অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব
বাংলাদেশের মেয়েদের জয়োল্লাস
দাপুটে পারফরম্যান্সে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়া কাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল বাংলাদেশ।
শুক্রবার,(৮ আগস্ট ২০২৫) ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে পিটার বাটলারের দল। দেখেশুনে শুরুর পর মাঠে নিজেদের সেরাটা মেলে ধরে লাল-সবুজের মেয়েরা। বিরতির আগে ও পরে চারবার করে জালে বল পাঠায় । গোলমুখে জ্বলে উঠে হ্যাটট্রিক করেন ফরোয়ার্ড তৃষ্ণা রানী সরকার। বাকি গোলদাতারা হলেন- সিনহা জাহান শিখা, শান্তি মার্ডি, নবীরন খাতুন, মোসাম্মৎ সাগরিকা ও মুনকি আক্তার।
লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বেশ কিছু সুযোগ নষ্টের পর ২০ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। স্বপ্না রানীর কর্নারে হেড করে লক্ষ্যভেদ করেন ফাঁকায় থাকা শিখা। ৩৩ মিনিটে নজরকাড়া অলিম্পিক গোলে ব্যবধান বাড়ান শান্তি। তার কর্নারে কারও ছোঁয়া ছাড়াই বল তিমুরের দূরের পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। তিন মিনিট পর শান্তির আরেকটি কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে জালে পাঠিয়ে বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসিয়ে দেন নবীরন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ম্যাচে নিজের প্রথম গোলটি করেন তৃষ্ণা। স্বপ্নার উঁচু করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সের ডানদিক থেকে সাগরিকা করেন কাটব্যাক। এরপর অনায়াসে নিশানা ভেদ করে উল্লাসে মাতেন তৃষ্ণা।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই তালে খেলে তিমুরকে ধসিয়ে দেয় বাটলারের শিষ্যরা। ৫৭ মিনিটে গোলমুখে শিখার শট প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক রুখে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। সুযোগ পেয়ে কাজে লাগিয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তৃষ্ণা। ৭৩ মিনিটে শিখার থ্রু পাস ধরে জাল কাঁপান আগের ম্যাচে জোড়া গোল করা সাগরিকা। এক ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে কাটিয়ে স্কোরলাইন ৬-০ করেন তিনি। ৮২ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তৃষ্ণা। বামদিকে থেকে সাগরিকার ক্রসে আলতো টোকায় গোল করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে তিমুরের জালে আরেকবার বল পাঠায় বাংলাদেশ। ডি-বক্সে জটলার মধ্যে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন মুনকি। গত বুধবার স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে বাছাইয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
২ ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে বাংলাদেশ।
গত রোববার গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
এবারের বাছাইয়ে আট গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলছে ৩২টি দল। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা আটটি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় হওয়া সেরা তিনটি দলও পাবে মূলপর্বের টিকেট। আগামী বছরের এপ্রিলে ১২টি দল নিয়ে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ।
বাটলার তাকিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচে তিমুরের বিপক্ষে জয়ের ব্যবধান ৮-০, স্বাভাবিকভাবে আনন্দে ভাসছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার জেমস বাটলার। তবে সেই উচ্ছ্বাসের মধ্যেই ভাবতে বসেছেন সামনের কঠিন পরীক্ষা নিয়ে। বাংলাদেশের পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ যে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া।
গ্রুপে সেরা হওয়ার লড়াইয়ে বাংলাদেশের মূল প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া; তিমুরকে যারা ৯-০ গোলে উড়িয়ে বাছাই শুরু করে। তিমুরকে উড়িয়ে দেয়ার তৃপ্তি থাকলেও বাংলাদেশ কোচের ভাবনায় উঁকি দিচ্ছে পরের ম্যাচ।
‘আমি মনে করি, তিমুরকে আমরা উড়িয়ে দিয়েছি। যদিও শুরুর ১০ মিনিট একটু অগোছালো ছিল দলটি। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে আমরা বেড়ে উঠেছি, আধিপত্য করেছি। পাসিংগুলো এবং বিশেষ করে সেট-পিস থেকে কিছু গোল ঠিকঠাক করতে পারলাম। শান্তির শটটি সৌভাগ্যশত সরাসরি কর্নার থেকে জালে জড়াল। আসলে, ম্যাচে আপনাকে নিজের ভাগ্য নিজেকেই গড়ে নিতে হবে।’
‘শিখাও আজ ছিল দুর্দান্ত, অসাধারণ। দলে জায়গা পাওয়ার জন্য দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। সাফের আসরগুলোতে আমরা দারুণ পরীক্ষা চালিয়েছিলাম, কিন্তু এটা (এএফসির টুর্নামেন্ট) পুরোপুরি অন্যপর্যায়ের প্রতিযোগিতা। এখন আমাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া। আমি শুধু আশা করি, এই টুর্নামেন্ট থেকে মেয়েরা কিছু শিখবে। যখন আমরা কোরিয়ার বিপক্ষে খেলব, আমি মনে করি, ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
এরই মধ্যে সিনিয়র টিমের এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাগুলোকে তাই শেখার মঞ্চ হিসেবে দেখতে চাওয়ার কথা একাধিকবার বলেছেন বাটলার। কোরিয়া ম্যাচ নিয়ে একই সুর এই ইংলিশ কোচের কণ্ঠে।
‘ম্যাচটা খেলার জন্য সবকিছুই আমাদের আছে। আমরা আমাদের সেরাটাই দিবো। তবে, আমি স্রেফ মনে করি, কাজগুলো ঠিকঠাক করতে আমাদের কিছু বিষয় শিখতে হবে এবং আশা করি, সেটা আমরা শিখবও।’
অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব
বাংলাদেশের মেয়েদের জয়োল্লাস
শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫
দাপুটে পারফরম্যান্সে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়া কাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল বাংলাদেশ।
শুক্রবার,(৮ আগস্ট ২০২৫) ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে পিটার বাটলারের দল। দেখেশুনে শুরুর পর মাঠে নিজেদের সেরাটা মেলে ধরে লাল-সবুজের মেয়েরা। বিরতির আগে ও পরে চারবার করে জালে বল পাঠায় । গোলমুখে জ্বলে উঠে হ্যাটট্রিক করেন ফরোয়ার্ড তৃষ্ণা রানী সরকার। বাকি গোলদাতারা হলেন- সিনহা জাহান শিখা, শান্তি মার্ডি, নবীরন খাতুন, মোসাম্মৎ সাগরিকা ও মুনকি আক্তার।
লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বেশ কিছু সুযোগ নষ্টের পর ২০ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। স্বপ্না রানীর কর্নারে হেড করে লক্ষ্যভেদ করেন ফাঁকায় থাকা শিখা। ৩৩ মিনিটে নজরকাড়া অলিম্পিক গোলে ব্যবধান বাড়ান শান্তি। তার কর্নারে কারও ছোঁয়া ছাড়াই বল তিমুরের দূরের পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। তিন মিনিট পর শান্তির আরেকটি কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে জালে পাঠিয়ে বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসিয়ে দেন নবীরন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ম্যাচে নিজের প্রথম গোলটি করেন তৃষ্ণা। স্বপ্নার উঁচু করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সের ডানদিক থেকে সাগরিকা করেন কাটব্যাক। এরপর অনায়াসে নিশানা ভেদ করে উল্লাসে মাতেন তৃষ্ণা।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই তালে খেলে তিমুরকে ধসিয়ে দেয় বাটলারের শিষ্যরা। ৫৭ মিনিটে গোলমুখে শিখার শট প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক রুখে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। সুযোগ পেয়ে কাজে লাগিয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তৃষ্ণা। ৭৩ মিনিটে শিখার থ্রু পাস ধরে জাল কাঁপান আগের ম্যাচে জোড়া গোল করা সাগরিকা। এক ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে কাটিয়ে স্কোরলাইন ৬-০ করেন তিনি। ৮২ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তৃষ্ণা। বামদিকে থেকে সাগরিকার ক্রসে আলতো টোকায় গোল করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে তিমুরের জালে আরেকবার বল পাঠায় বাংলাদেশ। ডি-বক্সে জটলার মধ্যে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন মুনকি। গত বুধবার স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে বাছাইয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
২ ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে বাংলাদেশ।
গত রোববার গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
এবারের বাছাইয়ে আট গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলছে ৩২টি দল। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা আটটি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় হওয়া সেরা তিনটি দলও পাবে মূলপর্বের টিকেট। আগামী বছরের এপ্রিলে ১২টি দল নিয়ে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ।
বাটলার তাকিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচে তিমুরের বিপক্ষে জয়ের ব্যবধান ৮-০, স্বাভাবিকভাবে আনন্দে ভাসছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার জেমস বাটলার। তবে সেই উচ্ছ্বাসের মধ্যেই ভাবতে বসেছেন সামনের কঠিন পরীক্ষা নিয়ে। বাংলাদেশের পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ যে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া।
গ্রুপে সেরা হওয়ার লড়াইয়ে বাংলাদেশের মূল প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া; তিমুরকে যারা ৯-০ গোলে উড়িয়ে বাছাই শুরু করে। তিমুরকে উড়িয়ে দেয়ার তৃপ্তি থাকলেও বাংলাদেশ কোচের ভাবনায় উঁকি দিচ্ছে পরের ম্যাচ।
‘আমি মনে করি, তিমুরকে আমরা উড়িয়ে দিয়েছি। যদিও শুরুর ১০ মিনিট একটু অগোছালো ছিল দলটি। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে আমরা বেড়ে উঠেছি, আধিপত্য করেছি। পাসিংগুলো এবং বিশেষ করে সেট-পিস থেকে কিছু গোল ঠিকঠাক করতে পারলাম। শান্তির শটটি সৌভাগ্যশত সরাসরি কর্নার থেকে জালে জড়াল। আসলে, ম্যাচে আপনাকে নিজের ভাগ্য নিজেকেই গড়ে নিতে হবে।’
‘শিখাও আজ ছিল দুর্দান্ত, অসাধারণ। দলে জায়গা পাওয়ার জন্য দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। সাফের আসরগুলোতে আমরা দারুণ পরীক্ষা চালিয়েছিলাম, কিন্তু এটা (এএফসির টুর্নামেন্ট) পুরোপুরি অন্যপর্যায়ের প্রতিযোগিতা। এখন আমাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া। আমি শুধু আশা করি, এই টুর্নামেন্ট থেকে মেয়েরা কিছু শিখবে। যখন আমরা কোরিয়ার বিপক্ষে খেলব, আমি মনে করি, ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
এরই মধ্যে সিনিয়র টিমের এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাগুলোকে তাই শেখার মঞ্চ হিসেবে দেখতে চাওয়ার কথা একাধিকবার বলেছেন বাটলার। কোরিয়া ম্যাচ নিয়ে একই সুর এই ইংলিশ কোচের কণ্ঠে।
‘ম্যাচটা খেলার জন্য সবকিছুই আমাদের আছে। আমরা আমাদের সেরাটাই দিবো। তবে, আমি স্রেফ মনে করি, কাজগুলো ঠিকঠাক করতে আমাদের কিছু বিষয় শিখতে হবে এবং আশা করি, সেটা আমরা শিখবও।’