সংবিধানের বিদ্যমান চার মূলনীতি বাদ দেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসেছে বাম ধারার চারটি দল।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে বৈঠক বর্জন করে বেরিয়ে এসে দলগুলোর নেতারা জানান, জাতীয় সনদে তারা স্বাক্ষর করবেন কি না, তা পরে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে ঐকমত্য কমিশন। তবে বৈঠকের শেষ দিকে সেখানে উপস্থিত বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্কসবাদী) এবং বাংলাদেশ জাসদের প্রতিনিধিরা বৈঠক বর্জন করেন।
বৈঠক বর্জনের পর এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন জানান, কমিশন সংবিধানের বিদ্যমান চার মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—বাদ দিয়ে নতুন পাঁচটি মূলনীতি সংযোজনের প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রস্তাবিত নতুন মূলনীতি—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি—যদিও গুরুত্বপূর্ণ, তবুও তারা মনে করেন, এগুলো বিদ্যমান চার মূলনীতির সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে; কোনো মূলনীতি বাদ দেওয়া উচিত নয়।
সিপিবি নেতা রুহীন হোসেন প্রিন্স বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি প্রসঙ্গে সংবিধানে ৭২-এর চার মূলনীতির সঙ্গে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি যুক্ত করা যেতে পারে।”
বাসদের বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, “সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনের কোনো পক্ষে আমরা না। ইতিমধ্যে বিভিন্ন টকশোতে, সেমিনারে বলা হয়েছে সংবিধান ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে, মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগের যুদ্ধ বলা হয়েছে, সংবিধানকে মুজিববাদী সংবিধান বলা হয়েছে। এসব বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি বহাল রেখে নতুন বিষয়গুলো যুক্ত করলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু মূলনীতি বাদ দিয়ে নতুন যুক্ত করা হলে তার দায় আমরা নেব না।”
সংবাদ সম্মেলনে জাসদ নেতা মুশতাক হোসেন বলেন, “কমিশনে প্রথম থেকেই বলে আসছি, এই ধরনের বিষয় ঐক্য নষ্ট করতে পারে। আমি এটাকে ডিনামাইট হিসেবে উল্লেখ করেছি।”
তিনি অভিযোগ করেন, “সুকৌশলে ঐকমত্য কমিশন বামপন্থীদের দিয়েই বিদ্যমান চার মূলনীতি বাতিল করতে চায়। ভবিষ্যতে জনগণ যদি কিছু পরিবর্তন চায়, তখন সেটা রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হতে হবে।”
রুহীন হোসেন প্রিন্স বলেন, “আমরা বলেছিলাম, এই বিষয়টি আলোচনার বাইরে রাখুন। কিন্তু তা রাখা হয়নি। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সুবিচার—সব থাকবে, তবে বলতে হবে, সংবিধানের মূল ভিত্তি চার মূলনীতি।”
বাম দলগুলোর অভিযোগ, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত বয়ান বাদ দিয়ে বিকৃত বয়ান উপস্থাপন করা হচ্ছে। মূলনীতি বাদ দেওয়ার চাপের মুখে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে থেকে যাওয়াটা তারা অসম্মানজনক বলেও মন্তব্য করেন।
বাসদ মার্কসবাদীর মাসুদ রানা বলেন, “মূলনীতি বাতিলের বিষয়ে যদি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়, তা আমরা মানতে পারি না।”
জাসদের মুশতাক হোসেন বলেন, “এই মৌলিক বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় না। আমরা বর্জন করেছি।”
সিপিবির প্রিন্স বলেন, “আমরা প্রথম দিন থেকেই বলেছি, নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে মৌলিক বিষয়ে অবস্থান গ্রহণ সম্ভব নয়। সেই কারণে আমরা বৈঠক বর্জন করেছি।”
শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫
সংবিধানের বিদ্যমান চার মূলনীতি বাদ দেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসেছে বাম ধারার চারটি দল।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে বৈঠক বর্জন করে বেরিয়ে এসে দলগুলোর নেতারা জানান, জাতীয় সনদে তারা স্বাক্ষর করবেন কি না, তা পরে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে ঐকমত্য কমিশন। তবে বৈঠকের শেষ দিকে সেখানে উপস্থিত বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্কসবাদী) এবং বাংলাদেশ জাসদের প্রতিনিধিরা বৈঠক বর্জন করেন।
বৈঠক বর্জনের পর এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন জানান, কমিশন সংবিধানের বিদ্যমান চার মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—বাদ দিয়ে নতুন পাঁচটি মূলনীতি সংযোজনের প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রস্তাবিত নতুন মূলনীতি—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি—যদিও গুরুত্বপূর্ণ, তবুও তারা মনে করেন, এগুলো বিদ্যমান চার মূলনীতির সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে; কোনো মূলনীতি বাদ দেওয়া উচিত নয়।
সিপিবি নেতা রুহীন হোসেন প্রিন্স বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি প্রসঙ্গে সংবিধানে ৭২-এর চার মূলনীতির সঙ্গে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি যুক্ত করা যেতে পারে।”
বাসদের বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, “সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনের কোনো পক্ষে আমরা না। ইতিমধ্যে বিভিন্ন টকশোতে, সেমিনারে বলা হয়েছে সংবিধান ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে, মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগের যুদ্ধ বলা হয়েছে, সংবিধানকে মুজিববাদী সংবিধান বলা হয়েছে। এসব বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি বহাল রেখে নতুন বিষয়গুলো যুক্ত করলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু মূলনীতি বাদ দিয়ে নতুন যুক্ত করা হলে তার দায় আমরা নেব না।”
সংবাদ সম্মেলনে জাসদ নেতা মুশতাক হোসেন বলেন, “কমিশনে প্রথম থেকেই বলে আসছি, এই ধরনের বিষয় ঐক্য নষ্ট করতে পারে। আমি এটাকে ডিনামাইট হিসেবে উল্লেখ করেছি।”
তিনি অভিযোগ করেন, “সুকৌশলে ঐকমত্য কমিশন বামপন্থীদের দিয়েই বিদ্যমান চার মূলনীতি বাতিল করতে চায়। ভবিষ্যতে জনগণ যদি কিছু পরিবর্তন চায়, তখন সেটা রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হতে হবে।”
রুহীন হোসেন প্রিন্স বলেন, “আমরা বলেছিলাম, এই বিষয়টি আলোচনার বাইরে রাখুন। কিন্তু তা রাখা হয়নি। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সুবিচার—সব থাকবে, তবে বলতে হবে, সংবিধানের মূল ভিত্তি চার মূলনীতি।”
বাম দলগুলোর অভিযোগ, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত বয়ান বাদ দিয়ে বিকৃত বয়ান উপস্থাপন করা হচ্ছে। মূলনীতি বাদ দেওয়ার চাপের মুখে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে থেকে যাওয়াটা তারা অসম্মানজনক বলেও মন্তব্য করেন।
বাসদ মার্কসবাদীর মাসুদ রানা বলেন, “মূলনীতি বাতিলের বিষয়ে যদি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়, তা আমরা মানতে পারি না।”
জাসদের মুশতাক হোসেন বলেন, “এই মৌলিক বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় না। আমরা বর্জন করেছি।”
সিপিবির প্রিন্স বলেন, “আমরা প্রথম দিন থেকেই বলেছি, নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে মৌলিক বিষয়ে অবস্থান গ্রহণ সম্ভব নয়। সেই কারণে আমরা বৈঠক বর্জন করেছি।”