বাংলাদেশসহ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোতে তীব্র গরমের মাত্রা বাড়ছে। এতে খেলার পরিবেশ বিঘিœত হওয়ার পাশাপাশি ক্রিকেটারদের চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে প্রকাশিত এক রিপোর্টে উঠে এসেছে। ‘হিট ফর সিক্সঃ দ্যা ডেঞ্জার জোন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি করেছে ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সাসটেইনেবিলিটি ইন স্পোর্টস (ইঅঝওঝ), ক্লাইমেট সেন্ট্রাল, ফ্রন্টরানারস এবং দ্য নেক্সট টেস্ট।
মঙ্গলবার,( ২২ জুলাই ২০২৫) গবেষণায় পোর্টসমাউথ ইউনিভার্সিটির এক্সট্রিম এনভায়রনমেন্ট ল্যাবরেটরির মানব শরীরবিদ্যার অধ্যাপক মাইক টিপটন বলেছেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি যে, গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোতে উচ্চ তাপমাত্রার ঘটনা ক্রমেই ঘন ও তীব্র হয়ে উঠছে। খেলোয়াড়দের এখন এমন পরিবেশে খেলতে হচ্ছে, যা শুধু অস্বস্তিকর নয় বরং বিপজ্জনক-মানবদেহের সহনশীলতার সীমা ছুঁয়ে ফেলছে। এটা শুধু খেলার পারফরম্যান্স নয়, এখন খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয়।’
প্রতিবেদনটি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে কোনো বড় ক্রিকেট দেশই মুক্ত নয়। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ক্যারিবিয়ান অঞ্চল এবং যুক্তরাজ্য-সব দেশের পেশাদার ও শিকড়স্তরের ক্রিকেট আজ জলবায়ু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা প্রায় ৬০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করে, যার ফলে প্রাণহানি ঘটে, রাস্তা গলে যায় এবং তীব্র বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। পরের বছরও চরম গরমের কারণে দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয় এবং ৩ কোটির বেশি শিশুর শ্রেণিকক্ষ পাঠ বন্ধ হয়ে যায়। এসময় বাংলাদেশে ক্রিকেট খেলা অসহনীয় হয়ে ওঠে।
প্রতিবেদনটি এমন সময় প্রকাশ পেল যখন ২০২৫ সালে বিশ্বজুড়ে তাপপ্রবাহের কারণে খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। উইম্বলডনের ইতিহাসের সবচেয়ে গরম প্রথম দিন থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের ম্যাচগুলো পর্যন্ত তীব্র গরমে খেলতে হয়েছে। জাতিসংঘের আবহাওয়া সংস্থা ডব্লিউএমও বলছে, ২০২৫ সাল হবে ইতিহাসের অন্যতম উষ্ণ বছর, যার জন্য মূলত দায়ী কয়লা, গ্যাস ও তেলের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার।
তীব্র গরমে বায়ুদূষণও আরও খারাপ হয়েছে। দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে অনুশীলনে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের মাস্ক পরে থাকার দৃশ্য বিশ্বব্যাপী আলোচনার বিষয় হয়। অ্যাজমা আক্রান্ত খেলোয়াড়দের মাঠে যেতে নিষেধ করা হয়, এবং আইসিসিকে সতর্ক করে বলা হয় যে জলবায়ু পরিবর্তন ক্রিকেটের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অধিনায়ক ড্যারেন গাঙ্গা বলেন, ‘ক্রিকেট এখন তার সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি — সেটা কোনো ফরম্যাট বা সম্প্রচার অধিকার নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন। আমি নিজে প্রচ- গরমে খেলেছি, কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম আরও খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।’
অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার অ্যাশটন টার্নার বলেন, ‘আমরা নিজেরাই দেখেছি, আবহাওয়া কীভাবে খেলার ওপর প্রভাব ফেলছে। ক্রিকেটকে এখনই জেগে উঠতে হবে — শুধু খেলাধুলার ভবিষ্যতের জন্য নয়, আমাদের কমিউনিটির জন্যও।’ সাইমন ক্যাটিচ, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটসম্যান বলেন, ‘সিডনিতে একাধিক দাবানল ও বন্যা হয়েছে। ২০২৪/২৫ মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে আমার ছেলের জুনিয়র ক্রিকেটের চারটি ম্যাচ বাতিল হয়েছিল।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সেলউইন হার্ট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন হলো সেই চূড়ান্ত বাউন্সার — অনিশ্চিত, দ্রুতগতির ও বিপজ্জনক। কোনো ক্রিকেট খেলুড়ে দেশই এর বাইরে নয়। মাঠ খেলার অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে, মৌসুম বদলে যাচ্ছে, খেলোয়াড় ও দর্শক উভয়েই ঝুঁকিতে পড়ছে। কিন্তু ক্রিকেট এই সংকটে নেতৃত্ব দিতে পারে। বিশ্বজুড়ে এর জনপ্রিয়তা ও প্রভাব রয়েছে — এখন সাহসী পদক্ষেপের সময়, সর্বত্র।’
