alt

রাজনীতি

পালায় কে? আ’লীগ না : শেখ হাসিনা

রাজশাহী, বাসস : রোববার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩

রাজশাহী : রোববার আ’লীগের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল কখনো পালায় না বরং জনগণের সঙ্গে থেকে তাদের উন্নতির জন্য কাজ করে যায়। তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে দেশবাসীকে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যারা (বিএনপি নেতারা) বলছে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, আমি তাদের একটা কথা পরিষ্কার করতে চাই, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, কিন্তু তাদের নেতারাই পালিয়ে যায়।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর মাদ্রাসা মাঠে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

সমাবেশ স্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (আরসিসি) সাতটিসহ মোট ২৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বিরোধী দল অনেক কথাই বলে, তারা নোটিস দেয় আবার বলে আমরা নাকি পালাবার পথ পাব না। তিনি বিএনপি-জামাতকে প্রশ্ন করেন পালায় কে? কারণ আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, পিছু হটে না।

’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বাধা সত্ত্বেও ’৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর একরকম জোর করেই দেশে ফিরে আসার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবার ২০০৭ সালে ছেলের বউ অসুস্থ থাকায় তাকে বিদেশ যেতে হয়েছিল কিন্তু তার ফেরায় আবারও বাধার সৃষ্টি করা হয়, মামলা হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করেও সে সময় বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে জোর করে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন।

‘আজকে যারা বলে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, তাদের আমি স্পষ্ট বলতে চাই আওয়ামী লীগ পালায় না, পালায় আপনাদের নেতারাই,’ বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেতারা নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে তাদের দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল আর রাজনীতি করবে না বলে। সেই কথা কি বিএনপি নেতাদের মনে নাই। দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা ও তারেক। এমনকি খালেদা জিয়া তারেক কোকোর মাধ্যমে যে টাকা পাচার করেছিল তার ৪০ কোটি টাকা আমরা বিদেশ থেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না বরং জনগণকে নিয়েই কাজ করে। কেননা এই সংগঠন জাতির পিতা শেখ মুজিবের হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখন ক্ষমতায় থাকে বাংলাদেশের মানুষের তখনই ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা দারিদ্র্যের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ভাতা ও সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি তিনি ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য তার সরকারের বিনামূল্যে ২ কাঠা জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের এই বাংলায় একটি মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে, কেউ যেন খাদ্যের জন্য কষ্ট না পায় সেজন্য তার সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন তিনি।

গত নির্বাচনে (জাতীয় নির্বাচন) এবং মেয়র নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য তিনি রাজশাহীর জনগনণকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করেন।

তিনি বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচন আসবে, এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে সেখানে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন কি না ওয়াদা চাই।’

সমবেত জনতা এই সময় দুই হাত তুলে সমস্বরে চিৎকার করে ওয়াদা করলে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ যেন গড়তে পারি সেজন্যই আপনারা সকলে নৌকায় ভোট দেবেন।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মাহবুবউল আলম হানিফ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সমাবেশ সঞ্চালনা করেন।

‘বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকুক এটা বিএনপি সহ্য করতে পারে না,’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলেই এ দেশে লুটপাট আর দুর্নীতি করে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এ দেশের মানুষ শান্তিতে থাকে, ভালো থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। আর বিএনপি কী করে? মানুষ খুন করা, অগ্নিসন্ত্রাস করা তাদের কাজ।

তিনি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে আন্দোলনের নামে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা এবং বাংলাভাইসহ সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ সৃষ্টির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বিএনপি ৩ হাজার ৮০০ বাস, ২৯টি ট্রেন, লঞ্চ, প্রায় ৭০টি সরকারি অফিস, ৬টি ভূমি অফিস আন্দোলনের নামে পুড়িয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি না, আপনারা বিবেচনা করেন, কেমন করে মানুষ জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে, এই বিএনপি-জামায়াত কীভাবে জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মেরেছে? শুধু সাধারণ মানুষ নয়, পুলিশকে পর্যন্ত কীভাবে মাটিতে ফেলে এমনভাবে পিটিয়েছে!

