কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল
আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্স রবিবার রাতে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং কাঙ্খিত ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে রবিবার। ম্যাচটি কেবল বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক ট্রফি জয়েরই নয়, এটা লিওনেল মেসি এবং কিলিয়ান এমবাপ্পের ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইও। ক্লাব ফুটবলে এ দুই তারকা একই দলে খেলেন। কিন্তু রবিবার তারা মাঠে নামবেন পরস্পরকে পরাজিত করার লক্ষ্য নিয়ে।
বিশ্বকাপের আগেই বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছিলেন ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল এবারের প্রতিযোগিতায় ফেবারিট। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে ব্রাজিল বিদায় নেয়ায় টিকে থাকে বাকি দুই দল। তারাই খেলবে ট্রফির জন্য।
লিওনেল মেসির ভক্তের সংখ্যা অনেক বেশী হওয়ায় এবং তিনি নিজের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ হিসেবে ফাইনালকে ঘোষণা দেয়ায় সংবাদ মাধ্যমে তাকে নিয়েই বেশী শিরোনাম হচ্ছে। তা ছাড়া সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার দারুন জয় ফাইনালে তাদেরকে কিছুটা এগিয়ে রাখছে। মেসি ছাড়া আর্জেন্টিনার বাকি ফুটবলাররা বিশ্বকাপের আগে খুব বেশী তারকা খ্যাতি পাননি। কিন্তু বিশ্বকাপে দারুন দলীয় সমন্বয় আর্জেন্টিনাকে এনে দিচেছ সাফল্য। আক্রমণভাগে মেসি ছাড়া সাফল্য পেয়েছেন জুলিয়ান আলভারেজ এবং ম্যাক অ্যালিস্টার। বিশেষ করে সেমিফাইনালে আলভারেজ খেলেছেন। নিজে দুটি গোল করা ছাড়াও মেসির করা গোলের পেনাল্টিও আদায় করেছিলেন তিনি।
রক্ষণভাগের দায়িত্বে থাকবেন নাহুয়েল মলিনা, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, নিকোলাস ওটামেন্ডি এবং নিকোলাস টাগলিফিয়াকো। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব বর্তাবে মলিনার উপর। কারণ তাকে সামলাতে হবে এমবাপ্পেকে। এমবাপ্পে কেবল গতিময়ই নয়, সাথে কুশলীও। মরক্কো তাকে আটকাতে নিয়েজিত করেছিল দুইজন ডিফেন্ডারকে। আর্জেন্টিনার কোচ ফাইনালে কি কৌশল অবলম্বন করেন তা খেলা শুরুর আগে বোঝা যাবে না। তবে তাদের জন্য যে কাজটি এমবাপ্পে কঠিন করে তুলবেন তা নিয়ে কোন সংশয় নেই। তাছাড়া অপর দিকে থাকা ওসামনে ডেম্বেলেও ভয়ংকর খেলোয়াড়। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়দের যতটা সহজে আর্জেন্টিনা রুখে দিতে পেরেছিল ফাইনালে তা পারবে না। ফ্রান্সের গ্রিজম্যান এবং অরলিয়েন চুয়ামেনি বেশ সৃষ্টিশীল। চুয়ামেনির উপর দায়িত্ব থাকবে মেসিকে আটকে রাখার। এ তরুনের পক্ষে তা কতটা সম্ভব হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে গ্রিজম্যান আর্জেন্টিনা কোচের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাড়াতে পারেন। আক্রমণভাগে অলিভার জিরু খুবই কার্যকর। যে কোন অ্যাঙ্গেল থেকে তিনি গোল করতে পারেন। অভিজ্ঞতার কারণে ফাইনালে খেলার বাড়তি চাপ তিনি সামলে উঠতে পারেন সহজেই।
মিডফিল্ডে আর্জেন্টিনার গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রড্রিগো ডি পল। তার গতি এবং স্কিল আর্জেন্টিনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার সাথে থাকবেন লেনার্দো পারেদেস।
