alt

রাজনীতি

গাজীপুর : ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি, শান্তিপূর্ণ ভোট

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩

গাজীপুর : ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক -সংবাদ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস পূর্বে বহুল প্রতীক্ষিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ভোটার ও জনমনের সব সংশয়-শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয়বারের এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় সবার মধ্যে স্বস্তির ভাব পরিলক্ষিত হয়। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও ইভিএমজনিত ত্রুটি ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটা স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন ভোটারা। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই প্রথমবারের মতো বিরতিহীন ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। সকাল থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ শেষ পর্যন্ত নগরীর বেশ কিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখা যায় কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মতো। তবে কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। পুরুষদের চেয়ে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশি। কোন কোন কেন্দ্রে মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ভোটার তালিকার সঙ্গে ইভিএমের মিল না থাকায় অনেক কেন্দ্রেই ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।

এদিকে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, যেভাবে ভোট হয়েছে তাতে তারা খুবই সন্তুষ্ট।

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন সব প্রার্থীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, কত ভোট পড়েছে সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোন তথ্য এখনও তারা পাননি। তবে তাদের অনুমান যে ভোটার ৫০ শতাংশের কম হবে না।

ইভিএমে ভোট গ্রহণে ধীর গতির কারণে বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভোট নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে ইভিএম ধীরগতির হতে পারে।

ভোটকেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পোলিং এজেন্ট না থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন খবর তারা পাননি।

সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু করার কথা থাকলেও বেশ কিছু কেন্দ্রে ইভিএম জটিলতায় ভোট গ্রহণে বিলম্ব ঘটে। নগরীর ৩৬ নং ওয়ার্ডের ২৬৫ গাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের শুরুতেই বিপত্তি দেখা দেয়। সাতটি বুথের নয়টি ইভিএমে ত্রুটি দেখা দেয়ায় প্রায় দেড় ঘণ্টা বিলম্বে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এ সময় লাইনে দাঁড়ানো অনেক নারী ভোটার ভোট না দিয়ে ফিরে যান। ৩ নং ওয়াডের্র ২০ হাতিমারা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইভিএমে ধীর গতির কারণে ভোট গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মানসুরা বেগম ও সীমা বেগম ভোট না দিয়ে কেন্দ্র থেকে চলে চান। ওই কেন্দ্রে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, ২ নং বুথে সোয়া পাঁচ ঘণ্টায় ৩৩২ ভোটের মধ্যে ৯৮টি ভোট গ্রহণ করা হয়। একজন ভোটারের ভোট দিতে ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় লেগে যায়।

নগরীর সালনা এলাকায় নাগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের প্রবেশমুখে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একজনকে আহত রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। তবে ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগপন্থি দুই কাউন্সিলর লাটিম প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম এবং করাত প্রতীকের প্রার্থী শাহীন আলমের সমর্থকদের মধ্যে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ইভিএমের বোতাম চাপ দেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ধাওয়ার সময় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আহত হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় ওই ব্যক্তি পড়ে গিয়ে সামান্য আঘাত পান।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান ৫৭ নং ওয়ার্ডের টঙ্গী বাজারস্থ দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল ৯টার দিকে ভোট দেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন আমি বিশ^াস করি এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। ভোটাররা আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন এ আশা আমাদের সবার।

নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা বেগম ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে নিজ এলাকায় কানাইয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১০টার দিকে ভোট দিতে আসেন। জায়েদা বেগম নারী বুথে প্রথমে ভোট দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম পুরুষ বুথে ভোট দেন।

