alt

উপ-সম্পাদকীয়

শিক্ষা হচ্ছে জগতের আলো

বাবুল রবিদাস

: শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

যে কোন বিষয়ের ওপর ঠিকঠাক বা সঠিক জ্ঞান দিতে পারে একমাত্র শিক্ষা। শিক্ষা দিয়ে অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যতের জ্ঞান অর্জিত হয়। মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইন্দ্রিয় চোখ। শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানে ও চোখে দেখে যাচাই দ্বারা প্রকৃত জিনিস উদঘাটন করা যায়। মিথ্যা খোলস থেকে বেরিয়ে এসে প্রকৃত জিনিস অর্জনে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। সেজন্য শিক্ষিত ব্যক্তিকে কেউ ঠকাতে বা প্রতারিত করতে পারে না।

আমরা ছোটবেলা থেকেই পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করতে থাকি। যেমন- ছোট একটি শিশুর সামনে যদি আগুনের চেরাগ রাখা হলে শিশুটি আগুনের আলোর দিকে চেয়ে থাকবে ও তার আকর্ষণে চেরাগের আগুনকে হাত দিয়ে ধরার চেষ্টায় হাতের ত্বক উত্ত্বপ্ত অনুভব করামাত্র হাত সরিয়ে নেবে। এ ঘটনা থেকে শিশুটি একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করলো যে, চেরাগের আগুন উত্তপ্ত জিনিস। পরবর্তীতে আগুন থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে চলবে। এভাবে অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান অর্জন করতে শেখে বা থাকে। জ্ঞান অর্জনের কোন সীমা নাই । মানুষ দোলনা থেকে জ্ঞান অর্জন শুরু হয় এবং মৃত্যর পূর্ব পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণে থাকে। শিশুটি যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি হয়। তখন এ পরিবেশটি তার কাজে নতুনত্ব বলে মনে হতে থাকে। আস্তে আস্তে গোটা ক্লাসে ও স্কুলের শিক্ষক, সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব জুটে যায় এবং সুন্দর পরিবেশ অনুভব করে। অতঃপর প্রাইমারি, হাইস্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে উপযুক্ত শিক্ষা অর্জন করে বের হয়।

শিক্ষিত ব্যক্তিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। শিক্ষিত ব্যক্তিকে সবাই সম্মান করে ও ভয় পায়। তাই শিক্ষাকেই গ্রহণ করতে হবে যেভাবেই হোক। কাজী নজরুল ইসলাম রুটির দোকানে কাজ করে পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, আমরাও পারি। কিছু সমাজের মধ্যে অসমতা, অর্থনৈতিক, বৈষম্য, ভেদাভেদ ইত্যাদি কারণে সমাজের সব ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পায় না; কিন্তু দলিত-বঞ্চিত নেতারা উপদেশ দিয়েছেন যে, পরিবারের কর্তার কাজে সন্তানদের শিক্ষা গ্রহণের প্রতি যতœবান হতে। তার কিছু প্রবাদ হচ্ছে যেমন- খাও বা না খাও তাতে দুঃখ নাই, ছেলেমেয়েদের স্কুলে দাও এই আমি চাই। দিন আনি দিন খাই, তবুও লেখাপড়া শিখতে চাই। প্রতিবেশী নয়কো পর, শিক্ষা দিয়ে আপন কর। চোখ থাকতে অন্ধকে নিরক্ষর থাকে যে।

সরকারের একটি নীতি হচ্ছে- ‘কাউকে পিছনে রেখে উন্নয়ন নয়।’ সমাজে অনেকে বয়সে কম, বয়সে তরুণ ও বয়সে বৃদ্ধ। যদি ছেলে তরুণ এবং বৃদ্ধকে এক লাইনে দ্বার করিয়ে দৌড়ে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়, তাহলে দৌড়ে তরুণটি জয়ী হবেই। অথচ সবাইকেই সমান অধিকার দেয়া হয়েছে।

