alt

রাজনীতি

বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান সম্পর্কে মির্জা ফখরুল

এটা কোনো সভ্য দেশে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের বাধায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি। তাকে কার্যালয়ে ঢুকতে না দেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের এমন অভিযানকে ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করেন। পুলিশের বাধা পেয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাতে বসে পড়েন ফখরুল। তিনি তখন সাংবাদিকদের বলেন, “এটা একটা বর্বরোচিত, পৈশাচিক, নারকীয় ও মর্মান্তিক ঘটনা। আমি মনে করি যে, কোনো সভ্য দেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এইভাবে রেইড,এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না।”

বুধবার বিকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে দুজন নিহত হয় বলে বিএনপির দাবি; তবে পুলিশ একজনের কথা স্বীকার করেছে। সংঘর্ষের পর বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে পুলিশ; সেখান থেকে বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ বহু নেতা-কর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় ফখরুল ভেতরে ঢুকতে চাইলেও পুলিশ তাকেও আটকে দেয়।

সরকারের বিরুদ্ধে অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে তারা সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে, আমাদের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রকে ধবংস করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন করার শামিল। এটা গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। এর থেকে খারাপ কাজ কিছু হতে পারে না। আমার ভাষা নাই বলার। আই্ অ্যাম শকড।”

বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বানচাল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া ফখরুলকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আপনি কি সারা রাত থাকবেন এখানে?” জবাবে তিনি বলেন, “ইটস ডিপেন্ডস …. তারা কখন এই অভিযান শেষ করে তার উপর।”

বিকাল ৫টায় মির্জা ফখরুল দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। কলাপসিবল গেইট বন্ধ করে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা এই অভিযান শুরু করে। ফখরুল একাধিকবার পুলিশ কর্মকর্তাদের তাকে তার কার্যালয়ে ঢুকতে দিতে বললেও তারা কর্ণপাত করেননি। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এটা ক্রাইম জোন। স্যার একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমি উপরের সাথে কথা বলে নিই।”

বিএনপি মহাসচিব তখন বলেন, “আমি পুলিশ কমিশনারের সাথে বলে এসেছি। আপনি কথা বলুন। আমাকে যেতে দিন।” পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে বলেন, “স্যার, দেখছি স্যার।”

এক পর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে থেকে পুলিশ দলীয় চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান খান শিমুল বিশ্বাসকে ধরে বের করে নিয়ে আসে। ফখরুল তখন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা তা না শুনে শিমুল বিশ্বাসকে নিয়ে যায়। এরপরই বিএনপি মহাসচিব ফুটপাতে বসে পড়েন।

পরে পুলিশ ভ্যান আসার পর নেতা-কর্মীদের লাইন দাঁড় করায় পুলিশ এবং কর্মীদেরকে হাত উচু করে ভ্যানে তুলতে থাকে। রাত ৭টা পর্যন্ত দুটি ভ্যানে করে পর্যায়ক্রমে চার দফায় নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। নেওয়ার আগে দলীয় কার্যালয়ের নিচতলায় নেতা-কর্মীদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে ফখরুল বলেন, “আপনারা এই অসহায় মানুষগুলোকে এভাবে ধইরেন না। এটা ঠিক নয়। দিস ইজ টু মাচ। ইন মাই প্রেজেন্টস, আপনারা একদম ঠিক করছেন না।”এই সময়ও বিএনপিকর্মীদের হাত উঁচু করে নিয়ে যাওয়া থামায়নি পুলিশ।

এক পর্যায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অনুরোধ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। আমাকে অফিসে যেতে দিন। এভাবে আপনারা রেইড করতে পারেন না।”তবে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কেউ তার কথা শোনেননি।

পুলিশের অভিযানের পর অফিসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমার সামনে যেটা দেখলাম অফিসের সমস্ত কম্পিউটার, যতরকম ডকুমেন্ট, সব তারা নিয়ে গেছে। সমস্ত সিসি ক্যামেরাগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। বিদ্যুতের লাইট ভেঙে দিয়েছে, যাতে কোনো এভিডেন্স না থাকে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। আই টক টু ডিএমপি কমিশনার, আই টক টুক হোম মিনিস্টার। কোনো লাভ নেই। ইনফেক্ট এখানে দেয়ার ইজ নো গভার্নমেন্ট, দেয়ার ইজ নো স্টেট হিয়ার।”

ফখরুল বলেন, “আমরা পরিস্কারভবে বলতে চাই, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাস করি এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে কর্মসূচি আমরা পালন করে আসছি।

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারের মন্ত্রীরা উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখতে শুরু করে। তাদের সাধারণ সম্পাদক পরিষ্কার করে বলেন, ‘খেলা হবে’। আারেকজন মন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের মতো সাফ করে দেওয়া হবে’। এই যে ভয়াবহ সমস্ত উক্তি, সমস্ত কথা তখন থেকে যেটা আশঙ্কা করেছিলাম যে ২০১৩/১৪/১৫ এর মতো নীলনকশা করছে জনগণের ন্যায়সঙ্গত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করে দিতে।”

