ঘটনাটা সবার জানা। মেলবোর্নে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার
বক্সিং ডে টেস্টের দশম ওভারের পরের ঘটনা। শেষ বলে দৌড়ে এক রান পূর্ণ করেন দুই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার। ঘটনা এরপর। ডেব্যু হওয়া ১৯ বছরের স্যাম কনষ্টাস বিপরীত প্রান্তে থাকা উসমান খাজার সাথে দেখা করতে যাবার সময়।
ভিরাট কোহলি সেসময় স্যাম কনষ্টাসের কাঁধে ধাক্কা দেন। দুজনের মধ্যে উওপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।উসমান খাজা দুজনকে শান্ত করেন।ততক্ষণে আম্পায়াররা এলে বিষয়টি আপাত মিটমাট হয়। মাঠের ঘটনার শেষ সেখানেই।
তবে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে ভিরাট কোহলি তার গতিপথ বদলে স্যাম কনষ্টাসের মুখোমুখি হয়ে তাকে ধাক্কা দিয়েছেন।
ক্রিকেট বলা হয় ‘ভদ্রলোকের’ খেলা। আইসিসির আচরণবিধিতে বলা আছে, ক্রিকেটে যে কোন ধরনের শারীরিক সংঘর্ষ নিষিদ্ধ। ইচ্ছাকৃতভাবে বা না বুঝে সেটা যেভাবেই হোক।
গতকালের ঘটনা বিশ্লেষণে যেহেতু দেখা গেছে কোহলি গতিপথ বদলে কনষ্টাস কে ধাক্কা দিয়েছেন, তাই ক্রিকেট বিশ্লেষকরা ধরেই নিয়েছিলেন বড় শাস্তি পেতে চলেছেন ভারতের বড় তারকা কোহলি।
কিন্তু আইসিস আচরণবিধির লেভেল ওয়ান পর্যায়ের দোষী সাব্যস্ত করে কোহলিকে। ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ এবং একটি ডিমেরিট পয়েন্ট শাস্তি দেয়া হয়। ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে একজন ক্রিকেটার পরের ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকেন। কোহলির শাস্তিকে নগন্য মনে করছেন অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক। তাদের মধ্যে ভারতীয়রাও আছেন। এই ‘লঘু শাস্তি’ মেনে নিতে পারেননি অনেকেই।
তাদের মতে কোহলি যা করেছেন তা বড় অপরাধ। অনেকে ভেবেই রেখেছিলেন তিন অথবা চার ডিমেরিট পয়েন্ট পাবেন কোহলি। তবে ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে পরের ম্যাচ নিষিদ্ধ মানে সিডনি টেস্ট হয়তো খেলতে পারতেন না কোহলি।
কোহলির শাস্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক রিকি পন্টিং বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ভিরাটের শাস্তিটি কড়া হয়নি। আগেও এমন হয়েছে, ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ম্যাচ ফি জরিমানা করে শেষ করে দিয়েছে। কিন্তু ঘটনার বিশালতার দিকে তাকালে দেখা যায় গতকাল গুরুত্বপূর্ণ দিন ছিলো সারা দুনিয়ায় কোটি কোটি মানুষ ঘটনাটি দেখেছে।এতে ছোটদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে।এবং সাধারণরা ভেবে নিবে তা এমন কিছু নয়।’
ফক্স ক্রিকেটে ধারাভাষ্য দেয়া ইংল্যান্ডের সাবেক কাপ্তান মাইকেল ভন মনে করেন কোহলি খুবই ভাগ্যবান তাকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে। ‘অ্যাডিলেড ওভালে মোহাম্মদ সিরাজকেও যে শাস্তি দেয়া হয়েছে, আমার মতে সে ছাড় পেয়ে গেলো।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক গ্রেট মার্ক ওয়াহ বলেন, ‘আপনি যেই হন না কেনো ক্রিকেটে এমন ব্যবহারের জায়গা নেই। সে খুবই ভাগ্যবান শাস্তিটা একদম কম হয়েছে। সে কমপক্ষে লেভেল টু আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে দোষী হতে পারতো।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক উইকেটকিপার-ব্যাটার গিলক্রিস্ট বলেন, ‘ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ জরিমানা ভিরাটের মতো বিলিয়নিয়ারের কাছে তেমন কোন প্রভাবই পড়বেনা। সে অল্পতেই ছাড় পেয়ে গেলো।’
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী মনে করেন কোহলি বেঁচে গেছেন বড় শাস্তি থেকে। ‘ভিরাট যখন ভবিষ্যতে ঘটনাটার দিকে তাকাবেন তখন নিশ্চিত ভাববেন আমি ভাগ্যবান এতো অল্প শাস্তিতে পার পেয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনাটার জন্য তার গর্ব নয়, অনুতপ্ত বোধ হবে।’
ফুটবল ও ক্রিকেট রুলস নিয়ে কাজ করা অস্ট্রেলিয়ার মরিস বলেন, ‘কোহলির যে সম্পদের পরিমান ২০ শতাংশ ম্যাচ ফি তার হাতের ময়লা।আমি বিস্মিত হইনি, তবে হতাশ। বিষয়টি যতটা গুরুত্বপূর্ণ সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে না পারাটা বিশ্ব ক্রিকেট এবং আইসিসির জন্য বিব্রতকর, লজ্জার।’
ঘটনাটা নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিবৃতি পাওয়া গেছে। তাদের মতে মাঠে যা ঘটেছে তা ইচ্ছাকৃত ‘ছিলো না। বিসিসিআই বলছে, ‘কোহলি এবং কনষ্টাস তা মিটিয়ে নিয়েছেন।’
