এমন ম্যাচ দেখার জন্য অপেক্ষা করে গোটা ফুটবল বিশ্ব। একদল বার্সেলোনা তো আরেক দল রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে গলা ফাটাতে দেখা যায়। ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারের সামনে লাগানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিন, চীনের সাংহাইয়ের বানিজ্যিক কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয় হাজার হাজার দর্শক। বাদ যায়না ঢাকাও। গুলশান, ধানমন্ডি, বনানীর বড় বড় রেস্তোরাঁয় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে উপভোগ করে বাংলাদেশি ফুটবল প্রেমীরাও।
মাদ্রিদের রাস্তায় সেদিন সকাল থেকেই মানুষ অপেক্ষা করে কখন শুরু হবে খেলা। কাতালানদের জীবন যুদ্ধ, আবেগ এক জায়গাতে এসে বর্নিল হয় এল ক্লাসিকোর আনন্দে। কাতালুনিয়ানরা গত কয়েক দশক থেকে আলাদা রাষ্ট্রের জন্য সংগ্রাম করছে।স্পেন থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতা চায়। কিন্তু আলাদা হয়ে গেলে ফুটবলে রেয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনা আলাদা হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তাই অনেক কাতালুনিয়ানরা স্বাধীনতার আন্দোলনেও ব্যানার নিয়ে আসে — ‘রাষ্ট্র ভাগ হোক, নতুন রাষ্ট্র হলেও আমরা লা লিগায় এক হয়ে থাকবো।’
লোহায় মরিচা পরে বদলে যায় স্থায়িত্ব, জৌলুশ খুইয়েছে ইন্টার মিলান, এসি মিলানের গৌরব। কিন্তু ঠিক ১২৩ বছর হয়ে গেছে আজো স্বমহিমায় গৌরবের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে রেয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার দ্বৈরথ।
এক ম্যাচ রেয়াল জিতে তো আরেক ম্যাচে বার্সেলোনা পরাজয়ের গ্লানি সবটুকু উজাড় করে পরাজয়ের কালিমা লেপন করে দেয় রেয়াল মাদ্রিদের গায়ে।
শেষ দুই লড়াইয়ে চলতি মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোর ম্যাচে লিগে রেয়ালের আঁতুড়ঘর খ্যাত বার্নাব্যুতে গিয়ে বার্সেলোনা দাপট দেখিয়ে ৪-০ গোলে রেয়ালকে হারিয়েছে। সুপার কাপের ফাইনালে ৪-১ গোলের পরাজয়ের কালিমা ফেরত দিয়ে এসেছে রেয়াল।
টানা তিন মৌসুম সুপার কাপের ফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদ বার্সেলোনা মুখোমুখি। সেখানেও সমতা ১-১। আজ দু’দলের এগিয়ে যাবার সুযোগ।
বার্সেলোনার রয়েছে ১৪ টি সুপার কাপের ফাইনালে জয়ের রেকর্ড। বিপরীতে রেয়াল মাদ্রিদের ১৩ টি।আজ রেয়াল চাইবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী জাত শত্রুদের সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে নিজেদের গৌরবের গল্পকথাকে আরো বর্নিল করতে।বার্সেলোনাও পণ করেই নামবে,
বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সুচাগ্র মেদিনী।
তাই সৌদি আরবের জেদ্দার কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১ টায় স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে আরব্ বেদুইনদের মতো বিস্তর লড়াইয়ে অপেক্ষায় গোটা ফুটবল দুনিয়া।
সেই যুদ্ধে এগিয়ে রাখা যায়না কোন দলকেই। আগে পরে অন্য দলের সাথে ফলাফল যাই হোক না কেন,
এখানে এলে দুদল পুরো বদলে যায়।একচুল ছাড় দেয়না কেউ কাউকেই।দিবেইবা কেনো গোটা মাদ্রিদ আর বার্সেলোনার জীবনের অংশই এই লড়াই।
মাদ্রিদের রাস্তার হকার সেদিন সকাল থেকে নিজের শরীরে রেয়াল মাদ্রিদের পতাকা লাগিয়ে মাথায় ব্যাজ পরে সারা শহুরে দিগুণ আনন্দ নিয়ে ঘুরে। কাতালুনিয়ায় গাড়ির হেলপার বার্সেলোনার জার্সি পরে গাড়িতে প্রিয় দলের লোগো লাগিয়ে সবাইকে জানান দেয় আজ আমাদের জিততেই হবে।