তিনি বলেন, যখন জিয়াউর রহমান মারা গেল, তখন দেখা গেল কী? জিয়া কিছুই রেখে যায় নাই, একটা ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া। পরে দেখা গেল, খালেদা জিয়ার সেই মূল্যবান শাড়ি (ফ্রেন্স শিফন) ফ্রান্স থেকে কিনে আনা। তারেক জিয়াদের সেই কোকো লঞ্চ, তাদের ইন্ডাস্ট্রি, এত টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে যে এখনও দেখবেন কীভাবে আয়েশি জীবনযাপন করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখবেন, আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, তাতেই তারা আমাদের বিরুদ্ধে গীবত গায়, মানুষকে উসকানি দেয়। এরা দেশে লুটপাট, সন্ত্রাস এগুলোই করতে পারে। বাংলা ভাই এই রাজশাহীতে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে, আর পুলিশ তাদের পাহারা দিয়েছে। তারা সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ ছাড়া কিছু বোঝে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা এ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কমিউনিটি ক্লিনিক সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছি। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ডিগ্রির মর্যাদা দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ পায়। আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। দেশকে আমরা উন্নত করতে চাই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি সরকারের উন্নয়নের জ্বালায় পুড়ে মরছে। আমরা পালাবো না, প্রয়োজনে মির্জা ফখরুল-টুকুর বাড়িতে উঠবো।

রোববার বিকেলে রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

কাদের বলেন, বিএনপি লাল কার্ড দেখায়। ১০ ডিসেম্বর সরকারে পতন বলে। ৩০ ডিসেম্বর সরকার চলে যায়। ১১ জানুয়ারি সরকার নেই। বিএনপি এখন পদযাত্রা করছে। পদযাত্রা মানে শেষ যাত্রা, মরণ যাত্রা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেব বলেন আমরা না কি পালানোর সুযোগ পাবো না। আমরা পালাবো না। পালিয়ে তো বেড়ান আপনারা। আপনাদের দলের নেতা পালিয়ে আছেন। আমরা পালাবো না। প্রয়োজনে মির্জা ফখরুলের বাড়িতে উঠবো, টুকুর বাড়িতে উঠবো।

কাদের বলেন, সরকারের উন্নয়নের জ্বালায় মির্জা ফখরুল ও বিএনপি পুড়ে মরছে। পদ্মা সেতুর জ্বালা শেষ হতে না হতেই মেট্রোরেলের জ্বালা শুরু হয়েছে। এরপর আবার বঙ্গবন্ধু ট্যানেলের জ্বালা। যেদিকে তাকাই সেদিকেই জ্বালা।

তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে ফাইনাল খেলা হবে। তৈরি হয়ে যান। বিএনপির এখনও শিক্ষা হয়নি। আগামী নির্বাচনে হারের মুখ দর্শন করার পর তাদের শিক্ষা হবে।

ছবি

বিএনপি এখন সড়ক দুর্ঘটনা নিয়েও রাজনীতি করছে: কাদের

১১ বছর ধরে নিখোঁজ, তবুও সিলেট বিএনপিতে ইলিয়াস

ছবি

শর্তসাপেক্ষে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার: বিএনপির মোশাররফ

ছবি

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছে বিএনপি : ওবায়দুল কাদের

ছবি

জিল্লুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ছবি

বিএনপি দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়: ওবায়দুল কাদের

সোমবার কোটালীপাড়া পৌরসভা নির্বাচন

ছবি

সেরা মিথ্যাবাদীর নাম মির্জা ফখরুল: কাদের

রংপুর বিভাগে গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিভিন্ন জোটের কোন অস্তিত্ব নেই বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীদের

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চললে বিশ্বনেতা হওয়া সম্ভব: টুকু

ছবি

সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: হাছান মাহমুদ

ছবি

আইনজীবি সমিতির নির্বাচন বাতিলের দাবি মির্জা ফখরুলের

ছবি

বিএনপির প্রতিনিধিদল ভারতীয় হাইকমিশনারের বাসায়

ছবি

বিএনপি অসুস্থ, চতুর্থ ডোজ করোনার টিকা নিতে বললেন হাছান মাহমুদ

ছবি

পাকিস্তান ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুনিয়ার কোথাও নেই: ওবায়দুল কাদের

ছবি

সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে ব্যালট পেপার চুরিতে ব্যর্থ হয়ে আদালতে হামলা করে বিএনপি: কাদের