দলিত বঞ্চিত ব্রাত্যজন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী , জাতির সন্তানদের শিক্ষাদীক্ষায় আনতে হবে, এ বিষয়ে সরকার, শুভাকাক্সক্ষী, শুভানুধ্যায়ী সমাজ হিতৈষীদের এগিয়ে আসতে হবে ও শিক্ষা বিষয়ে আন্তরিক হতে হবে। তবেই তো সমাজের আনাচে-কানাচে আলো পড়বে। সমাজ থেকে অন্ধকার দূর হয়ে, সূর্যের হাসি প্রতিফলিত হবে। আমাদের সমাজে ড. বিআর আম্বেদকর, হরিচাঁদ-ঠাকুর, গুরুচাঁদ-ঠাকুর, সাবিত্রী বাই ফুলে, ফাতেমা শেখ পিছে পড়া দলিত সন্তানদের শিক্ষা অর্জনে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ইতোপূর্বে দলিত-বঞ্চিত সন্তানদের শিক্ষাগ্রহণের কোন অধিকার ছিল না। ইচ্ছাপূর্বক তাদের শাসিয়ে ও দাবিয়ে রাখা হয়েছিল। দলিত-বঞ্চিত, ব্রাত্যজন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, জাতির সন্তানেরা সংবিধান, আইন, সরকারের নীতির কারণে আজকে শিক্ষা অর্জন করে, কিছুটা এগিয়ে আসতে পেয়েছে। অনগ্রসর জাতির সন্তানেরা ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে গিয়ে সমাজে গ্রহণযোগ্য নাগরিকরূপে প্রতিষ্ঠা পাবে। তখন সমাজ থেকে বৈষম্য, অস্পৃশ্য, ভেদাভেদ, কুসংস্কার দূর হবে। মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতার সমাজ অর্থাৎ তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞান-বিজ্ঞান সমাজ গড়ে উঠবে।

[লেখক : আইনজীবী, জজকোর্ট, জয়পুরহাট]

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

প্লান্ট ক্লিনিক বদলে দিচ্ছে কৃষির ভবিষ্যৎ

ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী করতে করণীয়

রম্যগদ্য : ‘ডন ডনা ডন ডন...’

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব : কে সন্ত্রাসী, কে শিকার?

সুস্থ ও শক্তিশালী জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব

প্রতিরোধই উত্তম : মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়ার ডাক

tab

উপ-সম্পাদকীয়

শিক্ষা হচ্ছে জগতের আলো

বাবুল রবিদাস

শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

যে কোন বিষয়ের ওপর ঠিকঠাক বা সঠিক জ্ঞান দিতে পারে একমাত্র শিক্ষা। শিক্ষা দিয়ে অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যতের জ্ঞান অর্জিত হয়। মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইন্দ্রিয় চোখ। শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানে ও চোখে দেখে যাচাই দ্বারা প্রকৃত জিনিস উদঘাটন করা যায়। মিথ্যা খোলস থেকে বেরিয়ে এসে প্রকৃত জিনিস অর্জনে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। সেজন্য শিক্ষিত ব্যক্তিকে কেউ ঠকাতে বা প্রতারিত করতে পারে না।

আমরা ছোটবেলা থেকেই পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করতে থাকি। যেমন- ছোট একটি শিশুর সামনে যদি আগুনের চেরাগ রাখা হলে শিশুটি আগুনের আলোর দিকে চেয়ে থাকবে ও তার আকর্ষণে চেরাগের আগুনকে হাত দিয়ে ধরার চেষ্টায় হাতের ত্বক উত্ত্বপ্ত অনুভব করামাত্র হাত সরিয়ে নেবে। এ ঘটনা থেকে শিশুটি একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করলো যে, চেরাগের আগুন উত্তপ্ত জিনিস। পরবর্তীতে আগুন থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে চলবে। এভাবে অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান অর্জন করতে শেখে বা থাকে। জ্ঞান অর্জনের কোন সীমা নাই । মানুষ দোলনা থেকে জ্ঞান অর্জন শুরু হয় এবং মৃত্যর পূর্ব পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণে থাকে। শিশুটি যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি হয়। তখন এ পরিবেশটি তার কাজে নতুনত্ব বলে মনে হতে থাকে। আস্তে আস্তে গোটা ক্লাসে ও স্কুলের শিক্ষক, সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব জুটে যায় এবং সুন্দর পরিবেশ অনুভব করে। অতঃপর প্রাইমারি, হাইস্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে উপযুক্ত শিক্ষা অর্জন করে বের হয়।