ভোট দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভবে ভোট গ্রহণ করা হবে এটা আমাদের দাবি। কেউ যেন কোথাও টেম্পারিং করতে না পারে। ভোটের মালিক জনগণ, কোন পেশিশক্তি যাতে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করে ভোট পাল্টে না দেয় তা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। আমাদের ভোটার ও সমর্থকদের বাধা দেয়া হচ্ছে, আমাদের এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিচ্ছে এমন খবরও আমরা পাচ্ছি। জনগণ যদি সঠিক রায় দিতে পারে সঠিক ভোট দিতে পারলে তবে আমরা বিজয়ী হব। জায়েদা খাতুন বলেন, আমার কর্মী-সমর্থক ও এজেন্ডদের নিরাপত্তা দাবি করি। কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়। আমি নির্বাচিত হলে আমার ছেলের সহায়তা নিয়ে নাগরিকদের সেবায় আমি আত্মনিয়োগ করব।

একই কেন্দ্রে কানাইয়া দক্ষিণ পাড়ার চিত্তরঞ্জন শীল এক কিলোমিটার দূর থেকে অচল দু’পায়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ভোট দিতে আসেন। তিনি জানান, ইভিএমে ভোট দেয়া আমার কাছে খুব সহজ মনে হয়েছে। আমি আমার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছি। একই কেন্দ্রে ৮০ বছরের লোকমান ফকির ভোট দিয়ে এসে জানান, সহজে ভোট দিতে পেরে আমি সন্তুষ্ট। জাহাঙ্গীর আমাদের এলাকার সোনার টুকরা ছেলে। আমরা তাকে মেয়র পদে চাই। ভোটার সায়রা শারমিন নিপা প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত। সে ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানান।

সকাল ১১টার দিকে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের প্রচন্ড ভিড়। সবাই ইভিএমে ভোট দিতে উদগ্রীব। এ কেন্দ্রে সংরক্ষিত মহিল কাউন্সিলর প্রার্থী খন্দকার নুরুন্নাহার জানান, খুব ধীর গতিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। সাড়ে তিন ঘণ্টায় মাত্র ৮৫টি ভোট নেয়া হয়েছে। এরপর যোগীতলা বদরে আলম এবতেদিয়া মাদ্রাসা ও পাশর্^বর্তী মোগরখাল প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রচুর ভোটার লক্ষ করা যায় যাদের মধ্যে মহিলা ভোটারই বেশি। তবে মোগরখাল কেন্দ্রে সকাল পৌনে ১২টা পর্যন্ত ৩ হাজার ২৪৬ ভোটারের মধ্যে ৮৫৬ জনের ভোট নেয়া হয়েছে বলে প্রিজাইডিং অফিসার ডা. আলী আকবর জানান।

এরপর বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আন্ন রানী সাহা নামে এক বিধবা মহিলা (৬০) হুইল চেয়ারে বসে ভোট দিতে এসেছেন। তিনি প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিয়ে বেশ খুশি।

একই কেন্দ্রে ৩ নং বুথে শহীদ সরকার বলে এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন তিনি ইভিএমে মেয়র প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলেও দুজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে ইভিএমের স্কিন সাদা হয়ে যাওয়ায় ভোট দিতে পারেননি। শিউলি বেগম (৩০) নামে একজন ভোটার বলেন এত সহজে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারব এটা আমি ভাবতেই পারিনি।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাতি প্রতীকের রনির অভিযোগ

হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সরকার শাহিনুর ইসলাম রনির প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. মাহবুবুর রহমান শাহীন রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, সকালে তাদের পোলিং এজেন্টগণ স্ব স্ব কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে গেলে কেন্দ্রের বাইরে নৌকা প্রতীকের ব্যাজ ধারণকারী সরকার দলীয় লোকজন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আমাদের এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি বিভিন্ন কেন্দ্রের ভেতর দায়িত্বরত অবস্থায়ও আমাদের হাতি প্রতীকের পোলিং এজেন্টদেরকে মারধর করার অভিযোগ করেন। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে থেকে পুলিশ দিয়ে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি ও গণগ্রেপ্তারের ঘটনা এবং পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করার হুমকি দেয়া হয়।

শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণে নিয়োজিত ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের ১৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত ছিলেন।

