রহমান মৃধা
সুইডিশ ভাষায় ‘ডাগেন্স নিহেতার’-এর বাংলা মানে আজকের সংবাদ। আমরা সুইডেনে সংক্ষেপে বলি ’ডিএন’, এটা সুইডেনের সবচেয়ে বড় পত্রিকা, দাম ১-১০ ক্রোনার (১ ক্রোনা=১০ টাকা)। দাম ভ্যারি করার কারণ; মাসে এক দাম, তিন মাসে এক দাম, বছরে একদাম। তারপর তরুণদের জন্য অন্য দাম। এখন প্রযুক্তির যুগ, খবর দেখা বা পড়ার মাধ্যমের অভাব নেই। তারপরও বিশ্বের পত্রিকাগুলো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে।
সাংবাদিকদের পাশাপাশি আমরা যারা লিখি, চেষ্টা করি পত্রিকার মাধ্যমে আমাদের লেখাগুলো প্রকাশ করতে। অনেকে সরাসরি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। একটি তথ্য জোগাড় করা বা নতুন কোন চিন্তাকে সুন্দর করে তুলে ধরা অবসর সময়ে বা পেশা হিসেবে অথবা নেশা হিসেবে- যাই বলি না কেন এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হৃদ্যতা, সময়, অর্থ এবং কষ্ট। এতকিছুর পর প্রতিদিন একটি খবরের কাগজ বা পত্রিকা বের হয় যার সেলফ লাইফ বড়জোর একদিন।
নিউজের মতো শর্ট টাইম বা স্বল্প সময় খুব কম পণ্য রয়েছে বাজারে, তারপর যদি সে নিউজ মনঃপূত না হয় তাহলে কেউ সেটা পড়েও দেখবে না। যদি দেখা যায় লিখা ক্লিক করলেই নানা ধরনের অ্যাড এসে হাজির হয় তখন তো সে খবর বা লিখা সম্পর্কে কেউ আগ্রহই দেখাবে না। অনেক সময় দেখা গেল শুধু হেডিংয়ের ওপর চোখ বুলিয়ে পড়া থেকে সরে গেল, ভেতরে কি আছে সেটাও জানার ইচ্ছে বা সময় হলো না। আজকের নিউজ পরের দিন সেটা চলে যায় গার্বেজে, তবে গুগলের যুগে অনলাইনে নিউজগুলো আর্কাইভ হয়ে জমা থাকছে, যার ফলে নিউজের অতীত ইচ্ছে করলে জানা সম্ভব।
বাংলাদেশে এখনও ১০ টাকায় নিউজ পেপার কিনে পড়ার শেষে পরের দিন কেজি হিসেবে বাজারে বিক্রি করে কিছু টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভব; যা আমাদের সুইডেনে সম্ভব না, যার জন্য সেটা গার্বেজে ফেলা হয় এবং পরে সেগুলো সরাতে অতিরিক্ত অর্থ অপচয় করতে হয়। এভাবে হাজার টাকা খরচ করে লেখাপড়ার জন্য বছরের শুরুতে যে বইগুলো কেনা হয়, বছর শেষে সেই বইগুলোই কেজি হিসেবে বিক্রি করা হয় বাংলাদেশে; কিন্তু আমাদের এখানে সরাসরি সেগুলো গার্বেজে চলে যায়।
দরকার ফুরিয়ে গেলে কদর কমে থাকে সবকিছুরই। আমরা স্বার্থপর প্রাণী, ভিখারিকে ৫ টাকা দেয়ার আগে চিন্তা করি কতটুকু পুণ্য অর্জন হবে। বিনা স্বার্থে কেউ ভিক্ষুককেও ভিক্ষা দেই না। শুধু কি তাই? শিশু না কাঁদলে মাকি তাকে জোর করে বুকের দুধ খেতে দেয়?
আবার দেখেন শুধু ধর্মের কারণে মানুষ হয়ে অন্য মানুষকে ঘৃণা করছি, খুন করছি। অথচ মানুষের মঙ্গলের জন্যই কিন্তু ধর্মের আবির্ভাব হয়েছিল? কি আশ্চার্য, ভাবতেই গা শিউরে উঠে!
