তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য না হলে দেশ দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তায় পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তিনি এই বক্তব্য দেন।
আখতার হোসেন বলেন, “ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া কী হবে, সেটিই বাংলাদেশের রাজনীতিতে গভীর সংকট তৈরি করেছে। আমরা দেখেছি, অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলায় একমত হয়েছিল এবং সে ব্যবস্থায় কয়েকটি নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে জুডিশিয়ারিকে ব্যবহার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধান থেকে বাদ দেন।”
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের বিষয়ে একমত হলেও কীভাবে সেই সরকার গঠিত হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। আমরা আগের মতো ত্রয়োদশ সংশোধনীতে থাকা সাবেক বিচারপতিদের বাধ্যতামূলকভাবে প্রধান উপদেষ্টা করার বিধান রাখার পক্ষে নই।”
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে এবার বাছাই কমিটির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি।
যদি ঐকমত্যে পৌঁছানো না যায়, তাহলে ‘র্যাঙ্কড চয়েজ ভোটিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এতে উল্লেখিত পাঁচজনের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের একজন করে বিচারপতি যুক্ত হয়ে মোট সাতজন সদস্য ভোট দেবেন। বিচারপতিরা প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবেন না, তারা শুধু ভোট দেবেন।
এ প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দিয়ে আখতার হোসেন বলেন, “আমাদের মনে হয়েছে, সংসদে পাঠানোর চেয়ে এই পদ্ধতি বেশি কার্যকর। কারণ সংসদে ঐকমত্যে পৌঁছানো কঠিন।”
তিনি জানান, বিএনপি বাছাই কমিটিতে ঐকমত্য না হলে বিষয়টি সংসদে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এনসিপির মতে, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি এত গুরুত্বপূর্ণ যে, এ ফোরামেই বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। তা না হলে এটি দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তার দিকে যাবে।”
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, “এটি এখনও খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। দলীয়ভাবে আমরা তা পর্যালোচনা করছি। খসড়ায় মৌলিক সংস্কারের প্রতিটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত দেখতে চাই। যদি বাদ পড়ে, তবে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব—সই করব কি না।”
তিনি জানান, আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে ‘লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার’ (এলএফও) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যে সংস্কারগুলো রাজনৈতিক দলগুলো সম্মিলিতভাবে গ্রহণ করেছে, তা যেন ভবিষ্যতে কোনো সরকার উপেক্ষা করতে না পারে, সেই নিশ্চয়তাও চাওয়া হয়েছে।
সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান পুনর্লিখন করা গেলে তা সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে সংস্কারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন ভবিষ্যতে প্রণীত না হয়, এমন নিশ্চয়তা বিধানের কথাও আমরা বলেছি।”
সংলাপের শেষ দিকে আখতার হোসেন বলেন, “আমরা চাই, মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব এই সনদ বাস্তবায়নের পথে যাওয়া হোক। দীর্ঘ বিতর্কে যেতে চাই না।”
তিনি জানান, দলীয়ভাবে আলোচনা শেষে খুব শিগগিরই জুলাই সনদ নিয়ে আনুষ্ঠানিক অবস্থান কমিশনে জমা দেওয়া হবে এবং পরে তা সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করা হবে।
মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য না হলে দেশ দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তায় পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তিনি এই বক্তব্য দেন।
আখতার হোসেন বলেন, “ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া কী হবে, সেটিই বাংলাদেশের রাজনীতিতে গভীর সংকট তৈরি করেছে। আমরা দেখেছি, অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলায় একমত হয়েছিল এবং সে ব্যবস্থায় কয়েকটি নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে জুডিশিয়ারিকে ব্যবহার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধান থেকে বাদ দেন।”
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের বিষয়ে একমত হলেও কীভাবে সেই সরকার গঠিত হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। আমরা আগের মতো ত্রয়োদশ সংশোধনীতে থাকা সাবেক বিচারপতিদের বাধ্যতামূলকভাবে প্রধান উপদেষ্টা করার বিধান রাখার পক্ষে নই।”
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে এবার বাছাই কমিটির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি।
যদি ঐকমত্যে পৌঁছানো না যায়, তাহলে ‘র্যাঙ্কড চয়েজ ভোটিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এতে উল্লেখিত পাঁচজনের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের একজন করে বিচারপতি যুক্ত হয়ে মোট সাতজন সদস্য ভোট দেবেন। বিচারপতিরা প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবেন না, তারা শুধু ভোট দেবেন।
এ প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দিয়ে আখতার হোসেন বলেন, “আমাদের মনে হয়েছে, সংসদে পাঠানোর চেয়ে এই পদ্ধতি বেশি কার্যকর। কারণ সংসদে ঐকমত্যে পৌঁছানো কঠিন।”
তিনি জানান, বিএনপি বাছাই কমিটিতে ঐকমত্য না হলে বিষয়টি সংসদে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এনসিপির মতে, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি এত গুরুত্বপূর্ণ যে, এ ফোরামেই বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। তা না হলে এটি দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তার দিকে যাবে।”
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, “এটি এখনও খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। দলীয়ভাবে আমরা তা পর্যালোচনা করছি। খসড়ায় মৌলিক সংস্কারের প্রতিটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত দেখতে চাই। যদি বাদ পড়ে, তবে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব—সই করব কি না।”
তিনি জানান, আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে ‘লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার’ (এলএফও) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যে সংস্কারগুলো রাজনৈতিক দলগুলো সম্মিলিতভাবে গ্রহণ করেছে, তা যেন ভবিষ্যতে কোনো সরকার উপেক্ষা করতে না পারে, সেই নিশ্চয়তাও চাওয়া হয়েছে।
সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান পুনর্লিখন করা গেলে তা সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে সংস্কারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন ভবিষ্যতে প্রণীত না হয়, এমন নিশ্চয়তা বিধানের কথাও আমরা বলেছি।”
সংলাপের শেষ দিকে আখতার হোসেন বলেন, “আমরা চাই, মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব এই সনদ বাস্তবায়নের পথে যাওয়া হোক। দীর্ঘ বিতর্কে যেতে চাই না।”
তিনি জানান, দলীয়ভাবে আলোচনা শেষে খুব শিগগিরই জুলাই সনদ নিয়ে আনুষ্ঠানিক অবস্থান কমিশনে জমা দেওয়া হবে এবং পরে তা সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করা হবে।