ম্যাচ ও সিরিজসেরা জোমেল ওয়ারিকান
মুলতানে প্রথম টেস্টে স্পিনের ফাঁদ পেতে পাকিস্তান সফলও হয়েছিল । ফলে দ্বিতীয় টেস্টেও একই ফাঁদ পাতেন শান মাসুদ, বাবর আজমেরা। তবে এ বার নিজেরাই ফাঁদে পড়ল পাকিস্তান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনারদের সামনে ভেঙে পড়ল পাকিস্তানের ব্যাটিং। ১২০ রানে জিতে সিরিজ ড্র করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য ২৫৫ রান দরকার ছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিনের শেষে পাকিস্তানের রান ছিল ৪ উইকেটে ৭৬। আরও ১৭৮ রান দরকার ছিল তাদের। কিন্তু গতকাল তৃতীয় দিন মাত্র ৫৭ রান করতে পারে স্বাগতিকরা। তার মধ্যেই বাকি ৬ উইকেট পড়ে । ১৩৩ রানে অল আউট হয়ে গেল পাকিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৩১ রান করেন বাবর। মোহাম্মদ রিজওয়ান করেন ২৫ রান। বাকি কেউ রান পাননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার জোমেল ওয়ারিকান ৫ উইকেট নেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন তিনি।
দ্বিতীয় টেস্ট শেষ হতে আড়াই দিনও লাগল না। প্রথম দিনই দু’টি ইনিংস শেষ হয়ে যায়। শুরু থেকেই মুলতানে দেখা যায় স্পিনের দাপট। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এক সময় ৫৪ রানে ৮ উইকেট পড়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। প্রথম আট ব্যাটারের মধ্যে কেভাম হজ ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। চার জন ফেরেন শূন্য রানে। প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয় টেস্টেও দাপট দেখান পাক স্পিনার নোমান আলী। জাস্টিন গ্রিভস, টেভিন ইমলাচ ও কেভিন সিনক্লেয়ারকে পর পর তিন বলে আউট করেন তিনি। পাকিস্তানের প্রথম স্পিনার ও পঞ্চম বোলার হিসাবে টেস্টে হ্যাটট্রিক করেন তিনি।
এই তালিকায় ওয়াসিম আক্রম, নাসিম শাহেরা রয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বাঁচান তাদের নিচের সারির ব্যাটারেরা। ন’নম্বরে নেমে গুড়াকেশ মোতি সবচেয়ে বেশি ৫৫ রান করেন। ১০ নম্বরে নেমে কিমার রোচ ২৫ ও ১১ নম্বরে নেমে জোমেল ওয়ারিকান প্রথম ইনিংস। ৪১ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন নোমান।
জবাবে পাকিস্তানের ব্যাটিংও ব্যর্থ। মোহাম্মদ রিজওয়ান (৪৯) ও সাউদ শাকিল (৩২) ছাড়া কেউ রান পাননি। বাবর আজম করেন মাত্র ১ রান। অধিনায়ক শান মাসুদ ১৫ রান করেন। ব্যাট হাতে শূন্য রানে ফেরেন নোমান। মাত্র ৪৭ ওভারে ১৫৪ রানে অল আউট হয়ে যায় পাকিস্তান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে রান করা তিন ক্রিকেটারই পাকিস্তানের ১০টি উইকেট নিয়েছেন। সিনক্লেয়ার ৪, মোতি ৩ ও রোচ ২ উইকেট নেন। ১৫৪ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ৯ রান এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৪ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অধিনায়ক ক্রেগ ব্রেথওয়েট ৫২ রান করেন। এই টেস্টে এটিই একমাত্র অর্ধশতরান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪টি করে উইকেট নেন নোমান ও সাজিদ খান। তবে এই পিচের নিরিখে অনেক বেশি রান দেন তারা। লক্ষ্য ২০০ রানের মধ্যে থাকলে তাও পাকিস্তানের কোনো সুযোগ থাকত। কিন্তু ২৫৫ রান করা প্রায় অসম্ভব ছিল। সেটাই দেখা গেল মূলতানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৩ ও ২৪৪। পাকিস্তান ১৫৪ ও ৪৪ ওভারে ১৩৩ (আগের দিন ৭৬/৪) (সাকিল ১৩, কাশিফ ১, রিজওয়ান ২৫, সালমান ১৫, সাজিদ ৭, নোমান ৬, আবরার ০*; মোটি ২/৩৫, সিনক্লেয়ার ৩/৬১, ওয়ারিকান ১৬-৬-২৭-৫)। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা : জোমেল ওয়ারিকান।
