alt

খেলা

পাকিস্তানে টাইগারদের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক : সোমবার, ২৬ আগস্ট ২০২৪

ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের অন্যতম নায়ক মেহেদী মিরাজ রিজওয়ানকে বোল্ড করে উল্লাসে মেতে ওঠেন

দুই দলের প্রথম ইনিংস শেষ হতেই যেখানে লাগল চারদিন, সেখানে টেস্টের শেষদিনে এরকম নাটকীয়তা কেউ কি স্বপ্নেও ভেবেছিলেন। কিন্তু এটাই ক্রিকেটের সৌন্দর্য, বিশেষ করে ক্রিকেটের আদি ফরম্যাট টেস্টের মাহাত্ম্যই এমন। নাটকীয়তায় ভরা রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের শেষদিনে টাইগার বোলাররা একের পর এক পতন ঘটালেন পাকিস্তানি ব্যাটারদের। তাতে প্রথম ইনিংসে ১১৭ রানে পিছিয়ে পড়া সিরিজের স্বাগতিক দল অল আউট হলো ১৪৬ রানে। জয়ের জন্য ৩০ রানের টার্গেটে পৌঁছতে কোনো উইকেটই খরচ হলো না বাংলাদেশ দলের। পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটের জয়ে ইতিহাস গড়ল নাজমুল হোসেন শান্তর দল, ২১ বছর পর অবশেষে রাওয়ালপিন্ডিতে এলো ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বলে রাখা ভালো, ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশ দলের প্রথম জয়। এই জয়ে দুই টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো টাইগাররা।

রোববার (২৫ আগস্ট) ম্যাচের পঞ্চম দিন শুরুর সময়ে কেউ কি ভেবেছিল যে, এভাবে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ? নিজেদের গড়া পিচটা পেস সহায়ক ভেবেই দলে একজন স্পিনারও রাখেনি স্বাগতিকরা। অথচ এই পিচেই টাইগার স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করলেন চার উইকেট, অনেক ঝড়ের মুখে সাকিব আল হাসানও তুলে নিলেন তিনটি উইকেট। এতে ২০০৩ সালে মুলতানে একদম কাছে গিয়েও ১ উইকেটে হারের যন্ত্রণার প্রতিশোধটাও নেয়া গেলো। সেদিন চোখে জল নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজনরা। এরপর পাকিস্তানের সঙ্গে ঘরে-বাইরে অনেকগুলো টেস্ট খেললেও জয় ছিল অধরা। সেই অধরা জয়টা এলো ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার বিদায়ের পর। দেশের এগারোটি জেলা যখন বন্যায় ভাসছে, তখন মুশফিক-মিরাজ-সাকিবরা দেশকে এনে দিলেন ঐতিহাসিক জয়।

রোববার প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে ১০ উইকেটে। অথচ চতুর্থ দিন পর্যন্ত মনে হচ্ছিল এই টেস্ট এগুচ্ছে নিস্প্রাণ ড্রয়ের দিকে। শেষ দিনে পেস-স্পিনের মিশেলে দুর্দান্ত বোলিংয়ে চিত্রপট বদলে দেন বাংলাদেশের বোলাররা, পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাটারদের জন্য ৩০ রানের সহজ টার্গেট আনলেন তারা। সেটা পেরোতে ৬.৩ ওভারের বেশি লাগেনি। দেশের বাইরে টেস্টে এটি বাংলাদেশের সপ্তম জয়। মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর এই জয়কেই নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে বড় করতে রাখতে হয়। বাংলাদেশের জেতার ভিত তৈরিতে বড় ভূমিকা অবশ্য ব্যাটারদের। স্বাগতিকদের ৪৪৮ রানের জবাবে ৫৬৫ রান তুলে ১১৭ রানের লিড নিয়ে চমকে দেয় শান্তর দল। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম খেলেন ১৯১ রানের ইনিংস। ওপেনার সাদমান ইসলামের ব্যাট থেকে আসে ৯৩ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিংয়ে ৭৭ রানের পর বোলিংয়েও ৪ উইকেট নিয়ে রাখেন বড় ভূমিকা। উইকেটের পেছনে ৬টি ডিসমিসালের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন লিটন দাস, হাফ সেঞ্চুরি আসে মোমিনুল হকের ব্যাট থেকেও।

নতুন বলে শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদরা দুই ইনিংসেই রাখেন ঝাঁজালো ভূমিকা। অর্থাৎ সম্মিলিত পারফরম্যান্সেই ডানা মেলে ধরে বাংলাদেশ।

