# হল কমিটি প্রকাশে ক্ষোভ ; বিক্ষোভ মিছিল
# কমিটিতে স্থান পেল প্রায় অর্ধশত ছাত্রলীগ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে একযোগে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তি সময়ে হল ও একাডেমিক পর্যায়ে সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রথম কোন সংগঠন হিসেবে একযোগে সব হল কমিটি প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। হল কমিটি বাতিলের আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। এছাড়াও হল কমিটি ঘোষণায় রোকেয়া হল ও ভিসি চত্বরে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
নতুন এ কমিটি প্রকাশের পর ছাত্রদলের অভ্যান্তরে শুরু হয় নানা বিতর্ক। হল কমিটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত পদধারী ছাত্রলীগ নেতার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদের অনেকে গণঅভ্যুত্থানে একদফার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং খালেদা জিয়াকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা ব্যক্তিরাও রয়েছে।
আজ শুক্রবার ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটিগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।
১৮টি হল কমিটি :
নতুন আহ্বায়ক কমিটি পাওয়া হলগুলোর মধ্যে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখার আহ্বায়ক মোঃ জাহিদুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রিজভী আলম এবং সদস্য সচিব জোবায়ের হোসেন। ৪৩ সদস্য বিশিষ্ট কবি জসীমউদদীন হল শাখার আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামিম, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল ওহেদ এবং সদস্য সচিব মেহেদী হাসান। ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট মাস্টারদা’ সূর্যসেন হল শাখার আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন প্রান্ত, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক লিয়ন মোল্যা এবং সদস্য সচিব মোঃ আবিদুর রহমান মিশু। ৫৪ সদস্য বিশিষ্ট বিজয় একাত্তর হল শাখার আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সুলতান মোঃ সাদমান সিদ্দিক এবং সদস্য সচিব সাকিব বিশ্বাস। ৫৪ সদস্য বিশিষ্ট শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখার আহ্বায়ক সাঈফ আল ইসলাম দীপ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রিনভী মোশাররফ এবং সদস্য সচিব মোঃ সিহাব হোসেন (শাহেদ)। ৬১ সদস্য বিশিষ্ট হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখার আহ্বায়ক আবু জার গিফারী ইফাত, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ তানভীর আহমেদ জিয়াম এবং সদস্য সচিব মনসুর আহমেদ রাফি। ৫৬ সদস্য বিশিষ্ট শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান আসিফ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সামসুল হক আনান এবং সদস্য সচিব শাহরিয়ার লিয়ন। ১৮ সদস্য বিশিষ্ট সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখার আহ্বায়ক তাওহিদুল ইসলাম (তাইমুন), সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সাকিব হোসেন এবং সদস্য সচিব সৈয়দ ইয়ানাথ ইসলাম। ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট স্যার এ এফ রহমান হল শাখার আহ্বায়ক ফেরদৌস সিদ্দিক সায়মন, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ মেহেদী হাসান মুন্না এবং সদস্য সচিব মোঃ মাহদীজ্জামান জ্যোতি। ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট জগন্নাথ হল শাখার আহ্বায়ক মধুসূদন কুন্ডু হৃষীকেশ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নিত্যানন্দ পাল এবং সদস্য সচিব প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখার আহ্বায়ক মোসাদ্দেক আল হক শান্ত, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান সৌরভ এবং সদস্য সচিব মোঃ জুনায়েদ আবরার। ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট ফজলুল হক মুসলিম হল শাখার আহ্বায়ন মোঃ আবিদ হাসনাত, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক বি এম ফাহিম শাহরিয়ার দীপ্ত এবং সদস্য সচিব মোঃ মেহেদী হাসান রুমী। ২৫ সদস্য বিশিষ্ট অমর একুশে হল শাখার আহ্বায়ক মোঃ আসাদুল হক আসাদ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ শাহনোমান জিওন এবং সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ। ৮ সদস্য বিশিষ্ট রোকেয়া হল শাখার আহ্বায়ক মোছাঃ শ্রাবণী আক্তার, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক শ্রাবন্তী হাসান বন্যা এবং সদস্য সচিব আনিকা বিনতে আশরাফ। ৫ সদস্য বিশিষ্ট শামসুন নাহার হল শাখার আহ্বায়ক তায়েবা হাসান বিথী, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নিতু রানী সাহা এবং সদস্য সচিব রাবেয়া খানম জেরিন। ৪ সদস্য বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল শাখার আহ্বায়ক মালিহা বিনতে খান (অবন্তী) এবং সদস্য সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস ইতি। ৩ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখার আহ্বায়ক নওশিন নাহার অথি, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক শারমিন খান এবং সদস্য সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস পুতল। ৭ সদস্য বিশিষ্ট কবি সুফিয়া কামাল হল শাখার আহ্বায়ক তাওহিদা সুলতানা, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক জাকিয়া সুলতানা আলো এবং সদস্য সচিব তাসনিয়া জান্নাত চৌধুরী।
ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
অভ্যুত্থান পরবর্তি সময়ে হল ও একাডেমিক পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও ছাত্রদলের এমন কমিটিতে ক্ষোভ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন ডেকে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। কিন্তু ছাত্রশিবির সর্বপ্রথম গুপ্তভাবে হলে ছাত্ররাজনীতির সূচনা করে। পরবর্তীতে ছাত্র ইউনিয়নও তাদের কমিটি ঘোষণা করে। আজ ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে আমরা সেই পূর্বের ধারার ছাত্ররাজনীতিতেই ফিরে গেলাম। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা শংকিত হলগুলোতে আবার গনরুম গেস্টরুমের সংস্কৃতি ফেরত আসবে। একইসাথে তিনি সকল ছাত্রসংগঠনকে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট এবং কনসার্নকে বিবেচনা করে একটি সহাবস্থানমূলক রূপরেখায় পৌছানোর জন্য আহ্বান জানান।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেঈমানি’বলে মন্তব্য করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। এক ফেসবুক পোস্টে ছাত্রদলের হল কমিটি বাতিলের আল্টিমেটাম দেন তিনি।
এছাড়াও হল কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভ মিছিলে ‘অপরাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘আতিকা গোছে যে পথে, তোরা যাবি সে পথে’, ‘আতিকার ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’সহ বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে একদল শিক্ষার্থী। বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শামিম হাসানের নেতৃত্বে হওয়া এই বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের হল কমিটি ঘোষণাকে হলে হলে ছাত্ররাজনীতির পুনর্বাসন ও জুলাই বিপ্লবের সাথে বিশ্বসঘাতকতা বলে দাবি করেন।
কমিটিতে স্থান পেল ৪২ ছাত্রলীগ নেতা
নতুন কমিটিতে ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে একাধিক পদধারীর বিরুদ্ধে। রোকেয়া হলের ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন বর্তমান হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোছাঃ শ্রাবণী আক্তার। একই হলের সদস্য সচিব আনিকা বিনতে আশরাফের সাথে ছাত্রলীগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগ আছে। বুয়েটের বিতর্কিক ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বীর সাথে তার ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
কুয়েত মৈত্রী হলের সদস্য সচিব পদধারী জান্নাতুল ফেরদৌস পুতুল ছাত্রলীগের সাথে ঘনিষ্ঠ ছিলেন, থাকতেন মিছিল র্যালির সামনের সারিতে। তিনি ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের কালচারাল টিমের সদস্য ছিলেন। কুয়েত-মৈত্রী হলে এটাচড হওয়া সত্ত্বেও তিনি অবৈধভাবে রোকেয়া হলের সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনের সাথে রাজনীতি করতেন।
ছাত্রলীগের সঞ্জীব-সাদ্দাম কমিটিতে উপ গণযোগাযোগ সম্পাদক পদে ছিলেন শামসুন্নাহার হল এর বর্তমান ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নিতু রানী সাহা।
সুফিয়া কামাল হলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পাওয়া জাকিয়া সুললতানা আলো সুফিয়া কামাল হলে এটাচড হওয়া সত্ত্বেও থাকতেন রোকেয়া হলে। ছাত্রলীগ নেত্রী সাজিয়া রহমান সিলভীর কাছের ছোটবোন হিসেবে ছাত্রলীগে পরিচিত ছিলেন তিনি।