তিনি বলেন, “এই অভিযান শুধু বিএনপিকে ক্ষতি করে নাই, সমস্ত বাংলাদেশে মানুষের বুকে আঘাত হেনেছে। একই সঙ্গে তারা গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সেই ব্যবস্থাকে তারা পুরোপুরি ধবংস করে দেওয়ার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে।

“এটা কোনো সভ্য দেশে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপা্র সরকার কাজ করছে কি না, সন্দেহ আছে। আমরা বার বার তাদেরকে অনুরোধ করেছি এখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হচ্ছে, কোনো ঝামেলা করবেন না। কিন্তু তারা কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি।”

কারফিউ প্রত্যাহার করুন, সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে নিন : ফখরুল

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ছবি

খোঁজখবর নিচ্ছি, সত্য বেরিয়ে আসবে : কাদের

পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে : কাদের

‘আপনারা ফেইল করেছেন’, রংপুরে দলীয় নেতাকর্মীদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ ২০ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১৭৫৮ : পুলিশ

ছবি

বিএনপি কার্যালয়ে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় সাতজনের রিমান্ড মঞ্জুর

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি জড়িত নয় : মির্জা ফখরুল

ছবি

নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসে তালা, চারপাশে পুলিশের অবস্থান

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কারো শেখানো বুলি বলছেন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

দুই দফা বৈঠক করেও আন্দোলনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে পারেনি বিএনপির হাইকমান্ড

ছবি

যৌক্তিক দাবি কখনোই উপেক্ষিত হয়নি: ওবায়দুল কাদের

ছবি

জঙ্গীবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাবে গণতন্ত্রী পার্টি: ডা. শাহাদাত

ছবি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্রই বরদাশত করা হবে নাঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

ছবি

শেখ হাসিনা চীন হতে শূন্য হাতে ফিরেছেন : রিজভী

ছবি

কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি ও বক্তব্য সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী: ওবায়দুল কাদের

ছবি

ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা

ছবি

স্বাধীনতাবিরোধীরা এ আন্দোলনের সঙ্গে মিশে গেছে বলে আমি আপনি সবাই বুঝে গেছি : আিইনমন্ত্রী

ছবি

কোটা সংস্কারের নামে বিএনপি জামায়াতের সন্তানেরা মাঠে নেমেছে - মাইনুল হোসেন নিখিল

ছবি

সরকার মেধাবী জাতি গঠনে অনাগ্রহী: আমির খসরু

ছয় বছর আগের মামলায় ছয় যুবদল নেতার কারাদণ্ড

ছবি

জবি : অভিযুক্তদের প্রটোকলেই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি

ছবি

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বললেন ওবায়দুল কাদের

ছবি

জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীমের চাঁদাবাজির মামলা তদন্তে সিআইডি, প্রতিবেদন ২২ জুলাই

ছবি

কোটার সিদ্ধান্ত সরকারের নয়, আদালতের: ওবায়দুল কাদের

ছবি

রাজধানীতে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত ১

ছবি

প্রশ্নফাঁস ও টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ : জবি শাখার বিরুদ্ধে কাল তদন্তে নামছে কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটি

ছবি

কোটা এবং পেনশনবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন আছে: ফখরুল

ছবি

এখন কারো গায়ে চুলকায়, কারো অন্তরে জ্বালা: কাদের

ছবি

দেশের পক্ষে কথা বলার কোনও সরকার এখানে নেই : গণতন্ত্র মঞ্চ

ছবি

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ, জবি শাখার তদন্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ

ছবি

অচল হয়ে পড়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

ছবি

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে জাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

যারা সহিংসতাকে উস্কে দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ: কাদের

ছবি

অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়ে শাহবাগ ছেড়েছে বিক্ষোভকারীরা

ছবি

"জাহাঙ্গীর আলমকে ছাড়া গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা"

tab

রাজনীতি

বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান সম্পর্কে মির্জা ফখরুল

এটা কোনো সভ্য দেশে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের বাধায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি। তাকে কার্যালয়ে ঢুকতে না দেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের এমন অভিযানকে ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করেন। পুলিশের বাধা পেয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাতে বসে পড়েন ফখরুল। তিনি তখন সাংবাদিকদের বলেন, “এটা একটা বর্বরোচিত, পৈশাচিক, নারকীয় ও মর্মান্তিক ঘটনা। আমি মনে করি যে, কোনো সভ্য দেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এইভাবে রেইড,এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না।”

বুধবার বিকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে দুজন নিহত হয় বলে বিএনপির দাবি; তবে পুলিশ একজনের কথা স্বীকার করেছে। সংঘর্ষের পর বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে পুলিশ; সেখান থেকে বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ বহু নেতা-কর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় ফখরুল ভেতরে ঢুকতে চাইলেও পুলিশ তাকেও আটকে দেয়।