এই টেস্টের প্রথমদিনের বেশিরভাগটা ভেসে গিয়েছিল বাজে আবহাওয়ায়। এরপর ব্যাট করতে নেমে শুরুর বিপর্যয় কাটিয়েও বড় রানের দিকে ছুটছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিন বিকেলে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ছেড়ে দেয় তারা। বাংলাদেশও দিতে থাকে জোরালো জবাব। নিবেদন, চেষ্টা, চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তায় ইনিংস টেনে নিতে থাকেন ব্যাটাররা। পাকিস্তানের পুঁজি ছাপিয়ে অনেক দূর চলে যায় বাংলাদেশ।

চতুর্থ দিন বিকেলে এসে বড় লিড নেয়ার পরই পরিষ্কার হয়ে যায় আর যাই হোক এই টেস্টে হারছে না বাংলাদেশ। তবে জেতার আশা তখনো ছিল বাড়াবাড়ি। চতুর্থ দিন শেষে ১ উইকেটে ২৩ রান তুলেছিল পাকিস্তান। তখনো ড্র’ই ছিল সম্ভাব্য ফলাফল।

তবে পঞ্চম দিনে হিসেব বদলে দিতে থাকে বাংলাদেশ। সকালেই দারণ বল করে হাসান মাহমুদ কাবু করেন শান মাসুদকে। বাবর আজম শূন্য রানে জীবন পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি।

নাহিদ রানা থমকে যান গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। এরপরই স্পিন ভেল্কি শুরু সাকিব-মিরাজের। রাজনৈতিক পালাবদলের পর দেশে সাকিবের বিরূদ্ধে হয়েছে হত্যা মামলা, তাকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেয়ার উকিল নোটিশও দেয়া হয়েছে বিসিবিকে। এসব চাপ একদম নিজের ওপর পড়তে দেননি বাংলাদেশের সফলতম ক্রিকেটার।

সাউদ শাকিল, আবদুল্লাহ শফিকের মহা গুরুত্বপূর্ণ দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে দলের জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেন তিনি। পরে নাসিম শাহকে আউট করে ধরেন তৃতীয় শিকার।

মিরাজ ব্যাট হাতে ঝলক দেখানোর পর নিজের আসল কাজেও ছিলেন পটু। শেষ দিনের উইকেট ভেঙে যাওয়ায় তা থেকে মিলে টার্ন, বাউন্স। কিছু বল নিচুও হচ্ছিল। সব মিলিয়ে মিরাজ হয়েছে ওঠেন দুর্ধর্ষ, শিকার করেন ৪ উইকেট। ১৯১ রানের ইনিংসটা খেলে ম্যাচসেরা হওয়া মুশফিকুর রহিম তার প্রাইজমানি দিয়েছেন বন্যা দুর্গতদের উদ্দেশ্যে। নাজমুল হোসেন শান্ত জয়টাকে উৎসর্গ করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রাণ হারানোদের স্মৃতির প্রতি। সব মিলিয়ে নতুন বাংলাদেশে যেনো উদ্দীপ্ত নতুন এক ক্রিকেট দল পেলো এই জয়। বহুদিন এটার রেশ থাকবে নিশ্চিতভাবেই।

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

সিলেট স্ট্রাইকার্সের হারঃ ব্যাটিংয়ে পাঁচ ওভার কী করছিলেন অ্যারন জোন্স এবং জর্জ মানজি!

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

স্প্যানিশ সুপার কাপ বার্সেলোনার, রেয়ালের বড় পরাজয়

ছবি

তুর্কি তারকার বীরত্বে জয় ম্যানইউর, আর্সেনালের বিদায়

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাদ পড়ার দিনে হাসলো লিটনের ব্যাট

ছবি

লিটনকে বাদ দেয়ার ব্যাখা দিলেন প্রধান নির্বাচক

ছবি

আজ ফুটবলের রাত, মুখোমুখি রেয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনা

টিভিতে আজকের খেলা

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে চূড়ান্ত বিদায়

ছবি

ক্রীড়াঙ্গনে অরাজনৈতিক ঐক্যের প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল

ছবি

বার্ল-ইয়াসির জুটিতে খুলনাকে প্রথম হার দেখিয়ে জয়ে ফিরলো রাজশাহী

ছবি

মেজাজ হারিয়ে শাস্তি পেলেন তামিম

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনা

ছবি

শেষ ওভারে ৩০ রান নিয়ে রংপুরকে জেতালেন নুরুল

ছবি

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ৮ হাজার রানের রেকর্ড তামিমের

