alt

রাজনীতি

জুলাই আন্দোলনে ছাত্রশিবিরের ‘নির্দেশে’ কাজ করার সাদিক কায়েমের দাবীকে ‘মিথ্যাচার’ বললেন নাহিদ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

জুলাই অভ্যুত্থান এবং তার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গঠন প্রক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘নির্দেশে’ কাজ করার তথ্যকে ‘মিথ্যাচার’ আখ্যায়িত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার নিজের ফেইসবুক পেইজে এক দীর্ঘ পোস্টে নাহিদ বলেন, “শিবির নেতা সাদিক কায়েম সম্প্রতি একটা টকশোতে বলেছেন, ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল। শিবিরের ইনস্ট্রাকশনে আমরা কাজ করতাম। এটা মিথ্যাচার।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারির নেতা নাহিদ ২০২৩ সালে অক্টোবরে আত্মপ্রকাশ করা গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব ছিলেন।

তিনি লিখেছেন, ‘গুরুবার আড্ডা পাঠচক্রের সঙ্গে জড়িত একটি অংশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা একটা অংশ, সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা স্টাডি সার্কেল যুক্ত হয়ে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়েছিল।

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/nahid-islam-fb-post-310725-03-1753952473%20%281%29.jpg

সে সময় শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও তারা ছাত্রশক্তির রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল না বলে নাহিদের দাবি।

তিনি বলেন, “আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করছি। ফলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সকল পক্ষের সাথেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সাথেও যোগাযোগ ছিল।

“যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহযোগিতা করা মানে এই না যে, তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।”

আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি ইসলামী ছাত্র শিবির। তবে জামায়াতে ইসলামীর এ ছাত্র সংগঠন যে গোপনে ঠিক সক্রিয় ছিল, তা প্রকাশ্যে আসে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সাদিক কায়েম ২১ সেপ্টেম্বর এক ফেইসবুক পোস্টে জানান, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি।

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/nahid-islam-fb-post-310725-02-1753952461%20%281%29.jpg

সমন্বয়কের তালিকায় নাম না থাকলেও জুলাই মাসে চলা ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারেই ছিলেন সাদিক কায়েম। তালিকায় নাম থাকা সমন্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতেও তাকে দেখা যায় সে সময়।

সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে সাদিক কায়েম বলেন, ২০১৭ সাল থেকে লম্বা সময় ধরে যখন তার যে পদ ছিল, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আর মাহফুজ আলমরা তা জানতেন।

“পরিচয় জেনে কো-অর্ডিনেশন করে আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করেছি। সুতরাং এখানে পরিচয় গোপন করার কিছু নেই। ওই সময়ে পরিচয় ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মত পরিস্থিতি ছিল না যে কারণে শিক্ষার্থীদের সকল দাবির সাথে ছিলাম কিন্তু ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মতো অবস্থা ছিল না। কারণ আমাদের মেরে ফেলা বৈধ ছিল।”

তিনি এও বলেন, “যখন ছাত্র অধিকার পরিষদ হল, এরপরে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিলুপ্তি। যখন ক্যাম্পাসে কিছু নেই, ছাত্রশক্তি গঠন প্রক্রিয়া। এ গঠন প্রক্রিয়ার সাথে আমরা সরাসরি যুক্ত ছিলাম। এবং এটা নিয়ে দফায় দফায় আমাদের মিটিং হয়েছে।”

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/nahid-islam-fb-post-310725-01-1753952451%20%281%29.jpg

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সূচনাপূর্ব নিয়ে তার ভাষ্য, “৫ জুন নাহিদ, আসিফ, মাহফুজ ওরা আমাকে ফোন করেছে আন্দোলনের বিষয়ে কী করা যায়। আমরা যেভাবে ডিরেকশন দিয়েছি সেই কো-অর্ডিনেশনের মাধ্যমে কাজগুলো হয়েছে। তারা ব্যক্তি সাদিক কায়েমের কাছে আসেনি। তারা ঢাবি শাখা শিবিরের সভাপতির কাছে এসেছিল।”