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
ঘটনাটা সবার জানা। মেলবোর্নে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার
বক্সিং ডে টেস্টের দশম ওভারের পরের ঘটনা। শেষ বলে দৌড়ে এক রান পূর্ণ করেন দুই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার। ঘটনা এরপর। ডেব্যু হওয়া ১৯ বছরের স্যাম কনষ্টাস বিপরীত প্রান্তে থাকা উসমান খাজার সাথে দেখা করতে যাবার সময়।
ভিরাট কোহলি সেসময় স্যাম কনষ্টাসের কাঁধে ধাক্কা দেন। দুজনের মধ্যে উওপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।উসমান খাজা দুজনকে শান্ত করেন।ততক্ষণে আম্পায়াররা এলে বিষয়টি আপাত মিটমাট হয়। মাঠের ঘটনার শেষ সেখানেই।
তবে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে ভিরাট কোহলি তার গতিপথ বদলে স্যাম কনষ্টাসের মুখোমুখি হয়ে তাকে ধাক্কা দিয়েছেন।
ক্রিকেট বলা হয় ‘ভদ্রলোকের’ খেলা। আইসিসির আচরণবিধিতে বলা আছে, ক্রিকেটে যে কোন ধরনের শারীরিক সংঘর্ষ নিষিদ্ধ। ইচ্ছাকৃতভাবে বা না বুঝে সেটা যেভাবেই হোক।
গতকালের ঘটনা বিশ্লেষণে যেহেতু দেখা গেছে কোহলি গতিপথ বদলে কনষ্টাস কে ধাক্কা দিয়েছেন, তাই ক্রিকেট বিশ্লেষকরা ধরেই নিয়েছিলেন বড় শাস্তি পেতে চলেছেন ভারতের বড় তারকা কোহলি।
কিন্তু আইসিস আচরণবিধির লেভেল ওয়ান পর্যায়ের দোষী সাব্যস্ত করে কোহলিকে। ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ এবং একটি ডিমেরিট পয়েন্ট শাস্তি দেয়া হয়। ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে একজন ক্রিকেটার পরের ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকেন। কোহলির শাস্তিকে নগন্য মনে করছেন অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক। তাদের মধ্যে ভারতীয়রাও আছেন। এই ‘লঘু শাস্তি’ মেনে নিতে পারেননি অনেকেই।
তাদের মতে কোহলি যা করেছেন তা বড় অপরাধ। অনেকে ভেবেই রেখেছিলেন তিন অথবা চার ডিমেরিট পয়েন্ট পাবেন কোহলি। তবে ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে পরের ম্যাচ নিষিদ্ধ মানে সিডনি টেস্ট হয়তো খেলতে পারতেন না কোহলি।
কোহলির শাস্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক রিকি পন্টিং বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ভিরাটের শাস্তিটি কড়া হয়নি। আগেও এমন হয়েছে, ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ম্যাচ ফি জরিমানা করে শেষ করে দিয়েছে। কিন্তু ঘটনার বিশালতার দিকে তাকালে দেখা যায় গতকাল গুরুত্বপূর্ণ দিন ছিলো সারা দুনিয়ায় কোটি কোটি মানুষ ঘটনাটি দেখেছে।এতে ছোটদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে।এবং সাধারণরা ভেবে নিবে তা এমন কিছু নয়।’
ফক্স ক্রিকেটে ধারাভাষ্য দেয়া ইংল্যান্ডের সাবেক কাপ্তান মাইকেল ভন মনে করেন কোহলি খুবই ভাগ্যবান তাকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে। ‘অ্যাডিলেড ওভালে মোহাম্মদ সিরাজকেও যে শাস্তি দেয়া হয়েছে, আমার মতে সে ছাড় পেয়ে গেলো।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক গ্রেট মার্ক ওয়াহ বলেন, ‘আপনি যেই হন না কেনো ক্রিকেটে এমন ব্যবহারের জায়গা নেই। সে খুবই ভাগ্যবান শাস্তিটা একদম কম হয়েছে। সে কমপক্ষে লেভেল টু আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে দোষী হতে পারতো।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক উইকেটকিপার-ব্যাটার গিলক্রিস্ট বলেন, ‘ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ জরিমানা ভিরাটের মতো বিলিয়নিয়ারের কাছে তেমন কোন প্রভাবই পড়বেনা। সে অল্পতেই ছাড় পেয়ে গেলো।’
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী মনে করেন কোহলি বেঁচে গেছেন বড় শাস্তি থেকে। ‘ভিরাট যখন ভবিষ্যতে ঘটনাটার দিকে তাকাবেন তখন নিশ্চিত ভাববেন আমি ভাগ্যবান এতো অল্প শাস্তিতে পার পেয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনাটার জন্য তার গর্ব নয়, অনুতপ্ত বোধ হবে।’
ফুটবল ও ক্রিকেট রুলস নিয়ে কাজ করা অস্ট্রেলিয়ার মরিস বলেন, ‘কোহলির যে সম্পদের পরিমান ২০ শতাংশ ম্যাচ ফি তার হাতের ময়লা।আমি বিস্মিত হইনি, তবে হতাশ। বিষয়টি যতটা গুরুত্বপূর্ণ সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে না পারাটা বিশ্ব ক্রিকেট এবং আইসিসির জন্য বিব্রতকর, লজ্জার।’
ঘটনাটা নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিবৃতি পাওয়া গেছে। তাদের মতে মাঠে যা ঘটেছে তা ইচ্ছাকৃত ‘ছিলো না। বিসিসিআই বলছে, ‘কোহলি এবং কনষ্টাস তা মিটিয়ে নিয়েছেন।’