বোর্ডের আলোচনা সভায় স্যামি, লারা ও লয়েড
পাকিস্তানের বিপক্ষে এক দিনের সিরিজ জিতলেও, ওয়েস্ট ইন্ডি?জের ক্রিকেটের সামগ্রিক চিত্রটা মোটেও ভালো নয়। অর্থের লোভে একের পর এক ক্রিকেটার হয় দেশের হয়ে খেলতে চাইছেন না, অথবা অবসর নিচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে টেস্টে ২৭ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর সমস্যার সমাধান খুঁজতে সাবেক ক্রিকেটারদের সাহায্য চেয়েছিল সে দেশের বোর্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থা দেখে বিস্মিত সাবেকরা।
ব্রায়ান লারার মতে, তারা বাকি দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেয়ার যোগ্যই নন। ক্লাইভ লয়েড চাইছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অতীত গৌরবের কথা মাথায় রেখে আরও বেশি অর্থসাহায্য করা উচিত আইসিসির। বৈঠকে ছিলেন ভিভ রিচার্ডস, ডেসমন্ড হেইন্স, শিবনারায়ণ চন্দরপল এবং কোচ ড্যারেন স্যামি।
১৯৮০-২০০০ পর্যন্ত ক্রিকেটবিশ্বে অপ্রতিরোধ্য দল ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে এখনকার সঙ্গে সেই দলকে মেলানো যাবে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আর্থিক অবস্থা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। অর্থের নয়-ছয় করা হয়েছে। প্রশাসনিক কাজকর্মও ঠিক নেই। দেশের হয়ে খেলে অর্থ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই উঠতি ক্রিকেটারেরা টি-টোয়েন্টি লীগের অর্থের হাতছানিতে সাড়া দিচ্ছেন। মূলত চার কারণ রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুরবস্থার।
১) বোর্ডের অবস্থা ভালো নয়। সক্রিয়তার অভাব, স্বল্পমেয়াদি ভাবনাচিন্তা এবং প্রশ্ন ওঠার মতো আর্থিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ক্রিকেটারদের চুক্তি নিয়ে আগ্রহ দেখানো হয়নি, অর্থ দিতে দেরি করা হয়েছে। ক্রিকেটারেরা বিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছেন।
২) ক্রিকেটারদের সঙ্গে বোর্ডের ঠান্ডা যুদ্ধ লেগেই রয়েছে। বোর্ডকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগই করতে পারেন না তারা। ২০১৪-য় বেতন না দেয়ায় ভারতের বিরুদ্ধে সফরের মাঝপথেই দেশে ফিরে গিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারেরা।
৩) বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লীগ খেললে যে অর্থ রোজগার করা যায় তা এড়ানো অসম্ভব। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারেরা আর দেশের হয়ে খেলাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
৪) ঘরোয়া এবং জুনিয়র ক্রিকেটের অবস্থা শোচনীয়। ক্রিকেট খেলার জন্য কাউকে অনুপ্রাণিত করা যাচ্ছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজদের সব দ্বীপরাষ্ট্রেই এক অবস্থা।
শেষ কারণটা নিয়েই বেশি চিন্তিত লারা। বৈঠকে বলেছেন, ‘আগে দক্ষতার নিরিখে দল তৈরি হতো। আমরা বিশ্বের সেরা দল হয়েছিলাম। তার পর থেকে খেলাটা অনেক বদলে গিয়েছে।
তাই প্রতিভা তুলে আনতে নতুন পন্থা নিতে হবে আমাদের। বাকি দেশগুলো আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। এখনও দক্ষতা রয়েছে দেশের ক্রিকেটে। তা কাজে লাগানো হচ্ছে না।’
লারার মতে, এই অবস্থা সারতে অনেক সময় লাগবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা এখন আর ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করতে পারছে না।
কীভাবে তাদের অনুপ্রাণিত করা যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতি দায়বদ্ধতা ফিরিয়ে আনা যায়, সেটা খুঁজে বার করতে হবে। এ ব্যাপারে ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার থেকে শিখতে এবং সাহায্য নিতে বলেছেন তিনি।
লয়েডের মতে, আর্থিক সমস্যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতনের একটা মূল কারণ। তাই তিনি চান, পুরনো গৌরবের কথা মাথায় রেখে আইসিসির উচিত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বেশি অর্থ সাহায্য করা। তার মতে, টেস্টে দ্বিস্তরীয় নিয়ম চালু হলে তা থেকে বেরোতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০০ বছর লেগে যাবে।
বোর্ডের আলোচনা সভায় স্যামি, লারা ও লয়েড
শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
পাকিস্তানের বিপক্ষে এক দিনের সিরিজ জিতলেও, ওয়েস্ট ইন্ডি?জের ক্রিকেটের সামগ্রিক চিত্রটা মোটেও ভালো নয়। অর্থের লোভে একের পর এক ক্রিকেটার হয় দেশের হয়ে খেলতে চাইছেন না, অথবা অবসর নিচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে টেস্টে ২৭ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর সমস্যার সমাধান খুঁজতে সাবেক ক্রিকেটারদের সাহায্য চেয়েছিল সে দেশের বোর্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থা দেখে বিস্মিত সাবেকরা।
ব্রায়ান লারার মতে, তারা বাকি দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেয়ার যোগ্যই নন। ক্লাইভ লয়েড চাইছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অতীত গৌরবের কথা মাথায় রেখে আরও বেশি অর্থসাহায্য করা উচিত আইসিসির। বৈঠকে ছিলেন ভিভ রিচার্ডস, ডেসমন্ড হেইন্স, শিবনারায়ণ চন্দরপল এবং কোচ ড্যারেন স্যামি।
১৯৮০-২০০০ পর্যন্ত ক্রিকেটবিশ্বে অপ্রতিরোধ্য দল ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে এখনকার সঙ্গে সেই দলকে মেলানো যাবে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আর্থিক অবস্থা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। অর্থের নয়-ছয় করা হয়েছে। প্রশাসনিক কাজকর্মও ঠিক নেই। দেশের হয়ে খেলে অর্থ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই উঠতি ক্রিকেটারেরা টি-টোয়েন্টি লীগের অর্থের হাতছানিতে সাড়া দিচ্ছেন। মূলত চার কারণ রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুরবস্থার।
১) বোর্ডের অবস্থা ভালো নয়। সক্রিয়তার অভাব, স্বল্পমেয়াদি ভাবনাচিন্তা এবং প্রশ্ন ওঠার মতো আর্থিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ক্রিকেটারদের চুক্তি নিয়ে আগ্রহ দেখানো হয়নি, অর্থ দিতে দেরি করা হয়েছে। ক্রিকেটারেরা বিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছেন।
২) ক্রিকেটারদের সঙ্গে বোর্ডের ঠান্ডা যুদ্ধ লেগেই রয়েছে। বোর্ডকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগই করতে পারেন না তারা। ২০১৪-য় বেতন না দেয়ায় ভারতের বিরুদ্ধে সফরের মাঝপথেই দেশে ফিরে গিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারেরা।
৩) বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লীগ খেললে যে অর্থ রোজগার করা যায় তা এড়ানো অসম্ভব। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারেরা আর দেশের হয়ে খেলাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
৪) ঘরোয়া এবং জুনিয়র ক্রিকেটের অবস্থা শোচনীয়। ক্রিকেট খেলার জন্য কাউকে অনুপ্রাণিত করা যাচ্ছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজদের সব দ্বীপরাষ্ট্রেই এক অবস্থা।
শেষ কারণটা নিয়েই বেশি চিন্তিত লারা। বৈঠকে বলেছেন, ‘আগে দক্ষতার নিরিখে দল তৈরি হতো। আমরা বিশ্বের সেরা দল হয়েছিলাম। তার পর থেকে খেলাটা অনেক বদলে গিয়েছে।
তাই প্রতিভা তুলে আনতে নতুন পন্থা নিতে হবে আমাদের। বাকি দেশগুলো আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। এখনও দক্ষতা রয়েছে দেশের ক্রিকেটে। তা কাজে লাগানো হচ্ছে না।’
লারার মতে, এই অবস্থা সারতে অনেক সময় লাগবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা এখন আর ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করতে পারছে না।
কীভাবে তাদের অনুপ্রাণিত করা যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতি দায়বদ্ধতা ফিরিয়ে আনা যায়, সেটা খুঁজে বার করতে হবে। এ ব্যাপারে ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার থেকে শিখতে এবং সাহায্য নিতে বলেছেন তিনি।
লয়েডের মতে, আর্থিক সমস্যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতনের একটা মূল কারণ। তাই তিনি চান, পুরনো গৌরবের কথা মাথায় রেখে আইসিসির উচিত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বেশি অর্থ সাহায্য করা। তার মতে, টেস্টে দ্বিস্তরীয় নিয়ম চালু হলে তা থেকে বেরোতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০০ বছর লেগে যাবে।