alt

উপ-সম্পাদকীয়

অরিগ্যানোর উপকারিতা

রাইসা মেহজাবীন

: মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
image

অরিগ্যানো

অরিগ্যানো। নাম শুনে এটা আবার কী ভাবলেও পিৎজা খাওয়ার সময় এটা কিন্তু আমরা সবাই খাই! ‘পিৎজার প্রাণ’ নামেও এর পরিচিতি ব্যাপক। এটি মেক্সিকান মিন্ট, ওয়াইল্ড মারজোরাম নামেও পরিচিত। পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরেশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের এ গাছটি প্রায় ৩ ফুট পর্যন্ত বাড়ে।

অরিগ্যানো খুব সহজেই বাড়ের চিলেকোঠা বা ছাদে অথবা বাড়ির আঙিনায় চাষ করতে পারেন। অরিগ্যানো গাছের জন্য প্রয়োজন যথেষ্ট উষ্ণতা ও আলো। সবচেয়ে ভালো হয় যদি গাছটি সূর্যতাপের সান্নিধ্যে বাড়তে পারে। অরিগ্যানোতে কখনো বেশি পানি দেয়া যাবে না। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিলেই যথেষ্ট।

অরিগ্যানোতে মানব দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটি মূলত সালাদ আইটেমে ব্যবহার করা হয়। টমেটো, সস, রসুন, লেবু, পিৎজা, স্যান্ডউইচ এবং জলপাই তেলের সঙ্গেও এটি ব্যবহার করা হয়।

অরিগ্যানো এন্টি ইনফ্লামেটরি। ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন কে, ফাইবার এবং অন্যান্য জৈব যৌগগুলোর উচ্চ উপাদান সমৃদ্ধ। পুষ্টিসমৃদ্ধ অরিগ্যানো শরীরকে ডিটক্সিফাই জন্য একটি আদর্শ হার্ব। গবেষণায় দেখা গেছে যে, অরিগ্যানো পাতা হতে প্রস্তুতকৃত চা নিয়মিত পান করলে ফুসফুস ও পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে।

অরিগ্যানো ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। দেহ থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করে অরেগানো। ২০১৩ সালে চখড়ঝ এক জার্নাল গবেষণা প্রকাশিত স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ ও প্রতিরোধে অরিগ্যানো বেশ উপকারী। এ গাছের ফাইটোকেমিক্যাল বয়সের কারণে সংঘটিত দেহের ক্ষয় নিরাময় করে। এমনকি দেহে ইনসুলিন উৎপাদনের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। আর সেই জন্য নিয়মিত পান করতে হবে অরিগ্যানো চা।

লিভার ও কিডনির ক্ষতি রোধ করে অরিগ্যানো। এর পাতায় তৈরি চা পাকস্থলীর প্রদাহ নিরাময় করে। যদি কিডনিতে পাথর হয় তবে অরিগ্যানো চা টানা ৬ মাস পান করলে পাথর মূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যায় বলে জানা যায়।

মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। অরিগ্যানো ভিটামিন সি ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এই উপাদানগুলো নার্ভকে শান্ত করে। বমি কিংবা মাথা ঘুরলে অরিগ্যানো চা পান করলে বিশেষ উপকার পাওয়া যাবে।

কাশি, ঠান্ডা, ম্যালেরিয়া জ্বর, হাঁপানি, অরিগ্যানো পাতা দারুণ কাজ করে। প্রতিদিন এক গ্লাসে যে কোন ফলের রসের মধ্যে তিনটি ড্রপস অরিগ্যানো তেল মিশিয়ে পান করুন, বিশেষ করে শীতকালে একবার করে প্রতিদিন। আপনি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল অনুভব করতে পারেন। এছাড়া হালকা গরম পানিতে ২-৩ ফোটা অরিগ্যানো তেল ঢেলে গরম পানির বাষ্প শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে সর্দি-কাশি হতে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়।

অরিগ্যানো পাতার অ্যালকোহলিক নির্যাস মানবদেহের যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে অনন্য। অরিগ্যানো এন্টিসেপটিক, এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে অরিগ্যানো তেল এক ফোটা এবং ১ চা চামচ জলপাই তেল একত্রে মিশিয়ে লাগিয়ে রাখলে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগ উঠে যাবে।

অরিগ্যানো পাতা হলো প্রোফাইল্যাক্টিভ যা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ/পোকামাকড় কামড় দিলে উপশম করতে সক্ষম। পোকার কামড়ে আক্রান্ত স্থানে অরিগ্যানো তেল এক ফোটা এবং ১ চা চামচ জলপাই তেল একত্রে মিশিয়ে লাগিয়ে রাখলে কামড়ের ব্যথা ও জ্বালা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়।

