দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর বিএনপির ২০ দলীয় জোটের ১২ শরিক নতুন জোট গড়ার ঘোষণা দিয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই তাদের এই উদ্যোগ। তবে তাদের মধ্যে মাত্র দুটি দলের নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন আছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই ‘১২ দলীয় জোট’ গড়ার ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির একটি অংশের (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার। আর এই ঘোষণার সাথেই বিলুপ্ত হয়ে গেলো ‘২০ দলীয়’ জোট।
নতুন জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ৯ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপাসনের কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক ছিল। সেখানে বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা ‘২০ দলীয় জোট’ নামটি আর ব্যবহার না করতে বলেন।
“তারা বলেন যে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আমরা একসাথে চলতে পারি। এরূপ অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যের পর ২০ দলীয় জোটের অস্তিত্ব আর থাকে না। বস্তুত সেই ঘোষণারও ১০ দিন আগে বিএনপি মহাসচিব মহোদয় বলেছিলেন যে, ২০ দলীয় জোট আর নাই। যদিও আনুষ্ঠানিক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল ২০ দলীয় জোটের জন্ম হয়েছিল, কিন্তু ২০ দলীয় জোটের বিলুপ্তটা আনুষ্ঠানিকভাবে হয়নি, অনানুষ্ঠানিভাবে হয়েছে,” বলেন ইবরাহিম।
তবে নতুন জোটের নেতারা বলছেন তারা বিএনপির সঙ্গেই থাকবে। মোস্তফা জামাল বলেন, “একটা কথা আমি জোরের সাথে বলতে পারি, এদেশের সর্ববৃহৎ বিরোধী দল বিএনপির সাথে আমাদের যে ঐক্য, যে সমঝোতা, যে হৃদয়ের বন্ধন, তা অটুট থাকবে যেমন আগে ছিল, এখনো তেমনি আছে। আমরা আরো বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার জন্য প্রকৃত প্রস্তাবে দেশের সব কয়টি রাজনৈতিক দল, যারা এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরোধী, তাদেরকে এক কাফেলায় শামিল করার জন্য একটু ভিন্ন পথ এবং কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি।”
২০ দলীয় জোটের ভাঙন নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা সকলে মিলে এ টু জেড ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের পথে যুগপৎভাবে এগিয়ে যাব।”
নতুন এই জোটে আরও রয়েছে লেবার পার্টি, জাতীয় দল, বাংলাদেশ এলডিপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক দল- জাগপা (তাসমিয়া প্রধান), এনডিপি, এলডিপি (সেলিম), মুসলিম লীগ, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক পার্টি এবং সাম্যবাদী দল।
বাকীরা কোথায়
২০ দলীয় জোটের বাকীরা কী করবে — এক প্রশ্নের জবাবে ইবরাহীম বলেন, “আমরা ছিলাম ২০টি দল। ২০টি দলের মধ্যে প্রধান শরিক বিএনপি বাদ দিলে থাকে ১৯টি দল। দ্বিতীয় সারিতে জামায়াতে ইসলামী বাদ দিলে থাকে ১৮।
“জনাব পার্থের (আন্দালিব রহমান পার্থ) দল বিজেপি চলে গিয়েছিলেন ২০১৯ সালে, থাকে ১৭। খেলাফত মজলিশ চলে গিয়েছিল ২০১৯ সালে, থাকে ১৬। সেই ১৬ জনের মধ্যে আপনাদের সামনে আমরা ১২টি দল উপস্থিত আছি।
“তবে হ্যাঁ, এর মধ্যে বক্তব্য আছে। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম দল ছিল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, যার সভাপতির নাম অলি আহমেদ। তার দলটি আমাদের এখানে নাই। তার দলের সাবেক অতি জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল করীম আব্বাসী এবং শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে একটি দল হয়েছে, যার নাম বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি), উনারা এখানে আছেন।
“আরেকটি বক্তব্য হচ্ছে, ২০১৯ সালে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। মূল অংশের মরহুম শফিউল আলম প্রধানের কন্যা ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান আমাদের সঙ্গে আছেন। বিদ্রোহীরা এখানে নেই।”
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিএনপি তাদের চার দলীয় জোটকে সম্প্রসারিত করে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল গড়ে ২০ দলীয় জোট।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন এক মোর্চ নিয়ে। সেখানে ২০ দলের শরিকদের পাশাপাশি এক সময় আওয়ামী লীগ করে আসা কামাল হোসেনের গণফোরাম ও কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, আ স ম আবদুর রবের জাসদ, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য ছিল।
সেই নির্বাচনে সব মিলিয়ে তারা আসন পায় আটটি। নির্বাচনের পর ঐক্যফ্রন্ট স্থবির হয়ে পড়ে। সমমনাদের নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলে এলেও ২০ দলীয় জোটকেও আর সক্রিয় হতে দেখা যায়নি।
নবগঠিত ১২ দলীয় জোটের ঘোষণাপত্র পাঠ করে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, “আমরা ১২ দল নামেই পরিচিত থাকব।”
