বিষয়ে কথা বলেছি৷ প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, প্রটেকশন অব সিটিজেন বা নাগরিকদের নিরাপত্তা। আমরা দেখেছি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরঙ্কুশ অধিকার নিশ্চিত হয়নি৷ সেসব বিষয়ে আমরা বিস্তারিত কথা বলেছি।

দ্বিতীয় বিষয় পিসফুল ট্রানজেকশন অব পাওয়ার বা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর। আমরা দেখেছি, যখনই রাষ্ট্রের পাওয়ার ট্রানজেকশনের সময় এসেছে তখনই দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷

একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে আরেকটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর কীভাবে হবে, এই বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। যাতে আমাদের অতীতের যেসব দুঃখ স্মৃতি রয়েছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি আর না হয়৷

তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে, সংসদের স্থিতিশীলতার নাম করে ৭০ অনুচ্ছেদ দিয়ে কণ্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে। সেটি নিয়ে কথা হচ্ছে৷ যেটির মধ্য দিয়ে আমরা একসাথে সংসদে স্থিতিশীলতা, সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা, আমাদের সংসদকে কীভাবে আরও বেশি কার্যকর করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।”

back to top