পাওয়ার হিটিং কোচের সঙ্গে যে কাজ করলেন ক্রিকেটাররা
প্রো ভেলোসিটি ব্যাটের ব্যবহার দেখাচ্ছেন জুলিয়ান উড
জুলিয়ান উডের ক্লাসে তিন দিন কাটালেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তার নিয়ে আসা ‘প্রো ভেলোসিটি’ ব্যাট নিয়েও তুমুল আগ্রহ। সোমবার (১৮-০৮-২০২৫) অনুশীলনের বিরতির দিনে টাইগার ব্যাটার জাকের আলি শোনালেন পাওয়ার হিটিং কোচের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতার গল্প।
সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটারদের দুর্বলতা এই পাওয়ার হিটিংয়ে। সেটি সারাতেই বিসিবি নিয়ে এসেছে বিশেষজ্ঞ কোচ উডকে। নিজেকে তিনি বলে থাকেন ক্রিকেটের প্রথম ‘পাওয়ার হিটিং কোচ।’
২০২২ বিপিএলে সিলেট দলের ব্যাটিং কোচ ছিলেন। পরের বিপিএলে ছিলেন চট্টগ্রাম দলে। বিশ্বের আরও বিভিন্ন লীগে এবং বিশ্বজুড়ে অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও কাজ করেছেন পাওয়ার হিটিং নিয়ে। কদিন আগে শ্রীলঙ্কায় বিশেষ ক্যাম্প পরিচালনা করেছেন।
বাংলাদেশে আসার পর শুরুতে দেশের কোচদের সঙ্গে বিশেষ সেশন ছিল তার। পরে বিকেএসপিতে গিয়ে কাজ করেন নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে। এরপর শুরু হয়েছে তার মূল দায়িত্ব। এশিয়া ক্যাম্পের প্রস্তুতি ক্যাম্পে থাকা ক্রিকেটারদের শেখাচ্ছেন পাওয়ার হিটিংয়ের নানা দিক।
সোমবার ক্যাম্পের বিরতির দিনে সংবাদ সম্মেলনে জাকের জানান, উডের কাছ থেকে তারা কী শিখছেন।
‘জুলিয়ান মূলত আমাদের পাওয়ার হিটিংয়ের কিছু স্কিল নিয়ে কাজ করছেন। কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়, যারা জেনেটিক্যালি ভালো আছে, তারা কীভাবে আরও ভালো করতে পারে, আর যারা টাইমার, তাদের কীভাবে আরও দুই-মিটার দূরত্ব বাড়ানো যায় (শটের), ওই জিনিসগুলোর স্কিল নিয়ে কাজ করছে।’
পাওয়ার হিটার বলতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে আসলে সত্যিকার অর্থে নেই একজনও। টেনেটুনে এই জাকের আলি, আর কিছু ক্ষেত্রে শামীম হোসেনকে রাখা যেতে পারে এই তালিকায়। বড় শটের জন্য এদেশের বেশিরভাগ ব্যাটাররাই মূলত নির্ভর করেন টাইমিং আর উদ্ভাবনী ব্যাটিংয়ের ওপর।
জাকের জানান, ভিন্ন ঘরানার ব্যাটারদের জন্য উডের টিপ্স ভিন্ন। ‘একেকজনের ব্যাট সুইং একেকরকম, কারও সুইং গল্ফের মতো, কারও বেসবলের মতো। জুলিয়ান এখানে আসার পরই বলেছেন, ‘তোমার মৌলিক জায়গার ওপর নির্ভর করেই আমি পরিবর্তন আনতে চাই। ভিন্ন কিছু দিয়ে দেব না।’ যার যার ধরন অনুযায়ী কাজ দিয়েছে সে।’
‘যারা টাইমার, তাদের আরও কীভাবে ৫-৬ মিটার উন্নতি, টাইমারদের কিন্তু সে পাওয়ার হিটার হতে বলে নাই। তারা টাইমারই থাকবে। যারা টাইমিং করে, তারা কীভাবে তাদের শটগুলো ৪-৫ মিটার বা ৬ মিটার বা আরেকটু বাড়াতে পারে এতে কী হবে, যেটায় আউট হওয়ার কথা, সেটা ছয় হয়ে যাবে। এগুলোই শেখাচ্ছেন।’
