চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল
প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে ২-০ গোলে পরাজিত করে ম্যানচেস্টার সিটি প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে। প্রথম লেগে ২-১ গোলে জয়ী হওয়া ম্যানসিটি দুই লেগ মিলিয়ে জিতেছে ৪-১ গোলে। গত আসরের রানার্স আপ পিএসজি এ ম্যাচে পায়নি তাদের তারকা খেলোয়াড় কাইলিয়ান এমবাপ্পেকে। ইনজুরির কারণে তিনি এ ম্যাচে খেলতে পারেননি। তাছাড়া দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময়ে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া লাল কার্ড দেখলে দশজনের দলে পরিনত হয় তারা। এর পর আর তাদের পক্ষে ম্যাচে ফেরা সম্ভব হয়নি। ম্যানসিটির হয়ে দুটি গোলই করেন রিয়াদ মাহরেজ। উভয় অর্ধে তিনি একটি করে গোল করেন। পেপ গার্দিওয়ালার দল এবারের মৌসুমে দুরন্ত পারফরমেন্স দেখিয়েই উঠেছে ফাইনালে। পিএসজির তারকা নেইমার মাঝে মাঝে চেষ্টা করেছিলেন জ¦লে উঠতে। কিন্তু দলের ব্যর্থতার দিন তিনি একা তেমন কিছু করতে পারেননি।
ম্যানসিটির ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ছিল প্রচন্ড ঠান্ডা। মাঠের বেশীরভাগ জায়গা ছিল তুষারে ঢাকা। এর ফলে স্বাভাবিক ফুটবল খেলতে উভয় দলেরই কিছুটা সমস্যা হয়। ম্যাচ শুরুর আগেই পিছিয়ে ছিল পিএসজি। কারণ ফাইনালে উঠতে হলে তাদেরকে জিততেই হতো। তারা খেলাটা শুরু করে ভালভাবেই। অপর দিকে ম্যানসিটি জানতো ম্যাচ ড্র করলেই তারা উঠে যাবে ফাইনালে। তাই কোচ পেপ গার্দিওয়ালা সেভাবেই দল গঠন করেছেন। পিএসজির বিপজ্জনক খেলোয়াড় নেইমারকে তিনি রাখেন কঠোর পাহারায়। নেইমার ব্যক্তিগত নৈপুন্য দেখানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ম্যনসিটির রক্ষণভাগ অসাধারণ খেলেছে। তারা পিএসজির কোন শটই পোস্টে যেতে দেয়নি। নিজেদের দুর্গ রক্ষার পর কাউন্টার অ্যাটাকে খেলার কৌশল ছিল ম্যানসিটির। তাছাড়া ম্যাচ জেতা দরকার বিধায় পিএসজি খেলেছে অল আউট ফুটবল। ফলে কাউন্টার অ্যাটাকে গোলের সুযোগ পেয়ে যায় স্বাগতিকরা এবং সেগুলোর মধ্য থেকে দুটি কাজে লাগিয়ে উঠে যায় ফাইনালে।
খেলার ছয় মিনিটেই পেনাল্টি পেয়েছিল পিএসজি। তবে ভিএআর দেখে রেফারি সেটি বাতিল করেন। ভিএআর এ দেখা যায় আলেকজান্ডার জেনচেঙ্কোর হাতে নয়, বল লেগেছে কাঁধে। এর ৫ মিনিট পরই কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল খেয়ে বসে পিএসজি। কেভিন ডি ব্রুইনের শট ডিফেন্ডার মার্কিনহোসের পায়ে লেগে চলে যায় রিয়াদ মাহরেজের কাছে। কোনাকুটি শটে তিনি গোল করতে কোন ভুল করেননি। গোল খেয়ে সেটি পরিশোধে মরিয়া হয়ে আক্রমণ করে পিএসজি। তারা প্রাধান্য বজায় রাখলেও ম্যানসিটির পেনাল্টি বক্সের ভেতরে গিয়ে আর সুবিধা করতে পারেনি। মার্কিনহোসের হেড ক্রসবারে লেগে বাইরে গেলে গোল বঞ্চিত হয় পিএসজি। এর পর ভুল পাসে বল পেয়ে দারুন একটি শট নিয়েছিলেন ডি মারিয়া। কিন্তু সেটি পোস্ট ঘেসে বাইরে চলে যায়। বিরতির পরও একই ধারায় খেলা চলতে থাকে। প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের ভেতরে সুবিধা করতে না পারে দূর পাল্লার শটে গোলের চেষ্টা চালায় নেইমাররা। কিন্তু তাতেও তেমন সুবিধা হয়নি। গোলরক্ষক এডারসনের কোন পরীক্ষাই নিতে পারেনি তারা। ৫৪ মিনিট ফিল ফোডেনের শট বাচিয়ে দেন পিএসজির গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। তবে ৬৪ মিনিটে তিনি আর মাহরেজের শট রক্ষা করতে পারেননি। ডি ব্রুইন-ফিল ফোডেনের সমন্বয়ে গড়া আক্রমণ থেকে বলতে গেলে একেবারে ফাকায় বল পেয়ে গোল করেন মাহরেজ। এ গোলেই নিশ্চিত হয়ে যায় ম্যানসিটির ফাইনাল। ৬৯ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন ডি মারিয়া। থ্রো ইনের জন্য বল আনতে গিয়ে তিনি অহেতুক ফার্নান্ডিনিয়োর পায়ে পা লাগান। দশ জনের দলে পরিনত হয় তারা। দশজনের দলে পরিনত হওয়ার আগ পর্যন্ত ম্যাচে অপেক্ষাকৃত দাপট ছিল পিএসজিরই। যদিও তারা কোন গোল করতে পারেনি। বাকি সময়ে অবশ্য ম্যানসিটিরই দাপট ছিল। একজন বেশী খেলোয়াড় নিয়ে খেলার সুবিধার পাশাপাশি পিএসজির খেলোয়াড়রা তখন মানসিকভাবে হার মেনে নিয়েছিল। সব মিলিয়ে হতাশার মধ্য দিয়েই শেষ হয় পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযান। ম্যানসিটি এখন অপেক্ষা করছে ফাইনালের প্রতিপক্ষের জন্য। চেলসি এবং রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যেকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জয়ী দলের সাথে ২৯ মে ইস্তাম্বুলে তারা খেলবে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার জন্য।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল
বুধবার, ০৫ মে ২০২১
প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে ২-০ গোলে পরাজিত করে ম্যানচেস্টার সিটি প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে। প্রথম লেগে ২-১ গোলে জয়ী হওয়া ম্যানসিটি দুই লেগ মিলিয়ে জিতেছে ৪-১ গোলে। গত আসরের রানার্স আপ পিএসজি এ ম্যাচে পায়নি তাদের তারকা খেলোয়াড় কাইলিয়ান এমবাপ্পেকে। ইনজুরির কারণে তিনি এ ম্যাচে খেলতে পারেননি। তাছাড়া দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময়ে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া লাল কার্ড দেখলে দশজনের দলে পরিনত হয় তারা। এর পর আর তাদের পক্ষে ম্যাচে ফেরা সম্ভব হয়নি। ম্যানসিটির হয়ে দুটি গোলই করেন রিয়াদ মাহরেজ। উভয় অর্ধে তিনি একটি করে গোল করেন। পেপ গার্দিওয়ালার দল এবারের মৌসুমে দুরন্ত পারফরমেন্স দেখিয়েই উঠেছে ফাইনালে। পিএসজির তারকা নেইমার মাঝে মাঝে চেষ্টা করেছিলেন জ¦লে উঠতে। কিন্তু দলের ব্যর্থতার দিন তিনি একা তেমন কিছু করতে পারেননি।