এ নির্বাচনে গাজীপুরসহ বিভিন্ন বিভাগের ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, প্রতি কেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৯৬০ জন আনসার ব্যাটালিয়ান, প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন করে মোট ৪ হাজার ৮০০ জন গ্রাম পুলিশ, ৫৭টি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ১৭১ জন আনসার বাহিনীর সদস্য কাজ করেছেন।

এছাড়া, ৫৭ ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৯ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন। ২০ প্লাটুন বিজিবি এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ৩০টি টিম কাজ করেছ। গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কাশিমপুর থানায় ৪৭, কোনাবাড়ি থানায় ৪৩, বাসন থানায় ৪২, সদর থানায় ৯৬, গাছা থানায় ৫৭, পূবাইল থানায় ৩২, টঙ্গী পূর্ব থানায় ১১১ ও টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৫২টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এসব ভোটকেন্দ্রে ৩৫১টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ১২৯টি সাধারণ কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে মালামাল পৌঁছানোর জন্য ৫টি জোনে ভাগ করা হয়েছিল।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩৩০ বর্গকিলোমিটার গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৪৮০টি। এসব কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি, এর মধ্যে ৪৯১টি অস্থায়ী ভোটকক্ষ থাকবে। এ নির্বাচনে সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, মহিলা ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং হিজড়া ভোটার সংখ্যা ১৮ জন। এ নির্বাচনে ৪৮০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার থাকবে ৩ হাজার ৪৯৭ জন, পোলিং অফিসার ৬ হাজার ৯৮৪ জনসহ মোট ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা থাকবে প্রায় ১২ হাজার।

ছবি

দুদকের আবেদনে লতিফ বিশ্বাস ও পরিবারের বিদেশযাত্রা স্থগিত

ছবি

‘সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ আসবে না’ — বরগুনায় এনসিপির পথসভায় আহ্বায়ক

ছবি

বিএনপির বিক্ষোভে ব্যবসায়ী হত্যা তদন্তের দাবি ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ

ছবি

বিএনপির বিক্ষোভে ব্যবসায়ী হত্যা তদন্তের দাবি ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ

ছবি

জাতীয় পার্টির বিভক্তির জন্য ক্ষমতাসীনদের দায় দেখছেন কিছু নেতা

ছবি

‘গুপ্ত সংগঠনের মব’ এর বিরুদ্ধে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

বিএনপি এখন চাঁদাবাজের দলে পরিণত হয়েছে: নাহিদ

ছবি

‘তুমি টানতেছ কেন?’—পুলিশকে ধমক সাবেক মন্ত্রী কামরুলের

ছবি

সোহাগ হত্যা: আসামিদের পক্ষে লড়বেন না বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা

ছবি

জয়-পুতুলের দান-অনুদান সংক্রান্ত নথি চেয়ে এনবিআরকে দুদকের চিঠি

ছবি

সোহাগ হত্যাকে ‘রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ ফখরুলের

ছবি

হাতিরঝিলে গ্রেপ্তার শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট

ছবি

জরুরি অবস্থার অপব্যবহার ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট আইন চায় এনসিপি

অপপ্রচারের জবাব দিতে তরুণদের সাইবার যুদ্ধে নামতে হবে’

ছবি

ইসি পুনর্গঠন ও শাপলা প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নিলো এনসিপি

ছবি

মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর বিএনপি কর্মীদের হামলা চেষ্টা, গাড়ি ভাঙচুর

ছবি

ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মশাল মিছিল

ছবি

‘৯ লাখের শেয়ার লেনদেন, দিয়েছেন ২৫ হাজার’ — খাগড়াছড়িতে এনসিপি নেত্রীকে অভিযুক্ত করলেন সহকর্মী

ছবি

‘গণতান্ত্রিক অধিকারের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি’ — সজাগ থাকার আহ্বান তারেকের

