‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে একমত নয় বিএনপি। দলটির মত, সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে শুধুমাত্র ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানের চেতনা’কে স্বীকৃতি দিয়ে ‘জুলাই অভ্যুত্থান ২০২৪’ নামে তা যুক্ত করা যেতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১১তম দিনের আলোচনায় অংশ নিয়ে এই অবস্থান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, “সংবিধান কার্যকর হয় ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে। সে সময় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের কার্যকারিতা শেষ হয়ে যায়। পরে সেটিকে চতুর্থ তফসিলে যুক্ত করে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। লিটারেচার বা ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ঘোষণাপত্র গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেটি সংবিধানের মূল অংশ হয় না।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা ‘গণ–অভ্যুত্থান ২০২৪’-এর চেতনা ও মর্যাদাকে সম্মান করি, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও চাই। কিন্তু এটি সংবিধানের মূলনীতিতে সংযুক্ত করার পক্ষে নই। তফসিলে স্বীকৃতি দেওয়াই যথেষ্ট।”
সরকারকে ‘মধ্যস্থতাকারী’ বলছে বিএনপি
বিএনপির মতে, একটি রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে দুইজন উপদেষ্টার মাধ্যমে ঘোষণাপত্র বিষয়ে একটি লিখিত ড্রাফট সরকারকে হস্তান্তর করেছিল। তবে এরপর কোনো প্রতিক্রিয়া পায়নি দলটি।
সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে আগের কিছু মতামত অন্তর্ভুক্ত থাকায়, বিএনপি সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনা করে এক দিনের মধ্যে তাদের নতুন ড্রাফট ফেরত পাঠিয়েছে। এখন তারা সরকারের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বিচার বিভাগ নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান
আলোচনায় বিচার বিভাগের অবস্থান নিয়েও মত দেয় বিএনপি। দলটির অবস্থান, বিচার বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতার বাইরে থাকবে। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে ভাবছি। যেখানে বিচারপতিদের কেবলমাত্র শেষ বিকল্প হিসেবে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। বিষয়টি এখনো দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় রয়েছে এবং পরবর্তী বৈঠকে তা উপস্থাপন করা হবে।”
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, “রাষ্ট্রপতির একক ক্ষমতা না রেখে, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতির মধ্য থেকে কাউকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাবে প্রায় ঐকমত্য হয়েছে— যদি না তার বিরুদ্ধে ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তদন্ত চলমান থাকে। বিএনপি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে, কারণ এটি নির্বিচার নিয়োগের ঝুঁকি কমাবে।”
জরুরি অবস্থা জারি: ক্ষমতা চায় পূর্ণ মন্ত্রিসভার
বিএনপি জরুরি অবস্থা জারির ক্ষমতাকে প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের জায়গা থেকে সরিয়ে পূর্ণ মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল করতে চায়। সালাহউদ্দিন জানান, সংবিধানের ১৪১(খ) ও ১৪১(গ) অনুচ্ছেদ সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘ব্যাপক ঐকমত্য’ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘সাংবিধানিক সংকট’, ‘মহামারি’ ও ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’-এর মতো স্পষ্ট কারণ সংযোজনের পক্ষে মত এসেছে।
তিনি বলেন, “আমরা চাই জরুরি অবস্থা যেন আর রাজনৈতিক হাতিয়ার না হয়।”
---
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে একমত নয় বিএনপি। দলটির মত, সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে শুধুমাত্র ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানের চেতনা’কে স্বীকৃতি দিয়ে ‘জুলাই অভ্যুত্থান ২০২৪’ নামে তা যুক্ত করা যেতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১১তম দিনের আলোচনায় অংশ নিয়ে এই অবস্থান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, “সংবিধান কার্যকর হয় ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে। সে সময় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের কার্যকারিতা শেষ হয়ে যায়। পরে সেটিকে চতুর্থ তফসিলে যুক্ত করে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। লিটারেচার বা ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ঘোষণাপত্র গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেটি সংবিধানের মূল অংশ হয় না।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা ‘গণ–অভ্যুত্থান ২০২৪’-এর চেতনা ও মর্যাদাকে সম্মান করি, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও চাই। কিন্তু এটি সংবিধানের মূলনীতিতে সংযুক্ত করার পক্ষে নই। তফসিলে স্বীকৃতি দেওয়াই যথেষ্ট।”
সরকারকে ‘মধ্যস্থতাকারী’ বলছে বিএনপি
বিএনপির মতে, একটি রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে দুইজন উপদেষ্টার মাধ্যমে ঘোষণাপত্র বিষয়ে একটি লিখিত ড্রাফট সরকারকে হস্তান্তর করেছিল। তবে এরপর কোনো প্রতিক্রিয়া পায়নি দলটি।
সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে আগের কিছু মতামত অন্তর্ভুক্ত থাকায়, বিএনপি সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনা করে এক দিনের মধ্যে তাদের নতুন ড্রাফট ফেরত পাঠিয়েছে। এখন তারা সরকারের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বিচার বিভাগ নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান
আলোচনায় বিচার বিভাগের অবস্থান নিয়েও মত দেয় বিএনপি। দলটির অবস্থান, বিচার বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতার বাইরে থাকবে। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে ভাবছি। যেখানে বিচারপতিদের কেবলমাত্র শেষ বিকল্প হিসেবে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। বিষয়টি এখনো দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় রয়েছে এবং পরবর্তী বৈঠকে তা উপস্থাপন করা হবে।”
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, “রাষ্ট্রপতির একক ক্ষমতা না রেখে, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতির মধ্য থেকে কাউকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাবে প্রায় ঐকমত্য হয়েছে— যদি না তার বিরুদ্ধে ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তদন্ত চলমান থাকে। বিএনপি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে, কারণ এটি নির্বিচার নিয়োগের ঝুঁকি কমাবে।”
জরুরি অবস্থা জারি: ক্ষমতা চায় পূর্ণ মন্ত্রিসভার
বিএনপি জরুরি অবস্থা জারির ক্ষমতাকে প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের জায়গা থেকে সরিয়ে পূর্ণ মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল করতে চায়। সালাহউদ্দিন জানান, সংবিধানের ১৪১(খ) ও ১৪১(গ) অনুচ্ছেদ সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘ব্যাপক ঐকমত্য’ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘সাংবিধানিক সংকট’, ‘মহামারি’ ও ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’-এর মতো স্পষ্ট কারণ সংযোজনের পক্ষে মত এসেছে।
তিনি বলেন, “আমরা চাই জরুরি অবস্থা যেন আর রাজনৈতিক হাতিয়ার না হয়।”
---