তিনি বলেন, “বিনা ভোটে অনির্বাচিত অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ১২ দল বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনে সক্রিয় থাকবে। আমরা ঘোষণা করছি, চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখব।”
বিএনপিই তাদের ‘প্রধান মুরুব্বী’
ইবরাহিম বলেন, “মৌলিকভাবে বলতে গেলে যে ২০ দলীয় জোট ছিল, তার মধ্যে ১২টি দল আমরা। আর তিনটি দল বাইরে থাকে। সেই তিনটি দলের নেতৃবর্গের প্রতি আমাদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা সকলের জন্য দরজা খোলা রেখেছি…।
“এরকম ভাগাভাগিটা আসলে আমাদের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক বিশেষণ হিসেবে বিবেচিত হবে। আমরা ভাগাভাগিতে নাই, রেষারেষিতে নাই, হিংসা-বিদ্বেষে নাই। আমরা একসঙ্গে চলেছি। বিএনপি আমাদের প্রধান মুরুব্বী। তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা, আমাদের ধন্যবাদ। তাদের কাছ থেকে আমাদের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে, পরিকপক্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের ঘোষিত ১০ দফা এবং ২৭ দফার সমর্থনে আমাদের এই প্রচেষ্ট।”
১২ দলে নিবন্ধিত দল দুটি
ইবরাহিম জানান, তাদের ১২ দলীয় জোটে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল আছে দুটি। একটি তার বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং অন্যটি বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। ২০ দলীয় জোটে নিবন্ধিত দল ছিল চারটি।
“আমাদের ১২ দলের বাকিরা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন। ফলাফল আসতে সময় লাগবে। আমরা দোয়া করছি ফলাফলগুলো ইতিবাচকভাবে দ্রুত হবে।”
কর্মসূচি
ইবরাহিম বলেন, ১২ দলীয় জোটের কর্মসূচি আগামীতে ঘোষণা করা হবে। ৩০ ডিসেম্বরের পরে তারা বিভাগীয় শহরগুলোতে যেতে চান। তবে সেই সিদ্ধান্ত এখনো সম্মিলিতভাবে নেওয়া হয়নি।
“আমরা বিএনপির সকল কর্মের সঙ্গে যুগপৎ থাকবই। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল করব। আমরা সেদিন বিজয় নগর পানির ট্যাংকের কাছে ইনশাল্লাহ মিলিত হব দুপুর ২টায়।”
জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ছাড়াও লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির আবু তাহের, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, জমিয়তে উলামায়ের ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করিম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২
দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর বিএনপির ২০ দলীয় জোটের ১২ শরিক নতুন জোট গড়ার ঘোষণা দিয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই তাদের এই উদ্যোগ। তবে তাদের মধ্যে মাত্র দুটি দলের নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন আছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই ‘১২ দলীয় জোট’ গড়ার ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির একটি অংশের (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার। আর এই ঘোষণার সাথেই বিলুপ্ত হয়ে গেলো ‘২০ দলীয়’ জোট।
নতুন জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ৯ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপাসনের কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক ছিল। সেখানে বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা ‘২০ দলীয় জোট’ নামটি আর ব্যবহার না করতে বলেন।
“তারা বলেন যে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আমরা একসাথে চলতে পারি। এরূপ অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যের পর ২০ দলীয় জোটের অস্তিত্ব আর থাকে না। বস্তুত সেই ঘোষণারও ১০ দিন আগে বিএনপি মহাসচিব মহোদয় বলেছিলেন যে, ২০ দলীয় জোট আর নাই। যদিও আনুষ্ঠানিক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল ২০ দলীয় জোটের জন্ম হয়েছিল, কিন্তু ২০ দলীয় জোটের বিলুপ্তটা আনুষ্ঠানিকভাবে হয়নি, অনানুষ্ঠানিভাবে হয়েছে,” বলেন ইবরাহিম।
তবে নতুন জোটের নেতারা বলছেন তারা বিএনপির সঙ্গেই থাকবে। মোস্তফা জামাল বলেন, “একটা কথা আমি জোরের সাথে বলতে পারি, এদেশের সর্ববৃহৎ বিরোধী দল বিএনপির সাথে আমাদের যে ঐক্য, যে সমঝোতা, যে হৃদয়ের বন্ধন, তা অটুট থাকবে যেমন আগে ছিল, এখনো তেমনি আছে। আমরা আরো বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার জন্য প্রকৃত প্রস্তাবে দেশের সব কয়টি রাজনৈতিক দল, যারা এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরোধী, তাদেরকে এক কাফেলায় শামিল করার জন্য একটু ভিন্ন পথ এবং কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি।”
২০ দলীয় জোটের ভাঙন নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা সকলে মিলে এ টু জেড ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের পথে যুগপৎভাবে এগিয়ে যাব।”