ছবি

আ. লীগ এখন সুপ্রিম কোর্টের ভোটও চুরি করছে: ফখরুল

ছবি

সব বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

আসন্ন রমজানে দ্রব্যের দাম সহনীয় রাখার দাবি রওশন এরশাদের

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও সংলাপ নয়: ফখরুল

অলিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা নরেন্দ্র মোদির

ছবি

এমন কোন চাপ নেই যা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে

ভোটের সময় ইন্টারনেটের গতি কমালে নির্বাচন বিতর্কিত হবে : সিইসি

ছবি

বিএনপি নেতা জমির উদ্দিন সরকারকে ২৭ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার আদেশ

ছবি

পঞ্চগড়ের ঘটনা সরকারের মদদপুষ্ট চক্র ঘটিয়েছে: ফখরুল

ছবি

জনগণের গণতান্ত্রিক চেতনাকে সমুন্নত রাখতে আ.লীগ বদ্ধপরিকর

ছবি

আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা সরকারের পূর্বপরিকল্পিত, অভিযোগ ফখরুলের

ছবি

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ছে, যেতে পারবেন না বিদেশে

ছবি

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিএনপি

ছবি

তত্ত্বাবধায়কে অটল বিএনপি, আ’লীগের ‘না’ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ফের উত্তেজনা

মৌলভীবাজারে আ.লীগ-বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত

ছবি

বিএনপি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে নির্বাচন ছাড়া অন্য কোন পথ বিশ্বাস করে না- নজরুল ইসলাম খান

ছবি

এই বিএনপির হাতে আমরা বাংলাদেশ ফিরিয়ে দেবো না: কাদের

ছবি

সরকারের পদত্যাগ ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি: ফখরুল

ছবি

ময়মনসিংহের জনসভা মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী

ছবি

১৮ মার্চ সব মহানগরে বিএনপির বিক্ষোভ

tab

রাজনীতি

পালায় কে? আ’লীগ না : শেখ হাসিনা

রাজশাহী, বাসস

রাজশাহী : রোববার আ’লীগের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রোববার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল কখনো পালায় না বরং জনগণের সঙ্গে থেকে তাদের উন্নতির জন্য কাজ করে যায়। তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে দেশবাসীকে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যারা (বিএনপি নেতারা) বলছে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, আমি তাদের একটা কথা পরিষ্কার করতে চাই, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, কিন্তু তাদের নেতারাই পালিয়ে যায়।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর মাদ্রাসা মাঠে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

সমাবেশ স্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (আরসিসি) সাতটিসহ মোট ২৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বিরোধী দল অনেক কথাই বলে, তারা নোটিস দেয় আবার বলে আমরা নাকি পালাবার পথ পাব না। তিনি বিএনপি-জামাতকে প্রশ্ন করেন পালায় কে? কারণ আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, পিছু হটে না।

’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বাধা সত্ত্বেও ’৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর একরকম জোর করেই দেশে ফিরে আসার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবার ২০০৭ সালে ছেলের বউ অসুস্থ থাকায় তাকে বিদেশ যেতে হয়েছিল কিন্তু তার ফেরায় আবারও বাধার সৃষ্টি করা হয়, মামলা হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করেও সে সময় বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে জোর করে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন।

‘আজকে যারা বলে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, তাদের আমি স্পষ্ট বলতে চাই আওয়ামী লীগ পালায় না, পালায় আপনাদের নেতারাই,’ বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেতারা নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে তাদের দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল আর রাজনীতি করবে না বলে। সেই কথা কি বিএনপি নেতাদের মনে নাই। দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা ও তারেক। এমনকি খালেদা জিয়া তারেক কোকোর মাধ্যমে যে টাকা পাচার করেছিল তার ৪০ কোটি টাকা আমরা বিদেশ থেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না বরং জনগণকে নিয়েই কাজ করে। কেননা এই সংগঠন জাতির পিতা শেখ মুজিবের হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখন ক্ষমতায় থাকে বাংলাদেশের মানুষের তখনই ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা দারিদ্র্যের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ভাতা ও সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি তিনি ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য তার সরকারের বিনামূল্যে ২ কাঠা জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের এই বাংলায় একটি মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে, কেউ যেন খাদ্যের জন্য কষ্ট না পায় সেজন্য তার সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন তিনি।

গত নির্বাচনে (জাতীয় নির্বাচন) এবং মেয়র নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য তিনি রাজশাহীর জনগনণকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করেন।