৩৪ বছর পর পাকিস্তানে
টেস্ট জয়
৩৪ বছরের বেশি সময় পর পাকিস্তানে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সর্বশেষ ১৯৯০ সালে ফায়সালাবাদে ৭ উইকেটে জিতেছিল তারা। ডেসমন্ড হেইন্সের নেতৃত্বে সেই জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল ক্যারিবিয়ানদের পেস ব্যাটার- ম্যালকম মার্শাল, কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রোস ও ইয়ান বিশপ। এবার টার্নিং উইকেটে দলকে জেতাল ক্যারিবিয়ান স্পিনত্রয়ী।
সেই তিনজনের মধ্যেও উজ্জ্বলতম জোমেল ওয়ারিকান। আগের টেস্টে ১০ উইকেট নিয়েও পরাজয়ের বেদনায় পুড়তে হয়েছিল তাকে। এবার দ্বিতীয় ইনিংসে ৫টি ও ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে এই বাঁহাতি স্পিনারই নায়ক।
এই সফরের আগে ১৭ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ওয়ারিকানের উইকেট ছিল মোট ৫৪টি। ম্যাচে ১০ উইকেট তো বহুদূর, ইনিংসে ৫ উইকেটও ছিল না একটিও। এই সিরিজে তিনি প্রথম টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩২ রানে ৭ উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচে প্রথমবার ১০ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন। এবার আরও এক দফায় ৫ উইকেট নিয়ে জেতালেন দলকে।
ওয়ারিকানের ৫ উইকেটের সঙ্গে ৩ উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনার কেভিন সিনক্লেয়ার, ২টি বাঁহাতি স্পিনার গুডাকেশ মোটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ইতিহাসে পঞ্চমবার প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট ধরা দিল শুধুই স্পিন বোলিংয়ে।
ম্যাচ ও সিরিজসেরা জোমেল ওয়ারিকান
সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
মুলতানে প্রথম টেস্টে স্পিনের ফাঁদ পেতে পাকিস্তান সফলও হয়েছিল । ফলে দ্বিতীয় টেস্টেও একই ফাঁদ পাতেন শান মাসুদ, বাবর আজমেরা। তবে এ বার নিজেরাই ফাঁদে পড়ল পাকিস্তান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনারদের সামনে ভেঙে পড়ল পাকিস্তানের ব্যাটিং। ১২০ রানে জিতে সিরিজ ড্র করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য ২৫৫ রান দরকার ছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিনের শেষে পাকিস্তানের রান ছিল ৪ উইকেটে ৭৬। আরও ১৭৮ রান দরকার ছিল তাদের। কিন্তু গতকাল তৃতীয় দিন মাত্র ৫৭ রান করতে পারে স্বাগতিকরা। তার মধ্যেই বাকি ৬ উইকেট পড়ে । ১৩৩ রানে অল আউট হয়ে গেল পাকিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৩১ রান করেন বাবর। মোহাম্মদ রিজওয়ান করেন ২৫ রান। বাকি কেউ রান পাননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার জোমেল ওয়ারিকান ৫ উইকেট নেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন তিনি।
দ্বিতীয় টেস্ট শেষ হতে আড়াই দিনও লাগল না। প্রথম দিনই দু’টি ইনিংস শেষ হয়ে যায়। শুরু থেকেই মুলতানে দেখা যায় স্পিনের দাপট। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এক সময় ৫৪ রানে ৮ উইকেট পড়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। প্রথম আট ব্যাটারের মধ্যে কেভাম হজ ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। চার জন ফেরেন শূন্য রানে। প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয় টেস্টেও দাপট দেখান পাক স্পিনার নোমান আলী। জাস্টিন গ্রিভস, টেভিন ইমলাচ ও কেভিন সিনক্লেয়ারকে পর পর তিন বলে আউট করেন তিনি। পাকিস্তানের প্রথম স্পিনার ও পঞ্চম বোলার হিসাবে টেস্টে হ্যাটট্রিক করেন তিনি।