ফ্রান্স দল সমর্থনের দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও অভিজ্ঞতার দিক থেকে মোটেও পিছিয়ে নেই। গোলরক্ষক উগো লরিস থেকে শুরু করে স্ট্রাইকার জিরু, সবারই বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বয়সের দিক থেকে চুয়ামেনি পিছিয়ে থাকলেও অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে নেই। ক্লাব ফুটবলেও তিনি খেলেন রিয়ালের হয়ে। তাই চাপ সামলানো তার জন্য বড় কিছু না। ডিফেন্সে রাফায়েল ভারানে, ফার্নান্ডেজরা এ পর্যন্ত ভালই করেছেন। আসলে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জনকারী দল দুটির সামর্থে কোন ঘাটতি নেই। কোন দিক থেকে পিছিয়েও নেই কেউ। সমস্যা একটিই এবং সেটি হলো প্রত্যাশার চাপ। এ চাপ সামলে যারা সাবলিল খেলতে পারবে তারাই শিরোপা নিয়ে উল্লাস করতে পারবে। মনে রাখতে হবে, ফাইনালে গোলের সুযোগ খুব বেশী পাওয়া যাবে না। সুযোগ কাজে লাগানো দলই জয়ী হবে।
ফাইনালে কেবল শিরোপা নির্ধারণ হবে না একই সাথে সবচেয়ে বেশী গোলদাতাও নির্ধারিত হবে এ ম্যাচে। লিওনেল মেসি এবং এমবাপ্পে ৫টি করে গোল দিয়ে আছেন যৌথভাবে শীর্ষে। ফাইনালে উভয়ই সুযোগ পাবেন প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। আর্জেন্টিনা জিততে পারলে মেসি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হবেন তা প্রায় নিশ্চিত। সব অনুমান এবং প্রত্যাশার বাস্তব রূপ দেখা যাবে রবিবার রাতে। সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে সেদিকেই।
কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল
শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২
আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্স রবিবার রাতে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং কাঙ্খিত ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে রবিবার। ম্যাচটি কেবল বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক ট্রফি জয়েরই নয়, এটা লিওনেল মেসি এবং কিলিয়ান এমবাপ্পের ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইও। ক্লাব ফুটবলে এ দুই তারকা একই দলে খেলেন। কিন্তু রবিবার তারা মাঠে নামবেন পরস্পরকে পরাজিত করার লক্ষ্য নিয়ে।
বিশ্বকাপের আগেই বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছিলেন ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল এবারের প্রতিযোগিতায় ফেবারিট। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে ব্রাজিল বিদায় নেয়ায় টিকে থাকে বাকি দুই দল। তারাই খেলবে ট্রফির জন্য।
লিওনেল মেসির ভক্তের সংখ্যা অনেক বেশী হওয়ায় এবং তিনি নিজের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ হিসেবে ফাইনালকে ঘোষণা দেয়ায় সংবাদ মাধ্যমে তাকে নিয়েই বেশী শিরোনাম হচ্ছে। তা ছাড়া সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার দারুন জয় ফাইনালে তাদেরকে কিছুটা এগিয়ে রাখছে। মেসি ছাড়া আর্জেন্টিনার বাকি ফুটবলাররা বিশ্বকাপের আগে খুব বেশী তারকা খ্যাতি পাননি। কিন্তু বিশ্বকাপে দারুন দলীয় সমন্বয় আর্জেন্টিনাকে এনে দিচেছ সাফল্য। আক্রমণভাগে মেসি ছাড়া সাফল্য পেয়েছেন জুলিয়ান আলভারেজ এবং ম্যাক অ্যালিস্টার। বিশেষ করে সেমিফাইনালে আলভারেজ খেলেছেন। নিজে দুটি গোল করা ছাড়াও মেসির করা গোলের পেনাল্টিও আদায় করেছিলেন তিনি।