এতকিছুর পরও পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যারা অন্যের বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। অন্যের দুঃখে দুঃখিত হয়। এখন যদি বলি আসুন সবাই মিলে একটু হেসে কথা বলি। রাগটাকে কমাই। অহংকারকে দূর করি। যদি সুখী হতে চান তবে প্রত্যাশা কমান ইত্যাদি। প্রথমেই মন্তব্য হবে উপদেশ দেওয়া লাগবে না নিজের চরকায় তেল দিন। যদি বলি আপনি কারো জন্য কিছু করে থাকলে সেটা চিরতরে ভুলে যান। কারণ সেটা যতদিন আপনি মনে রাখবেন ততদিন সেটা আপনাকে অহংকারী করে তুলবে। আবার কেউ যদি আপনার জন্য খুব সামান্য কিছুও করে থাকে, তবে সেটা আজীবন মনে রাখবেন। কারণ এটা আপনাকে বিনয়ী ও কৃতজ্ঞতাসম্পন্ন একজন ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।
এগুলো শোনার পরে বলবে উনার খেয়ে কোন কাজ নেই, তাই ফালতু কাজে ব্যস্ত ইত্যাদি।
আমরা মানুষ জাতি বেশ মজার জীব। ঝড়-বৃষ্টি বা রোদে যে ছাতা ব্যবহার করি হঠাৎ সব থেমে গেলে ছাতাও বোঝা মনে হয়। কালি ছাড়া যেমন কলমের মূল্য ফুরিয়ে যায় তখন সেটা হয় আবর্জনা; যা পরে গার্বেজে জমা হয়। প্রিয়জনের থেকে পাওয়া চমৎকার একগুচ্ছ ফুলের তোড়া যখন বাসি হয়ে যায় সেটাও পরে ডাস্টবিনে পাওয়া যায়।
অপ্রিয় এবং নিষ্ঠুরতম সত্য হলো, কারও উপকারের কথা আমরা বেশিদিন মনে রাখতে পছন্দ করি না। কারণ কি জানেন? কারণ হচ্ছে কারও কাছে আপনি ততদিন গুরুত্ব পাবেন, সেটা নির্ভর করে তার জন্য যতদিন কিছু একটা করার সামর্থ্য আছে আপনার, তার ওপর।
এই যে এতক্ষণ বেশ সময় দিয়ে কিছু কথা লিখলাম, কাল হয়ত কোন এক সংবাদপত্রে প্রকাশ হবে, পরের দিন সরাসরি চলে যাবে গার্বেজে, এটাই প্রথমে বলেছি।
এখন বলব কিছুটা ভিন্নভাবে। মানুষ জাতিকে সৃষ্ট জীব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের দেহের উপরে বসানো হয়েছে বিশাল এক মেমোরি সিস্টেম; যা শেষ হবার আগেই আমাদের জীবনের সমাপ্তি ঘটে যাবে-যাচ্ছে। শুনেছি মৃত্যুকালে বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক আইনস্টাইনের ব্রেন চেক করে দেখা গেছে মাত্র ১০% ব্যবহৃত হয়েছিল। এতে এতটুকু বলা যেতে পারে আমাদের ব্রেন আসলেই বিশাল একটি গার্বেজ, বায়োলোজিক্যাল গার্বেজ। এর ধারণক্ষমতা এত বেশি যে আমরা মরে গেলেও ১০%-এর বেশি খরচ করতে পারব না। অতএব, বলতে চাই- ‘যেখানে যা পড়ে দেখিবে তা জানলেও জানতে পারো কিছু অমূল্য তথ্য।’
হ্যাঁ বাংলাদেশে নিউজ পেপার পরের দিন গার্বেজে বা কেজি হিসেবে বাজারে বিক্রি হয় ঠিকই তবে হৃদয়ের গার্বেজেও সেটা আর্কাইভ হয়ে বয়ে চলেছে (নদীর মতো সাগর থেকে মহাসাগরে) অতীতের প্রজন্ম থেকে শুরু করে বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মে। যেমন আমাদের ছোট ভাইয়ের বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অকাল মৃত্যুর ঘটনাটি যা ঘটেছিল ১৯৮৪ সালে? ১৯৮৪ সাল পার হয়ে আজ ২০২৩ সাল অথচ এত বছর পরেও ডিজিটালের যুগে এখনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বসানো বা সংযোগের অসুবিধার কারণে মৃত্যু ঘটতে পারে তাও বাংলাদেশে? যেখানে বিরাট আকারে জোর দেওয়া হয়েছে ডিজিটালাইজেশনের ওপর, এমনকি স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে মহাশূন্যে!
