এশিয়ান কাপ বাছাই ফুটবল
বাংলাদেশ-ভারত মহারণের আগে সংবাদ সম্মেলনে দুই কোচ ও অধিনায়ক
শিলংয়ের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে আজ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। ম্যাচটি শুরু হবে সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।
মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ সামনে রেখে ঢাকা, সৌদি আরব মিলিয়ে ২৪ দিন অনুশীলন সেরেছে বাংলাদেশ। শিলংয়ের ঠাল্ডা কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মূলত সৌদি আরবের তাইয়েফে নিবিড় ক্যাম্প করেছিল দল। শিলংয়ে এসে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে কাবরেরা-জামালদের। মূল মাঠে প্রস্তুতির সুযোগ প্রথম মিলেছে সমবার। এই বাধা-বিপত্তিগুলোও দলের মনোবলে চিড় ধরাতে পারেনি একবিন্দু, বরং বাড়িয়েছে আরও। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া যেমন সংবাদ সম্মেলনে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেছেন, জয় চাই।
চাওয়া পূরণের জন্য দল কতটা তৈরি, প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টির ঢেকুর তুলে হাভিয়ের কাবরেরা বলেছেন, ‘পারফরম্যান্সের দিক থেকে, মানসিকভাবে আমরা এখন ভীষণ শক্তিশালী।’ স্বাগতিকদের জন্য সবকিছু কঠিন করে তোলার বার্তা তিনি দিয়েছেন প্রত্যয়ের সঙ্গে। ভারত কোচ মানোলো মার্কেসও সমীহের সুরে কথা বলেছেন বাংলাদেশ নিয়ে। তবে ৪৮৯ দিন পর ভুলে যাওয়া জয়ের স্বাদ ফিরে পাওয়ার আনন্দ তিনি টেনে নিতে চান বাংলাদেশের বিপক্ষেও।
মার্কেসের চাওয়া পূরণের পথ কঠিন করে তোলার সাহস বাংলাদেশ পাচ্ছে নানা কারণে। গত সাফে ১৪ বছর পর সেমি-ফাইনালে খেলার তৃপ্তি হয়েছিল সঙ্গী। মাঝের সময়ে কাবরেরা গুছিয়ে নিয়েছেন দলকে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছেন হামজা। শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা এই মিডফিল্ডার আসার পর থেকে দলের অন্দরে বইছে আত্মবিশ্বাসের স্রোত। রাকিব, তপু, ইব্রাহিমদের কথায় সে স্ফুরণের দেখা মিলছে সারাক্ষণ।
পরিসংখ্যান আর র্যাঙ্কিংয়ের ব্যবধান তাই তেমন পাত্তা দিচ্ছে না বাংলাদেশ। ৩১ মুখোমুখিতে ভারতের ১৬টি জয়, বাংলাদেশের ৩ জয়, বাকি ১২ ম্যাচ ড্র নিয়ে মার্কেসই যেমন বললেন, র্যাঙ্কিং ‘মিথ্যা’ বিষয়। সর্বশেষ ২০০৩ সালে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ জয়ের পর পার হয়ে যাওয়া সময় নিয়ে ভাবছেন না কাবরেরাও। বর্তমান দলটিকে তার দেখা ‘সেরা বাংলাদেশ দল।’
ভারত ম্যাচেসেরা একাদশে কারা থাকবে, তা বোঝার উপায় অবশ্য নেই। টেকটিক্যাল অনুশীলনের পর্বে তার দুয়ারও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য বন্ধ। তবে ধারণা করা যায়, পোস্টে মিতুল মারমা তার প্রথম পছন্দ। দুই সেন্টার ব্যাক তপু বর্মন ও কাজী তারিক রায়হান। লেফট ব্যাক রহমত মিয়া ও ইসা ফয়সাল এবং রাইট ব্যাক সাদউদ্দিন ও শাকিল আহাদ তপুর কেউ খেলবেন।
মাঝমাঠে হাজমা চৌধুরীর সঙ্গে থাকতে পারেন জামাল ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ হৃদয়। আক্রমণভাগের গুরুভার এ মৌসুমের লীগে ৭ গোল করা তরুণ আল আমিনের কাঁধে উঠতে পারে। তার দুই পাশে রাকিব হোসেন ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এদের মধ্যে হামজার মতো আল আমিন দলে একেবারেই নতুন। প্রায় দেড় বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন ইব্রাহিম। ভারতের জালে ‘আত্মতৃপ্তির গোল চাই’, বলে রেখেছেন তিনিও।
তৃপ্তির চূড়ায় পা রাখতে আটকাতে হবে ছেত্রিকে। আইএসএলে এ মৌসুমে ১২ গোল করেছেন তিনি। অবসর ভেঙে ফিরে ক’দিন আগে এই শিলংয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে হেডে গোল করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, মরচে পড়েনি পায়ে-মাথায়। ছেত্রি ছাড়াও ভারত দলে আছে লিস্টন কোলাসো, রাহুল ভেকে, ফারুক চৌধুরীর মতো নির্ভরতা। ম্যাচের মোড় মুহূর্তেই ঘুরিয়ে দেয়ার সামর্থ্য আছে তাদেরও।
নিজেদের সামর্থ্য নিয়ে সংশয় নেই বাংলাদেশেরও। গতকাল সন্ধ্যায় মূল মাঠের প্রস্তুতিতেও প্রাণবন্তো একটা দলের প্রতিচ্ছবিই ফুটে উঠেছে। এখন অপেক্ষা, তা মাঠে অনুবাদের।
এশিয়ান কাপ বাছাই ফুটবল
