জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পরাজয়ের মধ্যদিয়ে কাতার বিশ্বকাপে এশিয়ার অভিযান শেষ হয়েছে। এশিয়ার দেশ কাতারে বিশ্বকাপ হচ্ছে অথচ এ মহাদেশের কোন দেশ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। স্বাগতিক কাতার, ইরান এবং সৌদি আরব বিদায় নেয় গ্রুপ পর্ব থেকেই। স্বাগতিক কাতার বাদে বাকি দেশগুলো ভালোই করেছে গ্রুপ পর্বে। ইরান এবং সৌদি আরব শেষ ম্যাচ পর্যন্ত আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার।
জাপান গ্রুপ পর্বে স্পেন এবং জার্মানিকে পরাজিত করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল। সেই জাপান দ্বিতীয় রাউন্ডে গতবারের রানার্স-আপ ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে সমানতালে পাল্লা দিয়ে হেরেছে টাইব্রেকারে। এশিয়া অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে খেলা অস্ট্রেলিয়াও ভালো করেছে। দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনার সঙ্গে লড়াই করে হেরেছে ২-১ গোলে।
দ্বিতীয় রাউন্ডে সবচেয়ে খারাপ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। তারা প্রথমার্ধেই ব্রাজিলের কাছে খায় চার গোল। দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল অবশ্য পরিশোধ করে। ততক্ষণে অবশ্য ব্রাজিল প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলার মেজাজে চলে গিয়েছিল। ব্রাজিল টপ ফেবারিট হিসেবে মাঠে নেমে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে খেলেছে ছন্দময় ফুটবল। যার সঙ্গে কোরিয়া পেরে ওঠেনি। গ্রুপ পর্বে কোরিয়া বেশ ভালো খেলেছিল।
অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ পর্বে হারিয়েছিল তিউনিসিয়া এবং ডেনমার্ককে। ইরান প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৬-২ গোলে পরাজিত হলেও ওয়েলসকে পরাজিত করে চমক দেখায়। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে যাওয়ায় দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পারেনি।
সৌদি আরব দেখিয়েছে সবচেয়ে বড় চমক। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। সব মিলিয়ে এশিয়ান দেশগুলো এবারের বিশ্বকাপে আশাতীত ভালো করেছে। একটা সময় ছিল এশিয়ার দেশগুলো বিশ্বকাপে যেতে ‘অংশগ্রহণই বড় কথা’ স্লোগান নিয়ে। এখন আর সেদিন নেই। তাদের বিপক্ষে খেলতে হলে বিশেষ পরিকল্পনা করতে হয় ফুটবল পরাশক্তিগুলোকে। এ ধারা বজায় রাখতে পারলে ২০৩০ সালের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে এশিয়ার কোন দেশ। এশিয়ার একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জনগণও সেই আশা করছে।
এবারের বিস্ময়কর দল জাপান
কাতার বিশ্বকাপে ফুটবল বিশ্বকে বিস্মিত করেছে জাপান। জার্মানি, স্পেনের মতো দলকে হারিয়েছে তারা। দ্বিতীয় রাউন্ডেও ক্রোয়েশিয়াকে টাইব্রেকার পর্যন্ত পৌঁছায়। প্রতি ম্যাচের পর স্টেডিয়াম, সাজঘর পরিস্কার করেও সবাইকে বিস্মিত করেছে জাপানিরা।
এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম কম দামি দল হলো জাপান। জাপানের ফুটবলারদের সম্মিলিত দর জার্মানি দলের পাঁচ ভাগের একভাগ। জাপানের ২৬ জন ফুটবলারের অধিকাংশই সে দেশের ক্লাবে খেলেন। কয়েকজন বেলজিয়াম বা স্কটল্যান্ডের ক্লাবে খেলেন। জার্মানির ২৬ জন ফুটবলারের ১৯ জনই খেলেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ক্লাবে। গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়া বেলজিয়াম, উরুগুয়ের মতো দলের ফুটবলারদের সম্মিলিত দামও জাপানের থেকে অনেক বেশি।
