অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মন্তব্য করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত বাজেটে ট্রাম্প প্রশাসন ও আইএমএফের প্রভাব রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প এবং আইএমএফ—এই দুইয়ের পায়ের ওপর দাঁড়ানো এবারের বাজেট।’
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি, যেখানে সভাপতিত্ব করেন আনু মুহাম্মদ নিজেই।
তিনি বলেন, আইএমএফের চাপে ক্ষুদ্র ও স্থানীয় শিল্পের ভ্যাট অব্যাহতি কমেছে, কর অব্যাহতি তুলে নেওয়া হয়েছে এবং গৃহস্থালির পণ্যের ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। অনলাইন পণ্য বিক্রিতেও নতুন শুল্ক আরোপ করে চাপ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনকে খুশি করতে গিয়ে বাজেটে ভয়ংকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। সম্পদ সংগ্রহের দায়িত্ব থাকা উচিত বিত্তবানদের ওপর, তা পুনর্বণ্টন করা প্রয়োজন। কিন্তু বাজেটে তার বিপরীত চিত্র দেখা গেছে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেটে আগের সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাজেটে তার প্রতিফলন নেই। বাজেটের শিরোনামে ‘উন্নয়ন’ বলা হলেও বাস্তবে তা জনগণের জন্য বিপজ্জনক।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে যেন অস্বচ্ছতা ও প্রতারণামূলক ঘোষণা না থাকে, এটাই প্রত্যাশা। আগামী ২২ জুন বাজেট পাসের আগে সরকারের দায়িত্ব বড় বড় ত্রুটি সংশোধন করা এবং জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির ন্যূনতম উদ্যোগ গ্রহণ করা।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক মাহতাব উদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, গত দেড় দশকের বাজেট জনগণের ছিল না। প্রধান সাতটি সমস্যা হলো বাজেটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত ব্যবহার, জনগুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ হ্রাস, গরিবের পকেট থেকে কর আদায়, অর্থ লুটপাট, সর্বজনের প্রতি হুমকি এবং উন্নয়ন ব্যয়ের প্রতি আস্থার সংকট।
সভায় লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা বলেন, বিদ্যমান করব্যবস্থা বৈষম্যমূলক। নতুন বাজেটেও করব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। একই অবস্থা সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও বিরাজমান।
তিনি বলেন, পেনশন, কৃষি ভর্তুকি, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, পাঠ্যবই বিতরণকে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে দেখানো হলেও এগুলো প্রকৃতপক্ষে সেই খাতের আওতায় পড়ে না। এগুলো বাদ দিলে প্রকৃত সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ জিডিপির এক শতাংশেরও কম।
গবেষক ও শিক্ষক মাহা মির্জা বলেন, গত পাঁচ দশকে শিল্পায়নে ব্যর্থতা ও কর্মসংস্থানহীনতা স্পষ্ট। বেসরকারি খাতে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ সরকারি খাতের চেয়ে ১৭ গুণ বেশি হলেও কাঙ্ক্ষিত শিল্পায়ন হয়নি, বরং অর্থ লুট হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষি খাতে বাজেট জিডিপির ৫ শতাংশেরও কম। খাতটি বিপর্যস্ত হলেও বাজেটে সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই।
সভায় চিকিৎসক হারুণ অর রশিদ এবং গবেষক গোলাম রসুল বক্তব্য দেন। তাঁরা গত দেড় দশকে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বাজেট বৈষম্য নিয়ে আলোচনা করেন।
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মন্তব্য করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত বাজেটে ট্রাম্প প্রশাসন ও আইএমএফের প্রভাব রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প এবং আইএমএফ—এই দুইয়ের পায়ের ওপর দাঁড়ানো এবারের বাজেট।’
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি, যেখানে সভাপতিত্ব করেন আনু মুহাম্মদ নিজেই।
তিনি বলেন, আইএমএফের চাপে ক্ষুদ্র ও স্থানীয় শিল্পের ভ্যাট অব্যাহতি কমেছে, কর অব্যাহতি তুলে নেওয়া হয়েছে এবং গৃহস্থালির পণ্যের ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। অনলাইন পণ্য বিক্রিতেও নতুন শুল্ক আরোপ করে চাপ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনকে খুশি করতে গিয়ে বাজেটে ভয়ংকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। সম্পদ সংগ্রহের দায়িত্ব থাকা উচিত বিত্তবানদের ওপর, তা পুনর্বণ্টন করা প্রয়োজন। কিন্তু বাজেটে তার বিপরীত চিত্র দেখা গেছে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেটে আগের সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাজেটে তার প্রতিফলন নেই। বাজেটের শিরোনামে ‘উন্নয়ন’ বলা হলেও বাস্তবে তা জনগণের জন্য বিপজ্জনক।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে যেন অস্বচ্ছতা ও প্রতারণামূলক ঘোষণা না থাকে, এটাই প্রত্যাশা। আগামী ২২ জুন বাজেট পাসের আগে সরকারের দায়িত্ব বড় বড় ত্রুটি সংশোধন করা এবং জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির ন্যূনতম উদ্যোগ গ্রহণ করা।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক মাহতাব উদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, গত দেড় দশকের বাজেট জনগণের ছিল না। প্রধান সাতটি সমস্যা হলো বাজেটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত ব্যবহার, জনগুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ হ্রাস, গরিবের পকেট থেকে কর আদায়, অর্থ লুটপাট, সর্বজনের প্রতি হুমকি এবং উন্নয়ন ব্যয়ের প্রতি আস্থার সংকট।
সভায় লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা বলেন, বিদ্যমান করব্যবস্থা বৈষম্যমূলক। নতুন বাজেটেও করব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। একই অবস্থা সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও বিরাজমান।
তিনি বলেন, পেনশন, কৃষি ভর্তুকি, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, পাঠ্যবই বিতরণকে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে দেখানো হলেও এগুলো প্রকৃতপক্ষে সেই খাতের আওতায় পড়ে না। এগুলো বাদ দিলে প্রকৃত সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ জিডিপির এক শতাংশেরও কম।
গবেষক ও শিক্ষক মাহা মির্জা বলেন, গত পাঁচ দশকে শিল্পায়নে ব্যর্থতা ও কর্মসংস্থানহীনতা স্পষ্ট। বেসরকারি খাতে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ সরকারি খাতের চেয়ে ১৭ গুণ বেশি হলেও কাঙ্ক্ষিত শিল্পায়ন হয়নি, বরং অর্থ লুট হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষি খাতে বাজেট জিডিপির ৫ শতাংশেরও কম। খাতটি বিপর্যস্ত হলেও বাজেটে সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই।
সভায় চিকিৎসক হারুণ অর রশিদ এবং গবেষক গোলাম রসুল বক্তব্য দেন। তাঁরা গত দেড় দশকে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বাজেট বৈষম্য নিয়ে আলোচনা করেন।