নতুন এই জোটে আরও রয়েছে লেবার পার্টি, জাতীয় দল, বাংলাদেশ এলডিপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক দল- জাগপা (তাসমিয়া প্রধান), এনডিপি, এলডিপি (সেলিম), মুসলিম লীগ, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক পার্টি এবং সাম্যবাদী দল।
বাকীরা কোথায়
২০ দলীয় জোটের বাকীরা কী করবে — এক প্রশ্নের জবাবে ইবরাহীম বলেন, “আমরা ছিলাম ২০টি দল। ২০টি দলের মধ্যে প্রধান শরিক বিএনপি বাদ দিলে থাকে ১৯টি দল। দ্বিতীয় সারিতে জামায়াতে ইসলামী বাদ দিলে থাকে ১৮।
“জনাব পার্থের (আন্দালিব রহমান পার্থ) দল বিজেপি চলে গিয়েছিলেন ২০১৯ সালে, থাকে ১৭। খেলাফত মজলিশ চলে গিয়েছিল ২০১৯ সালে, থাকে ১৬। সেই ১৬ জনের মধ্যে আপনাদের সামনে আমরা ১২টি দল উপস্থিত আছি।
“তবে হ্যাঁ, এর মধ্যে বক্তব্য আছে। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম দল ছিল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, যার সভাপতির নাম অলি আহমেদ। তার দলটি আমাদের এখানে নাই। তার দলের সাবেক অতি জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল করীম আব্বাসী এবং শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে একটি দল হয়েছে, যার নাম বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি), উনারা এখানে আছেন।
“আরেকটি বক্তব্য হচ্ছে, ২০১৯ সালে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। মূল অংশের মরহুম শফিউল আলম প্রধানের কন্যা ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান আমাদের সঙ্গে আছেন। বিদ্রোহীরা এখানে নেই।”
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিএনপি তাদের চার দলীয় জোটকে সম্প্রসারিত করে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল গড়ে ২০ দলীয় জোট।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন এক মোর্চ নিয়ে। সেখানে ২০ দলের শরিকদের পাশাপাশি এক সময় আওয়ামী লীগ করে আসা কামাল হোসেনের গণফোরাম ও কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, আ স ম আবদুর রবের জাসদ, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য ছিল।
সেই নির্বাচনে সব মিলিয়ে তারা আসন পায় আটটি। নির্বাচনের পর ঐক্যফ্রন্ট স্থবির হয়ে পড়ে। সমমনাদের নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলে এলেও ২০ দলীয় জোটকেও আর সক্রিয় হতে দেখা যায়নি।
নবগঠিত ১২ দলীয় জোটের ঘোষণাপত্র পাঠ করে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, “আমরা ১২ দল নামেই পরিচিত থাকব।”
তিনি বলেন, “বিনা ভোটে অনির্বাচিত অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ১২ দল বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনে সক্রিয় থাকবে। আমরা ঘোষণা করছি, চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখব।”
বিএনপিই তাদের ‘প্রধান মুরুব্বী’
ইবরাহিম বলেন, “মৌলিকভাবে বলতে গেলে যে ২০ দলীয় জোট ছিল, তার মধ্যে ১২টি দল আমরা। আর তিনটি দল বাইরে থাকে। সেই তিনটি দলের নেতৃবর্গের প্রতি আমাদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা সকলের জন্য দরজা খোলা রেখেছি…।
“এরকম ভাগাভাগিটা আসলে আমাদের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক বিশেষণ হিসেবে বিবেচিত হবে। আমরা ভাগাভাগিতে নাই, রেষারেষিতে নাই, হিংসা-বিদ্বেষে নাই। আমরা একসঙ্গে চলেছি। বিএনপি আমাদের প্রধান মুরুব্বী। তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা, আমাদের ধন্যবাদ। তাদের কাছ থেকে আমাদের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে, পরিকপক্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের ঘোষিত ১০ দফা এবং ২৭ দফার সমর্থনে আমাদের এই প্রচেষ্ট।”
১২ দলে নিবন্ধিত দল দুটি
ইবরাহিম জানান, তাদের ১২ দলীয় জোটে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল আছে দুটি। একটি তার বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং অন্যটি বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। ২০ দলীয় জোটে নিবন্ধিত দল ছিল চারটি।
“আমাদের ১২ দলের বাকিরা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন। ফলাফল আসতে সময় লাগবে। আমরা দোয়া করছি ফলাফলগুলো ইতিবাচকভাবে দ্রুত হবে।”
কর্মসূচি
ইবরাহিম বলেন, ১২ দলীয় জোটের কর্মসূচি আগামীতে ঘোষণা করা হবে। ৩০ ডিসেম্বরের পরে তারা বিভাগীয় শহরগুলোতে যেতে চান। তবে সেই সিদ্ধান্ত এখনো সম্মিলিতভাবে নেওয়া হয়নি।
“আমরা বিএনপির সকল কর্মের সঙ্গে যুগপৎ থাকবই। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল করব। আমরা সেদিন বিজয় নগর পানির ট্যাংকের কাছে ইনশাল্লাহ মিলিত হব দুপুর ২টায়।”
জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ছাড়াও লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির আবু তাহের, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, জমিয়তে উলামায়ের ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করিম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।