চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল
ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে শনিবার মুখোমুখি হচ্ছে রেকর্ড তের বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ এবং ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠেয় ম্যাচটি হতে যাচ্ছে ২০১৮ সালের ফাইনালের পুনরাবৃত্তি। সেবার ৩-১ গোলে লিভারপুলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ।
এবারের ফাইনালকে ঘিরে বরাবরের মতোই আগ্রহী ফুটবল বিশ^। ঘরোয়া ফুটবলে সাফল্য পেয়েছে উভয় দলই। রিয়াল মাদ্রিদ জিতেছে লা লিগা। অপর দিকে লিভারপুল জিতেছে লিগ কাপ এবং এফএ কাপ। মাত্র এক পয়েন্ট কম নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে হয়েছে রানার্স আপ। ফাইনালের উভয় দলেরই আছে স্মরনীয় ঐতিহ্য। বর্তমান ফর্মের বিচারে কোন দলকেই ফেবারিট বলা যাবে না। তবে অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের কার্যকারিতার কারণে লিভারপুল কিছুটা হলেও এগিয়ে আছে। তবে একই সাথে তারা এটাও স্বীকার করেছেন যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
রিয়াল মাদ্রিদ যে মোটেও সহজ দল নয় তার প্রমাণ তারা দিয়েছে নক আউট পর্বের ম্যাচগুলোতেই। প্রতিটি ম্যাচেই তারা খেলেছে হিসাবি ফুটবল। শেষ ষোলর প্রথম লেগে প্যারিস সেন্ট জার্মেইর কাছে ১-০ গোলে হারার পরও ফিরতি লেগে ৩-১ গোলে জিতে ওঠে কোয়ার্টার ফাইনালে। সেখানে প্রথম লেগে চেলসিকে ২-০ গোলে হারালেও ফিরতি লেগে এক পর্যায়ে ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাড়িয়ে ম্যাচ শেষ করে ৩-২ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে জিতে যায় ৪-৩ গোলে।
সেমি ফাইনালের প্রতিপক্ষ ছিল আরো কঠিন। ম্যানচেস্টার সিটি প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ৪-৩ গোলে জয়ী হয়ে বেশ খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে খেলতে নামে বার্নাব্যুতে ফিরতি লেগ। এক পর্যায়ে তারা গোল করে এগিয়েও যায়। কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার দুই মিনিট বাকি থাকতে গোল করেন রড্রিগো। পরের মিনিটেই করেন আরেকটি গোল। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে গিয়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে ফাইনালে তুলে দেন করিম বেনজেমা।
ফাইনাল ম্যাচটি হবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। রিয়াল আগে নিজেদের মাঠে খেলেই হারিয়েছে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে কতটা সুবিধা করতে পারবে তা বোঝা যাবে শনিবার রাতেই।
লিভারপুল ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলে চলেছে মৌসুম জুড়েই। যদিও নক আউট পর্বে তাদেরকে সেভাবে কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়নি। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ এবং সেভিয়াকে তারা হারিয়েছে কৌশলী ফুটবল খেলে। লিভারপুলের তারকা মোহামেদ সালাহ জানিয়েছেন ফাইনালে আগের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা প্রস্তুত। লিভারপুলের খেলোয়াড়দের কথাবার্তায় বোঝা যাচেছ তারা ফাইনাল জেতার জন্য নিজেদের উজাড় করে দিতে প্রস্তুত। একই কথা বলেছেন কোচ ইয়োর্গেন ক্লপও। তবে তার মুখে প্রতিশোধের কথা শোনা যায়নি। তিনি বলেছেন, ফাইনালে ওঠা বেশ কঠিন কাজ। তাই ফাইনালে খেলার সুযোগটি তারা শিরোপা জেতার কাজেই লাগাতে চান। ৫ বছরের মধ্যে লিভারপুল তৃতীয়বার ফাইনালে খেলছে। আগের দুইবারের মধ্যে একবার তারা হেরেছে এবং একবার জিতেছে।
খেলোয়াড়দের একজন একজন করে তুলনা করলে কোন দলকেই খুব বেশী এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখা যাবে না। লিভারপুলের গোলরক্ষক অ্যালিসন এবং রিয়ালের গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া বিশে^র সেরাদের মধ্যেই আছেন। রক্ষণভাগও প্রায় সমান অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। মাঝ মাঠে অভিজ্ঞতার দিক থেকে এগিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে তাদের গতি কিছুটা কম। আক্রমণভাগে উভয় দলই প্রায় সমান। মোহামেদ সালাহর যোগ্য জবাব দেয়ার ক্ষমতা আছে করিম বেনজেমার। সাদিও মানে অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র তার গতি ও ড্রিবলিং দিয়ে প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ত্রাস সৃষ্টি করতে সক্ষম। রড্রিগো কিংবা মার্কো অ্যাসেনসিও যিনিই সুযোগ পান না কেন প্রতিপক্ষের মাথা ব্যথার কারণ হতে পারেন তারা। মিডফিল্ডে বদলি হিসেবে ভালভার্দে কিংবা কামাভিঙ্গা খুবই কার্যকর। লিভারপুলকে খেলতে হতে পারে অ্যালকান্টারা এবং ফ্যাবিনিয়োকে ছাড়া। যা ফাইনালের মতো ম্যাচে বড় সমস্যায় ফেলতে পারে লিভারপুলকে। শেষ ম্যাচ খেলার পর উভয় দলই ফাইনালের প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় পেয়েছে। তাই শনিবার রাতে বিশ^ ফুটবল একটি আকর্ষণীয় ও উপভোগ্য ম্যাচ দেখতে পাবে বলেই সবার প্রত্যাশা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল
শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২
ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে শনিবার মুখোমুখি হচ্ছে রেকর্ড তের বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ এবং ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠেয় ম্যাচটি হতে যাচ্ছে ২০১৮ সালের ফাইনালের পুনরাবৃত্তি। সেবার ৩-১ গোলে লিভারপুলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ।
এবারের ফাইনালকে ঘিরে বরাবরের মতোই আগ্রহী ফুটবল বিশ^। ঘরোয়া ফুটবলে সাফল্য পেয়েছে উভয় দলই। রিয়াল মাদ্রিদ জিতেছে লা লিগা। অপর দিকে লিভারপুল জিতেছে লিগ কাপ এবং এফএ কাপ। মাত্র এক পয়েন্ট কম নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে হয়েছে রানার্স আপ। ফাইনালের উভয় দলেরই আছে স্মরনীয় ঐতিহ্য। বর্তমান ফর্মের বিচারে কোন দলকেই ফেবারিট বলা যাবে না। তবে অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের কার্যকারিতার কারণে লিভারপুল কিছুটা হলেও এগিয়ে আছে। তবে একই সাথে তারা এটাও স্বীকার করেছেন যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
রিয়াল মাদ্রিদ যে মোটেও সহজ দল নয় তার প্রমাণ তারা দিয়েছে নক আউট পর্বের ম্যাচগুলোতেই। প্রতিটি ম্যাচেই তারা খেলেছে হিসাবি ফুটবল। শেষ ষোলর প্রথম লেগে প্যারিস সেন্ট জার্মেইর কাছে ১-০ গোলে হারার পরও ফিরতি লেগে ৩-১ গোলে জিতে ওঠে কোয়ার্টার ফাইনালে। সেখানে প্রথম লেগে চেলসিকে ২-০ গোলে হারালেও ফিরতি লেগে এক পর্যায়ে ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাড়িয়ে ম্যাচ শেষ করে ৩-২ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে জিতে যায় ৪-৩ গোলে।
সেমি ফাইনালের প্রতিপক্ষ ছিল আরো কঠিন। ম্যানচেস্টার সিটি প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ৪-৩ গোলে জয়ী হয়ে বেশ খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে খেলতে নামে বার্নাব্যুতে ফিরতি লেগ। এক পর্যায়ে তারা গোল করে এগিয়েও যায়। কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার দুই মিনিট বাকি থাকতে গোল করেন রড্রিগো। পরের মিনিটেই করেন আরেকটি গোল। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে গিয়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে ফাইনালে তুলে দেন করিম বেনজেমা।
ফাইনাল ম্যাচটি হবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। রিয়াল আগে নিজেদের মাঠে খেলেই হারিয়েছে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে কতটা সুবিধা করতে পারবে তা বোঝা যাবে শনিবার রাতেই।
লিভারপুল ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলে চলেছে মৌসুম জুড়েই। যদিও নক আউট পর্বে তাদেরকে সেভাবে কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়নি। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ এবং সেভিয়াকে তারা হারিয়েছে কৌশলী ফুটবল খেলে। লিভারপুলের তারকা মোহামেদ সালাহ জানিয়েছেন ফাইনালে আগের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা প্রস্তুত। লিভারপুলের খেলোয়াড়দের কথাবার্তায় বোঝা যাচেছ তারা ফাইনাল জেতার জন্য নিজেদের উজাড় করে দিতে প্রস্তুত। একই কথা বলেছেন কোচ ইয়োর্গেন ক্লপও। তবে তার মুখে প্রতিশোধের কথা শোনা যায়নি। তিনি বলেছেন, ফাইনালে ওঠা বেশ কঠিন কাজ। তাই ফাইনালে খেলার সুযোগটি তারা শিরোপা জেতার কাজেই লাগাতে চান। ৫ বছরের মধ্যে লিভারপুল তৃতীয়বার ফাইনালে খেলছে। আগের দুইবারের মধ্যে একবার তারা হেরেছে এবং একবার জিতেছে।
খেলোয়াড়দের একজন একজন করে তুলনা করলে কোন দলকেই খুব বেশী এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখা যাবে না। লিভারপুলের গোলরক্ষক অ্যালিসন এবং রিয়ালের গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া বিশে^র সেরাদের মধ্যেই আছেন। রক্ষণভাগও প্রায় সমান অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। মাঝ মাঠে অভিজ্ঞতার দিক থেকে এগিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে তাদের গতি কিছুটা কম। আক্রমণভাগে উভয় দলই প্রায় সমান। মোহামেদ সালাহর যোগ্য জবাব দেয়ার ক্ষমতা আছে করিম বেনজেমার। সাদিও মানে অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র তার গতি ও ড্রিবলিং দিয়ে প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ত্রাস সৃষ্টি করতে সক্ষম। রড্রিগো কিংবা মার্কো অ্যাসেনসিও যিনিই সুযোগ পান না কেন প্রতিপক্ষের মাথা ব্যথার কারণ হতে পারেন তারা। মিডফিল্ডে বদলি হিসেবে ভালভার্দে কিংবা কামাভিঙ্গা খুবই কার্যকর। লিভারপুলকে খেলতে হতে পারে অ্যালকান্টারা এবং ফ্যাবিনিয়োকে ছাড়া। যা ফাইনালের মতো ম্যাচে বড় সমস্যায় ফেলতে পারে লিভারপুলকে। শেষ ম্যাচ খেলার পর উভয় দলই ফাইনালের প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় পেয়েছে। তাই শনিবার রাতে বিশ^ ফুটবল একটি আকর্ষণীয় ও উপভোগ্য ম্যাচ দেখতে পাবে বলেই সবার প্রত্যাশা।