চেলসির জয় উৎসব
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠল চেলসি এবং পালমেইরাস। ১০ জনের বেনফিকাকে ৪-১ গোলে হারালো ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাবটি। অন্যদিকে, ব্রাজিলের ক্লাবটি ১০ জনে খেলেও হারাল ইতালির বোটাফোগোকে।
গতকাল শনিবার চেলসি-বেনফিকা ম্যাচ চলল সাড়ে ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। সাধারণত একটি ফুটবল ম্যাচ শেষ হতে সময় লাগে ঘণ্টা দু’য়েক। খেলা অতিরিক্ত সময় এবং টাইব্রেকার পর্যন্ত গড়ালে আরও ৪৫-৫০ মিনিট বেশি সময় লাগে। সব মিলিয়ে ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই শেষ হয় খেলা। চেলসি-বেনফিকা ম্যাচ টাইব্রেকার পর্যন্ত না গড়ালেও শেষ হতে লেগে গেল প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা। আমেরিকার শার্লটে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায় ২ ঘণ্টা খেলা স্থগিত রাখতে বাধ্য হন রেফারি।
বেনফিকার হয়ে শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন অ্যাঙ্খেল ডি মারিয়া। পেনাল্টি থেকে গোল করেও দলকে জেতাতে পারলেন না আর্জেন্টিনার তারকা। ৬৪ মিনিটে রিসি জেমসের গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। খেলার ৮৬ মিনিটে ঝড় এবং বজ্রপাতের কারণে খেলা বন্ধ রাখতে বাধ্য হন রেফারি। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার খেলা শুরু হয় প্রায় ২ ঘণ্টা পর। খেলা শুরু হওয়ার পর ৯২ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন বেনফিকার জিয়ানলুকা প্রেসতিয়ান্নি। ১০ জনের বেনফিকার বিদায় তখন নিশ্চিত মনে হচ্ছিল। কিন্তু ৯৫ মিনিটে পেনাল্টি পায় পর্তুগালের ক্লাবটি। গোল করে সমতা ফেরান ডি মারিয়া। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ ব্যবধানে শেষ হওয়ায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে দু’দলের সমানে সমানে লড়াই হলেও দ্বিতীয়ার্ধে চেলসির সামনে দাঁড়াতে পারেনি ১০ জনের বেনফিকা। ১০৮, ১১৪ এবং ১১৭ মিনিটে পর পর চেলসির হয়ে গোল করেন ক্রিস্টোফার এনকুকু, পেড্রো নেতো এবং কিয়ারনান ডেয়োসবারি। তাতেই ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে যায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাবটি।
অন্যদিকে, বোটাফোগো এবং পালমেইরাসের খেলাও নির্ধারিত সময় শেষ হয় গোল শূন্য অবস্থায়। অতিরিক্ত সময়ের গোলে জয় পায় ব্রাজিলের ক্লাবটি। ১০০ মিনিটে ম্যাচের এক মাত্র গোলটি করেন পাওলিনহো। ১১৬ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পালমেইরাসের গুস্তাভো গোমেজ। তাতে অবশ্য ম্যাচের ফল প্রভাবিত হয়নি। শেষ আটের লড়াইয়ে পালমেইরাসের প্রতিপক্ষ চেলসি।
চেলসি কোচের ক্ষোভ
ম্যাচ শেষে সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন চেলসি কোচ মারেস্কা। ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা ফুটবল নয়। আমার মতে এটা স্রেফ কৌতুক, এটা কোনোভাবেই ফুটবল হতে পারে না। নিরাপত্তাজনিত কারণ আমি বুঝতে পারি। ম্যাচ স্থগিত হতেই পারে। তাই বলে সাত-আটটি ম্যাচ স্থগিত হবে? তার মানে, এই প্রতিযোগিতার জন্য এটি উপযুক্ত জায়গা নয়!’