এই তালিকায় ওয়াসিম আক্রম, নাসিম শাহেরা রয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বাঁচান তাদের নিচের সারির ব্যাটারেরা। ন’নম্বরে নেমে গুড়াকেশ মোতি সবচেয়ে বেশি ৫৫ রান করেন। ১০ নম্বরে নেমে কিমার রোচ ২৫ ও ১১ নম্বরে নেমে জোমেল ওয়ারিকান প্রথম ইনিংস। ৪১ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন নোমান।
জবাবে পাকিস্তানের ব্যাটিংও ব্যর্থ। মোহাম্মদ রিজওয়ান (৪৯) ও সাউদ শাকিল (৩২) ছাড়া কেউ রান পাননি। বাবর আজম করেন মাত্র ১ রান। অধিনায়ক শান মাসুদ ১৫ রান করেন। ব্যাট হাতে শূন্য রানে ফেরেন নোমান। মাত্র ৪৭ ওভারে ১৫৪ রানে অল আউট হয়ে যায় পাকিস্তান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে রান করা তিন ক্রিকেটারই পাকিস্তানের ১০টি উইকেট নিয়েছেন। সিনক্লেয়ার ৪, মোতি ৩ ও রোচ ২ উইকেট নেন। ১৫৪ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ৯ রান এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৪ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অধিনায়ক ক্রেগ ব্রেথওয়েট ৫২ রান করেন। এই টেস্টে এটিই একমাত্র অর্ধশতরান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪টি করে উইকেট নেন নোমান ও সাজিদ খান। তবে এই পিচের নিরিখে অনেক বেশি রান দেন তারা। লক্ষ্য ২০০ রানের মধ্যে থাকলে তাও পাকিস্তানের কোনো সুযোগ থাকত। কিন্তু ২৫৫ রান করা প্রায় অসম্ভব ছিল। সেটাই দেখা গেল মূলতানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৩ ও ২৪৪। পাকিস্তান ১৫৪ ও ৪৪ ওভারে ১৩৩ (আগের দিন ৭৬/৪) (সাকিল ১৩, কাশিফ ১, রিজওয়ান ২৫, সালমান ১৫, সাজিদ ৭, নোমান ৬, আবরার ০*; মোটি ২/৩৫, সিনক্লেয়ার ৩/৬১, ওয়ারিকান ১৬-৬-২৭-৫)। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা : জোমেল ওয়ারিকান।
৩৪ বছর পর পাকিস্তানে
টেস্ট জয়
৩৪ বছরের বেশি সময় পর পাকিস্তানে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সর্বশেষ ১৯৯০ সালে ফায়সালাবাদে ৭ উইকেটে জিতেছিল তারা। ডেসমন্ড হেইন্সের নেতৃত্বে সেই জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল ক্যারিবিয়ানদের পেস ব্যাটার- ম্যালকম মার্শাল, কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রোস ও ইয়ান বিশপ। এবার টার্নিং উইকেটে দলকে জেতাল ক্যারিবিয়ান স্পিনত্রয়ী।
সেই তিনজনের মধ্যেও উজ্জ্বলতম জোমেল ওয়ারিকান। আগের টেস্টে ১০ উইকেট নিয়েও পরাজয়ের বেদনায় পুড়তে হয়েছিল তাকে। এবার দ্বিতীয় ইনিংসে ৫টি ও ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে এই বাঁহাতি স্পিনারই নায়ক।
এই সফরের আগে ১৭ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ওয়ারিকানের উইকেট ছিল মোট ৫৪টি। ম্যাচে ১০ উইকেট তো বহুদূর, ইনিংসে ৫ উইকেটও ছিল না একটিও। এই সিরিজে তিনি প্রথম টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩২ রানে ৭ উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচে প্রথমবার ১০ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন। এবার আরও এক দফায় ৫ উইকেট নিয়ে জেতালেন দলকে।
ওয়ারিকানের ৫ উইকেটের সঙ্গে ৩ উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনার কেভিন সিনক্লেয়ার, ২টি বাঁহাতি স্পিনার গুডাকেশ মোটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ইতিহাসে পঞ্চমবার প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট ধরা দিল শুধুই স্পিন বোলিংয়ে।