রাস্তায় রাস্তায় আলাদা আলাদা করে সাজে দুই শহর। প্রতিটি মানুষ বুঝতে পারে আজ বিশেষ কিছু। মেট্রোর বিশেষ সার্ভিসে ফলাও করে চালানো হয় দুদলের খেলার আপডেট। কে কে খেলতে পারে, আর কাদের ওপর নজর থাকবে সবার।
রেয়াল মাদ্রিদের যেমন আছে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, এমবাপ্পে, জুড বেলিংহাম তেমনি বার্সেলোনার লামিমে ইয়ামাল, লেভানদভস্কি, রাফিনিয়া। কেউ কারো থেকে কম না।
জীবনের প্রথম এল ক্লাসিকো খেলতে নেমে হেরে যাওয়া এমবাপ্পে এদিন প্রতিশোধ নিয়ে হারের বদলা নিতে মুখিয়ে থাকবে সেটা বলার উপেক্ষা রাখেনা।
রেয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলতি মায়োর্কার সাথে জিতে ফাইনালে পা রেখে বলেছেন এমন ম্যাচে কেউই ফেভারিট না। যে কেউ জিততে পারে, অনেক কিছু হতে পারে। ফলাফল আগে থেকে বিশ্লেষণ করা কঠিন।
বিপরীতে বার্সেলোনা কোচ জার্মান হ্যান্সি ফ্লিক হয়তো নিজেদের ওপর চাপ কমাতে গিয়ে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন এই ম্যাচে রেয়াল মাদ্রিদ কিছুটা এগিয়ে থাকবে। হয়তো সাম্প্রতিক জয় পরাজয়ের নিখুঁত হিসেবে তিনি এমনটা বলতে পারেন।
অন্যান্য দলের সাথে লড়াইয়ে শেষ ৫ ম্যাচের ৫ টিতেই জিতে সাম্প্রতিক ফর্মের তুঙ্গে রেয়াল। অন্য দিকে শেষ ৫ ম্যাচের দুটি হারের সাথে তিন জয় বার্সেলোনার।
রেয়াল মাদ্রিদ বার্সেলোনা এখন অব্দি মুখোমুখি হয়েছে ২৮০ ম্যাচে
রেয়াল মাদ্রিদ জয় পেয়েছে ১০৮ টি।
বার্সেলোনার জয় ৯৭ টি। বাকী ৭৫ ম্যাচ অমীমাংসিত।
রোববার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
এমন ম্যাচ দেখার জন্য অপেক্ষা করে গোটা ফুটবল বিশ্ব। একদল বার্সেলোনা তো আরেক দল রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে গলা ফাটাতে দেখা যায়। ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারের সামনে লাগানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিন, চীনের সাংহাইয়ের বানিজ্যিক কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয় হাজার হাজার দর্শক। বাদ যায়না ঢাকাও। গুলশান, ধানমন্ডি, বনানীর বড় বড় রেস্তোরাঁয় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে উপভোগ করে বাংলাদেশি ফুটবল প্রেমীরাও।
মাদ্রিদের রাস্তায় সেদিন সকাল থেকেই মানুষ অপেক্ষা করে কখন শুরু হবে খেলা। কাতালানদের জীবন যুদ্ধ, আবেগ এক জায়গাতে এসে বর্নিল হয় এল ক্লাসিকোর আনন্দে। কাতালুনিয়ানরা গত কয়েক দশক থেকে আলাদা রাষ্ট্রের জন্য সংগ্রাম করছে।স্পেন থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতা চায়। কিন্তু আলাদা হয়ে গেলে ফুটবলে রেয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনা আলাদা হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তাই অনেক কাতালুনিয়ানরা স্বাধীনতার আন্দোলনেও ব্যানার নিয়ে আসে — ‘রাষ্ট্র ভাগ হোক, নতুন রাষ্ট্র হলেও আমরা লা লিগায় এক হয়ে থাকবো।’
লোহায় মরিচা পরে বদলে যায় স্থায়িত্ব, জৌলুশ খুইয়েছে ইন্টার মিলান, এসি মিলানের গৌরব। কিন্তু ঠিক ১২৩ বছর হয়ে গেছে আজো স্বমহিমায় গৌরবের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে রেয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার দ্বৈরথ।