‘এই প্রতিযোগিতা দারুণ। ক্লাবের বিশ্বকাপ এটি, বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলো খেলছে। কিন্তু ছয়-সাতটি ম্যাচ স্থগিত হলো! এটা তো স্বাভাবিক নয়। একটা বিশ্বকাপে কয়টা ম্যাচ স্থগিত হতে পারে? সম্ভবত একটিও নয়। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে কয়টি ম্যাচ স্থগিত হবে? একটিও নয়। তার মানে, এখানে সমস্যা আছে।’
ক্লাব বিশ্বকাপে সমস্যার শেষ নেই
মাঠে নিয়মিত ব্যবধানে পানি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এতই গরম যে মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে ১০ মিনিটেই। সেই মাঠে বল লাফাচ্ছে! আমেরিকায় চলা ক্লাব বিশ্বকাপের মাঠগুলো নিয়ে উঠছে এমনই অভিযোগ। পাশাপাশি, তীব্র গরমে ফুটবলারেরাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিশেষত ইউরোপের ক্লাবগুলো, যাদের এত তাপমাত্রায় খেলার অভ্যাসই নেই।
সিয়াটলের মাঠে সম্প্রতি খেলেছে পিএসজি। ম্যাচের পর প্যারিসের কোচ লুই এনরিকে বলেন, ‘গর্তে ভরা কোর্টে বাস্কেটবল খেলা হচ্ছে, এটা নিশ্চয়ই কোনো দিন দেখতে হবে না। এখানকার মাঠে ফুটবল এমন লাফাচ্ছে যে, মনে হচ্ছে খরগোশ খেলা করছে। কৃত্রিম ঘাসের মাঠকে এখন স্বাভাবিক ঘাসের মাঠ বানানো হয়েছে। ১০ মিনিটের মধ্যে মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপে এ রকম মাঠে খেলে অভ্যস্ত নই আমরা।’
রেয়াল মাদ্রিদের জুড বেলিংহ্যাম বলেন, ‘সত্যি বলতে, মাঠ মোটেই ভালো নয়। তবে বেশি খারাপও নয়। দু’দল একই মাঠে খেলছে। যদিও এই মাঠে শরীরের ভারসাম্য রাখা যাচ্ছে না। হাঁটুতে চাপ পড়ছে। আশা করি খেলোয়াড়েরা যাতে চোট না পায় সে দিকে খেয়াল রাখা হবে।’
সিনসিনাটি, ফিলাডেলফিয়া এবং শার্লটের মতো শহরে বেশ গরম। তার ওপর সম্প্রচারের কারণে ম্যাচ শুরু হচ্ছে দুপুর ৩টার সময়। তখন তাপমাত্রা থাকছে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পানি পানের বিরতি থাকলেও কোচেদের কৌশলে প্রভাব পড়ছে। চেলসির কোচ এনজো মারেস্কা বলেছেন, ‘দুপুরে অনুশীলন করা খুব দরকারি। না হলে ম্যাচে নামা যাবে না।’ ম্যাচের পর খেলোয়াড়দের রিকভারির ক্ষেত্রেও সময় লাগছে। সমস্যা হচ্ছে না দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলোর, যারা এ রকম তাপমাত্রায় খেলে অভ্যস্ত। ব্রাজিলের চারটি ক্লাবই শেষ ষোলোয় উঠেছে।
গরমের কারণে ঘাসও দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি দিয়েও লাভ হচ্ছে না। শক্ত ঘাসে সমস্যা হচ্ছে পাস দিতে। বল দ্রুত না গড়ানোয় খেলোয়াড়েরাও মানিয়ে নিতে পারছেন না।
চেলসির জয় উৎসব
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠল চেলসি এবং পালমেইরাস। ১০ জনের বেনফিকাকে ৪-১ গোলে হারালো ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাবটি। অন্যদিকে, ব্রাজিলের ক্লাবটি ১০ জনে খেলেও হারাল ইতালির বোটাফোগোকে।
গতকাল শনিবার চেলসি-বেনফিকা ম্যাচ চলল সাড়ে ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। সাধারণত একটি ফুটবল ম্যাচ শেষ হতে সময় লাগে ঘণ্টা দু’য়েক। খেলা অতিরিক্ত সময় এবং টাইব্রেকার পর্যন্ত গড়ালে আরও ৪৫-৫০ মিনিট বেশি সময় লাগে। সব মিলিয়ে ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই শেষ হয় খেলা। চেলসি-বেনফিকা ম্যাচ টাইব্রেকার পর্যন্ত না গড়ালেও শেষ হতে লেগে গেল প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা। আমেরিকার শার্লটে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায় ২ ঘণ্টা খেলা স্থগিত রাখতে বাধ্য হন রেফারি।
বেনফিকার হয়ে শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন অ্যাঙ্খেল ডি মারিয়া। পেনাল্টি থেকে গোল করেও দলকে জেতাতে পারলেন না আর্জেন্টিনার তারকা। ৬৪ মিনিটে রিসি জেমসের গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। খেলার ৮৬ মিনিটে ঝড় এবং বজ্রপাতের কারণে খেলা বন্ধ রাখতে বাধ্য হন রেফারি। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার খেলা শুরু হয় প্রায় ২ ঘণ্টা পর। খেলা শুরু হওয়ার পর ৯২ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন বেনফিকার জিয়ানলুকা প্রেসতিয়ান্নি। ১০ জনের বেনফিকার বিদায় তখন নিশ্চিত মনে হচ্ছিল। কিন্তু ৯৫ মিনিটে পেনাল্টি পায় পর্তুগালের ক্লাবটি। গোল করে সমতা ফেরান ডি মারিয়া। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ ব্যবধানে শেষ হওয়ায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে দু’দলের সমানে সমানে লড়াই হলেও দ্বিতীয়ার্ধে চেলসির সামনে দাঁড়াতে পারেনি ১০ জনের বেনফিকা। ১০৮, ১১৪ এবং ১১৭ মিনিটে পর পর চেলসির হয়ে গোল করেন ক্রিস্টোফার এনকুকু, পেড্রো নেতো এবং কিয়ারনান ডেয়োসবারি। তাতেই ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে যায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাবটি।
অন্যদিকে, বোটাফোগো এবং পালমেইরাসের খেলাও নির্ধারিত সময় শেষ হয় গোল শূন্য অবস্থায়। অতিরিক্ত সময়ের গোলে জয় পায় ব্রাজিলের ক্লাবটি। ১০০ মিনিটে ম্যাচের এক মাত্র গোলটি করেন পাওলিনহো। ১১৬ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পালমেইরাসের গুস্তাভো গোমেজ। তাতে অবশ্য ম্যাচের ফল প্রভাবিত হয়নি। শেষ আটের লড়াইয়ে পালমেইরাসের প্রতিপক্ষ চেলসি।
চেলসি কোচের ক্ষোভ
ম্যাচ শেষে সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন চেলসি কোচ মারেস্কা। ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা ফুটবল নয়। আমার মতে এটা স্রেফ কৌতুক, এটা কোনোভাবেই ফুটবল হতে পারে না। নিরাপত্তাজনিত কারণ আমি বুঝতে পারি। ম্যাচ স্থগিত হতেই পারে। তাই বলে সাত-আটটি ম্যাচ স্থগিত হবে? তার মানে, এই প্রতিযোগিতার জন্য এটি উপযুক্ত জায়গা নয়!’