ম্যানসিটির ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ছিল প্রচন্ড ঠান্ডা। মাঠের বেশীরভাগ জায়গা ছিল তুষারে ঢাকা। এর ফলে স্বাভাবিক ফুটবল খেলতে উভয় দলেরই কিছুটা সমস্যা হয়। ম্যাচ শুরুর আগেই পিছিয়ে ছিল পিএসজি। কারণ ফাইনালে উঠতে হলে তাদেরকে জিততেই হতো। তারা খেলাটা শুরু করে ভালভাবেই। অপর দিকে ম্যানসিটি জানতো ম্যাচ ড্র করলেই তারা উঠে যাবে ফাইনালে। তাই কোচ পেপ গার্দিওয়ালা সেভাবেই দল গঠন করেছেন। পিএসজির বিপজ্জনক খেলোয়াড় নেইমারকে তিনি রাখেন কঠোর পাহারায়। নেইমার ব্যক্তিগত নৈপুন্য দেখানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ম্যনসিটির রক্ষণভাগ অসাধারণ খেলেছে। তারা পিএসজির কোন শটই পোস্টে যেতে দেয়নি। নিজেদের দুর্গ রক্ষার পর কাউন্টার অ্যাটাকে খেলার কৌশল ছিল ম্যানসিটির। তাছাড়া ম্যাচ জেতা দরকার বিধায় পিএসজি খেলেছে অল আউট ফুটবল। ফলে কাউন্টার অ্যাটাকে গোলের সুযোগ পেয়ে যায় স্বাগতিকরা এবং সেগুলোর মধ্য থেকে দুটি কাজে লাগিয়ে উঠে যায় ফাইনালে।
খেলার ছয় মিনিটেই পেনাল্টি পেয়েছিল পিএসজি। তবে ভিএআর দেখে রেফারি সেটি বাতিল করেন। ভিএআর এ দেখা যায় আলেকজান্ডার জেনচেঙ্কোর হাতে নয়, বল লেগেছে কাঁধে। এর ৫ মিনিট পরই কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল খেয়ে বসে পিএসজি। কেভিন ডি ব্রুইনের শট ডিফেন্ডার মার্কিনহোসের পায়ে লেগে চলে যায় রিয়াদ মাহরেজের কাছে। কোনাকুটি শটে তিনি গোল করতে কোন ভুল করেননি। গোল খেয়ে সেটি পরিশোধে মরিয়া হয়ে আক্রমণ করে পিএসজি। তারা প্রাধান্য বজায় রাখলেও ম্যানসিটির পেনাল্টি বক্সের ভেতরে গিয়ে আর সুবিধা করতে পারেনি। মার্কিনহোসের হেড ক্রসবারে লেগে বাইরে গেলে গোল বঞ্চিত হয় পিএসজি। এর পর ভুল পাসে বল পেয়ে দারুন একটি শট নিয়েছিলেন ডি মারিয়া। কিন্তু সেটি পোস্ট ঘেসে বাইরে চলে যায়। বিরতির পরও একই ধারায় খেলা চলতে থাকে। প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের ভেতরে সুবিধা করতে না পারে দূর পাল্লার শটে গোলের চেষ্টা চালায় নেইমাররা। কিন্তু তাতেও তেমন সুবিধা হয়নি। গোলরক্ষক এডারসনের কোন পরীক্ষাই নিতে পারেনি তারা। ৫৪ মিনিট ফিল ফোডেনের শট বাচিয়ে দেন পিএসজির গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। তবে ৬৪ মিনিটে তিনি আর মাহরেজের শট রক্ষা করতে পারেননি। ডি ব্রুইন-ফিল ফোডেনের সমন্বয়ে গড়া আক্রমণ থেকে বলতে গেলে একেবারে ফাকায় বল পেয়ে গোল করেন মাহরেজ। এ গোলেই নিশ্চিত হয়ে যায় ম্যানসিটির ফাইনাল। ৬৯ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন ডি মারিয়া। থ্রো ইনের জন্য বল আনতে গিয়ে তিনি অহেতুক ফার্নান্ডিনিয়োর পায়ে পা লাগান। দশ জনের দলে পরিনত হয় তারা। দশজনের দলে পরিনত হওয়ার আগ পর্যন্ত ম্যাচে অপেক্ষাকৃত দাপট ছিল পিএসজিরই। যদিও তারা কোন গোল করতে পারেনি। বাকি সময়ে অবশ্য ম্যানসিটিরই দাপট ছিল। একজন বেশী খেলোয়াড় নিয়ে খেলার সুবিধার পাশাপাশি পিএসজির খেলোয়াড়রা তখন মানসিকভাবে হার মেনে নিয়েছিল। সব মিলিয়ে হতাশার মধ্য দিয়েই শেষ হয় পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযান। ম্যানসিটি এখন অপেক্ষা করছে ফাইনালের প্রতিপক্ষের জন্য। চেলসি এবং রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যেকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জয়ী দলের সাথে ২৯ মে ইস্তাম্বুলে তারা খেলবে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার জন্য।