উডের এই শিক্ষার উল্লেখযোগ্য একটি উপকরণ ‘প্রো ভেলোসিটি ব্যাট।’ এই ব্যাট এখন নানা খেলাতেই কাজে লাগানো হচ্ছে খেলোয়াড়দের স্কিল শাণিত করতে। ব্যাটারদের ব্যাট সুইংয়ের গতি বাড়ানো, ব্যাট সুইংয়ের ম্যাকানিজম পোক্ত করা, হ্যান্ড-আই কো-অর্ডিনেশন উন্ত করা, এমন অনেক কিছুরই সহায়ক এই ব্যাট। এই ব্যাট দিয়ে যত জোরে আঘাত করা হয়, মারের জোর অনুযায়ী ধাপে ধাপে বিভিন্ন ধরনের শব্দ বের হয়। জাকেরের আশা, তাদের জন্য এই অনুশীলন দারুণ কার্যকর হবে।
‘যে কয়টা সাউন্ড বের করা যায়, সেগুলো বের করতে পারলে ভালো লাগে। কিন্তু অনেক জোর লাগে এটা বের করতে। সাউন্ডটা বের করতে অনেক এফোর্ট দিতে হয়। নিয়মিত এসব নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই কাজে দেবে।’
পাওয়ার হিটিং কোচের সঙ্গে কাজ করার ফল অবশ্য রাতারাতি মিলবে না বলে জানিয়ে রাখলেন জাকের। তবে চর্চা চালিয়ে গেলে ফল মিলবে অবশ্যই।
‘পরিবর্তনগুলো এত সহজে ম্যাচ ছাড়া আপনারা বুঝতে পারবেন না। যেহেতু মাত্র দুই-তিন দিনই হলো বেশিরভাগ কাজই স্কিল নিয়ে হয়েছে। সামনে সিলেটে আমাদের নেট (অনুশীলন) হবে, সেখানে আরও ভিন্ন কিছু হবে। এত তাড়াতাড়ি মন্তব্য করাটা ঠিক হবে না যে কী হয়ে গেল, কী না হলো। আরেকটু সময় লাগবে।’
‘তবে আমাদের যে কাজগুলো দেয়া হয়েছে, আমরা করার চেষ্টা করছি। তবে সুইং প্র্যাকটিস বা বিভিন্ন ড্রিল, এসব অবশ্যই কাজে লাগবে।’
উডের পাওয়ার হিটিং কোচিংয়ের আগে স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ ন্যাথান কাইলির তত্ত্বাবধানে নিবিড় ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে ক্রিকেটারদের। সেখানেও যথেষ্ট ঘাম ঝরিয়েছেন ক্রিকেটাররা। কাইলির কঠিন ট্রেনিংয়ের সঙ্গে এখন তারা মানিয়ে নিয়েছেন, বলেন জাকের।
‘ফিটনেস ট্রেনিং আমাদের নিয়মিতই হচ্ছে। ন্যাথান (কাইলি) আসার পর আমাদের ও রকম স্ট্যান্ডার্ডই সেট করে দিয়েছে। আপনারা কাছ থেকে দেখে হয়তো ভাবছেন অনেক কষ্ট হচ্ছে। তবে আমরা এক বছর ধরেই এ রকম কষ্টের অংশ হয়ে আছি। ফিটনেসের এ রকম স্ট্যান্ডার্ড ধরে রেখেই আমাদেরকে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সবাই ভালো চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছি। সবার ফিটনেস ভালো এখন।’
জুলিয়ান উডের পাওয়ার হিটিং ক্লাসের পরের পর্ব সিলেটে। সেখানে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরজের প্রস্তুতি পর্বে থাকবেন তিনি। তার সঙ্গে বিসিবির চুক্তির মেয়াদ চার সপ্তাহের।
ডাচদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু ৩০ সেপ্টেম্বর। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১১ সেপ্টেম্বর হংকংয়ের বিপক্ষে।
পাওয়ার হিটিং কোচের সঙ্গে যে কাজ করলেন ক্রিকেটাররা
