গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার জন্য প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সারা দেশে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে হবে।”
এর আগের দিন এনসিপির সমাবেশ ঘিরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোপালগঞ্জ। টানা পাঁচ ঘণ্টার ওই সংঘাতে অন্তত চারজন নিহত হন। পরে পুলিশের কার্যালয়ে আটকা পড়া এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ ছাড়েন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। ওই রাতেই খুলনায় গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এনসিপি নেতারা। সেখানে নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, গোপালগঞ্জে “মুজিববাদীরা” জঙ্গি কায়দায় হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
এরপর বৃহস্পতিবার ফেইসবুক পোস্টে নাহিদ লিখেছেন, “গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করবো। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবো।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাইনি। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা চালায়। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।”
নাহিদ দাবি করেন, “৫ই অগাস্টের পরে অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা এখন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। ৫ই অগাস্টের পর বহুবার বলেছি, আমরা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় জুলাই গণহত্যার বিচার চাই। কিন্তু ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তারাও কোর্ট থেকে জামিন নিচ্ছে বা থানা থেকে পালাচ্ছে।”
প্রশাসনের নানা স্তরে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ও দুর্নীতিবাজরা বসে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গোপালগঞ্জে জড়ো হয়েছিল।”
তিনি জানান, “প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে নির্দেশ দিয়েছে, সকালের নাশকতার পরেও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়ে আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করি। পদযাত্রা করিনি, কেবল পথসভা করেছি। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের কর্মীদের আসতে দেওয়া হয়নি, বাস আটকে দেওয়া হয়েছে। তারপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষ করি। কিন্তু ফেরার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালানো হয়।”
তিনি বলেন, “আমরা কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করি না, প্রত্যাশাও করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় শাস্তি দিতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিত, তাহলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।”
শেষে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমরা গোপালগঞ্জে যাবো। গিয়েছি, শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি — মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দেবো না। আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাবো। জীবিত থাকলে প্রতিটি উপজেলায়, প্রতিটি গ্রামে কর্মসূচি করবো। গোপালগঞ্জের প্রতিটি ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থিদের হবে।”
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার জন্য প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সারা দেশে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে হবে।”
এর আগের দিন এনসিপির সমাবেশ ঘিরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোপালগঞ্জ। টানা পাঁচ ঘণ্টার ওই সংঘাতে অন্তত চারজন নিহত হন। পরে পুলিশের কার্যালয়ে আটকা পড়া এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ ছাড়েন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। ওই রাতেই খুলনায় গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এনসিপি নেতারা। সেখানে নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, গোপালগঞ্জে “মুজিববাদীরা” জঙ্গি কায়দায় হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
এরপর বৃহস্পতিবার ফেইসবুক পোস্টে নাহিদ লিখেছেন, “গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করবো। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবো।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাইনি। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা চালায়। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।”
নাহিদ দাবি করেন, “৫ই অগাস্টের পরে অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা এখন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। ৫ই অগাস্টের পর বহুবার বলেছি, আমরা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় জুলাই গণহত্যার বিচার চাই। কিন্তু ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তারাও কোর্ট থেকে জামিন নিচ্ছে বা থানা থেকে পালাচ্ছে।”
প্রশাসনের নানা স্তরে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ও দুর্নীতিবাজরা বসে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গোপালগঞ্জে জড়ো হয়েছিল।”
তিনি জানান, “প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে নির্দেশ দিয়েছে, সকালের নাশকতার পরেও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়ে আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করি। পদযাত্রা করিনি, কেবল পথসভা করেছি। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের কর্মীদের আসতে দেওয়া হয়নি, বাস আটকে দেওয়া হয়েছে। তারপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষ করি। কিন্তু ফেরার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালানো হয়।”
তিনি বলেন, “আমরা কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করি না, প্রত্যাশাও করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় শাস্তি দিতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিত, তাহলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।”
শেষে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমরা গোপালগঞ্জে যাবো। গিয়েছি, শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি — মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দেবো না। আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাবো। জীবিত থাকলে প্রতিটি উপজেলায়, প্রতিটি গ্রামে কর্মসূচি করবো। গোপালগঞ্জের প্রতিটি ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থিদের হবে।”