তিনি বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচন আসবে, এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে সেখানে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন কি না ওয়াদা চাই।’

সমবেত জনতা এই সময় দুই হাত তুলে সমস্বরে চিৎকার করে ওয়াদা করলে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ যেন গড়তে পারি সেজন্যই আপনারা সকলে নৌকায় ভোট দেবেন।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মাহবুবউল আলম হানিফ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সমাবেশ সঞ্চালনা করেন।

‘বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকুক এটা বিএনপি সহ্য করতে পারে না,’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলেই এ দেশে লুটপাট আর দুর্নীতি করে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এ দেশের মানুষ শান্তিতে থাকে, ভালো থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। আর বিএনপি কী করে? মানুষ খুন করা, অগ্নিসন্ত্রাস করা তাদের কাজ।

তিনি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে আন্দোলনের নামে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা এবং বাংলাভাইসহ সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ সৃষ্টির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বিএনপি ৩ হাজার ৮০০ বাস, ২৯টি ট্রেন, লঞ্চ, প্রায় ৭০টি সরকারি অফিস, ৬টি ভূমি অফিস আন্দোলনের নামে পুড়িয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি না, আপনারা বিবেচনা করেন, কেমন করে মানুষ জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে, এই বিএনপি-জামায়াত কীভাবে জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মেরেছে? শুধু সাধারণ মানুষ নয়, পুলিশকে পর্যন্ত কীভাবে মাটিতে ফেলে এমনভাবে পিটিয়েছে!

তিনি বলেন, যখন জিয়াউর রহমান মারা গেল, তখন দেখা গেল কী? জিয়া কিছুই রেখে যায় নাই, একটা ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া। পরে দেখা গেল, খালেদা জিয়ার সেই মূল্যবান শাড়ি (ফ্রেন্স শিফন) ফ্রান্স থেকে কিনে আনা। তারেক জিয়াদের সেই কোকো লঞ্চ, তাদের ইন্ডাস্ট্রি, এত টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে যে এখনও দেখবেন কীভাবে আয়েশি জীবনযাপন করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখবেন, আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, তাতেই তারা আমাদের বিরুদ্ধে গীবত গায়, মানুষকে উসকানি দেয়। এরা দেশে লুটপাট, সন্ত্রাস এগুলোই করতে পারে। বাংলা ভাই এই রাজশাহীতে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে, আর পুলিশ তাদের পাহারা দিয়েছে। তারা সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ ছাড়া কিছু বোঝে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা এ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কমিউনিটি ক্লিনিক সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছি। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ডিগ্রির মর্যাদা দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ পায়। আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। দেশকে আমরা উন্নত করতে চাই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি সরকারের উন্নয়নের জ্বালায় পুড়ে মরছে। আমরা পালাবো না, প্রয়োজনে মির্জা ফখরুল-টুকুর বাড়িতে উঠবো।

রোববার বিকেলে রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

কাদের বলেন, বিএনপি লাল কার্ড দেখায়। ১০ ডিসেম্বর সরকারে পতন বলে। ৩০ ডিসেম্বর সরকার চলে যায়। ১১ জানুয়ারি সরকার নেই। বিএনপি এখন পদযাত্রা করছে। পদযাত্রা মানে শেষ যাত্রা, মরণ যাত্রা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেব বলেন আমরা না কি পালানোর সুযোগ পাবো না। আমরা পালাবো না। পালিয়ে তো বেড়ান আপনারা। আপনাদের দলের নেতা পালিয়ে আছেন। আমরা পালাবো না। প্রয়োজনে মির্জা ফখরুলের বাড়িতে উঠবো, টুকুর বাড়িতে উঠবো।

কাদের বলেন, সরকারের উন্নয়নের জ্বালায় মির্জা ফখরুল ও বিএনপি পুড়ে মরছে। পদ্মা সেতুর জ্বালা শেষ হতে না হতেই মেট্রোরেলের জ্বালা শুরু হয়েছে। এরপর আবার বঙ্গবন্ধু ট্যানেলের জ্বালা। যেদিকে তাকাই সেদিকেই জ্বালা।

তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে ফাইনাল খেলা হবে। তৈরি হয়ে যান। বিএনপির এখনও শিক্ষা হয়নি। আগামী নির্বাচনে হারের মুখ দর্শন করার পর তাদের শিক্ষা হবে।

back to top