শিক্ষিত ব্যক্তিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। শিক্ষিত ব্যক্তিকে সবাই সম্মান করে ও ভয় পায়। তাই শিক্ষাকেই গ্রহণ করতে হবে যেভাবেই হোক। কাজী নজরুল ইসলাম রুটির দোকানে কাজ করে পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, আমরাও পারি। কিছু সমাজের মধ্যে অসমতা, অর্থনৈতিক, বৈষম্য, ভেদাভেদ ইত্যাদি কারণে সমাজের সব ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পায় না; কিন্তু দলিত-বঞ্চিত নেতারা উপদেশ দিয়েছেন যে, পরিবারের কর্তার কাজে সন্তানদের শিক্ষা গ্রহণের প্রতি যতœবান হতে। তার কিছু প্রবাদ হচ্ছে যেমন- খাও বা না খাও তাতে দুঃখ নাই, ছেলেমেয়েদের স্কুলে দাও এই আমি চাই। দিন আনি দিন খাই, তবুও লেখাপড়া শিখতে চাই। প্রতিবেশী নয়কো পর, শিক্ষা দিয়ে আপন কর। চোখ থাকতে অন্ধকে নিরক্ষর থাকে যে।

সরকারের একটি নীতি হচ্ছে- ‘কাউকে পিছনে রেখে উন্নয়ন নয়।’ সমাজে অনেকে বয়সে কম, বয়সে তরুণ ও বয়সে বৃদ্ধ। যদি ছেলে তরুণ এবং বৃদ্ধকে এক লাইনে দ্বার করিয়ে দৌড়ে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়, তাহলে দৌড়ে তরুণটি জয়ী হবেই। অথচ সবাইকেই সমান অধিকার দেয়া হয়েছে।

দলিত বঞ্চিত ব্রাত্যজন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী , জাতির সন্তানদের শিক্ষাদীক্ষায় আনতে হবে, এ বিষয়ে সরকার, শুভাকাক্সক্ষী, শুভানুধ্যায়ী সমাজ হিতৈষীদের এগিয়ে আসতে হবে ও শিক্ষা বিষয়ে আন্তরিক হতে হবে। তবেই তো সমাজের আনাচে-কানাচে আলো পড়বে। সমাজ থেকে অন্ধকার দূর হয়ে, সূর্যের হাসি প্রতিফলিত হবে। আমাদের সমাজে ড. বিআর আম্বেদকর, হরিচাঁদ-ঠাকুর, গুরুচাঁদ-ঠাকুর, সাবিত্রী বাই ফুলে, ফাতেমা শেখ পিছে পড়া দলিত সন্তানদের শিক্ষা অর্জনে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ইতোপূর্বে দলিত-বঞ্চিত সন্তানদের শিক্ষাগ্রহণের কোন অধিকার ছিল না। ইচ্ছাপূর্বক তাদের শাসিয়ে ও দাবিয়ে রাখা হয়েছিল। দলিত-বঞ্চিত, ব্রাত্যজন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, জাতির সন্তানেরা সংবিধান, আইন, সরকারের নীতির কারণে আজকে শিক্ষা অর্জন করে, কিছুটা এগিয়ে আসতে পেয়েছে। অনগ্রসর জাতির সন্তানেরা ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে গিয়ে সমাজে গ্রহণযোগ্য নাগরিকরূপে প্রতিষ্ঠা পাবে। তখন সমাজ থেকে বৈষম্য, অস্পৃশ্য, ভেদাভেদ, কুসংস্কার দূর হবে। মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতার সমাজ অর্থাৎ তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞান-বিজ্ঞান সমাজ গড়ে উঠবে।

[লেখক : আইনজীবী, জজকোর্ট, জয়পুরহাট]

back to top