রক্ষণভাগের দায়িত্বে থাকবেন নাহুয়েল মলিনা, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, নিকোলাস ওটামেন্ডি এবং নিকোলাস টাগলিফিয়াকো। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব বর্তাবে মলিনার উপর। কারণ তাকে সামলাতে হবে এমবাপ্পেকে। এমবাপ্পে কেবল গতিময়ই নয়, সাথে কুশলীও। মরক্কো তাকে আটকাতে নিয়েজিত করেছিল দুইজন ডিফেন্ডারকে। আর্জেন্টিনার কোচ ফাইনালে কি কৌশল অবলম্বন করেন তা খেলা শুরুর আগে বোঝা যাবে না। তবে তাদের জন্য যে কাজটি এমবাপ্পে কঠিন করে তুলবেন তা নিয়ে কোন সংশয় নেই। তাছাড়া অপর দিকে থাকা ওসামনে ডেম্বেলেও ভয়ংকর খেলোয়াড়। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়দের যতটা সহজে আর্জেন্টিনা রুখে দিতে পেরেছিল ফাইনালে তা পারবে না। ফ্রান্সের গ্রিজম্যান এবং অরলিয়েন চুয়ামেনি বেশ সৃষ্টিশীল। চুয়ামেনির উপর দায়িত্ব থাকবে মেসিকে আটকে রাখার। এ তরুনের পক্ষে তা কতটা সম্ভব হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে গ্রিজম্যান আর্জেন্টিনা কোচের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাড়াতে পারেন। আক্রমণভাগে অলিভার জিরু খুবই কার্যকর। যে কোন অ্যাঙ্গেল থেকে তিনি গোল করতে পারেন। অভিজ্ঞতার কারণে ফাইনালে খেলার বাড়তি চাপ তিনি সামলে উঠতে পারেন সহজেই।
মিডফিল্ডে আর্জেন্টিনার গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রড্রিগো ডি পল। তার গতি এবং স্কিল আর্জেন্টিনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার সাথে থাকবেন লেনার্দো পারেদেস।
ফ্রান্স দল সমর্থনের দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও অভিজ্ঞতার দিক থেকে মোটেও পিছিয়ে নেই। গোলরক্ষক উগো লরিস থেকে শুরু করে স্ট্রাইকার জিরু, সবারই বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বয়সের দিক থেকে চুয়ামেনি পিছিয়ে থাকলেও অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে নেই। ক্লাব ফুটবলেও তিনি খেলেন রিয়ালের হয়ে। তাই চাপ সামলানো তার জন্য বড় কিছু না। ডিফেন্সে রাফায়েল ভারানে, ফার্নান্ডেজরা এ পর্যন্ত ভালই করেছেন। আসলে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জনকারী দল দুটির সামর্থে কোন ঘাটতি নেই। কোন দিক থেকে পিছিয়েও নেই কেউ। সমস্যা একটিই এবং সেটি হলো প্রত্যাশার চাপ। এ চাপ সামলে যারা সাবলিল খেলতে পারবে তারাই শিরোপা নিয়ে উল্লাস করতে পারবে। মনে রাখতে হবে, ফাইনালে গোলের সুযোগ খুব বেশী পাওয়া যাবে না। সুযোগ কাজে লাগানো দলই জয়ী হবে।
ফাইনালে কেবল শিরোপা নির্ধারণ হবে না একই সাথে সবচেয়ে বেশী গোলদাতাও নির্ধারিত হবে এ ম্যাচে। লিওনেল মেসি এবং এমবাপ্পে ৫টি করে গোল দিয়ে আছেন যৌথভাবে শীর্ষে। ফাইনালে উভয়ই সুযোগ পাবেন প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। আর্জেন্টিনা জিততে পারলে মেসি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হবেন তা প্রায় নিশ্চিত। সব অনুমান এবং প্রত্যাশার বাস্তব রূপ দেখা যাবে রবিবার রাতে। সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে সেদিকেই।