নাহিদুজ্জামান শিপনের আপন ছোট ভাই মাহদীজ্জামান জ্যোতি দ্বিতীয় বর্ষে পড়েও ভাইয়ের ক্ষমতায় বাগিয়েছেন এফ রহমান হলের সদস্য সচিব পদ। তাছাড়া, হল ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইন হয়েছেন হলের যুগ্ম আহ্বায়ক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুমেন শাহরিয়ারের আস্থাভাজন হয়েও মুনতাহা মিথ যুগ্ম আহবায়ক পদ পান। বাদশাহ বিন ফরহাদ আলভি পান সদস্য পদ।
শহীদুল্লাহ হলের আহবায়ক হয়েছেন মোসাদ্দেক আল হক শান্ত, তার বাবা নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে। পুরো পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত। জীববিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে থাকা রাকিবুল হাসান সৌরভ পেয়েছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের সিনিয়র যুগ্ন-আহ্বায়ক পদ। ছাত্রলীগের ক্যান্ডিডেটদের সাথে নিয়ে ভিসিকে ফুল দেওয়া মো. আবিদ হাসনাত, ইমরান হোসেন হয়েছেন ফজলুল হক মুসলিম হলের আহ্বায়ক।
ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী রাকিব হাসান পেয়ছেন যুগ্ম আহবায়ক পদ।
জিয়াউর রহমান হলের রাজু শেখ খালেদা জিয়াকে কটুক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ। একই হলের ছাত্রলীগের পরিচিত মুখ মাহমুদ হাসান প্রলয় গ্যাং এর সক্রিয় সদস্য এবং হলের সবচেয়ে উগ্র ছাত্র নির্যাতনকারী ছিলেন। ৫ আগস্টের পরপর সম্মিলিত সিদ্ধান্তে হলের ছাত্রশিক্ষকরা তাকে বের করে দেয়। এখন সে জিয়া হল ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক। ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের সংসদীয় আসনভিত্তিক কমিটির সদস্য আজিজুল হাকিম ও তৌফিকুল ইসলাম প্রতিক, মাহিন আহমেদ কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক পদ পান।
মাস্টার দ্যা সূর্যসেন হলে ছাত্রলীগের মিছিলের নেতা আতিক মন্ডল ও মাহিদুল ইসলাম ফাহিম হয়েছেন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা আবু জর গিফারি ইফাত হয়েছেন আহ্বায়ক, ছাত্রলীগের সংসদীয় আসনভিত্তিক কমিটির সদস্য শিবলী রহমান পাভেল, ছাত্রলীগের ক্যান্ডিডেট এবং সৈকতের ক্যাডার মিরাজুল ইসলাম মিরাজের একান্ত আস্থাভাজন মেরাজ শাহরিয়ার অপু, ছাত্রলীগ কর্মী জনি প্রামাণিক, মহিবুল হাসান আকন্দ ও রোমান মিয়া পেয়েছেন হলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ।
জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী শাহরিয়ার লিয়ন হয়েছেন সদস্য সচিব। ছাত্রলীগের পদপ্রার্থী নেতা ফরিদের সহযোগী হাসনাত তারিক জীম ও ফেনী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সেক্রেটারির সাথে মিটিং করা হলের সক্রিয় কর্মী জিন্নাহ চৌধুরী যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেয়েছেন। মো. সজীব হোসেন
মো. সজীব হোসেন গেস্টরুমে জুনিয়রদের নির্যাতনকারীদের অন্যতম। রাত ২-৩ টার সময় জুনিয়রদের ডেকে সিগারেট আনতে পাঠানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ।
শেখ মুজিবুর রহমান হলের সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমান ও মোস্তফা হোসেন লিখন ও মোমিতুর রহমান পিয়াল পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ। ইমতিয়াজ আহমেদ হয়েছেন সদস্য। ছাত্রলীগের ঢাবি সভাপতি শয়নের রাজনীতি করা সাদমান বিন শাওন, হলের সভাপতি শান্তর আস্থাভাজন রোমন সরকার হয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক।
অমর একুশে হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী আব্দুল হামিদ পেয়েছেন হলের সদস্য সচিব পদ।
রাকিবুল হাসান রাকিব বিজয় একাত্তর হলের গেস্টরুমের ত্রাস ছিলেন। জুনিয়রদের জুতা নিতে তেড়ে আসায় জুতা রাকিব নামে পরিচিত পান। তিনি পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ। আরকানুল ইসলাম রূপক পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ। ২৪ সালের ৩ আগস্ট ‘এক দফার কবর দে’ ঘোষণা করে হল থেকে বহিস্কৃত আহমেদ জাবির মাহাম সদস্য পদ পান।
জগন্নাথ হলের সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মী ধ্রুব রয় পেয়েছেন সদস্য পদ।
তদন্ত কমিটি গঠন
ছাত্রদলে হল কমিটি নিয়ে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামী সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মাসুম বিল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাছির উদ্দিন শাওন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নূর আলম ভূঁইয়া ইমনকে সদস্য করে গঠন করা এ তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন পেশ করা নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫
# হল কমিটি প্রকাশে ক্ষোভ ; বিক্ষোভ মিছিল
# কমিটিতে স্থান পেল প্রায় অর্ধশত ছাত্রলীগ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে একযোগে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তি সময়ে হল ও একাডেমিক পর্যায়ে সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রথম কোন সংগঠন হিসেবে একযোগে সব হল কমিটি প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। হল কমিটি বাতিলের আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। এছাড়াও হল কমিটি ঘোষণায় রোকেয়া হল ও ভিসি চত্বরে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
নতুন এ কমিটি প্রকাশের পর ছাত্রদলের অভ্যান্তরে শুরু হয় নানা বিতর্ক। হল কমিটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত পদধারী ছাত্রলীগ নেতার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদের অনেকে গণঅভ্যুত্থানে একদফার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং খালেদা জিয়াকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা ব্যক্তিরাও রয়েছে।
আজ শুক্রবার ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটিগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।
১৮টি হল কমিটি :
নতুন আহ্বায়ক কমিটি পাওয়া হলগুলোর মধ্যে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখার আহ্বায়ক মোঃ জাহিদুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রিজভী আলম এবং সদস্য সচিব জোবায়ের হোসেন। ৪৩ সদস্য বিশিষ্ট কবি জসীমউদদীন হল শাখার আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামিম, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল ওহেদ এবং সদস্য সচিব মেহেদী হাসান। ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট মাস্টারদা’ সূর্যসেন হল শাখার আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন প্রান্ত, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক লিয়ন মোল্যা এবং সদস্য সচিব মোঃ আবিদুর রহমান মিশু। ৫৪ সদস্য বিশিষ্ট বিজয় একাত্তর হল শাখার আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সুলতান মোঃ সাদমান সিদ্দিক এবং সদস্য সচিব সাকিব বিশ্বাস। ৫৪ সদস্য বিশিষ্ট শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখার আহ্বায়ক সাঈফ আল ইসলাম দীপ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রিনভী মোশাররফ এবং সদস্য সচিব মোঃ সিহাব হোসেন (শাহেদ)। ৬১ সদস্য বিশিষ্ট হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখার আহ্বায়ক আবু জার গিফারী ইফাত, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ তানভীর আহমেদ জিয়াম এবং সদস্য সচিব মনসুর আহমেদ রাফি। ৫৬ সদস্য বিশিষ্ট শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান আসিফ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সামসুল হক আনান এবং সদস্য সচিব শাহরিয়ার লিয়ন। ১৮ সদস্য বিশিষ্ট সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখার আহ্বায়ক তাওহিদুল ইসলাম (তাইমুন), সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সাকিব হোসেন এবং সদস্য সচিব সৈয়দ ইয়ানাথ ইসলাম। ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট স্যার এ এফ রহমান হল শাখার আহ্বায়ক ফেরদৌস সিদ্দিক সায়মন, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ মেহেদী হাসান মুন্না এবং সদস্য সচিব মোঃ মাহদীজ্জামান জ্যোতি। ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট জগন্নাথ হল শাখার আহ্বায়ক মধুসূদন কুন্ডু হৃষীকেশ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নিত্যানন্দ পাল এবং সদস্য সচিব প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখার আহ্বায়ক মোসাদ্দেক আল হক শান্ত, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান সৌরভ এবং সদস্য সচিব মোঃ জুনায়েদ আবরার। ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট ফজলুল হক মুসলিম হল শাখার আহ্বায়ন মোঃ আবিদ হাসনাত, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক বি এম ফাহিম শাহরিয়ার দীপ্ত এবং সদস্য সচিব মোঃ মেহেদী হাসান রুমী। ২৫ সদস্য বিশিষ্ট অমর একুশে হল শাখার আহ্বায়ক মোঃ আসাদুল হক আসাদ, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ শাহনোমান জিওন এবং সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ। ৮ সদস্য বিশিষ্ট রোকেয়া হল শাখার আহ্বায়ক মোছাঃ শ্রাবণী আক্তার, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক শ্রাবন্তী হাসান বন্যা এবং সদস্য সচিব আনিকা বিনতে আশরাফ। ৫ সদস্য বিশিষ্ট শামসুন নাহার হল শাখার আহ্বায়ক তায়েবা হাসান বিথী, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নিতু রানী সাহা এবং সদস্য সচিব রাবেয়া খানম জেরিন। ৪ সদস্য বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল শাখার আহ্বায়ক মালিহা বিনতে খান (অবন্তী) এবং সদস্য সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস ইতি। ৩ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখার আহ্বায়ক নওশিন নাহার অথি, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক শারমিন খান এবং সদস্য সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস পুতল। ৭ সদস্য বিশিষ্ট কবি সুফিয়া কামাল হল শাখার আহ্বায়ক তাওহিদা সুলতানা, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক জাকিয়া সুলতানা আলো এবং সদস্য সচিব তাসনিয়া জান্নাত চৌধুরী।
ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
অভ্যুত্থান পরবর্তি সময়ে হল ও একাডেমিক পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও ছাত্রদলের এমন কমিটিতে ক্ষোভ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন ডেকে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। কিন্তু ছাত্রশিবির সর্বপ্রথম গুপ্তভাবে হলে ছাত্ররাজনীতির সূচনা করে। পরবর্তীতে ছাত্র ইউনিয়নও তাদের কমিটি ঘোষণা করে। আজ ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে আমরা সেই পূর্বের ধারার ছাত্ররাজনীতিতেই ফিরে গেলাম। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা শংকিত হলগুলোতে আবার গনরুম গেস্টরুমের সংস্কৃতি ফেরত আসবে। একইসাথে তিনি সকল ছাত্রসংগঠনকে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট এবং কনসার্নকে বিবেচনা করে একটি সহাবস্থানমূলক রূপরেখায় পৌছানোর জন্য আহ্বান জানান।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেঈমানি’বলে মন্তব্য করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। এক ফেসবুক পোস্টে ছাত্রদলের হল কমিটি বাতিলের আল্টিমেটাম দেন তিনি।
এছাড়াও হল কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভ মিছিলে ‘অপরাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘আতিকা গোছে যে পথে, তোরা যাবি সে পথে’, ‘আতিকার ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’সহ বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে একদল শিক্ষার্থী। বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শামিম হাসানের নেতৃত্বে হওয়া এই বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের হল কমিটি ঘোষণাকে হলে হলে ছাত্ররাজনীতির পুনর্বাসন ও জুলাই বিপ্লবের সাথে বিশ্বসঘাতকতা বলে দাবি করেন।
কমিটিতে স্থান পেল ৪২ ছাত্রলীগ নেতা
নতুন কমিটিতে ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে একাধিক পদধারীর বিরুদ্ধে। রোকেয়া হলের ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন বর্তমান হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোছাঃ শ্রাবণী আক্তার। একই হলের সদস্য সচিব আনিকা বিনতে আশরাফের সাথে ছাত্রলীগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগ আছে। বুয়েটের বিতর্কিক ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বীর সাথে তার ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
কুয়েত মৈত্রী হলের সদস্য সচিব পদধারী জান্নাতুল ফেরদৌস পুতুল ছাত্রলীগের সাথে ঘনিষ্ঠ ছিলেন, থাকতেন মিছিল র্যালির সামনের সারিতে। তিনি ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের কালচারাল টিমের সদস্য ছিলেন। কুয়েত-মৈত্রী হলে এটাচড হওয়া সত্ত্বেও তিনি অবৈধভাবে রোকেয়া হলের সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনের সাথে রাজনীতি করতেন।
ছাত্রলীগের সঞ্জীব-সাদ্দাম কমিটিতে উপ গণযোগাযোগ সম্পাদক পদে ছিলেন শামসুন্নাহার হল এর বর্তমান ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নিতু রানী সাহা।
সুফিয়া কামাল হলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পাওয়া জাকিয়া সুললতানা আলো সুফিয়া কামাল হলে এটাচড হওয়া সত্ত্বেও থাকতেন রোকেয়া হলে। ছাত্রলীগ নেত্রী সাজিয়া রহমান সিলভীর কাছের ছোটবোন হিসেবে ছাত্রলীগে পরিচিত ছিলেন তিনি।