অরিগ্যানো পাতাগুলো ডায়রিয়া, রিউম্যাটিজম এবং হেলিমথিয়াসিসের জন্য তাজা খাওয়ানো হয়। খুব সহজেই ঘরে বা দোকান থেকে অরিগ্যানোর পাউডার কিনে এনে তা থেকে অরিগ্যানো চা তৈরি করতে পারেন। পানি ১০ মিনিট ধরে ফুটিয়ে উষ্ণ পানির ১ কাপের মধ্যে ১ চা চামচ অরিগ্যানোর শুকনো গুঁড়ো ঢেলে তৈরি করে ফেলুন অরিগ্যানো চা। প্রস্তুতকৃত চা কিছুটা তিক্ত হতে পারে, সঙ্গে সামান্য পরিমাণ চিনি বা সুগার ফ্রি ট্যাবলেট যোগ করে তিক্ততা প্রতিহত করতে পারেন। সাধারণভাবে ওষুধটি নিরাপদ এবং কোন নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

[লেখক : শিক্ষার্থী, খাদ্য ও পুষ্টি]

সম্ভাবনাময় ইকোট্যুরিজম

পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সমন্বিত পরিকল্পনা

হিন্দু কন্যা সন্তানদের সমানাধিকার প্রসঙ্গে

ছবি

রাজনীতির দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য প্রক্রিয়া

নারী শিক্ষার গুরুত্ব

জমি জটিলতা ও ভূমি বিভাগ

ভরত থেকে ভারতবর্ষ অতঃপর হিন্দুস্তান ইন্ডিয়া হয়ে ভারত

নিরাপদ অভিবাসন ও রেমিট্যান্স

রপ্তানি বহুমুখীকরণে তথ্যপ্রযুক্তি খাত

আদিবাসীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা ও পুলিশের ভূমিকা

ছবি

ডেঙ্গু রোধে মানসিকতার পরিবর্তন দরকার

ছবি

পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যটনের সম্ভাবনা

ছবি

নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না কেন

ছবি

বায়ুদূষণের ক্ষতি

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আর প্রয়োজন আছে কি

জীবন পাতার অনেক খবর রয়ে যাবে অগোচরে

বিশ্ব আলঝেইমার্স দিবস

ছবি

দ্রব্যমূল্যের চাপে পিষ্ট জনজীবন

বৈষম্যমুক্ত নিরাপদ সমাজ গঠন কেন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি

কষ্টে আছে নিম্নবিত্ত মানুষ

কোর্ট ম্যারেজ সম্পর্কে ভুল ধারণা

ছবি

কৃষির রূপান্তর : প্রাপ্তির মধ্যে অপ্রাপ্তিও আছে

শিক্ষা, মূল্যবোধ ও নৈতিক অবক্ষয়

হরিনামের মায়াময় আবেদন

ছবি

হাওর অর্থনীতি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা

ছবি

ড. ইউনূসকে নিয়ে এত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কেন

শিক্ষার কোনো গন্ডি নেই

দেশীয় গাছ কি গুরুত্ব হারাচ্ছে

বলা, শোনা এবং লেখার অধিকার

ছবি

আলুর দাম ও ভোক্তার ভোগান্তি

ছবি

ঘুরে দাঁড়ানো শ্রীলঙ্কার কাছে শেখার কি কিছু আছে

ছবি

প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী হেমনগর জমিদার বাড়ি

আদিবাসীদের অর্জন

ছবি

ভাষা প্রশ্নে আমাদের আবেগ এবং কর্মপ্রয়াস

একাত্তরের গণহত্যার খণ্ডচিত্র

tab

উপ-সম্পাদকীয়

অরিগ্যানোর উপকারিতা

রাইসা মেহজাবীন

image

অরিগ্যানো

মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

অরিগ্যানো। নাম শুনে এটা আবার কী ভাবলেও পিৎজা খাওয়ার সময় এটা কিন্তু আমরা সবাই খাই! ‘পিৎজার প্রাণ’ নামেও এর পরিচিতি ব্যাপক। এটি মেক্সিকান মিন্ট, ওয়াইল্ড মারজোরাম নামেও পরিচিত। পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরেশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের এ গাছটি প্রায় ৩ ফুট পর্যন্ত বাড়ে।

অরিগ্যানো খুব সহজেই বাড়ের চিলেকোঠা বা ছাদে অথবা বাড়ির আঙিনায় চাষ করতে পারেন। অরিগ্যানো গাছের জন্য প্রয়োজন যথেষ্ট উষ্ণতা ও আলো। সবচেয়ে ভালো হয় যদি গাছটি সূর্যতাপের সান্নিধ্যে বাড়তে পারে। অরিগ্যানোতে কখনো বেশি পানি দেয়া যাবে না। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিলেই যথেষ্ট।