অথচ জাতির মৌলিক নিরাপত্তা ইস্যু অর্থাৎ সেফটি কনসেপ্টের ওপর প্রশিক্ষণটি আজও পৌঁছেনি সে দেশের সাধারণ জনগণের মাঝে! ইনফরমেশন টেকনোলজি শুধু কাগজে কলমে হলে হবে কি, যদি তাকে সুশিক্ষার আলোর নিয়ন্ত্রণে এনে ভালো প্রশিক্ষণ না দেওয়া হয়? সুশিক্ষার মধ্য দিয়ে ডিজিটালের ব্যবহার পদ্ধতিকে ইমপ্লিমেনটেশন করা এবং জাতির জন্য সেফটি রিজন ইন প্লেস হোক ডিজিটালাইজেশনের মূল লক্ষ্য, সেই সঙ্গে এলিমিনেশন করা হোক হাজারও অকাল মৃত্যু বাংলাদেশে। যাই হোক আমাদের শেষ হবে, শেষ হবে না খবরের। প্রতিদিনই নতুন খবর আসবে কাগজের পাতা ভরে। কারণ খবরের আরেক নাম গতি, যা চলছে চলবে। তবুও জীবন পাতার অনেক খবর রয়ে যাবে অগোচরে।
[লেখক : সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন]
রহমান মৃধা
বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সুইডিশ ভাষায় ‘ডাগেন্স নিহেতার’-এর বাংলা মানে আজকের সংবাদ। আমরা সুইডেনে সংক্ষেপে বলি ’ডিএন’, এটা সুইডেনের সবচেয়ে বড় পত্রিকা, দাম ১-১০ ক্রোনার (১ ক্রোনা=১০ টাকা)। দাম ভ্যারি করার কারণ; মাসে এক দাম, তিন মাসে এক দাম, বছরে একদাম। তারপর তরুণদের জন্য অন্য দাম। এখন প্রযুক্তির যুগ, খবর দেখা বা পড়ার মাধ্যমের অভাব নেই। তারপরও বিশ্বের পত্রিকাগুলো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে।
সাংবাদিকদের পাশাপাশি আমরা যারা লিখি, চেষ্টা করি পত্রিকার মাধ্যমে আমাদের লেখাগুলো প্রকাশ করতে। অনেকে সরাসরি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। একটি তথ্য জোগাড় করা বা নতুন কোন চিন্তাকে সুন্দর করে তুলে ধরা অবসর সময়ে বা পেশা হিসেবে অথবা নেশা হিসেবে- যাই বলি না কেন এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হৃদ্যতা, সময়, অর্থ এবং কষ্ট। এতকিছুর পর প্রতিদিন একটি খবরের কাগজ বা পত্রিকা বের হয় যার সেলফ লাইফ বড়জোর একদিন।
নিউজের মতো শর্ট টাইম বা স্বল্প সময় খুব কম পণ্য রয়েছে বাজারে, তারপর যদি সে নিউজ মনঃপূত না হয় তাহলে কেউ সেটা পড়েও দেখবে না। যদি দেখা যায় লিখা ক্লিক করলেই নানা ধরনের অ্যাড এসে হাজির হয় তখন তো সে খবর বা লিখা সম্পর্কে কেউ আগ্রহই দেখাবে না। অনেক সময় দেখা গেল শুধু হেডিংয়ের ওপর চোখ বুলিয়ে পড়া থেকে সরে গেল, ভেতরে কি আছে সেটাও জানার ইচ্ছে বা সময় হলো না। আজকের নিউজ পরের দিন সেটা চলে যায় গার্বেজে, তবে গুগলের যুগে অনলাইনে নিউজগুলো আর্কাইভ হয়ে জমা থাকছে, যার ফলে নিউজের অতীত ইচ্ছে করলে জানা সম্ভব।
