নানা আলোচনা ও অভিযোগের মুখে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ওই ঘোষণা পর্যন্তই। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সারাদিনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী দুটি ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন। সেখানে দেখা যায়নি শামীম ওসমান অনুসারী কোন নেতাকে। এমনকি নিয়মিত আইভীর পক্ষে ওয়ার্ডভিত্তিক যেসব প্রচারণা চলেছে সেখানেও দেখা যায়নি কাউকে। তারা কোথাও প্রচারণা করেছেন এমন কোন খবর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন কিংবা আইভীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আদিনাথ বসুর কাছে নেই। আইভীর সঙ্গে নিয়মিত প্রচারণায় অংশ নেয়া নেতারাও বলেন, ওই অংশের (শামীম ওসমান অনুসারী) কেউই ছিলেন না।
গত ২৮ ডিসেম্বর সিটি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক পাওয়ার পর প্রার্থীরা সবাই নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েন। ব্যানারে, পোস্টারে ছেয়ে যায় নগরীর প্রতিটি অলি-গলি। দিনরাত মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। দুইবারের নির্বাচিত সিটি মেয়র এবং আবারও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীও ব্যস্ত প্রচারে। তবে শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে চুপ ছিলেন দলীয় সাংসদ শামীম ওসমান। আলোচনা চলছিল, শামীম ওসমান দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে সমর্থন দিয়েছেন।
নির্বাচন ঘিরে প্রভাবশালী এই সাংসদের চুপ থাকা এবং অনুসারীদের কর্মকান্ড এমন ইঙ্গিত দিচ্ছিল। শামীম ওসমানের নীরবতা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও। কেন্দ্রীয় নেতাদের একাধিক বক্তব্যেই ক্ষোভের বিষয়টি ফুটে উঠেছিল। গত ৭ জানুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জে এক কর্মিসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক কারও নাম উল্লেখ না করে এক সাংসদকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘নৌকা নিয়েই এমপি হয়েছেন। বেঁচে থাকতে আগামীবার আপনাকে নৌকা পেতে দেবো না।’ এর পরদিনই শামীম ওসমান অনুসারী নেতাদের নেতৃত্বে থাকা মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীও সাংবাদিকদের সামনে সরাসরিই বলেন, কথিত ‘গডফাদার’ শামীম ওসমান স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারকে নির্বাচনে নামিয়েছেন। শামীম ওসমান নৌকার বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধিতা করছেন। এর একদিন পরই ১০ জানুয়ারি জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন শামীম ওসমান। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নৌকার বাইরে যাবার কোন উপায় নেই। তিনি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অনুসারী আওয়ামী লীগ, মহিলা লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও মাঠে নামার নির্দেশ দেন। তবে আদতে তার কোন প্রতিফলন দেখা যায়নি।
আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, শামীম ওসমানের ঘোষণার কোন প্রতিফলন নির্বাচনী মাঠে দেখা যায়নি। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী তিনি নিজে সংসদ সদস্য হওয়ায় সরাসরি প্রচারে নামতে পারবেন না। তবে তার অনুসারী লোকজনের কাউকেই মঙ্গলবার সারাদিনে কোথাও কোন প্রচারে দেখা যায়নি।
স্থানীয় লোকজন ও রাজনীতিকরা বলছেন, শামীম ওসমান কখনই আইভীকে সমর্থন দেননি। গত নির্বাচনেও সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েও আর মাঠে দেখা যায়নি শামীম ওসমান কিংবা তার কর্মী-সমর্থকদের। অভিযোগ রয়েছে, ওই নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে অর্থ সহায়তা দিয়েছিলেন শামীম ওসমান। এবারও দলীয় চাপে হোক কিংবা রাজনৈতিক কৌশলের কারণেই হোক শামীম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা পর্যন্তই শেষ। উল্টো নেপথ্যে থেকে শামীম ওসমান ষড়যন্ত্র করতে পারেন বলেও আশঙ্কা করছেন আইভী সমর্থকরা।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এবং বিকেলে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান সেলিনা হায়াৎ আইভী। এই সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাদির, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রানু খন্দকার, সদস্য সামসুজ্জামান ভাষানী, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য সুমি আক্তার প্রমুখ। বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গোলাম মতুর্জা পাপ্পা।