ছবি

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের খেলা নিয়ে শঙ্কা

ছবি

এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারেন সাকিব

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কি থাকবেন সাকিব-তামিম? যা বলছে বিসিবি

ছবি

লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ঐতিহ্যের দ্বৈরথ শেষ অমীমাংসায়

ছবি

সিরিজ জিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া, ১০ বছর পর বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি হাতছাড়া ভারতের

ছবি

রাজশাহীর হারে বাজে ফিল্ডিংয়ের দায় দেখছেন বার্ল

ছবি

এবার কোহলিকে আউট না দিয়ে আলোচনায় সৈকত

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

তাসকিনের রেকর্ডের দিন জিতলো দুর্বার রাজশাহী

ছবি

তাসকিনের ৭ উইকেটে বিপিএলে নতুন ইতিহাস

ছবি

বিসিবি সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বিরুদ্ধে

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব শান্তছাড়লেন

ছবি

এর মানে এই না যে প্লেয়াররা পয়সা পাবে না : বিসিবি সভাপতি

ছবি

টানা তৃতীয়বার এআইপিএসের বর্ষসেরা আর্জেন্টিনা

টিভিতে আজকের খেলা

tab

খেলা

পাকিস্তানে টাইগারদের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের অন্যতম নায়ক মেহেদী মিরাজ রিজওয়ানকে বোল্ড করে উল্লাসে মেতে ওঠেন

সোমবার, ২৬ আগস্ট ২০২৪

দুই দলের প্রথম ইনিংস শেষ হতেই যেখানে লাগল চারদিন, সেখানে টেস্টের শেষদিনে এরকম নাটকীয়তা কেউ কি স্বপ্নেও ভেবেছিলেন। কিন্তু এটাই ক্রিকেটের সৌন্দর্য, বিশেষ করে ক্রিকেটের আদি ফরম্যাট টেস্টের মাহাত্ম্যই এমন। নাটকীয়তায় ভরা রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের শেষদিনে টাইগার বোলাররা একের পর এক পতন ঘটালেন পাকিস্তানি ব্যাটারদের। তাতে প্রথম ইনিংসে ১১৭ রানে পিছিয়ে পড়া সিরিজের স্বাগতিক দল অল আউট হলো ১৪৬ রানে। জয়ের জন্য ৩০ রানের টার্গেটে পৌঁছতে কোনো উইকেটই খরচ হলো না বাংলাদেশ দলের। পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটের জয়ে ইতিহাস গড়ল নাজমুল হোসেন শান্তর দল, ২১ বছর পর অবশেষে রাওয়ালপিন্ডিতে এলো ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বলে রাখা ভালো, ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশ দলের প্রথম জয়। এই জয়ে দুই টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো টাইগাররা।

রোববার (২৫ আগস্ট) ম্যাচের পঞ্চম দিন শুরুর সময়ে কেউ কি ভেবেছিল যে, এভাবে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ? নিজেদের গড়া পিচটা পেস সহায়ক ভেবেই দলে একজন স্পিনারও রাখেনি স্বাগতিকরা। অথচ এই পিচেই টাইগার স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করলেন চার উইকেট, অনেক ঝড়ের মুখে সাকিব আল হাসানও তুলে নিলেন তিনটি উইকেট। এতে ২০০৩ সালে মুলতানে একদম কাছে গিয়েও ১ উইকেটে হারের যন্ত্রণার প্রতিশোধটাও নেয়া গেলো। সেদিন চোখে জল নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজনরা। এরপর পাকিস্তানের সঙ্গে ঘরে-বাইরে অনেকগুলো টেস্ট খেললেও জয় ছিল অধরা। সেই অধরা জয়টা এলো ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার বিদায়ের পর। দেশের এগারোটি জেলা যখন বন্যায় ভাসছে, তখন মুশফিক-মিরাজ-সাকিবরা দেশকে এনে দিলেন ঐতিহাসিক জয়।