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশসহ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোতে তীব্র গরমের মাত্রা বাড়ছে। এতে খেলার পরিবেশ বিঘিœত হওয়ার পাশাপাশি ক্রিকেটারদের চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে প্রকাশিত এক রিপোর্টে উঠে এসেছে। ‘হিট ফর সিক্সঃ দ্যা ডেঞ্জার জোন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি করেছে ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সাসটেইনেবিলিটি ইন স্পোর্টস (ইঅঝওঝ), ক্লাইমেট সেন্ট্রাল, ফ্রন্টরানারস এবং দ্য নেক্সট টেস্ট।
মঙ্গলবার,( ২২ জুলাই ২০২৫) গবেষণায় পোর্টসমাউথ ইউনিভার্সিটির এক্সট্রিম এনভায়রনমেন্ট ল্যাবরেটরির মানব শরীরবিদ্যার অধ্যাপক মাইক টিপটন বলেছেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি যে, গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোতে উচ্চ তাপমাত্রার ঘটনা ক্রমেই ঘন ও তীব্র হয়ে উঠছে। খেলোয়াড়দের এখন এমন পরিবেশে খেলতে হচ্ছে, যা শুধু অস্বস্তিকর নয় বরং বিপজ্জনক-মানবদেহের সহনশীলতার সীমা ছুঁয়ে ফেলছে। এটা শুধু খেলার পারফরম্যান্স নয়, এখন খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয়।’
প্রতিবেদনটি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে কোনো বড় ক্রিকেট দেশই মুক্ত নয়। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ক্যারিবিয়ান অঞ্চল এবং যুক্তরাজ্য-সব দেশের পেশাদার ও শিকড়স্তরের ক্রিকেট আজ জলবায়ু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা প্রায় ৬০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করে, যার ফলে প্রাণহানি ঘটে, রাস্তা গলে যায় এবং তীব্র বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। পরের বছরও চরম গরমের কারণে দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয় এবং ৩ কোটির বেশি শিশুর শ্রেণিকক্ষ পাঠ বন্ধ হয়ে যায়। এসময় বাংলাদেশে ক্রিকেট খেলা অসহনীয় হয়ে ওঠে।
প্রতিবেদনটি এমন সময় প্রকাশ পেল যখন ২০২৫ সালে বিশ্বজুড়ে তাপপ্রবাহের কারণে খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। উইম্বলডনের ইতিহাসের সবচেয়ে গরম প্রথম দিন থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের ম্যাচগুলো পর্যন্ত তীব্র গরমে খেলতে হয়েছে। জাতিসংঘের আবহাওয়া সংস্থা ডব্লিউএমও বলছে, ২০২৫ সাল হবে ইতিহাসের অন্যতম উষ্ণ বছর, যার জন্য মূলত দায়ী কয়লা, গ্যাস ও তেলের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার।
তীব্র গরমে বায়ুদূষণও আরও খারাপ হয়েছে। দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে অনুশীলনে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের মাস্ক পরে থাকার দৃশ্য বিশ্বব্যাপী আলোচনার বিষয় হয়। অ্যাজমা আক্রান্ত খেলোয়াড়দের মাঠে যেতে নিষেধ করা হয়, এবং আইসিসিকে সতর্ক করে বলা হয় যে জলবায়ু পরিবর্তন ক্রিকেটের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অধিনায়ক ড্যারেন গাঙ্গা বলেন, ‘ক্রিকেট এখন তার সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি — সেটা কোনো ফরম্যাট বা সম্প্রচার অধিকার নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন। আমি নিজে প্রচ- গরমে খেলেছি, কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম আরও খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।’
অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার অ্যাশটন টার্নার বলেন, ‘আমরা নিজেরাই দেখেছি, আবহাওয়া কীভাবে খেলার ওপর প্রভাব ফেলছে। ক্রিকেটকে এখনই জেগে উঠতে হবে — শুধু খেলাধুলার ভবিষ্যতের জন্য নয়, আমাদের কমিউনিটির জন্যও।’ সাইমন ক্যাটিচ, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটসম্যান বলেন, ‘সিডনিতে একাধিক দাবানল ও বন্যা হয়েছে। ২০২৪/২৫ মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে আমার ছেলের জুনিয়র ক্রিকেটের চারটি ম্যাচ বাতিল হয়েছিল।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সেলউইন হার্ট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন হলো সেই চূড়ান্ত বাউন্সার — অনিশ্চিত, দ্রুতগতির ও বিপজ্জনক। কোনো ক্রিকেট খেলুড়ে দেশই এর বাইরে নয়। মাঠ খেলার অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে, মৌসুম বদলে যাচ্ছে, খেলোয়াড় ও দর্শক উভয়েই ঝুঁকিতে পড়ছে। কিন্তু ক্রিকেট এই সংকটে নেতৃত্ব দিতে পারে। বিশ্বজুড়ে এর জনপ্রিয়তা ও প্রভাব রয়েছে — এখন সাহসী পদক্ষেপের সময়, সর্বত্র।’