ছবি

‘অন্তর্বর্তী সরকার অন্যায়কারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে কি না?’ – প্রশ্ন তারেক রহমানের

ছবি

সহিংসতা বন্ধ না করলে আওয়ামী লীগের পরিণতি ভোগ করবে বিএনপি’ — হুঁশিয়ারি যুবশক্তির

ছবি

পরিকল্পিত প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তায় দেশে অরাজকতা, নির্বাচন বিলম্বের সুযোগ তৈরি করছে : যুবদল সভাপতি

ছবি

সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বিএনপির কড়া প্রতিক্রিয়া, জড়িতদের শাস্তির দাবি

ছবি

‘নৃশংসতার রাজনীতি চলতে পারে না’ — সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে দুই দলের বিবৃতি

ছবি

জাতিসংঘ কার্যালয়কে ‘সার্বভৌমত্বের হুমকি’ আখ্যা দিয়ে তিন দাবি হেফাজতে ইসলামের

ছবি

সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বললেন জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল

ছবি

“পাগলও বোঝে কারা ক্ষমতায় যাবে,” প্রতিবাদ সভায় দুদু

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক, জরুরি অবস্থা ও বিচারপতি নিয়োগে আংশিক ঐকমত্য,আলোচনা চল‌বে : আলী রীয়াজ

ছবি

বিএনপি চায় না ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সংবিধানের মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত হোক: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

তরুণ ভোটার, সীমানা, পোস্টাল ব্যালট ও আইন সংশোধনে নানা প্রস্তাব ইসির

ছবি

“বিএনপি কি পাঁচ নম্বর দল?” ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যাচ্ছিলেন সালাহউদ্দিন, অনুরোধে ফিরে আসেন

অনলাইন নিবন্ধনে প্রবাসীদের ভোট, সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে আর ইভিএম নয়

ছবি

ছাত্রদলের অভিযোগ অস্বীকার, সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের

ছবি

শেখ হাসিনার গুলির নির্দেশের অডিও নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনকে একপেশে বললেন জয়

ছবি

বড়লেখায় জামায়াত নেতার ‘পাকিস্তান খ্যাত’ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ছাত্রদল, আইনগত ব্যবস্থার দাবি

ছবি

আইনশৃঙ্খলা থেকে পর্যবেক্ষক পর্যন্ত দায়িত্বে চার নির্বাচন কমিশনার

tab

রাজনীতি

গাজীপুর : ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি, শান্তিপূর্ণ ভোট

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

গাজীপুর : ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস পূর্বে বহুল প্রতীক্ষিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ভোটার ও জনমনের সব সংশয়-শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয়বারের এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় সবার মধ্যে স্বস্তির ভাব পরিলক্ষিত হয়। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও ইভিএমজনিত ত্রুটি ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটা স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন ভোটারা। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই প্রথমবারের মতো বিরতিহীন ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। সকাল থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ শেষ পর্যন্ত নগরীর বেশ কিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখা যায় কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মতো। তবে কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। পুরুষদের চেয়ে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশি। কোন কোন কেন্দ্রে মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ভোটার তালিকার সঙ্গে ইভিএমের মিল না থাকায় অনেক কেন্দ্রেই ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।

এদিকে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, যেভাবে ভোট হয়েছে তাতে তারা খুবই সন্তুষ্ট।

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন সব প্রার্থীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, কত ভোট পড়েছে সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোন তথ্য এখনও তারা পাননি। তবে তাদের অনুমান যে ভোটার ৫০ শতাংশের কম হবে না।

ইভিএমে ভোট গ্রহণে ধীর গতির কারণে বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভোট নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে ইভিএম ধীরগতির হতে পারে।

ভোটকেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পোলিং এজেন্ট না থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন খবর তারা পাননি।

সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু করার কথা থাকলেও বেশ কিছু কেন্দ্রে ইভিএম জটিলতায় ভোট গ্রহণে বিলম্ব ঘটে। নগরীর ৩৬ নং ওয়ার্ডের ২৬৫ গাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের শুরুতেই বিপত্তি দেখা দেয়। সাতটি বুথের নয়টি ইভিএমে ত্রুটি দেখা দেয়ায় প্রায় দেড় ঘণ্টা বিলম্বে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এ সময় লাইনে দাঁড়ানো অনেক নারী ভোটার ভোট না দিয়ে ফিরে যান। ৩ নং ওয়াডের্র ২০ হাতিমারা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইভিএমে ধীর গতির কারণে ভোট গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মানসুরা বেগম ও সীমা বেগম ভোট না দিয়ে কেন্দ্র থেকে চলে চান। ওই কেন্দ্রে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, ২ নং বুথে সোয়া পাঁচ ঘণ্টায় ৩৩২ ভোটের মধ্যে ৯৮টি ভোট গ্রহণ করা হয়। একজন ভোটারের ভোট দিতে ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় লেগে যায়।

নগরীর সালনা এলাকায় নাগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের প্রবেশমুখে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একজনকে আহত রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। তবে ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগপন্থি দুই কাউন্সিলর লাটিম প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম এবং করাত প্রতীকের প্রার্থী শাহীন আলমের সমর্থকদের মধ্যে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ইভিএমের বোতাম চাপ দেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ধাওয়ার সময় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আহত হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় ওই ব্যক্তি পড়ে গিয়ে সামান্য আঘাত পান।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান ৫৭ নং ওয়ার্ডের টঙ্গী বাজারস্থ দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল ৯টার দিকে ভোট দেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন আমি বিশ^াস করি এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। ভোটাররা আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন এ আশা আমাদের সবার।

নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা বেগম ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে নিজ এলাকায় কানাইয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১০টার দিকে ভোট দিতে আসেন। জায়েদা বেগম নারী বুথে প্রথমে ভোট দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম পুরুষ বুথে ভোট দেন।

ভোট দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভবে ভোট গ্রহণ করা হবে এটা আমাদের দাবি। কেউ যেন কোথাও টেম্পারিং করতে না পারে। ভোটের মালিক জনগণ, কোন পেশিশক্তি যাতে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করে ভোট পাল্টে না দেয় তা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। আমাদের ভোটার ও সমর্থকদের বাধা দেয়া হচ্ছে, আমাদের এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিচ্ছে এমন খবরও আমরা পাচ্ছি। জনগণ যদি সঠিক রায় দিতে পারে সঠিক ভোট দিতে পারলে তবে আমরা বিজয়ী হব। জায়েদা খাতুন বলেন, আমার কর্মী-সমর্থক ও এজেন্ডদের নিরাপত্তা দাবি করি। কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়। আমি নির্বাচিত হলে আমার ছেলের সহায়তা নিয়ে নাগরিকদের সেবায় আমি আত্মনিয়োগ করব।

একই কেন্দ্রে কানাইয়া দক্ষিণ পাড়ার চিত্তরঞ্জন শীল এক কিলোমিটার দূর থেকে অচল দু’পায়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ভোট দিতে আসেন। তিনি জানান, ইভিএমে ভোট দেয়া আমার কাছে খুব সহজ মনে হয়েছে। আমি আমার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছি। একই কেন্দ্রে ৮০ বছরের লোকমান ফকির ভোট দিয়ে এসে জানান, সহজে ভোট দিতে পেরে আমি সন্তুষ্ট। জাহাঙ্গীর আমাদের এলাকার সোনার টুকরা ছেলে। আমরা তাকে মেয়র পদে চাই। ভোটার সায়রা শারমিন নিপা প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত। সে ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানান।

