‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে।
রোববার (২৭ জুলাই) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এই আদেশ দেন। আদালতের এজলাসে দাঁড়িয়ে ইনু বলেন,
> “আদালতের মাধ্যমে জেল, ফাঁস যা দেন, তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু আমার মামলার বিষয়বস্তু পত্র-পত্রিকায় আগেই দেখেছি। বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে বিচার করে ফেলছে দুদক।”
সকাল থেকে হাজতে, নিরাপত্তাহীনতায় সাবেক মন্ত্রী
সকাল ৯টায় পুলিশ ইনুকে আদালতে হাজির করলে তাকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সাড়ে ১১টার দিকে এজলাসে তোলা হয় তাকে।
আদালতে ইনুর আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিম অভিযোগ করেন, হাজতখানায় ইনুকে প্রায় ৫০ জন সাধারণ আসামির সঙ্গে রাখা হয়েছে, যা ‘চরম নিরাপত্তাহীনতা’র বিষয়।
তিনি বলেন,
> “এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে সাধারণ আসামিদের ভিড়ে রাখা যুক্তিযুক্ত নয়। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আলাদা হাজতখানা থাকা প্রয়োজন।”
বিচারকের ক্ষোভ: বিচার ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হয়নি
আদালতের বিচারকও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
> “অনেক সংস্থার বড় বড় ভবন হয়েছে, কিন্তু বিচার বিভাগের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এখানে আইনজীবীদের বসার জায়গাও নেই, টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই। আমাদের আদালতের ভবনটাও নিজের না, এটা জেলা জজ আদালতের ভবন।”
তিনি আরও বলেন,
> “আইনমন্ত্রী নিজেও এই আদালতে প্র্যাকটিস করেছেন। সেদিন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এসেছিলেন। তাকেও বলেছি—বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করলে এই ভোগান্তি হতো না।”
বিচারক জানান, ডিজিটাল কাঠামো থাকলে আসামিদের আদালতে আনতে হতো না, ভিডিও কলে শুনানি সম্ভব হতো।
ইনুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ
শুনানির একপর্যায়ে বিচারক ইনুর বক্তব্য থামিয়ে দিয়ে বলেন,
> “আপনাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে। আজ শুধু গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি।”
পরে বিচারক দুদকের করা গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এজলাস থেকে নামার সময় ইনু বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন,
> “আপনি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এজলাসের ব্যবস্থা করায় ধন্যবাদ।”
অভিযোগ কী?
দুদকের আবেদনে বলা হয়, সাবেক তথ্যমন্ত্রী ইনু ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের’ মালিক হয়েছেন। এছাড়া, তার চারটি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার ১৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে।
আরেক মামলায় তার স্ত্রী আফরোজা হকের বিরুদ্ধেও ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪ টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক বলছে, ইনুর উপার্জিত অর্থ দিয়েই তার স্ত্রী এসব সম্পদ অর্জন করেছেন।
গত বছরের ২৬ আগস্ট পুলিশ ইনুকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৬ মার্চ দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এরপর ইনুকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানায় সংস্থাটি।
---
রোববার, ২৭ জুলাই ২০২৫
‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে।
রোববার (২৭ জুলাই) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এই আদেশ দেন। আদালতের এজলাসে দাঁড়িয়ে ইনু বলেন,
> “আদালতের মাধ্যমে জেল, ফাঁস যা দেন, তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু আমার মামলার বিষয়বস্তু পত্র-পত্রিকায় আগেই দেখেছি। বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে বিচার করে ফেলছে দুদক।”
সকাল থেকে হাজতে, নিরাপত্তাহীনতায় সাবেক মন্ত্রী
সকাল ৯টায় পুলিশ ইনুকে আদালতে হাজির করলে তাকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সাড়ে ১১টার দিকে এজলাসে তোলা হয় তাকে।
আদালতে ইনুর আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিম অভিযোগ করেন, হাজতখানায় ইনুকে প্রায় ৫০ জন সাধারণ আসামির সঙ্গে রাখা হয়েছে, যা ‘চরম নিরাপত্তাহীনতা’র বিষয়।
তিনি বলেন,
> “এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে সাধারণ আসামিদের ভিড়ে রাখা যুক্তিযুক্ত নয়। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আলাদা হাজতখানা থাকা প্রয়োজন।”
বিচারকের ক্ষোভ: বিচার ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হয়নি
আদালতের বিচারকও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
> “অনেক সংস্থার বড় বড় ভবন হয়েছে, কিন্তু বিচার বিভাগের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এখানে আইনজীবীদের বসার জায়গাও নেই, টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই। আমাদের আদালতের ভবনটাও নিজের না, এটা জেলা জজ আদালতের ভবন।”
তিনি আরও বলেন,
> “আইনমন্ত্রী নিজেও এই আদালতে প্র্যাকটিস করেছেন। সেদিন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এসেছিলেন। তাকেও বলেছি—বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করলে এই ভোগান্তি হতো না।”
বিচারক জানান, ডিজিটাল কাঠামো থাকলে আসামিদের আদালতে আনতে হতো না, ভিডিও কলে শুনানি সম্ভব হতো।
ইনুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ
শুনানির একপর্যায়ে বিচারক ইনুর বক্তব্য থামিয়ে দিয়ে বলেন,
> “আপনাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে। আজ শুধু গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি।”
পরে বিচারক দুদকের করা গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এজলাস থেকে নামার সময় ইনু বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন,
> “আপনি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এজলাসের ব্যবস্থা করায় ধন্যবাদ।”
অভিযোগ কী?
দুদকের আবেদনে বলা হয়, সাবেক তথ্যমন্ত্রী ইনু ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের’ মালিক হয়েছেন। এছাড়া, তার চারটি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার ১৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে।
আরেক মামলায় তার স্ত্রী আফরোজা হকের বিরুদ্ধেও ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪ টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক বলছে, ইনুর উপার্জিত অর্থ দিয়েই তার স্ত্রী এসব সম্পদ অর্জন করেছেন।
গত বছরের ২৬ আগস্ট পুলিশ ইনুকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৬ মার্চ দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এরপর ইনুকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানায় সংস্থাটি।
---