প্রো ভেলোসিটি ব্যাটের ব্যবহার দেখাচ্ছেন জুলিয়ান উড
সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫
জুলিয়ান উডের ক্লাসে তিন দিন কাটালেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তার নিয়ে আসা ‘প্রো ভেলোসিটি’ ব্যাট নিয়েও তুমুল আগ্রহ। সোমবার (১৮-০৮-২০২৫) অনুশীলনের বিরতির দিনে টাইগার ব্যাটার জাকের আলি শোনালেন পাওয়ার হিটিং কোচের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতার গল্প।
সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটারদের দুর্বলতা এই পাওয়ার হিটিংয়ে। সেটি সারাতেই বিসিবি নিয়ে এসেছে বিশেষজ্ঞ কোচ উডকে। নিজেকে তিনি বলে থাকেন ক্রিকেটের প্রথম ‘পাওয়ার হিটিং কোচ।’
২০২২ বিপিএলে সিলেট দলের ব্যাটিং কোচ ছিলেন। পরের বিপিএলে ছিলেন চট্টগ্রাম দলে। বিশ্বের আরও বিভিন্ন লীগে এবং বিশ্বজুড়ে অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও কাজ করেছেন পাওয়ার হিটিং নিয়ে। কদিন আগে শ্রীলঙ্কায় বিশেষ ক্যাম্প পরিচালনা করেছেন।
বাংলাদেশে আসার পর শুরুতে দেশের কোচদের সঙ্গে বিশেষ সেশন ছিল তার। পরে বিকেএসপিতে গিয়ে কাজ করেন নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে। এরপর শুরু হয়েছে তার মূল দায়িত্ব। এশিয়া ক্যাম্পের প্রস্তুতি ক্যাম্পে থাকা ক্রিকেটারদের শেখাচ্ছেন পাওয়ার হিটিংয়ের নানা দিক।
সোমবার ক্যাম্পের বিরতির দিনে সংবাদ সম্মেলনে জাকের জানান, উডের কাছ থেকে তারা কী শিখছেন।
‘জুলিয়ান মূলত আমাদের পাওয়ার হিটিংয়ের কিছু স্কিল নিয়ে কাজ করছেন। কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়, যারা জেনেটিক্যালি ভালো আছে, তারা কীভাবে আরও ভালো করতে পারে, আর যারা টাইমার, তাদের কীভাবে আরও দুই-মিটার দূরত্ব বাড়ানো যায় (শটের), ওই জিনিসগুলোর স্কিল নিয়ে কাজ করছে।’
পাওয়ার হিটার বলতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে আসলে সত্যিকার অর্থে নেই একজনও। টেনেটুনে এই জাকের আলি, আর কিছু ক্ষেত্রে শামীম হোসেনকে রাখা যেতে পারে এই তালিকায়। বড় শটের জন্য এদেশের বেশিরভাগ ব্যাটাররাই মূলত নির্ভর করেন টাইমিং আর উদ্ভাবনী ব্যাটিংয়ের ওপর।
জাকের জানান, ভিন্ন ঘরানার ব্যাটারদের জন্য উডের টিপ্স ভিন্ন। ‘একেকজনের ব্যাট সুইং একেকরকম, কারও সুইং গল্ফের মতো, কারও বেসবলের মতো। জুলিয়ান এখানে আসার পরই বলেছেন, ‘তোমার মৌলিক জায়গার ওপর নির্ভর করেই আমি পরিবর্তন আনতে চাই। ভিন্ন কিছু দিয়ে দেব না।’ যার যার ধরন অনুযায়ী কাজ দিয়েছে সে।’
‘যারা টাইমার, তাদের আরও কীভাবে ৫-৬ মিটার উন্নতি, টাইমারদের কিন্তু সে পাওয়ার হিটার হতে বলে নাই। তারা টাইমারই থাকবে। যারা টাইমিং করে, তারা কীভাবে তাদের শটগুলো ৪-৫ মিটার বা ৬ মিটার বা আরেকটু বাড়াতে পারে এতে কী হবে, যেটায় আউট হওয়ার কথা, সেটা ছয় হয়ে যাবে। এগুলোই শেখাচ্ছেন।’