বাংলাদেশে এখনও ১০ টাকায় নিউজ পেপার কিনে পড়ার শেষে পরের দিন কেজি হিসেবে বাজারে বিক্রি করে কিছু টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভব; যা আমাদের সুইডেনে সম্ভব না, যার জন্য সেটা গার্বেজে ফেলা হয় এবং পরে সেগুলো সরাতে অতিরিক্ত অর্থ অপচয় করতে হয়। এভাবে হাজার টাকা খরচ করে লেখাপড়ার জন্য বছরের শুরুতে যে বইগুলো কেনা হয়, বছর শেষে সেই বইগুলোই কেজি হিসেবে বিক্রি করা হয় বাংলাদেশে; কিন্তু আমাদের এখানে সরাসরি সেগুলো গার্বেজে চলে যায়।
দরকার ফুরিয়ে গেলে কদর কমে থাকে সবকিছুরই। আমরা স্বার্থপর প্রাণী, ভিখারিকে ৫ টাকা দেয়ার আগে চিন্তা করি কতটুকু পুণ্য অর্জন হবে। বিনা স্বার্থে কেউ ভিক্ষুককেও ভিক্ষা দেই না। শুধু কি তাই? শিশু না কাঁদলে মাকি তাকে জোর করে বুকের দুধ খেতে দেয়?
আবার দেখেন শুধু ধর্মের কারণে মানুষ হয়ে অন্য মানুষকে ঘৃণা করছি, খুন করছি। অথচ মানুষের মঙ্গলের জন্যই কিন্তু ধর্মের আবির্ভাব হয়েছিল? কি আশ্চার্য, ভাবতেই গা শিউরে উঠে!
এতকিছুর পরও পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যারা অন্যের বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। অন্যের দুঃখে দুঃখিত হয়। এখন যদি বলি আসুন সবাই মিলে একটু হেসে কথা বলি। রাগটাকে কমাই। অহংকারকে দূর করি। যদি সুখী হতে চান তবে প্রত্যাশা কমান ইত্যাদি। প্রথমেই মন্তব্য হবে উপদেশ দেওয়া লাগবে না নিজের চরকায় তেল দিন। যদি বলি আপনি কারো জন্য কিছু করে থাকলে সেটা চিরতরে ভুলে যান। কারণ সেটা যতদিন আপনি মনে রাখবেন ততদিন সেটা আপনাকে অহংকারী করে তুলবে। আবার কেউ যদি আপনার জন্য খুব সামান্য কিছুও করে থাকে, তবে সেটা আজীবন মনে রাখবেন। কারণ এটা আপনাকে বিনয়ী ও কৃতজ্ঞতাসম্পন্ন একজন ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।
এগুলো শোনার পরে বলবে উনার খেয়ে কোন কাজ নেই, তাই ফালতু কাজে ব্যস্ত ইত্যাদি।
আমরা মানুষ জাতি বেশ মজার জীব। ঝড়-বৃষ্টি বা রোদে যে ছাতা ব্যবহার করি হঠাৎ সব থেমে গেলে ছাতাও বোঝা মনে হয়। কালি ছাড়া যেমন কলমের মূল্য ফুরিয়ে যায় তখন সেটা হয় আবর্জনা; যা পরে গার্বেজে জমা হয়। প্রিয়জনের থেকে পাওয়া চমৎকার একগুচ্ছ ফুলের তোড়া যখন বাসি হয়ে যায় সেটাও পরে ডাস্টবিনে পাওয়া যায়।
অপ্রিয় এবং নিষ্ঠুরতম সত্য হলো, কারও উপকারের কথা আমরা বেশিদিন মনে রাখতে পছন্দ করি না। কারণ কি জানেন? কারণ হচ্ছে কারও কাছে আপনি ততদিন গুরুত্ব পাবেন, সেটা নির্ভর করে তার জন্য যতদিন কিছু একটা করার সামর্থ্য আছে আপনার, তার ওপর।