‘এই প্রতিযোগিতা দারুণ। ক্লাবের বিশ্বকাপ এটি, বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলো খেলছে। কিন্তু ছয়-সাতটি ম্যাচ স্থগিত হলো! এটা তো স্বাভাবিক নয়। একটা বিশ্বকাপে কয়টা ম্যাচ স্থগিত হতে পারে? সম্ভবত একটিও নয়। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে কয়টি ম্যাচ স্থগিত হবে? একটিও নয়। তার মানে, এখানে সমস্যা আছে।’
ক্লাব বিশ্বকাপে সমস্যার শেষ নেই
মাঠে নিয়মিত ব্যবধানে পানি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এতই গরম যে মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে ১০ মিনিটেই। সেই মাঠে বল লাফাচ্ছে! আমেরিকায় চলা ক্লাব বিশ্বকাপের মাঠগুলো নিয়ে উঠছে এমনই অভিযোগ। পাশাপাশি, তীব্র গরমে ফুটবলারেরাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিশেষত ইউরোপের ক্লাবগুলো, যাদের এত তাপমাত্রায় খেলার অভ্যাসই নেই।
সিয়াটলের মাঠে সম্প্রতি খেলেছে পিএসজি। ম্যাচের পর প্যারিসের কোচ লুই এনরিকে বলেন, ‘গর্তে ভরা কোর্টে বাস্কেটবল খেলা হচ্ছে, এটা নিশ্চয়ই কোনো দিন দেখতে হবে না। এখানকার মাঠে ফুটবল এমন লাফাচ্ছে যে, মনে হচ্ছে খরগোশ খেলা করছে। কৃত্রিম ঘাসের মাঠকে এখন স্বাভাবিক ঘাসের মাঠ বানানো হয়েছে। ১০ মিনিটের মধ্যে মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপে এ রকম মাঠে খেলে অভ্যস্ত নই আমরা।’
রেয়াল মাদ্রিদের জুড বেলিংহ্যাম বলেন, ‘সত্যি বলতে, মাঠ মোটেই ভালো নয়। তবে বেশি খারাপও নয়। দু’দল একই মাঠে খেলছে। যদিও এই মাঠে শরীরের ভারসাম্য রাখা যাচ্ছে না। হাঁটুতে চাপ পড়ছে। আশা করি খেলোয়াড়েরা যাতে চোট না পায় সে দিকে খেয়াল রাখা হবে।’
সিনসিনাটি, ফিলাডেলফিয়া এবং শার্লটের মতো শহরে বেশ গরম। তার ওপর সম্প্রচারের কারণে ম্যাচ শুরু হচ্ছে দুপুর ৩টার সময়। তখন তাপমাত্রা থাকছে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পানি পানের বিরতি থাকলেও কোচেদের কৌশলে প্রভাব পড়ছে। চেলসির কোচ এনজো মারেস্কা বলেছেন, ‘দুপুরে অনুশীলন করা খুব দরকারি। না হলে ম্যাচে নামা যাবে না।’ ম্যাচের পর খেলোয়াড়দের রিকভারির ক্ষেত্রেও সময় লাগছে। সমস্যা হচ্ছে না দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলোর, যারা এ রকম তাপমাত্রায় খেলে অভ্যস্ত। ব্রাজিলের চারটি ক্লাবই শেষ ষোলোয় উঠেছে।
গরমের কারণে ঘাসও দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি দিয়েও লাভ হচ্ছে না। শক্ত ঘাসে সমস্যা হচ্ছে পাস দিতে। বল দ্রুত না গড়ানোয় খেলোয়াড়েরাও মানিয়ে নিতে পারছেন না।