তবে নাহিদ ইসলাম বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের শুরুতে শিবির নেতা সাদিক কায়েম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বের কোনো পর্যায়ে ছিলেন না।

তিনি আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক ছিলেন না’ মন্তব্য করে এনসিপির আহ্বায়ক লিখেছেন, “৫ই অগাস্ট থেকে এই পরিচয় সে ব্যবহার করেছে। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে সাদিক কায়েমকে ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়।”

অভ্যুত্থানে শুধু শিবির নেতৃত্ব ‘দেয়নি’ মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, “সাদিক কায়েমরা অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা করেছে, এই অভ্যুত্থানে ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিয়েছে। আমরা সামনে শুধু পোস্টার ছিলাম।

“অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করে নাই। কিন্তু, এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক নয়, শিবিরের ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশনও হয় নাই। আমরা সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই সিদ্ধান্ত নিতাম।”

মির্জা ফখরুলের কথা ‘সত্য নয়’

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জাতীয় সরকার গঠনে প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও ফেইসবুক পোস্টে দাবি করেছেন নাহিদ ইসলাম।

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/zulkarnain-saer-fb-post-310725-04-1753952488%20%281%29.jpg

সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ছাত্রদের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার গঠনে কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।”

সেই বক্তব্য ‘সত্যি নয়’ দাবি করে নাহিদ লিখেছেন, “৫ই অগাস্ট রাতের প্রেস ব্রিফিংয়ে আমরা বলেছিলাম আমরা অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার করতে চাই। সেই প্রেস ব্রিফিংয়ের পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং হয়।

“সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারেক রহমান এ প্রস্তাবে সম্মত হননি এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাজেশন দেন।”

সে সময় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা হয় জানিয়ে নাহিদ লিখেছেন, “৭ই অগাস্ট ভোরবেলা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বাসায় আমরা উনার সাথে অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আলোচনা করি।”

উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেবার আগে তারেক রহমানের সাথে আরেকটি বৈঠকে প্রস্তাবিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা বা পর্যালোচনা করার কথাও নাহিদ লিখেছেন।

‘সায়েররা আর্মি ক্যু করতে চেয়েছিল’

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ২ অগাস্ট রাতে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের একটি ‘আর্মি ক্যু করে সামরিক বাহিনীর এক অংশের হাতে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলেন’ বলেও ওই ফেইসবুক পোস্টে দাবি করেছেন নাহিদ ইসলাম।

তিনি লিখেছেন, “এ উদ্দেশ্যে কথিত সেইফ হাউজে থাকা ছাত্র সমন্বয়কদের চাপ প্রয়োগ করা হয়, থ্রেইট করা হয়, যাতে সে রাতে ফেসবুকে তারা সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করে আর আমাদের সাথে যাতে আর কোনো যোগাযোগ না রাখে।”

“রিফাতদের বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে। আমাদের বক্তব্য ছিল, একদফার ঘোষণা মাঠ থেকে জনগণের মধ্য থেকে দিতে হবে।”

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/nahid-islam-fb-post-310725-03-1753952473%20%281%29.jpg

নাহিদ লিখেছেন, “আমাদের ভিতর প্রথম থেকে এটা স্পষ্ট ছিল যে, ক্ষমতা কোনোভাবে সেনাবাহিনী বা সেনাবাহিনী সমর্থিত কোনো গ্রুপের কাছে দেওয়া যাবে না। এতে আরেকটা এক-এগারো হবে এবং আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে এবং আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

“এটাকে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থান হিসেবে সফল করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সামনে আগাতে হবে। ৫ই অগাস্ট থেকে আমরা এ অবস্থান ব্যক্ত করে গিয়েছি।”

তিনি বলেন, “৫ই অগাস্টের পর সায়েরগং বারবার পাল্টা নেতৃত্ব দাঁড় করাতে চেষ্টা করেছে। সেক্ষেত্রে সাদিক কায়েমদেরও ব্যবহার করেছে। এবং তারা ব্যবহৃতও হয়েছে। সায়ের গংদের এ চেষ্টা অব্যাহত আছে।”

উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, “কল রেকর্ড ফাঁস, সার্ভেইলেন্স, চরিত্রহনন, অপপ্রচার, প্রপাগান্ডা হেন কোনো কাজ নাই হচ্ছে না। বাংলাদেশে সিটিং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত অপপ্রচার হচ্ছে এ দেশের ইতিহাসে এরকম কখনো হইছে কিনা জানা নাই। কিন্তু মিথ্যার উপর দিয়ে বেশিদিন টিকা যায় না। এরাও টিকবে না।”

নাহিদের এই পোস্ট নিয়ে ফেইসবুকে দুই দফা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জুলকারনাইন সায়ের। প্রথম পোস্টে নাহিদের ফেইসবুক পোস্ট শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “ছেলেটা কি সকাল সকাল গঞ্জিকা মেরে দিলো?”

১৪ মিনিট পর আরেক পোস্টে সাদিক কায়েমের পক্ষে দাঁড়িয়ে তিনি লিখেছেন, “জুলাই আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিলো, এবং ৫ই আগস্ট ২০২৪ পর এখনো পর্যন্ত যেই ছেলেটার নামে একটাও অসততার অভিযোগ আসেনি, তাঁর নাম Md Abu Shadik

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/zulkarnain-saer-fb-post-310725-05-1753952498%20%281%29.jpg

“স্বাভাবিকভাবেই তাকে ও তার শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে অনেকে মুখরোচক চটকদার আলাপ তৈরি করবে। কিন্তু এসব আলাপ তৈরি করে কি নিজেদের গোপনতম সত্য লুকানো সম্ভব হবে?”

তৌকির আহমেদ নামের একজন সেই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, “কিন্তু আপনার নামে দেওয়া অভিযোগ এর ব্যাপারে কি বলবেন। গুরুতর অভিযোগ!”

ছবি

সাদিক কায়েম অভ্যুত্থানের ‘হিস্যা চাওয়াতেই সমস্যা’ হয়েছে: কাদের

ছবি

চার মূলনীতি: ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক বর্জন ৪ বাম দলের, জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত পরে

ছবি

নির্বাচন বিলম্বে ইউনূসের সম্মান ক্ষুণ্নের সম্ভাবনা থাকবে: ফখরুল

ছবি

আইনি ভিত্তি ছাড়া সই নয়, হুঁশিয়ারি জামায়াতের

ছবি

৬০ জেলার সফর শেষে ঢাকায় এনসিপি

ছবি

জি এম কাদেরের কাজে নিষেধাজ্ঞা, ফিরছেন জাপার অব্যাহতি পাওয়া ১০ নেতা, আদালতের আদেশ

ছবি

ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্যানেল গড়ার ঘোষণা উমামা ফাতেমার

ছবি

৩ আগস্ট নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার: নরসিংদীতে নাহিদ

ছবি

জামায়াত আমিরের হার্টে তিনটি ব্লক, হাসপাতালে ভর্তি

ছবি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক থাকার আহ্বান তারেক রহমানের

ছবি

নির্বাচন হলে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ নিশ্চিত: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান

ছবি

২৩-২৬ দফায় ছাত্র-অভ্যুত্থান: জাতীয় ঐকমত্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ খসড়া বিতরণ

ছবি

রাউজানে সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, গিয়াস কাদেরের পদ স্থগিত

ছবি

বিএনপির শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ড্যাবের ৮ চিকিৎসককে অব্যাহতি

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিষ্পত্তি না হলে জাতীয় অনিশ্চয়তা বাড়বে :আখতার হোসেন

ছবি

বিচার না হলে নির্বাচন নয়, হুঁশিয়ারি : শফিকুর রহমানের

ছবি

আলোচনা ছাড়াই জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশে এনসিপির বিরোধিতা

ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করবে ইসি আগস্টে

ছবি

মানুষের প্রয়োজনে না এলে সেই সংস্কার কাজে আসবে না: মির্জা ফখরুল

স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতা বেরিয়ে এসেছে: আমির খসরু