এই যে এতক্ষণ বেশ সময় দিয়ে কিছু কথা লিখলাম, কাল হয়ত কোন এক সংবাদপত্রে প্রকাশ হবে, পরের দিন সরাসরি চলে যাবে গার্বেজে, এটাই প্রথমে বলেছি।
এখন বলব কিছুটা ভিন্নভাবে। মানুষ জাতিকে সৃষ্ট জীব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের দেহের উপরে বসানো হয়েছে বিশাল এক মেমোরি সিস্টেম; যা শেষ হবার আগেই আমাদের জীবনের সমাপ্তি ঘটে যাবে-যাচ্ছে। শুনেছি মৃত্যুকালে বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক আইনস্টাইনের ব্রেন চেক করে দেখা গেছে মাত্র ১০% ব্যবহৃত হয়েছিল। এতে এতটুকু বলা যেতে পারে আমাদের ব্রেন আসলেই বিশাল একটি গার্বেজ, বায়োলোজিক্যাল গার্বেজ। এর ধারণক্ষমতা এত বেশি যে আমরা মরে গেলেও ১০%-এর বেশি খরচ করতে পারব না। অতএব, বলতে চাই- ‘যেখানে যা পড়ে দেখিবে তা জানলেও জানতে পারো কিছু অমূল্য তথ্য।’
হ্যাঁ বাংলাদেশে নিউজ পেপার পরের দিন গার্বেজে বা কেজি হিসেবে বাজারে বিক্রি হয় ঠিকই তবে হৃদয়ের গার্বেজেও সেটা আর্কাইভ হয়ে বয়ে চলেছে (নদীর মতো সাগর থেকে মহাসাগরে) অতীতের প্রজন্ম থেকে শুরু করে বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মে। যেমন আমাদের ছোট ভাইয়ের বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অকাল মৃত্যুর ঘটনাটি যা ঘটেছিল ১৯৮৪ সালে? ১৯৮৪ সাল পার হয়ে আজ ২০২৩ সাল অথচ এত বছর পরেও ডিজিটালের যুগে এখনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বসানো বা সংযোগের অসুবিধার কারণে মৃত্যু ঘটতে পারে তাও বাংলাদেশে? যেখানে বিরাট আকারে জোর দেওয়া হয়েছে ডিজিটালাইজেশনের ওপর, এমনকি স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে মহাশূন্যে!
অথচ জাতির মৌলিক নিরাপত্তা ইস্যু অর্থাৎ সেফটি কনসেপ্টের ওপর প্রশিক্ষণটি আজও পৌঁছেনি সে দেশের সাধারণ জনগণের মাঝে! ইনফরমেশন টেকনোলজি শুধু কাগজে কলমে হলে হবে কি, যদি তাকে সুশিক্ষার আলোর নিয়ন্ত্রণে এনে ভালো প্রশিক্ষণ না দেওয়া হয়? সুশিক্ষার মধ্য দিয়ে ডিজিটালের ব্যবহার পদ্ধতিকে ইমপ্লিমেনটেশন করা এবং জাতির জন্য সেফটি রিজন ইন প্লেস হোক ডিজিটালাইজেশনের মূল লক্ষ্য, সেই সঙ্গে এলিমিনেশন করা হোক হাজারও অকাল মৃত্যু বাংলাদেশে। যাই হোক আমাদের শেষ হবে, শেষ হবে না খবরের। প্রতিদিনই নতুন খবর আসবে কাগজের পাতা ভরে। কারণ খবরের আরেক নাম গতি, যা চলছে চলবে। তবুও জীবন পাতার অনেক খবর রয়ে যাবে অগোচরে।
[লেখক : সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন]