alt

উপ-সম্পাদকীয়

যুদ্ধটা এখনো শেষ হয়নি রনো ভাই

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
image

হায়দার আকবর খান রনো

ছেলেটির জন্মের দিন প্রচ- বৃষ্টি হচ্ছিল। সবাই অবাক হয়ে ভাবছিলো এই অসময়ে এমনি অঝোর ধারায় ঝর ঝর বর্ষা ঝরছে!

বিস্ময়ের ঘোর কাটছেই না! বৃষ্টি ঝরছে খাল-বিলে, মাঠে-প্রান্তরে গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-শহরতলিতে অবিরাম অঝোরে শাওন ঝরছে।

আসলে এটাতো বৃষ্টি নয়, এটা ছিলো স্বর্গের দেবদূতদের কান্না। কারণ তাদের এক কমরেড স্বর্গ ছেড়ে ছাড়পত্র নিয়ে পৃথিবীতে যাচ্ছে মানুষের মঙ্গলের তরে।

স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে আসা সেই শিশুটি আর কেউ নয় তিনি হচ্ছেন আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় হায়দার আকবর খান রনো। আর এমনিভাবে আজীবন পৃথিবীতে কিছু মানুষ জন্মায় মানুষের উপকারের জন্য। সেই হায়দার আকবর খান রনো, বাংলার সব মানুষের কাছে যিনি রনো ভাই হিসেবে অধিক পরিচিত।

আমাদের সেই ছোট্ট দেবদূতটি ১৭৭৭ সালের ফরাসি দার্শনিক ভিক্টর দু’পে, যিনি পৃথিবীতে প্রথম কমিউজিমের কথা তার রচিত বই ‘প্রজেক্ট দ্য কমিউনেট ফিলোসফির’ মাঝে তুলে ধরেছিলেন। যার পথ ধরে পরবর্র্তীতে কার্ল মার্কস, ফ্রেডরিক অ্যাঙ্গেলসদ্বয় প্রথম লিখলেন কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো যেটি ১৯৪৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হলো।

২১ ফেব্রুয়ারি, আমাদের গর্বে ২১ ফেব্রুয়ারি।

হায়দার আকবর খান রনো, এই মতাদর্শে বিশ্বাস করলেন যে, সারা বিশ্বটা যদি

সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি হয় তাহলে আমরা মানুষরা কি করে জমির মালিকানা নিয়ে যুদ্ধ

করি! সৃষ্টিকর্তা তো জমির ভাগ করে দেননি! এ দেশ আমার, এদেশ তোমার, এ বাউন্ড্রি তো মানুষের সৃষ্টি। তাহলে পৃথিবীতে যত ফসল ফলন হবে তার সবইতো সকল মানুষের প্রাপ্য। তবে কেনো ধনী-গরিব, বড়লোক-ছোটলোকের বিভেদ সৃষ্টি হবে?

তবে কেনো এ সমজে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি হবে? পৃথিবীর সকল সম্পদ কেনো কিছু লোকের করায়ত্ত হবে?

এমনি মতাদর্শ নিয়ে শ্রেণী-বৈষম্যহীন, উঁচু-নিচু, ধনী-দরিদ্রহীন এক সমাজ ব্যবস্থার সৃষ্টির কল্পে আজীবন লড়াই করলেন আমাদের সেই প্রগতির পতাকাবাহী হায়দার আকবর খান রনো।

যে সমাজ ব্যবস্থার জন্য রনো ভাই মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বর্বরদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার তুলে নিয়েছিলেন, জানি না সে সমাজ রনো ভাই ওপার থেকে কবে দেখতে পাবেন।

জানি না আমরা কবে রনো ভাইয়ের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে পারবো? আজ বড় বেদনার সাথে বলতে হয়, হায় রনো ভাই তোমার পতাকা বইবার মতো কোনো কর্মী তো চোখে পড়ে না রনো ভাই!