ছবি

“শেখ হাসিনাসহ পালিয়ে যাওয়া দুর্বৃত্তদের কেন পুশইন নয়?”—রিজভীর প্রশ্ন

ছবি

গণ–অভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনও হতো না—জামালপুরে : নাহিদ ইসলাম

ছবি

সমন্বয়কদের গ্রেপ্তারে ‘বেদনায় নীল’ ফখরুল, ক্ষোভ জানালেন সরকারের ভূমিকা নিয়ে

ছবি

ভোটের আগে নিরাপত্তা জোরদারে প্রশাসনে রদবদলের সিদ্ধান্ত

ছবি

নির্বাচন সামনে, সেনা-পুলিশ সমন্বয় জোরদারে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ

জাতীয় ঐকমত্য সংলাপে বিএনপির ওয়াকআউট, ফের যোগদান; ফায়ার অ্যালার্মে আলোচনায় বিরতি

ছবি

হত‌্যা মামলায় আমু-‌গোলাপ‌কে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ

ছবি

ভোটে এআই অপব্যবহার ঠেকাতে নতুন বিধি চায় দলগুলো, ইসির হাতে ৪২ প্রস্তাব

ছবি

এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, দুই থানার দায় ঠেলাঠেলি

ছবি

জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের আগেই ভোট নয়, দাবি এনসিপির – নারী আসন ও নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত বিএনপি-জামায়াতের

ছবি

১২টি সংস্কারে ঐকমত্য, মূলনীতি নিয়ে দ্বিধা: ঐকমত্য কমিশন

ছবি

নির্বাচন এড়িয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা অগ্রহণযোগ্য: আমীর খসরু

ছবি

প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তির মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ১০ বছর, দলগুলো একমত

ছবি

কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটি স্থগিত

ছবি

‘পুরোনো আইন নয়, নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে’—নাহিদ ইসলাম

ছবি

চাঁদাবাজির মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাসহ চারজন ৭ দিনের রিমান্ডে

tab

রাজনীতি

জুলাই আন্দোলনে ছাত্রশিবিরের ‘নির্দেশে’ কাজ করার সাদিক কায়েমের দাবীকে ‘মিথ্যাচার’ বললেন নাহিদ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

জুলাই অভ্যুত্থান এবং তার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গঠন প্রক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘নির্দেশে’ কাজ করার তথ্যকে ‘মিথ্যাচার’ আখ্যায়িত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার নিজের ফেইসবুক পেইজে এক দীর্ঘ পোস্টে নাহিদ বলেন, “শিবির নেতা সাদিক কায়েম সম্প্রতি একটা টকশোতে বলেছেন, ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল। শিবিরের ইনস্ট্রাকশনে আমরা কাজ করতাম। এটা মিথ্যাচার।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারির নেতা নাহিদ ২০২৩ সালে অক্টোবরে আত্মপ্রকাশ করা গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব ছিলেন।

তিনি লিখেছেন, ‘গুরুবার আড্ডা পাঠচক্রের সঙ্গে জড়িত একটি অংশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা একটা অংশ, সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা স্টাডি সার্কেল যুক্ত হয়ে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়েছিল।

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/nahid-islam-fb-post-310725-03-1753952473%20%281%29.jpg

সে সময় শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও তারা ছাত্রশক্তির রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল না বলে নাহিদের দাবি।

তিনি বলেন, “আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করছি। ফলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সকল পক্ষের সাথেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সাথেও যোগাযোগ ছিল।

“যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহযোগিতা করা মানে এই না যে, তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।”

আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি ইসলামী ছাত্র শিবির। তবে জামায়াতে ইসলামীর এ ছাত্র সংগঠন যে গোপনে ঠিক সক্রিয় ছিল, তা প্রকাশ্যে আসে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সাদিক কায়েম ২১ সেপ্টেম্বর এক ফেইসবুক পোস্টে জানান, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি।

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/nahid-islam-fb-post-310725-02-1753952461%20%281%29.jpg