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক লীগ নেতা হুমায়ূন কবির প্রমুখ। এ ছাড়া দুপুরে শহরে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মিছিল ও গণসংযোগ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন সংবাদকে বলেন, সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিলেও সাংসদের অনুসারী কেউ কোথাও প্রচারণায় ছিলেন না। নির্বাচন পরিচালনার সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকলেও তার সঙ্গে সাংসদ অনুসারী কেউ প্রচারণার বিষয়ে যোগাযোগ করেননি। তবে বন্দরে দুপুরে ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করেছে বলে শুনেছেন আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘শামীম ওসমানের নৌকা, অয়ন ওসমানের (সাংসদ পুত্র) নৌকা’ বলে স্লোগান দিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা নৌকার পক্ষে বন্দরে মিছিল করেছে শুনেছি। তবে উল্লেখযোগ্য কোন নেতা সেখানে ছিলেন না। ওই মিছিলে ‘ভাইয়ের নাম বলেছে দশবার, আইভীর নাম বলেছে একবার’। এতেই সবকিছু স্পষ্ট।
এদিকে নির্বাচনের আর মাত্র চার দিন বাকি। সেলিনা হায়াৎ আইভী সমর্থকরা বলছেন, শেষ সময়ে শামীম ওসমান কিংবা তার সমর্থকরা প্রচারণায় আসলেও নির্বাচনে তেমন প্রভাব পড়বে না। তাছাড়া শামীম ওসমানের সমর্থন এই নির্বাচনে তেমন জরুরি বলেও মনে করছেন না তারা।
গত ২৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন আইভী। প্রায় প্রতিদিনই আইভীর সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সংবাদকে বলেন, শামীম ওসমান ঘোষণা দিলেও সারাদিন কেউ প্রচারণায় ছিলেন না। অনুসারী নেতাদের কেউ কেউ পার্টি অফিসে (দলীয় কার্যালয়) আসেন। চা খেয়ে চলে যান। এখনও না নামলে আর কবে নামবেন তারা, নির্বাচনের পর? এই প্রশ্নও জুড়ে দেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠ আমরাই গরম করেছি। আমাদের অনুকূলেই সবকিছু রয়েছে। এই শেষ সময়ে আর কাউকে আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রার্থীর বিজয় হবেই। কোন ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না।’
এই বিষয়ে কথা বলতে সাংসদ শামীম ওসমান অনুসারী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের চারজন নেতার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। অনুসারী জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের দুই নেতাকে কল করলে তাদের সাড়াও পাওয়া যায়নি।
এদিকে নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘দল যেহেতু আমাকে নমিনেশন দিয়েছে সেক্ষেত্রে দল আমার সঙ্গেই আছে। দলের ভেতর থেকে কে আসলো না, সেটা আমার দেখার বিষয় না। সেটা দলই দেখবে। আমার আস্থা জনগণের প্রতি।’
মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী ২০২২
নানা আলোচনা ও অভিযোগের মুখে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ওই ঘোষণা পর্যন্তই। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সারাদিনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী দুটি ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন। সেখানে দেখা যায়নি শামীম ওসমান অনুসারী কোন নেতাকে। এমনকি নিয়মিত আইভীর পক্ষে ওয়ার্ডভিত্তিক যেসব প্রচারণা চলেছে সেখানেও দেখা যায়নি কাউকে। তারা কোথাও প্রচারণা করেছেন এমন কোন খবর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন কিংবা আইভীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আদিনাথ বসুর কাছে নেই। আইভীর সঙ্গে নিয়মিত প্রচারণায় অংশ নেয়া নেতারাও বলেন, ওই অংশের (শামীম ওসমান অনুসারী) কেউই ছিলেন না।
গত ২৮ ডিসেম্বর সিটি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক পাওয়ার পর প্রার্থীরা সবাই নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েন। ব্যানারে, পোস্টারে ছেয়ে যায় নগরীর প্রতিটি অলি-গলি। দিনরাত মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। দুইবারের নির্বাচিত সিটি মেয়র এবং আবারও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীও ব্যস্ত প্রচারে। তবে শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে চুপ ছিলেন দলীয় সাংসদ শামীম ওসমান। আলোচনা চলছিল, শামীম ওসমান দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে সমর্থন দিয়েছেন।
নির্বাচন ঘিরে প্রভাবশালী এই সাংসদের চুপ থাকা এবং অনুসারীদের কর্মকান্ড এমন ইঙ্গিত দিচ্ছিল। শামীম ওসমানের নীরবতা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও। কেন্দ্রীয় নেতাদের একাধিক বক্তব্যেই ক্ষোভের বিষয়টি ফুটে উঠেছিল। গত ৭ জানুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জে এক কর্মিসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক কারও নাম উল্লেখ না করে এক সাংসদকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘নৌকা নিয়েই এমপি হয়েছেন। বেঁচে থাকতে আগামীবার আপনাকে নৌকা পেতে দেবো না।’ এর পরদিনই শামীম ওসমান অনুসারী নেতাদের নেতৃত্বে থাকা মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীও সাংবাদিকদের সামনে সরাসরিই বলেন, কথিত ‘গডফাদার’ শামীম ওসমান স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারকে নির্বাচনে নামিয়েছেন। শামীম ওসমান নৌকার বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধিতা করছেন। এর একদিন পরই ১০ জানুয়ারি জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন শামীম ওসমান। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নৌকার বাইরে যাবার কোন উপায় নেই। তিনি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অনুসারী আওয়ামী লীগ, মহিলা লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও মাঠে নামার নির্দেশ দেন। তবে আদতে তার কোন প্রতিফলন দেখা যায়নি।
আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, শামীম ওসমানের ঘোষণার কোন প্রতিফলন নির্বাচনী মাঠে দেখা যায়নি। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী তিনি নিজে সংসদ সদস্য হওয়ায় সরাসরি প্রচারে নামতে পারবেন না। তবে তার অনুসারী লোকজনের কাউকেই মঙ্গলবার সারাদিনে কোথাও কোন প্রচারে দেখা যায়নি।
স্থানীয় লোকজন ও রাজনীতিকরা বলছেন, শামীম ওসমান কখনই আইভীকে সমর্থন দেননি। গত নির্বাচনেও সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েও আর মাঠে দেখা যায়নি শামীম ওসমান কিংবা তার কর্মী-সমর্থকদের। অভিযোগ রয়েছে, ওই নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে অর্থ সহায়তা দিয়েছিলেন শামীম ওসমান। এবারও দলীয় চাপে হোক কিংবা রাজনৈতিক কৌশলের কারণেই হোক শামীম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা পর্যন্তই শেষ। উল্টো নেপথ্যে থেকে শামীম ওসমান ষড়যন্ত্র করতে পারেন বলেও আশঙ্কা করছেন আইভী সমর্থকরা।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এবং বিকেলে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান সেলিনা হায়াৎ আইভী। এই সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাদির, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রানু খন্দকার, সদস্য সামসুজ্জামান ভাষানী, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য সুমি আক্তার প্রমুখ। বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গোলাম মতুর্জা পাপ্পা।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক লীগ নেতা হুমায়ূন কবির প্রমুখ। এ ছাড়া দুপুরে শহরে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মিছিল ও গণসংযোগ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন সংবাদকে বলেন, সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিলেও সাংসদের অনুসারী কেউ কোথাও প্রচারণায় ছিলেন না। নির্বাচন পরিচালনার সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকলেও তার সঙ্গে সাংসদ অনুসারী কেউ প্রচারণার বিষয়ে যোগাযোগ করেননি। তবে বন্দরে দুপুরে ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করেছে বলে শুনেছেন আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘শামীম ওসমানের নৌকা, অয়ন ওসমানের (সাংসদ পুত্র) নৌকা’ বলে স্লোগান দিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা নৌকার পক্ষে বন্দরে মিছিল করেছে শুনেছি। তবে উল্লেখযোগ্য কোন নেতা সেখানে ছিলেন না। ওই মিছিলে ‘ভাইয়ের নাম বলেছে দশবার, আইভীর নাম বলেছে একবার’। এতেই সবকিছু স্পষ্ট।
এদিকে নির্বাচনের আর মাত্র চার দিন বাকি। সেলিনা হায়াৎ আইভী সমর্থকরা বলছেন, শেষ সময়ে শামীম ওসমান কিংবা তার সমর্থকরা প্রচারণায় আসলেও নির্বাচনে তেমন প্রভাব পড়বে না। তাছাড়া শামীম ওসমানের সমর্থন এই নির্বাচনে তেমন জরুরি বলেও মনে করছেন না তারা।
গত ২৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন আইভী। প্রায় প্রতিদিনই আইভীর সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সংবাদকে বলেন, শামীম ওসমান ঘোষণা দিলেও সারাদিন কেউ প্রচারণায় ছিলেন না। অনুসারী নেতাদের কেউ কেউ পার্টি অফিসে (দলীয় কার্যালয়) আসেন। চা খেয়ে চলে যান। এখনও না নামলে আর কবে নামবেন তারা, নির্বাচনের পর? এই প্রশ্নও জুড়ে দেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠ আমরাই গরম করেছি। আমাদের অনুকূলেই সবকিছু রয়েছে। এই শেষ সময়ে আর কাউকে আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রার্থীর বিজয় হবেই। কোন ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না।’
এই বিষয়ে কথা বলতে সাংসদ শামীম ওসমান অনুসারী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের চারজন নেতার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। অনুসারী জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের দুই নেতাকে কল করলে তাদের সাড়াও পাওয়া যায়নি।
এদিকে নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘দল যেহেতু আমাকে নমিনেশন দিয়েছে সেক্ষেত্রে দল আমার সঙ্গেই আছে। দলের ভেতর থেকে কে আসলো না, সেটা আমার দেখার বিষয় না। সেটা দলই দেখবে। আমার আস্থা জনগণের প্রতি।’