বাংলাদেশ-ভারত মহারণের আগে সংবাদ সম্মেলনে দুই কোচ ও অধিনায়ক
সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
শিলংয়ের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে আজ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। ম্যাচটি শুরু হবে সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।
মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ সামনে রেখে ঢাকা, সৌদি আরব মিলিয়ে ২৪ দিন অনুশীলন সেরেছে বাংলাদেশ। শিলংয়ের ঠাল্ডা কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মূলত সৌদি আরবের তাইয়েফে নিবিড় ক্যাম্প করেছিল দল। শিলংয়ে এসে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে কাবরেরা-জামালদের। মূল মাঠে প্রস্তুতির সুযোগ প্রথম মিলেছে সমবার। এই বাধা-বিপত্তিগুলোও দলের মনোবলে চিড় ধরাতে পারেনি একবিন্দু, বরং বাড়িয়েছে আরও। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া যেমন সংবাদ সম্মেলনে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেছেন, জয় চাই।
চাওয়া পূরণের জন্য দল কতটা তৈরি, প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টির ঢেকুর তুলে হাভিয়ের কাবরেরা বলেছেন, ‘পারফরম্যান্সের দিক থেকে, মানসিকভাবে আমরা এখন ভীষণ শক্তিশালী।’ স্বাগতিকদের জন্য সবকিছু কঠিন করে তোলার বার্তা তিনি দিয়েছেন প্রত্যয়ের সঙ্গে। ভারত কোচ মানোলো মার্কেসও সমীহের সুরে কথা বলেছেন বাংলাদেশ নিয়ে। তবে ৪৮৯ দিন পর ভুলে যাওয়া জয়ের স্বাদ ফিরে পাওয়ার আনন্দ তিনি টেনে নিতে চান বাংলাদেশের বিপক্ষেও।
মার্কেসের চাওয়া পূরণের পথ কঠিন করে তোলার সাহস বাংলাদেশ পাচ্ছে নানা কারণে। গত সাফে ১৪ বছর পর সেমি-ফাইনালে খেলার তৃপ্তি হয়েছিল সঙ্গী। মাঝের সময়ে কাবরেরা গুছিয়ে নিয়েছেন দলকে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছেন হামজা। শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা এই মিডফিল্ডার আসার পর থেকে দলের অন্দরে বইছে আত্মবিশ্বাসের স্রোত। রাকিব, তপু, ইব্রাহিমদের কথায় সে স্ফুরণের দেখা মিলছে সারাক্ষণ।
পরিসংখ্যান আর র্যাঙ্কিংয়ের ব্যবধান তাই তেমন পাত্তা দিচ্ছে না বাংলাদেশ। ৩১ মুখোমুখিতে ভারতের ১৬টি জয়, বাংলাদেশের ৩ জয়, বাকি ১২ ম্যাচ ড্র নিয়ে মার্কেসই যেমন বললেন, র্যাঙ্কিং ‘মিথ্যা’ বিষয়। সর্বশেষ ২০০৩ সালে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ জয়ের পর পার হয়ে যাওয়া সময় নিয়ে ভাবছেন না কাবরেরাও। বর্তমান দলটিকে তার দেখা ‘সেরা বাংলাদেশ দল।’
ভারত ম্যাচেসেরা একাদশে কারা থাকবে, তা বোঝার উপায় অবশ্য নেই। টেকটিক্যাল অনুশীলনের পর্বে তার দুয়ারও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য বন্ধ। তবে ধারণা করা যায়, পোস্টে মিতুল মারমা তার প্রথম পছন্দ। দুই সেন্টার ব্যাক তপু বর্মন ও কাজী তারিক রায়হান। লেফট ব্যাক রহমত মিয়া ও ইসা ফয়সাল এবং রাইট ব্যাক সাদউদ্দিন ও শাকিল আহাদ তপুর কেউ খেলবেন।
মাঝমাঠে হাজমা চৌধুরীর সঙ্গে থাকতে পারেন জামাল ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ হৃদয়। আক্রমণভাগের গুরুভার এ মৌসুমের লীগে ৭ গোল করা তরুণ আল আমিনের কাঁধে উঠতে পারে। তার দুই পাশে রাকিব হোসেন ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এদের মধ্যে হামজার মতো আল আমিন দলে একেবারেই নতুন। প্রায় দেড় বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন ইব্রাহিম। ভারতের জালে ‘আত্মতৃপ্তির গোল চাই’, বলে রেখেছেন তিনিও।
তৃপ্তির চূড়ায় পা রাখতে আটকাতে হবে ছেত্রিকে। আইএসএলে এ মৌসুমে ১২ গোল করেছেন তিনি। অবসর ভেঙে ফিরে ক’দিন আগে এই শিলংয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে হেডে গোল করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, মরচে পড়েনি পায়ে-মাথায়। ছেত্রি ছাড়াও ভারত দলে আছে লিস্টন কোলাসো, রাহুল ভেকে, ফারুক চৌধুরীর মতো নির্ভরতা। ম্যাচের মোড় মুহূর্তেই ঘুরিয়ে দেয়ার সামর্থ্য আছে তাদেরও।
নিজেদের সামর্থ্য নিয়ে সংশয় নেই বাংলাদেশেরও। গতকাল সন্ধ্যায় মূল মাঠের প্রস্তুতিতেও প্রাণবন্তো একটা দলের প্রতিচ্ছবিই ফুটে উঠেছে। এখন অপেক্ষা, তা মাঠে অনুবাদের।