সমন্বয়কের তালিকায় নাম না থাকলেও জুলাই মাসে চলা ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারেই ছিলেন সাদিক কায়েম। তালিকায় নাম থাকা সমন্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতেও তাকে দেখা যায় সে সময়।

সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে সাদিক কায়েম বলেন, ২০১৭ সাল থেকে লম্বা সময় ধরে যখন তার যে পদ ছিল, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আর মাহফুজ আলমরা তা জানতেন।

“পরিচয় জেনে কো-অর্ডিনেশন করে আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করেছি। সুতরাং এখানে পরিচয় গোপন করার কিছু নেই। ওই সময়ে পরিচয় ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মত পরিস্থিতি ছিল না যে কারণে শিক্ষার্থীদের সকল দাবির সাথে ছিলাম কিন্তু ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মতো অবস্থা ছিল না। কারণ আমাদের মেরে ফেলা বৈধ ছিল।”

তিনি এও বলেন, “যখন ছাত্র অধিকার পরিষদ হল, এরপরে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিলুপ্তি। যখন ক্যাম্পাসে কিছু নেই, ছাত্রশক্তি গঠন প্রক্রিয়া। এ গঠন প্রক্রিয়ার সাথে আমরা সরাসরি যুক্ত ছিলাম। এবং এটা নিয়ে দফায় দফায় আমাদের মিটিং হয়েছে।”

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/nahid-islam-fb-post-310725-01-1753952451%20%281%29.jpg

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সূচনাপূর্ব নিয়ে তার ভাষ্য, “৫ জুন নাহিদ, আসিফ, মাহফুজ ওরা আমাকে ফোন করেছে আন্দোলনের বিষয়ে কী করা যায়। আমরা যেভাবে ডিরেকশন দিয়েছি সেই কো-অর্ডিনেশনের মাধ্যমে কাজগুলো হয়েছে। তারা ব্যক্তি সাদিক কায়েমের কাছে আসেনি। তারা ঢাবি শাখা শিবিরের সভাপতির কাছে এসেছিল।”

তবে নাহিদ ইসলাম বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের শুরুতে শিবির নেতা সাদিক কায়েম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বের কোনো পর্যায়ে ছিলেন না।

তিনি আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক ছিলেন না’ মন্তব্য করে এনসিপির আহ্বায়ক লিখেছেন, “৫ই অগাস্ট থেকে এই পরিচয় সে ব্যবহার করেছে। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে সাদিক কায়েমকে ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়।”

অভ্যুত্থানে শুধু শিবির নেতৃত্ব ‘দেয়নি’ মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, “সাদিক কায়েমরা অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা করেছে, এই অভ্যুত্থানে ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিয়েছে। আমরা সামনে শুধু পোস্টার ছিলাম।

“অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করে নাই। কিন্তু, এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক নয়, শিবিরের ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশনও হয় নাই। আমরা সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই সিদ্ধান্ত নিতাম।”

মির্জা ফখরুলের কথা ‘সত্য নয়’

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জাতীয় সরকার গঠনে প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও ফেইসবুক পোস্টে দাবি করেছেন নাহিদ ইসলাম।

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/zulkarnain-saer-fb-post-310725-04-1753952488%20%281%29.jpg

সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ছাত্রদের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার গঠনে কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।”

সেই বক্তব্য ‘সত্যি নয়’ দাবি করে নাহিদ লিখেছেন, “৫ই অগাস্ট রাতের প্রেস ব্রিফিংয়ে আমরা বলেছিলাম আমরা অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার করতে চাই। সেই প্রেস ব্রিফিংয়ের পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং হয়।

“সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারেক রহমান এ প্রস্তাবে সম্মত হননি এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাজেশন দেন।”

সে সময় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা হয় জানিয়ে নাহিদ লিখেছেন, “৭ই অগাস্ট ভোরবেলা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বাসায় আমরা উনার সাথে অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আলোচনা করি।”

উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেবার আগে তারেক রহমানের সাথে আরেকটি বৈঠকে প্রস্তাবিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা বা পর্যালোচনা করার কথাও নাহিদ লিখেছেন।

‘সায়েররা আর্মি ক্যু করতে চেয়েছিল’

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ২ অগাস্ট রাতে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের একটি ‘আর্মি ক্যু করে সামরিক বাহিনীর এক অংশের হাতে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলেন’ বলেও ওই ফেইসবুক পোস্টে দাবি করেছেন নাহিদ ইসলাম।

তিনি লিখেছেন, “এ উদ্দেশ্যে কথিত সেইফ হাউজে থাকা ছাত্র সমন্বয়কদের চাপ প্রয়োগ করা হয়, থ্রেইট করা হয়, যাতে সে রাতে ফেসবুকে তারা সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করে আর আমাদের সাথে যাতে আর কোনো যোগাযোগ না রাখে।”

“রিফাতদের বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে। আমাদের বক্তব্য ছিল, একদফার ঘোষণা মাঠ থেকে জনগণের মধ্য থেকে দিতে হবে।”

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/nahid-islam-fb-post-310725-03-1753952473%20%281%29.jpg

নাহিদ লিখেছেন, “আমাদের ভিতর প্রথম থেকে এটা স্পষ্ট ছিল যে, ক্ষমতা কোনোভাবে সেনাবাহিনী বা সেনাবাহিনী সমর্থিত কোনো গ্রুপের কাছে দেওয়া যাবে না। এতে আরেকটা এক-এগারো হবে এবং আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে এবং আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

“এটাকে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থান হিসেবে সফল করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সামনে আগাতে হবে। ৫ই অগাস্ট থেকে আমরা এ অবস্থান ব্যক্ত করে গিয়েছি।”

তিনি বলেন, “৫ই অগাস্টের পর সায়েরগং বারবার পাল্টা নেতৃত্ব দাঁড় করাতে চেষ্টা করেছে। সেক্ষেত্রে সাদিক কায়েমদেরও ব্যবহার করেছে। এবং তারা ব্যবহৃতও হয়েছে। সায়ের গংদের এ চেষ্টা অব্যাহত আছে।”

উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, “কল রেকর্ড ফাঁস, সার্ভেইলেন্স, চরিত্রহনন, অপপ্রচার, প্রপাগান্ডা হেন কোনো কাজ নাই হচ্ছে না। বাংলাদেশে সিটিং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত অপপ্রচার হচ্ছে এ দেশের ইতিহাসে এরকম কখনো হইছে কিনা জানা নাই। কিন্তু মিথ্যার উপর দিয়ে বেশিদিন টিকা যায় না। এরাও টিকবে না।”

নাহিদের এই পোস্ট নিয়ে ফেইসবুকে দুই দফা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জুলকারনাইন সায়ের। প্রথম পোস্টে নাহিদের ফেইসবুক পোস্ট শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “ছেলেটা কি সকাল সকাল গঞ্জিকা মেরে দিলো?”

১৪ মিনিট পর আরেক পোস্টে সাদিক কায়েমের পক্ষে দাঁড়িয়ে তিনি লিখেছেন, “জুলাই আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিলো, এবং ৫ই আগস্ট ২০২৪ পর এখনো পর্যন্ত যেই ছেলেটার নামে একটাও অসততার অভিযোগ আসেনি, তাঁর নাম Md Abu Shadik

https://sangbad.net.bd/images/2025/July/31Jul25/news/zulkarnain-saer-fb-post-310725-05-1753952498%20%281%29.jpg

“স্বাভাবিকভাবেই তাকে ও তার শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে অনেকে মুখরোচক চটকদার আলাপ তৈরি করবে। কিন্তু এসব আলাপ তৈরি করে কি নিজেদের গোপনতম সত্য লুকানো সম্ভব হবে?”

তৌকির আহমেদ নামের একজন সেই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, “কিন্তু আপনার নামে দেওয়া অভিযোগ এর ব্যাপারে কি বলবেন। গুরুতর অভিযোগ!”

back to top