অরিগ্যানোতে মানব দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটি মূলত সালাদ আইটেমে ব্যবহার করা হয়। টমেটো, সস, রসুন, লেবু, পিৎজা, স্যান্ডউইচ এবং জলপাই তেলের সঙ্গেও এটি ব্যবহার করা হয়।

অরিগ্যানো এন্টি ইনফ্লামেটরি। ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন কে, ফাইবার এবং অন্যান্য জৈব যৌগগুলোর উচ্চ উপাদান সমৃদ্ধ। পুষ্টিসমৃদ্ধ অরিগ্যানো শরীরকে ডিটক্সিফাই জন্য একটি আদর্শ হার্ব। গবেষণায় দেখা গেছে যে, অরিগ্যানো পাতা হতে প্রস্তুতকৃত চা নিয়মিত পান করলে ফুসফুস ও পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে।

অরিগ্যানো ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। দেহ থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করে অরেগানো। ২০১৩ সালে চখড়ঝ এক জার্নাল গবেষণা প্রকাশিত স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ ও প্রতিরোধে অরিগ্যানো বেশ উপকারী। এ গাছের ফাইটোকেমিক্যাল বয়সের কারণে সংঘটিত দেহের ক্ষয় নিরাময় করে। এমনকি দেহে ইনসুলিন উৎপাদনের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। আর সেই জন্য নিয়মিত পান করতে হবে অরিগ্যানো চা।

লিভার ও কিডনির ক্ষতি রোধ করে অরিগ্যানো। এর পাতায় তৈরি চা পাকস্থলীর প্রদাহ নিরাময় করে। যদি কিডনিতে পাথর হয় তবে অরিগ্যানো চা টানা ৬ মাস পান করলে পাথর মূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যায় বলে জানা যায়।

মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। অরিগ্যানো ভিটামিন সি ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এই উপাদানগুলো নার্ভকে শান্ত করে। বমি কিংবা মাথা ঘুরলে অরিগ্যানো চা পান করলে বিশেষ উপকার পাওয়া যাবে।

কাশি, ঠান্ডা, ম্যালেরিয়া জ্বর, হাঁপানি, অরিগ্যানো পাতা দারুণ কাজ করে। প্রতিদিন এক গ্লাসে যে কোন ফলের রসের মধ্যে তিনটি ড্রপস অরিগ্যানো তেল মিশিয়ে পান করুন, বিশেষ করে শীতকালে একবার করে প্রতিদিন। আপনি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল অনুভব করতে পারেন। এছাড়া হালকা গরম পানিতে ২-৩ ফোটা অরিগ্যানো তেল ঢেলে গরম পানির বাষ্প শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে সর্দি-কাশি হতে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়।

অরিগ্যানো পাতার অ্যালকোহলিক নির্যাস মানবদেহের যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে অনন্য। অরিগ্যানো এন্টিসেপটিক, এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে অরিগ্যানো তেল এক ফোটা এবং ১ চা চামচ জলপাই তেল একত্রে মিশিয়ে লাগিয়ে রাখলে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগ উঠে যাবে।

অরিগ্যানো পাতা হলো প্রোফাইল্যাক্টিভ যা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ/পোকামাকড় কামড় দিলে উপশম করতে সক্ষম। পোকার কামড়ে আক্রান্ত স্থানে অরিগ্যানো তেল এক ফোটা এবং ১ চা চামচ জলপাই তেল একত্রে মিশিয়ে লাগিয়ে রাখলে কামড়ের ব্যথা ও জ্বালা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়।

অরিগ্যানো পাতাগুলো ডায়রিয়া, রিউম্যাটিজম এবং হেলিমথিয়াসিসের জন্য তাজা খাওয়ানো হয়। খুব সহজেই ঘরে বা দোকান থেকে অরিগ্যানোর পাউডার কিনে এনে তা থেকে অরিগ্যানো চা তৈরি করতে পারেন। পানি ১০ মিনিট ধরে ফুটিয়ে উষ্ণ পানির ১ কাপের মধ্যে ১ চা চামচ অরিগ্যানোর শুকনো গুঁড়ো ঢেলে তৈরি করে ফেলুন অরিগ্যানো চা। প্রস্তুতকৃত চা কিছুটা তিক্ত হতে পারে, সঙ্গে সামান্য পরিমাণ চিনি বা সুগার ফ্রি ট্যাবলেট যোগ করে তিক্ততা প্রতিহত করতে পারেন। সাধারণভাবে ওষুধটি নিরাপদ এবং কোন নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

[লেখক : শিক্ষার্থী, খাদ্য ও পুষ্টি]

back to top