সকাল ১১টার দিকে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের প্রচন্ড ভিড়। সবাই ইভিএমে ভোট দিতে উদগ্রীব। এ কেন্দ্রে সংরক্ষিত মহিল কাউন্সিলর প্রার্থী খন্দকার নুরুন্নাহার জানান, খুব ধীর গতিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। সাড়ে তিন ঘণ্টায় মাত্র ৮৫টি ভোট নেয়া হয়েছে। এরপর যোগীতলা বদরে আলম এবতেদিয়া মাদ্রাসা ও পাশর্^বর্তী মোগরখাল প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রচুর ভোটার লক্ষ করা যায় যাদের মধ্যে মহিলা ভোটারই বেশি। তবে মোগরখাল কেন্দ্রে সকাল পৌনে ১২টা পর্যন্ত ৩ হাজার ২৪৬ ভোটারের মধ্যে ৮৫৬ জনের ভোট নেয়া হয়েছে বলে প্রিজাইডিং অফিসার ডা. আলী আকবর জানান।

এরপর বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আন্ন রানী সাহা নামে এক বিধবা মহিলা (৬০) হুইল চেয়ারে বসে ভোট দিতে এসেছেন। তিনি প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিয়ে বেশ খুশি।

একই কেন্দ্রে ৩ নং বুথে শহীদ সরকার বলে এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন তিনি ইভিএমে মেয়র প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলেও দুজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে ইভিএমের স্কিন সাদা হয়ে যাওয়ায় ভোট দিতে পারেননি। শিউলি বেগম (৩০) নামে একজন ভোটার বলেন এত সহজে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারব এটা আমি ভাবতেই পারিনি।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাতি প্রতীকের রনির অভিযোগ

হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সরকার শাহিনুর ইসলাম রনির প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. মাহবুবুর রহমান শাহীন রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, সকালে তাদের পোলিং এজেন্টগণ স্ব স্ব কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে গেলে কেন্দ্রের বাইরে নৌকা প্রতীকের ব্যাজ ধারণকারী সরকার দলীয় লোকজন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আমাদের এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি বিভিন্ন কেন্দ্রের ভেতর দায়িত্বরত অবস্থায়ও আমাদের হাতি প্রতীকের পোলিং এজেন্টদেরকে মারধর করার অভিযোগ করেন। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে থেকে পুলিশ দিয়ে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি ও গণগ্রেপ্তারের ঘটনা এবং পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করার হুমকি দেয়া হয়।

শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণে নিয়োজিত ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের ১৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত ছিলেন।

এ নির্বাচনে গাজীপুরসহ বিভিন্ন বিভাগের ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, প্রতি কেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৯৬০ জন আনসার ব্যাটালিয়ান, প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন করে মোট ৪ হাজার ৮০০ জন গ্রাম পুলিশ, ৫৭টি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ১৭১ জন আনসার বাহিনীর সদস্য কাজ করেছেন।

এছাড়া, ৫৭ ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৯ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন। ২০ প্লাটুন বিজিবি এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ৩০টি টিম কাজ করেছ। গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কাশিমপুর থানায় ৪৭, কোনাবাড়ি থানায় ৪৩, বাসন থানায় ৪২, সদর থানায় ৯৬, গাছা থানায় ৫৭, পূবাইল থানায় ৩২, টঙ্গী পূর্ব থানায় ১১১ ও টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৫২টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এসব ভোটকেন্দ্রে ৩৫১টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ১২৯টি সাধারণ কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে মালামাল পৌঁছানোর জন্য ৫টি জোনে ভাগ করা হয়েছিল।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩৩০ বর্গকিলোমিটার গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৪৮০টি। এসব কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি, এর মধ্যে ৪৯১টি অস্থায়ী ভোটকক্ষ থাকবে। এ নির্বাচনে সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, মহিলা ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং হিজড়া ভোটার সংখ্যা ১৮ জন। এ নির্বাচনে ৪৮০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার থাকবে ৩ হাজার ৪৯৭ জন, পোলিং অফিসার ৬ হাজার ৯৮৪ জনসহ মোট ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা থাকবে প্রায় ১২ হাজার।

back to top