রোববার প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে ১০ উইকেটে। অথচ চতুর্থ দিন পর্যন্ত মনে হচ্ছিল এই টেস্ট এগুচ্ছে নিস্প্রাণ ড্রয়ের দিকে। শেষ দিনে পেস-স্পিনের মিশেলে দুর্দান্ত বোলিংয়ে চিত্রপট বদলে দেন বাংলাদেশের বোলাররা, পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাটারদের জন্য ৩০ রানের সহজ টার্গেট আনলেন তারা। সেটা পেরোতে ৬.৩ ওভারের বেশি লাগেনি। দেশের বাইরে টেস্টে এটি বাংলাদেশের সপ্তম জয়। মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর এই জয়কেই নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে বড় করতে রাখতে হয়। বাংলাদেশের জেতার ভিত তৈরিতে বড় ভূমিকা অবশ্য ব্যাটারদের। স্বাগতিকদের ৪৪৮ রানের জবাবে ৫৬৫ রান তুলে ১১৭ রানের লিড নিয়ে চমকে দেয় শান্তর দল। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম খেলেন ১৯১ রানের ইনিংস। ওপেনার সাদমান ইসলামের ব্যাট থেকে আসে ৯৩ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিংয়ে ৭৭ রানের পর বোলিংয়েও ৪ উইকেট নিয়ে রাখেন বড় ভূমিকা। উইকেটের পেছনে ৬টি ডিসমিসালের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন লিটন দাস, হাফ সেঞ্চুরি আসে মোমিনুল হকের ব্যাট থেকেও।

নতুন বলে শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদরা দুই ইনিংসেই রাখেন ঝাঁজালো ভূমিকা। অর্থাৎ সম্মিলিত পারফরম্যান্সেই ডানা মেলে ধরে বাংলাদেশ।

এই টেস্টের প্রথমদিনের বেশিরভাগটা ভেসে গিয়েছিল বাজে আবহাওয়ায়। এরপর ব্যাট করতে নেমে শুরুর বিপর্যয় কাটিয়েও বড় রানের দিকে ছুটছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিন বিকেলে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ছেড়ে দেয় তারা। বাংলাদেশও দিতে থাকে জোরালো জবাব। নিবেদন, চেষ্টা, চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তায় ইনিংস টেনে নিতে থাকেন ব্যাটাররা। পাকিস্তানের পুঁজি ছাপিয়ে অনেক দূর চলে যায় বাংলাদেশ।

চতুর্থ দিন বিকেলে এসে বড় লিড নেয়ার পরই পরিষ্কার হয়ে যায় আর যাই হোক এই টেস্টে হারছে না বাংলাদেশ। তবে জেতার আশা তখনো ছিল বাড়াবাড়ি। চতুর্থ দিন শেষে ১ উইকেটে ২৩ রান তুলেছিল পাকিস্তান। তখনো ড্র’ই ছিল সম্ভাব্য ফলাফল।

তবে পঞ্চম দিনে হিসেব বদলে দিতে থাকে বাংলাদেশ। সকালেই দারণ বল করে হাসান মাহমুদ কাবু করেন শান মাসুদকে। বাবর আজম শূন্য রানে জীবন পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি।

নাহিদ রানা থমকে যান গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। এরপরই স্পিন ভেল্কি শুরু সাকিব-মিরাজের। রাজনৈতিক পালাবদলের পর দেশে সাকিবের বিরূদ্ধে হয়েছে হত্যা মামলা, তাকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেয়ার উকিল নোটিশও দেয়া হয়েছে বিসিবিকে। এসব চাপ একদম নিজের ওপর পড়তে দেননি বাংলাদেশের সফলতম ক্রিকেটার।

সাউদ শাকিল, আবদুল্লাহ শফিকের মহা গুরুত্বপূর্ণ দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে দলের জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেন তিনি। পরে নাসিম শাহকে আউট করে ধরেন তৃতীয় শিকার।

মিরাজ ব্যাট হাতে ঝলক দেখানোর পর নিজের আসল কাজেও ছিলেন পটু। শেষ দিনের উইকেট ভেঙে যাওয়ায় তা থেকে মিলে টার্ন, বাউন্স। কিছু বল নিচুও হচ্ছিল। সব মিলিয়ে মিরাজ হয়েছে ওঠেন দুর্ধর্ষ, শিকার করেন ৪ উইকেট। ১৯১ রানের ইনিংসটা খেলে ম্যাচসেরা হওয়া মুশফিকুর রহিম তার প্রাইজমানি দিয়েছেন বন্যা দুর্গতদের উদ্দেশ্যে। নাজমুল হোসেন শান্ত জয়টাকে উৎসর্গ করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রাণ হারানোদের স্মৃতির প্রতি। সব মিলিয়ে নতুন বাংলাদেশে যেনো উদ্দীপ্ত নতুন এক ক্রিকেট দল পেলো এই জয়। বহুদিন এটার রেশ থাকবে নিশ্চিতভাবেই।

back to top