সরকারের বিরুদ্ধে অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে তারা সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে, আমাদের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রকে ধবংস করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন করার শামিল। এটা গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। এর থেকে খারাপ কাজ কিছু হতে পারে না। আমার ভাষা নাই বলার। আই্ অ্যাম শকড।”

বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বানচাল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া ফখরুলকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আপনি কি সারা রাত থাকবেন এখানে?” জবাবে তিনি বলেন, “ইটস ডিপেন্ডস …. তারা কখন এই অভিযান শেষ করে তার উপর।”

বিকাল ৫টায় মির্জা ফখরুল দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। কলাপসিবল গেইট বন্ধ করে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা এই অভিযান শুরু করে। ফখরুল একাধিকবার পুলিশ কর্মকর্তাদের তাকে তার কার্যালয়ে ঢুকতে দিতে বললেও তারা কর্ণপাত করেননি। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এটা ক্রাইম জোন। স্যার একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমি উপরের সাথে কথা বলে নিই।”

বিএনপি মহাসচিব তখন বলেন, “আমি পুলিশ কমিশনারের সাথে বলে এসেছি। আপনি কথা বলুন। আমাকে যেতে দিন।” পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে বলেন, “স্যার, দেখছি স্যার।”

এক পর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে থেকে পুলিশ দলীয় চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান খান শিমুল বিশ্বাসকে ধরে বের করে নিয়ে আসে। ফখরুল তখন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা তা না শুনে শিমুল বিশ্বাসকে নিয়ে যায়। এরপরই বিএনপি মহাসচিব ফুটপাতে বসে পড়েন।

পরে পুলিশ ভ্যান আসার পর নেতা-কর্মীদের লাইন দাঁড় করায় পুলিশ এবং কর্মীদেরকে হাত উচু করে ভ্যানে তুলতে থাকে। রাত ৭টা পর্যন্ত দুটি ভ্যানে করে পর্যায়ক্রমে চার দফায় নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। নেওয়ার আগে দলীয় কার্যালয়ের নিচতলায় নেতা-কর্মীদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে ফখরুল বলেন, “আপনারা এই অসহায় মানুষগুলোকে এভাবে ধইরেন না। এটা ঠিক নয়। দিস ইজ টু মাচ। ইন মাই প্রেজেন্টস, আপনারা একদম ঠিক করছেন না।”এই সময়ও বিএনপিকর্মীদের হাত উঁচু করে নিয়ে যাওয়া থামায়নি পুলিশ।

এক পর্যায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অনুরোধ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। আমাকে অফিসে যেতে দিন। এভাবে আপনারা রেইড করতে পারেন না।”তবে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কেউ তার কথা শোনেননি।

পুলিশের অভিযানের পর অফিসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমার সামনে যেটা দেখলাম অফিসের সমস্ত কম্পিউটার, যতরকম ডকুমেন্ট, সব তারা নিয়ে গেছে। সমস্ত সিসি ক্যামেরাগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। বিদ্যুতের লাইট ভেঙে দিয়েছে, যাতে কোনো এভিডেন্স না থাকে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। আই টক টু ডিএমপি কমিশনার, আই টক টুক হোম মিনিস্টার। কোনো লাভ নেই। ইনফেক্ট এখানে দেয়ার ইজ নো গভার্নমেন্ট, দেয়ার ইজ নো স্টেট হিয়ার।”

ফখরুল বলেন, “আমরা পরিস্কারভবে বলতে চাই, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাস করি এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে কর্মসূচি আমরা পালন করে আসছি।

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারের মন্ত্রীরা উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখতে শুরু করে। তাদের সাধারণ সম্পাদক পরিষ্কার করে বলেন, ‘খেলা হবে’। আারেকজন মন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের মতো সাফ করে দেওয়া হবে’। এই যে ভয়াবহ সমস্ত উক্তি, সমস্ত কথা তখন থেকে যেটা আশঙ্কা করেছিলাম যে ২০১৩/১৪/১৫ এর মতো নীলনকশা করছে জনগণের ন্যায়সঙ্গত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করে দিতে।”

তিনি বলেন, “এই অভিযান শুধু বিএনপিকে ক্ষতি করে নাই, সমস্ত বাংলাদেশে মানুষের বুকে আঘাত হেনেছে। একই সঙ্গে তারা গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সেই ব্যবস্থাকে তারা পুরোপুরি ধবংস করে দেওয়ার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে।

“এটা কোনো সভ্য দেশে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপা্র সরকার কাজ করছে কি না, সন্দেহ আছে। আমরা বার বার তাদেরকে অনুরোধ করেছি এখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হচ্ছে, কোনো ঝামেলা করবেন না। কিন্তু তারা কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি।”

back to top