নাহিদুজ্জামান শিপনের আপন ছোট ভাই মাহদীজ্জামান জ্যোতি দ্বিতীয় বর্ষে পড়েও ভাইয়ের ক্ষমতায় বাগিয়েছেন এফ রহমান হলের সদস্য সচিব পদ। তাছাড়া, হল ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইন হয়েছেন হলের যুগ্ম আহ্বায়ক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুমেন শাহরিয়ারের আস্থাভাজন হয়েও মুনতাহা মিথ যুগ্ম আহবায়ক পদ পান। বাদশাহ বিন ফরহাদ আলভি পান সদস্য পদ।
শহীদুল্লাহ হলের আহবায়ক হয়েছেন মোসাদ্দেক আল হক শান্ত, তার বাবা নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে। পুরো পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত। জীববিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে থাকা রাকিবুল হাসান সৌরভ পেয়েছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের সিনিয়র যুগ্ন-আহ্বায়ক পদ। ছাত্রলীগের ক্যান্ডিডেটদের সাথে নিয়ে ভিসিকে ফুল দেওয়া মো. আবিদ হাসনাত, ইমরান হোসেন হয়েছেন ফজলুল হক মুসলিম হলের আহ্বায়ক।
ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী রাকিব হাসান পেয়ছেন যুগ্ম আহবায়ক পদ।
জিয়াউর রহমান হলের রাজু শেখ খালেদা জিয়াকে কটুক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ। একই হলের ছাত্রলীগের পরিচিত মুখ মাহমুদ হাসান প্রলয় গ্যাং এর সক্রিয় সদস্য এবং হলের সবচেয়ে উগ্র ছাত্র নির্যাতনকারী ছিলেন। ৫ আগস্টের পরপর সম্মিলিত সিদ্ধান্তে হলের ছাত্রশিক্ষকরা তাকে বের করে দেয়। এখন সে জিয়া হল ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক। ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের সংসদীয় আসনভিত্তিক কমিটির সদস্য আজিজুল হাকিম ও তৌফিকুল ইসলাম প্রতিক, মাহিন আহমেদ কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক পদ পান।
মাস্টার দ্যা সূর্যসেন হলে ছাত্রলীগের মিছিলের নেতা আতিক মন্ডল ও মাহিদুল ইসলাম ফাহিম হয়েছেন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা আবু জর গিফারি ইফাত হয়েছেন আহ্বায়ক, ছাত্রলীগের সংসদীয় আসনভিত্তিক কমিটির সদস্য শিবলী রহমান পাভেল, ছাত্রলীগের ক্যান্ডিডেট এবং সৈকতের ক্যাডার মিরাজুল ইসলাম মিরাজের একান্ত আস্থাভাজন মেরাজ শাহরিয়ার অপু, ছাত্রলীগ কর্মী জনি প্রামাণিক, মহিবুল হাসান আকন্দ ও রোমান মিয়া পেয়েছেন হলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ।
জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী শাহরিয়ার লিয়ন হয়েছেন সদস্য সচিব। ছাত্রলীগের পদপ্রার্থী নেতা ফরিদের সহযোগী হাসনাত তারিক জীম ও ফেনী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সেক্রেটারির সাথে মিটিং করা হলের সক্রিয় কর্মী জিন্নাহ চৌধুরী যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেয়েছেন। মো. সজীব হোসেন
মো. সজীব হোসেন গেস্টরুমে জুনিয়রদের নির্যাতনকারীদের অন্যতম। রাত ২-৩ টার সময় জুনিয়রদের ডেকে সিগারেট আনতে পাঠানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ।
শেখ মুজিবুর রহমান হলের সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমান ও মোস্তফা হোসেন লিখন ও মোমিতুর রহমান পিয়াল পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ। ইমতিয়াজ আহমেদ হয়েছেন সদস্য। ছাত্রলীগের ঢাবি সভাপতি শয়নের রাজনীতি করা সাদমান বিন শাওন, হলের সভাপতি শান্তর আস্থাভাজন রোমন সরকার হয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক।
অমর একুশে হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী আব্দুল হামিদ পেয়েছেন হলের সদস্য সচিব পদ।
রাকিবুল হাসান রাকিব বিজয় একাত্তর হলের গেস্টরুমের ত্রাস ছিলেন। জুনিয়রদের জুতা নিতে তেড়ে আসায় জুতা রাকিব নামে পরিচিত পান। তিনি পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ। আরকানুল ইসলাম রূপক পেয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক পদ। ২৪ সালের ৩ আগস্ট ‘এক দফার কবর দে’ ঘোষণা করে হল থেকে বহিস্কৃত আহমেদ জাবির মাহাম সদস্য পদ পান।
জগন্নাথ হলের সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মী ধ্রুব রয় পেয়েছেন সদস্য পদ।
তদন্ত কমিটি গঠন
ছাত্রদলে হল কমিটি নিয়ে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামী সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মাসুম বিল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাছির উদ্দিন শাওন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নূর আলম ভূঁইয়া ইমনকে সদস্য করে গঠন করা এ তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন পেশ করা নির্দেশনা প্রদান করা হয়।