নানা বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্যে রাষ্ট্র সংস্কারকে ‘অনিশ্চয়তায় ফেলা হচ্ছে’ বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি– এনসিপি। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের বিষয়ে কতটুকু সংস্কার… এ সময়টুকুর মধ্যে করতে হবে, সেই বিষয়ে নানা ধরনের মতপার্থক্য দেখা দিচ্ছে এবং সংস্কারকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলা হচ্ছে। সেই জায়গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা আমরা ঐকমত্য কমিশনে জমা দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো থেকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে। সামনের নির্বাচন সামনে রেখে এসব বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার নিয়ে একমতে পৌঁছানো জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি আমাদের বক্তব্য হলো, সংস্কারকে কোনো বায়বীয় তত্ত্বের মধ্যে অপ্রয়োগযোগ্য অবস্থায় ফেলে রাখার পক্ষে আমরা নই। বরং ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতা ও বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করে রাষ্ট্রকে ঢেলে সাজানোর জন্য এনসিপি রূপরেখা উপস্থাপন করেছে।”
এক সাংবাদিকের প্রশ্নে আখতার হোসেন বলেন, “বর্তমান সংবিধান স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোতে ভরপুর। নতুন সংবিধান বাস্তবায়নের জন্য গণপরিষদ গঠনের প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি।”
তিনি বলেন, “বিচার ও সংস্কার কাজের দৃশ্যমানতায় সরকারের আন্তরিকতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা থাকলে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তবে আগে মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচারকে দৃশ্যমান করতে হবে।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দেশে পেশিশক্তিনির্ভর রাজনীতি চলছে। আমরা চাই পলিসিনির্ভর রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হোক। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোয় বিরোধী দলের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
দলটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, “নির্বাহী বিভাগের একচ্ছত্র আধিপত্য রোধে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। এটি নির্বাহী বিভাগকে জবাবদিহিতায় রাখবে ও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “ভোটারের বয়স ১৬ ও প্রার্থীর বয়স ২৩ করার, ১০০ নারী সদস্যের সরাসরি নির্বাচনের, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাব দিয়েছি। দমনমূলক আইন সংস্কার ও বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছি।”
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে থাকতে পারবেন; প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য একই ব্যক্তি হতে পারবেন না। অনাস্থা ভোটের সুযোগ রাখতে হবে। বিভাগীয় শহরে হাই কোর্টের স্থায়ী আসন গড়তে হবে। দুদককে স্বাধীনতা দিতে হবে এবং ৩২(ক) ধারা বাতিল করতে হবে।”
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাতিল এবং নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে আলাদা আইনের প্রস্তাবও তুলে ধরেন তিনি।
এনসিপির সংলাপ শুরু হয় ১৯ এপ্রিল। মঙ্গলবারের সংলাপে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।
মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫
নানা বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্যে রাষ্ট্র সংস্কারকে ‘অনিশ্চয়তায় ফেলা হচ্ছে’ বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি– এনসিপি। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের বিষয়ে কতটুকু সংস্কার… এ সময়টুকুর মধ্যে করতে হবে, সেই বিষয়ে নানা ধরনের মতপার্থক্য দেখা দিচ্ছে এবং সংস্কারকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলা হচ্ছে। সেই জায়গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা আমরা ঐকমত্য কমিশনে জমা দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো থেকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে। সামনের নির্বাচন সামনে রেখে এসব বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার নিয়ে একমতে পৌঁছানো জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি আমাদের বক্তব্য হলো, সংস্কারকে কোনো বায়বীয় তত্ত্বের মধ্যে অপ্রয়োগযোগ্য অবস্থায় ফেলে রাখার পক্ষে আমরা নই। বরং ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতা ও বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করে রাষ্ট্রকে ঢেলে সাজানোর জন্য এনসিপি রূপরেখা উপস্থাপন করেছে।”
এক সাংবাদিকের প্রশ্নে আখতার হোসেন বলেন, “বর্তমান সংবিধান স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোতে ভরপুর। নতুন সংবিধান বাস্তবায়নের জন্য গণপরিষদ গঠনের প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি।”
তিনি বলেন, “বিচার ও সংস্কার কাজের দৃশ্যমানতায় সরকারের আন্তরিকতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা থাকলে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তবে আগে মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচারকে দৃশ্যমান করতে হবে।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দেশে পেশিশক্তিনির্ভর রাজনীতি চলছে। আমরা চাই পলিসিনির্ভর রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হোক। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোয় বিরোধী দলের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
দলটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, “নির্বাহী বিভাগের একচ্ছত্র আধিপত্য রোধে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। এটি নির্বাহী বিভাগকে জবাবদিহিতায় রাখবে ও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “ভোটারের বয়স ১৬ ও প্রার্থীর বয়স ২৩ করার, ১০০ নারী সদস্যের সরাসরি নির্বাচনের, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাব দিয়েছি। দমনমূলক আইন সংস্কার ও বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছি।”
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে থাকতে পারবেন; প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য একই ব্যক্তি হতে পারবেন না। অনাস্থা ভোটের সুযোগ রাখতে হবে। বিভাগীয় শহরে হাই কোর্টের স্থায়ী আসন গড়তে হবে। দুদককে স্বাধীনতা দিতে হবে এবং ৩২(ক) ধারা বাতিল করতে হবে।”
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাতিল এবং নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে আলাদা আইনের প্রস্তাবও তুলে ধরেন তিনি।
এনসিপির সংলাপ শুরু হয় ১৯ এপ্রিল। মঙ্গলবারের সংলাপে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।