জাপানের ফুটবলারদের গড় বাজার দর ৫০ লাখ পাউন্ডের কিছু বেশি। জার্মানির ফুটবলারদের গড় বাজার দর তিন কোটি পাউন্ড। বেলজিয়ামের ফুটবলারদের গড় বাজার দর ১ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ড। এ ক্ষেত্রে জাপানকে পিছনে ফেলেছে এশিয়ার আর এক দেশ দক্ষিণ কোরিয়াও। ব্রাজিলের কাছে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ডে ছিটকে যাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলারদের গড় বাজার দর ৫১ লাখ পাউন্ড।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা দলগুলির মধ্যে জাপানের থেকেও কম দামি দল অবশ্য রয়েছে। যেমন অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলারদের গড় বাজার দর ১০ লাখ পাউন্ড। জাপানের পরে রয়েছে সেনেগাল এবং মরক্কোও। তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলেও জাপানের মতো প্রথম সারির একাধিক দলকে হারাতে পারেনি।
এত কম দামের ফুটবলার নিয়ে গড়া দলকে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে তুলতে পারলেও, জার্মানি, বেলজিয়াম বা উরুগুয়ের দামি ফুটবলাররা ব্যর্থ। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে জার্মানি, বেলজিয়াম বা উরুগুয়ের ফুটবলাররা ব্যক্তিগত দক্ষতায় অনেক এগিয়ে। তাই তাদের বাজার দর বেশি। অন্যদিকে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মরক্কো, দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলাররা ব্যক্তিগত দক্ষতা পিছিয়ে তাই তাদের বাজার দরও কম। আবার দামি দলগুলো অনেকটাই তাদের তারকা ফুটবলারদের ওপর নির্ভরশীল। দলবদ্ধভাবে লড়াইয়ের প্রবণতা তুলনায় কম। কম দামি দলগুলো তারকা নির্ভর না হওয়ায় সবাই মিলে লড়াই করে।
মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২
জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পরাজয়ের মধ্যদিয়ে কাতার বিশ্বকাপে এশিয়ার অভিযান শেষ হয়েছে। এশিয়ার দেশ কাতারে বিশ্বকাপ হচ্ছে অথচ এ মহাদেশের কোন দেশ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। স্বাগতিক কাতার, ইরান এবং সৌদি আরব বিদায় নেয় গ্রুপ পর্ব থেকেই। স্বাগতিক কাতার বাদে বাকি দেশগুলো ভালোই করেছে গ্রুপ পর্বে। ইরান এবং সৌদি আরব শেষ ম্যাচ পর্যন্ত আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার।
জাপান গ্রুপ পর্বে স্পেন এবং জার্মানিকে পরাজিত করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল। সেই জাপান দ্বিতীয় রাউন্ডে গতবারের রানার্স-আপ ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে সমানতালে পাল্লা দিয়ে হেরেছে টাইব্রেকারে। এশিয়া অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে খেলা অস্ট্রেলিয়াও ভালো করেছে। দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনার সঙ্গে লড়াই করে হেরেছে ২-১ গোলে।
দ্বিতীয় রাউন্ডে সবচেয়ে খারাপ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। তারা প্রথমার্ধেই ব্রাজিলের কাছে খায় চার গোল। দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল অবশ্য পরিশোধ করে। ততক্ষণে অবশ্য ব্রাজিল প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলার মেজাজে চলে গিয়েছিল। ব্রাজিল টপ ফেবারিট হিসেবে মাঠে নেমে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে খেলেছে ছন্দময় ফুটবল। যার সঙ্গে কোরিয়া পেরে ওঠেনি। গ্রুপ পর্বে কোরিয়া বেশ ভালো খেলেছিল।
অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ পর্বে হারিয়েছিল তিউনিসিয়া এবং ডেনমার্ককে। ইরান প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৬-২ গোলে পরাজিত হলেও ওয়েলসকে পরাজিত করে চমক দেখায়। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে যাওয়ায় দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পারেনি।
সৌদি আরব দেখিয়েছে সবচেয়ে বড় চমক। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। সব মিলিয়ে এশিয়ান দেশগুলো এবারের বিশ্বকাপে আশাতীত ভালো করেছে। একটা সময় ছিল এশিয়ার দেশগুলো বিশ্বকাপে যেতে ‘অংশগ্রহণই বড় কথা’ স্লোগান নিয়ে। এখন আর সেদিন নেই। তাদের বিপক্ষে খেলতে হলে বিশেষ পরিকল্পনা করতে হয় ফুটবল পরাশক্তিগুলোকে। এ ধারা বজায় রাখতে পারলে ২০৩০ সালের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে এশিয়ার কোন দেশ। এশিয়ার একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জনগণও সেই আশা করছে।
এবারের বিস্ময়কর দল জাপান
কাতার বিশ্বকাপে ফুটবল বিশ্বকে বিস্মিত করেছে জাপান। জার্মানি, স্পেনের মতো দলকে হারিয়েছে তারা। দ্বিতীয় রাউন্ডেও ক্রোয়েশিয়াকে টাইব্রেকার পর্যন্ত পৌঁছায়। প্রতি ম্যাচের পর স্টেডিয়াম, সাজঘর পরিস্কার করেও সবাইকে বিস্মিত করেছে জাপানিরা।
এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম কম দামি দল হলো জাপান। জাপানের ফুটবলারদের সম্মিলিত দর জার্মানি দলের পাঁচ ভাগের একভাগ। জাপানের ২৬ জন ফুটবলারের অধিকাংশই সে দেশের ক্লাবে খেলেন। কয়েকজন বেলজিয়াম বা স্কটল্যান্ডের ক্লাবে খেলেন। জার্মানির ২৬ জন ফুটবলারের ১৯ জনই খেলেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ক্লাবে। গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়া বেলজিয়াম, উরুগুয়ের মতো দলের ফুটবলারদের সম্মিলিত দামও জাপানের থেকে অনেক বেশি।
জাপানের ফুটবলারদের গড় বাজার দর ৫০ লাখ পাউন্ডের কিছু বেশি। জার্মানির ফুটবলারদের গড় বাজার দর তিন কোটি পাউন্ড। বেলজিয়ামের ফুটবলারদের গড় বাজার দর ১ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ড। এ ক্ষেত্রে জাপানকে পিছনে ফেলেছে এশিয়ার আর এক দেশ দক্ষিণ কোরিয়াও। ব্রাজিলের কাছে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ডে ছিটকে যাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলারদের গড় বাজার দর ৫১ লাখ পাউন্ড।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা দলগুলির মধ্যে জাপানের থেকেও কম দামি দল অবশ্য রয়েছে। যেমন অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলারদের গড় বাজার দর ১০ লাখ পাউন্ড। জাপানের পরে রয়েছে সেনেগাল এবং মরক্কোও। তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলেও জাপানের মতো প্রথম সারির একাধিক দলকে হারাতে পারেনি।
এত কম দামের ফুটবলার নিয়ে গড়া দলকে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে তুলতে পারলেও, জার্মানি, বেলজিয়াম বা উরুগুয়ের দামি ফুটবলাররা ব্যর্থ। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে জার্মানি, বেলজিয়াম বা উরুগুয়ের ফুটবলাররা ব্যক্তিগত দক্ষতায় অনেক এগিয়ে। তাই তাদের বাজার দর বেশি। অন্যদিকে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মরক্কো, দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলাররা ব্যক্তিগত দক্ষতা পিছিয়ে তাই তাদের বাজার দরও কম। আবার দামি দলগুলো অনেকটাই তাদের তারকা ফুটবলারদের ওপর নির্ভরশীল। দলবদ্ধভাবে লড়াইয়ের প্রবণতা তুলনায় কম। কম দামি দলগুলো তারকা নির্ভর না হওয়ায় সবাই মিলে লড়াই করে।