এক ম্যাচ রেয়াল জিতে তো আরেক ম্যাচে বার্সেলোনা পরাজয়ের গ্লানি সবটুকু উজাড় করে পরাজয়ের কালিমা লেপন করে দেয় রেয়াল মাদ্রিদের গায়ে।
শেষ দুই লড়াইয়ে চলতি মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোর ম্যাচে লিগে রেয়ালের আঁতুড়ঘর খ্যাত বার্নাব্যুতে গিয়ে বার্সেলোনা দাপট দেখিয়ে ৪-০ গোলে রেয়ালকে হারিয়েছে। সুপার কাপের ফাইনালে ৪-১ গোলের পরাজয়ের কালিমা ফেরত দিয়ে এসেছে রেয়াল।
টানা তিন মৌসুম সুপার কাপের ফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদ বার্সেলোনা মুখোমুখি। সেখানেও সমতা ১-১। আজ দু’দলের এগিয়ে যাবার সুযোগ।
বার্সেলোনার রয়েছে ১৪ টি সুপার কাপের ফাইনালে জয়ের রেকর্ড। বিপরীতে রেয়াল মাদ্রিদের ১৩ টি।আজ রেয়াল চাইবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী জাত শত্রুদের সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে নিজেদের গৌরবের গল্পকথাকে আরো বর্নিল করতে।বার্সেলোনাও পণ করেই নামবে,
বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সুচাগ্র মেদিনী।
তাই সৌদি আরবের জেদ্দার কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১ টায় স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে আরব্ বেদুইনদের মতো বিস্তর লড়াইয়ে অপেক্ষায় গোটা ফুটবল দুনিয়া।
সেই যুদ্ধে এগিয়ে রাখা যায়না কোন দলকেই। আগে পরে অন্য দলের সাথে ফলাফল যাই হোক না কেন,
এখানে এলে দুদল পুরো বদলে যায়।একচুল ছাড় দেয়না কেউ কাউকেই।দিবেইবা কেনো গোটা মাদ্রিদ আর বার্সেলোনার জীবনের অংশই এই লড়াই।
মাদ্রিদের রাস্তার হকার সেদিন সকাল থেকে নিজের শরীরে রেয়াল মাদ্রিদের পতাকা লাগিয়ে মাথায় ব্যাজ পরে সারা শহুরে দিগুণ আনন্দ নিয়ে ঘুরে। কাতালুনিয়ায় গাড়ির হেলপার বার্সেলোনার জার্সি পরে গাড়িতে প্রিয় দলের লোগো লাগিয়ে সবাইকে জানান দেয় আজ আমাদের জিততেই হবে।
রাস্তায় রাস্তায় আলাদা আলাদা করে সাজে দুই শহর। প্রতিটি মানুষ বুঝতে পারে আজ বিশেষ কিছু। মেট্রোর বিশেষ সার্ভিসে ফলাও করে চালানো হয় দুদলের খেলার আপডেট। কে কে খেলতে পারে, আর কাদের ওপর নজর থাকবে সবার।
রেয়াল মাদ্রিদের যেমন আছে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, এমবাপ্পে, জুড বেলিংহাম তেমনি বার্সেলোনার লামিমে ইয়ামাল, লেভানদভস্কি, রাফিনিয়া। কেউ কারো থেকে কম না।
জীবনের প্রথম এল ক্লাসিকো খেলতে নেমে হেরে যাওয়া এমবাপ্পে এদিন প্রতিশোধ নিয়ে হারের বদলা নিতে মুখিয়ে থাকবে সেটা বলার উপেক্ষা রাখেনা।
রেয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলতি মায়োর্কার সাথে জিতে ফাইনালে পা রেখে বলেছেন এমন ম্যাচে কেউই ফেভারিট না। যে কেউ জিততে পারে, অনেক কিছু হতে পারে। ফলাফল আগে থেকে বিশ্লেষণ করা কঠিন।
বিপরীতে বার্সেলোনা কোচ জার্মান হ্যান্সি ফ্লিক হয়তো নিজেদের ওপর চাপ কমাতে গিয়ে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন এই ম্যাচে রেয়াল মাদ্রিদ কিছুটা এগিয়ে থাকবে। হয়তো সাম্প্রতিক জয় পরাজয়ের নিখুঁত হিসেবে তিনি এমনটা বলতে পারেন।
অন্যান্য দলের সাথে লড়াইয়ে শেষ ৫ ম্যাচের ৫ টিতেই জিতে সাম্প্রতিক ফর্মের তুঙ্গে রেয়াল। অন্য দিকে শেষ ৫ ম্যাচের দুটি হারের সাথে তিন জয় বার্সেলোনার।
রেয়াল মাদ্রিদ বার্সেলোনা এখন অব্দি মুখোমুখি হয়েছে ২৮০ ম্যাচে
রেয়াল মাদ্রিদ জয় পেয়েছে ১০৮ টি।
বার্সেলোনার জয় ৯৭ টি। বাকী ৭৫ ম্যাচ অমীমাংসিত।