উডের এই শিক্ষার উল্লেখযোগ্য একটি উপকরণ ‘প্রো ভেলোসিটি ব্যাট।’ এই ব্যাট এখন নানা খেলাতেই কাজে লাগানো হচ্ছে খেলোয়াড়দের স্কিল শাণিত করতে। ব্যাটারদের ব্যাট সুইংয়ের গতি বাড়ানো, ব্যাট সুইংয়ের ম্যাকানিজম পোক্ত করা, হ্যান্ড-আই কো-অর্ডিনেশন উন্ত করা, এমন অনেক কিছুরই সহায়ক এই ব্যাট। এই ব্যাট দিয়ে যত জোরে আঘাত করা হয়, মারের জোর অনুযায়ী ধাপে ধাপে বিভিন্ন ধরনের শব্দ বের হয়। জাকেরের আশা, তাদের জন্য এই অনুশীলন দারুণ কার্যকর হবে।
‘যে কয়টা সাউন্ড বের করা যায়, সেগুলো বের করতে পারলে ভালো লাগে। কিন্তু অনেক জোর লাগে এটা বের করতে। সাউন্ডটা বের করতে অনেক এফোর্ট দিতে হয়। নিয়মিত এসব নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই কাজে দেবে।’
পাওয়ার হিটিং কোচের সঙ্গে কাজ করার ফল অবশ্য রাতারাতি মিলবে না বলে জানিয়ে রাখলেন জাকের। তবে চর্চা চালিয়ে গেলে ফল মিলবে অবশ্যই।
‘পরিবর্তনগুলো এত সহজে ম্যাচ ছাড়া আপনারা বুঝতে পারবেন না। যেহেতু মাত্র দুই-তিন দিনই হলো বেশিরভাগ কাজই স্কিল নিয়ে হয়েছে। সামনে সিলেটে আমাদের নেট (অনুশীলন) হবে, সেখানে আরও ভিন্ন কিছু হবে। এত তাড়াতাড়ি মন্তব্য করাটা ঠিক হবে না যে কী হয়ে গেল, কী না হলো। আরেকটু সময় লাগবে।’
‘তবে আমাদের যে কাজগুলো দেয়া হয়েছে, আমরা করার চেষ্টা করছি। তবে সুইং প্র্যাকটিস বা বিভিন্ন ড্রিল, এসব অবশ্যই কাজে লাগবে।’
উডের পাওয়ার হিটিং কোচিংয়ের আগে স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ ন্যাথান কাইলির তত্ত্বাবধানে নিবিড় ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে ক্রিকেটারদের। সেখানেও যথেষ্ট ঘাম ঝরিয়েছেন ক্রিকেটাররা। কাইলির কঠিন ট্রেনিংয়ের সঙ্গে এখন তারা মানিয়ে নিয়েছেন, বলেন জাকের।
‘ফিটনেস ট্রেনিং আমাদের নিয়মিতই হচ্ছে। ন্যাথান (কাইলি) আসার পর আমাদের ও রকম স্ট্যান্ডার্ডই সেট করে দিয়েছে। আপনারা কাছ থেকে দেখে হয়তো ভাবছেন অনেক কষ্ট হচ্ছে। তবে আমরা এক বছর ধরেই এ রকম কষ্টের অংশ হয়ে আছি। ফিটনেসের এ রকম স্ট্যান্ডার্ড ধরে রেখেই আমাদেরকে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সবাই ভালো চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছি। সবার ফিটনেস ভালো এখন।’
জুলিয়ান উডের পাওয়ার হিটিং ক্লাসের পরের পর্ব সিলেটে। সেখানে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরজের প্রস্তুতি পর্বে থাকবেন তিনি। তার সঙ্গে বিসিবির চুক্তির মেয়াদ চার সপ্তাহের।
ডাচদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু ৩০ সেপ্টেম্বর। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১১ সেপ্টেম্বর হংকংয়ের বিপক্ষে।