জামায়াতে ইসলামীর প্রতি মুক্তিযুদ্ধবিরোধিতার দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ৩২ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে জামায়াত ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ভূমিকা ইতিহাসে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত।
বিবৃতিতে বলা হয়, “জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে জামায়াতে ইসলামী অখণ্ড পাকিস্তানের দাবিতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে, সভা-সমাবেশ করেছে। এমনকি ২৫ মার্চের গণহত্যার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে দলটির নেতারা। রাজাকার, আলবদরসহ নানা বাহিনিতে যুক্ত হয়ে ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও গণহত্যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছে জামায়াত নেতাকর্মীরা।”
নাগরিকরা অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার পরও জামায়াত ও তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে গেছে। তারা কখনও ক্ষমা চায়নি বা অনুশোচনার প্রকাশ ঘটায়নি, বরং উল্টো যুদ্ধাপরাধের ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে সবাই একসঙ্গে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটালেও, তার সুযোগ নিয়ে জামায়াত আবার রাজনীতিতে জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা পাকিস্তান আমলের ভাষা ও বয়ান ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা নিয়ে কথা বললেই ‘শাহবাগী’ ট্যাগ দিয়ে আবারও রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করছে।”
তারা বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির বিরল, যেখানে একটি দল জনগণের মুক্তিসংগ্রামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কোনো অনুশোচনা বা ক্ষমা ছাড়া অবাধে রাজনীতি করে।
একইসঙ্গে, ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিবৃতিদাতারা। তারা বলেন, “স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা হয়েছে, তার অনেকগুলোতে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অনেককে জোরপূর্বক মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। এসব মামলার নিরপেক্ষ পুনর্বিচার প্রয়োজন।”
তবে নাগরিকরা স্পষ্ট করে বলেন, “বিচার প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হলেও জামায়াতের নেতাকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ছিলেন, এ সত্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই।”
নাগরিকদের মতে, “জামায়াত যদি সত্যিকার অর্থেই নতুন রাজনীতির কথা বলে, তবে প্রথমেই তাদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধিতার দায় স্বীকার করতে হবে এবং শহীদদের আত্মত্যাগ ও সম্ভ্রমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে।”
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন—যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড ভ্যালি স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আজফার হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রায়হান রাইন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আ-আল মামুন, অধ্যাপক আর রাজী, লেখক সায়েমা খাতুন, কবি কাজল শাহনেওয়াজ, লেখক রাখাল রাহা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারুফ মল্লিক।
বিবৃতি পাঠিয়েছেন কবি অর্বাক আদিত্য ও সালাহ উদ্দিন শুভ্র।
বাকি স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন—অধ্যাপক সৌভিক রেজা, অধ্যাপক গোলাম সরওয়ার, শিল্পী দেবাশীষ চক্রবর্তী, নির্মাতা আশফাক নিপুণ, আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ, কথাসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন, লেখক গাজী তানজিয়া, তাসনিম আফরোজ ইমি, চিনু কবির, কবি ফেরদৌস আরা রুমী, বিথী ঘোষ, কবি মোহাম্মদ রোমেল, প্রকাশক সাঈদ বারী, মাহাবুব রাহমান, লেখক আরিফ রহমান, সোয়েব মাহমুদ, অস্ট্রিক আর্যু, সাদিক মাহবুব ইসলামসহ আরও অনেকে।
বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
জামায়াতে ইসলামীর প্রতি মুক্তিযুদ্ধবিরোধিতার দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ৩২ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে জামায়াত ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ভূমিকা ইতিহাসে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত।
বিবৃতিতে বলা হয়, “জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে জামায়াতে ইসলামী অখণ্ড পাকিস্তানের দাবিতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে, সভা-সমাবেশ করেছে। এমনকি ২৫ মার্চের গণহত্যার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে দলটির নেতারা। রাজাকার, আলবদরসহ নানা বাহিনিতে যুক্ত হয়ে ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও গণহত্যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছে জামায়াত নেতাকর্মীরা।”
নাগরিকরা অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার পরও জামায়াত ও তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে গেছে। তারা কখনও ক্ষমা চায়নি বা অনুশোচনার প্রকাশ ঘটায়নি, বরং উল্টো যুদ্ধাপরাধের ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে সবাই একসঙ্গে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটালেও, তার সুযোগ নিয়ে জামায়াত আবার রাজনীতিতে জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা পাকিস্তান আমলের ভাষা ও বয়ান ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা নিয়ে কথা বললেই ‘শাহবাগী’ ট্যাগ দিয়ে আবারও রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করছে।”
তারা বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির বিরল, যেখানে একটি দল জনগণের মুক্তিসংগ্রামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কোনো অনুশোচনা বা ক্ষমা ছাড়া অবাধে রাজনীতি করে।
একইসঙ্গে, ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিবৃতিদাতারা। তারা বলেন, “স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা হয়েছে, তার অনেকগুলোতে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অনেককে জোরপূর্বক মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। এসব মামলার নিরপেক্ষ পুনর্বিচার প্রয়োজন।”
তবে নাগরিকরা স্পষ্ট করে বলেন, “বিচার প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হলেও জামায়াতের নেতাকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ছিলেন, এ সত্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই।”
নাগরিকদের মতে, “জামায়াত যদি সত্যিকার অর্থেই নতুন রাজনীতির কথা বলে, তবে প্রথমেই তাদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধিতার দায় স্বীকার করতে হবে এবং শহীদদের আত্মত্যাগ ও সম্ভ্রমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে।”
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন—যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড ভ্যালি স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আজফার হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রায়হান রাইন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আ-আল মামুন, অধ্যাপক আর রাজী, লেখক সায়েমা খাতুন, কবি কাজল শাহনেওয়াজ, লেখক রাখাল রাহা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারুফ মল্লিক।
বিবৃতি পাঠিয়েছেন কবি অর্বাক আদিত্য ও সালাহ উদ্দিন শুভ্র।
বাকি স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন—অধ্যাপক সৌভিক রেজা, অধ্যাপক গোলাম সরওয়ার, শিল্পী দেবাশীষ চক্রবর্তী, নির্মাতা আশফাক নিপুণ, আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ, কথাসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন, লেখক গাজী তানজিয়া, তাসনিম আফরোজ ইমি, চিনু কবির, কবি ফেরদৌস আরা রুমী, বিথী ঘোষ, কবি মোহাম্মদ রোমেল, প্রকাশক সাঈদ বারী, মাহাবুব রাহমান, লেখক আরিফ রহমান, সোয়েব মাহমুদ, অস্ট্রিক আর্যু, সাদিক মাহবুব ইসলামসহ আরও অনেকে।