আমাদের বয়স হয়েছে, চোখে ছানি পড়েছে, ভালো করে কিছু ঠাওরও করতে পারি না। কিন্তু সমাজে যে তরুণ প্রজন্ম রয়েছে, যাদের টগবগে তারুণ্য রয়েছে তারা তো দেখি প্রায় সবাই অর্থে লোভে নিজের জন্মদাত্রীকেও এরা চার হিসেবে ব্যবহার করে।

আপনি যে এত বড় যুবরাজ রেখে গেলেন, আপনার অসমাপ্ত আত্মকর্ম সমাধা করবে সেও তো দেখি লাঙ্গুল হিন্দোল করে ক্ষণে ক্ষণে নিজ অবস্থান দৃঢ় করতেই ব্যাস্ত!

তাহলে এই বাংলায় আপনার উত্তরসূরি কেউ কি জন্মাবে না? রনো ভাই আপনি আপনার রচিত পুস্তক ‘পলাশী থেকে মুক্তিযুদ্ধ’-এর, উৎসর্গে লিখেছেন ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবনদান করেছেন তাদের স্মরণে-শ্রদ্ধাভরে...’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আপনার সহযোদ্ধা কমরেড আজাদ বেতিয়ারা যুদ্ধে শহীদ হলেন, কতই বা তার বয়স ছিলো, ২২-২৩ টগবগে তরুণ সেই সন্তানদের আত্মহুতি কি আপনার স্বপ্নপূরণের সহায়ক হয়েছে?

জন্ম থেকে প্রায় বিরাশি বছর আপনি সংগ্রাম করলেন, লড়াই করলেন, বর্বর পাকিস্তানির হাতে বন্দি হলেন, জেল খাটলেন... তো রনো ভাই এই বাংলাদেশ চেয়েছিলেন বুঝি!

আপনিই একদিন বলেছিলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠসন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একবার এক হিটলিস্ট থেকে আপনার নাম কেটে আপনার প্রতি তার অপার স্নেহের পরশ বুলিয়ে ছিলেন। সেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠসন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- পৃথিবী আজ দু’ভাগে বিভক্ত, শোষক ও শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।

আপনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতাদর্শে শোষিতের অধিকারের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন; আপনার সাথে সতেজ-সবল বুদ্ধিদীপ্ত কমরেড না পেয়ে কি রণে ক্ষান্ত দিলেন রনো ভাই!

কবি কিশোর সুকান্তের মতো বলতে ইচ্ছে করেÑ ‘চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/ প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল/ এ বিশ্বকে এ শিশুর বাস যোগ্য করে যাব আমি/ নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার...।’ আপনার এই জঞ্জাল সরানো শেষ না হতেই শেষ হলো আপনার পালা।

আপনার এ যাওয়া তো অসময়ে যাওয়া রনো ভাই। যাওয়ার আগে আপনার কি একবারও মনে হলো না- আজ বাঙালি বাঙালিকে খুন করছে! বাঙালির হাতে বাংলার মা বোনের সম্ভ্রম বিনষ্ট হচ্ছে- পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সৈনিকদের মতো। অর্থের লোভে আজ এরা দেশমাতৃকার সম্মান পর্যন্ত ধুলোয় বিকিয়ে দিচ্ছে! এমনি এক সময়ে আপনার রণেভঙ্গ দিয়ে চুপিসারে চলে যাওয়াটা কি শোভন হলো!

আপনাকে যে আমাদের বাংলার শোষিতের জন্য, বঞ্চিত হতদরিদ্র জনগণের জন্য দরকার আছে, কারণ সোনার বংলা গড়ার যুদ্ধটা এখনো শেষ হয়নি রনো ভাই...।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

বিয়ের কিছু লোকাচার ও অপব্যয় প্রসঙ্গে

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে রক্ষা করুন

তরুণদের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্ভব

শিশুমৃত্যু রোধে করণীয় কী

সিগমুন্ড ফ্রয়েড ও মনঃসমীক্ষণ

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ও বাস্তবতা

স্বামী কিংবা স্ত্রীর পরবর্তী বিয়ের আইনি প্রতিকার ও বাস্তবতা

তথ্য-উপাত্তের গরমিলে বাজারে অস্থিরতা, অর্থনীতিতে বিভ্রান্তি

দেশে অফশোর ব্যাংকিংয়ের গুরুত্ব

ইরানে কট্টরপন্থার সাময়িক পরাজয়

পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থার ভবিষ্যৎ কী

ক্ষমতার সাতকাহন

জলবায়ু সংকট : আমাদের উপলব্ধি

নারী-পুরুষ চুড়ি পরি, দেশের অন্যায় দূর করি!

ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সবার

ছবি

সাধারণ মানুষেরা বড় অসাধারণ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও কারিগরি শিক্ষা

মাদক রুখতে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ

পারিবারিক অপরাধপ্রবণতা ও কয়েকটি প্রশ্ন

ডারউইনকে খুঁজে পেয়েছি

চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফসল উৎপাদন করা জরুরি

পিএসসি প্রশ্নফাঁসের দায় এড়াবে কীভাবে

এত উন্নয়নের পরও বাসযোগ্যতায় কেন পিছিয়েই থাকছে ঢাকা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য কি কেউ নেই?

জলবায়ু রক্ষায় কাজের কাজ কি কিছু হচ্ছে

অধরার হাতে সমর্পিত ক্ষমতা

প্রসঙ্গ : কোটাবিরোধী আন্দোলন

রম্যগদ্য : যে করিবে চালাকি, বুঝিবে তার জ্বালা কী

একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলার পরিণতি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কেন শ্রেণীকক্ষের বাইরে

মেধা নিয়ে কম মেধাবীর ভাবনা

প্রজাতন্ত্রের সেবক কেন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বনে যান

ছবি

বাইডেন কি দলে বোঝা হয়ে যাচ্ছেন?

ছবি

দুই যুগের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সাপ উপকারী প্রাণীও বটে!

ছবি

বাস্তববাদী রাজনীতিক জ্যোতি বসু

tab

উপ-সম্পাদকীয়

যুদ্ধটা এখনো শেষ হয়নি রনো ভাই

জাঁ-নেসার ওসমান

image

হায়দার আকবর খান রনো

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

ছেলেটির জন্মের দিন প্রচ- বৃষ্টি হচ্ছিল। সবাই অবাক হয়ে ভাবছিলো এই অসময়ে এমনি অঝোর ধারায় ঝর ঝর বর্ষা ঝরছে!

বিস্ময়ের ঘোর কাটছেই না! বৃষ্টি ঝরছে খাল-বিলে, মাঠে-প্রান্তরে গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-শহরতলিতে অবিরাম অঝোরে শাওন ঝরছে।

আসলে এটাতো বৃষ্টি নয়, এটা ছিলো স্বর্গের দেবদূতদের কান্না। কারণ তাদের এক কমরেড স্বর্গ ছেড়ে ছাড়পত্র নিয়ে পৃথিবীতে যাচ্ছে মানুষের মঙ্গলের তরে।

স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে আসা সেই শিশুটি আর কেউ নয় তিনি হচ্ছেন আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় হায়দার আকবর খান রনো। আর এমনিভাবে আজীবন পৃথিবীতে কিছু মানুষ জন্মায় মানুষের উপকারের জন্য। সেই হায়দার আকবর খান রনো, বাংলার সব মানুষের কাছে যিনি রনো ভাই হিসেবে অধিক পরিচিত।

আমাদের সেই ছোট্ট দেবদূতটি ১৭৭৭ সালের ফরাসি দার্শনিক ভিক্টর দু’পে, যিনি পৃথিবীতে প্রথম কমিউজিমের কথা তার রচিত বই ‘প্রজেক্ট দ্য কমিউনেট ফিলোসফির’ মাঝে তুলে ধরেছিলেন। যার পথ ধরে পরবর্র্তীতে কার্ল মার্কস, ফ্রেডরিক অ্যাঙ্গেলসদ্বয় প্রথম লিখলেন কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো যেটি ১৯৪৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হলো।

২১ ফেব্রুয়ারি, আমাদের গর্বে ২১ ফেব্রুয়ারি।

হায়দার আকবর খান রনো, এই মতাদর্শে বিশ্বাস করলেন যে, সারা বিশ্বটা যদি

সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি হয় তাহলে আমরা মানুষরা কি করে জমির মালিকানা নিয়ে যুদ্ধ

করি! সৃষ্টিকর্তা তো জমির ভাগ করে দেননি! এ দেশ আমার, এদেশ তোমার, এ বাউন্ড্রি তো মানুষের সৃষ্টি। তাহলে পৃথিবীতে যত ফসল ফলন হবে তার সবইতো সকল মানুষের প্রাপ্য। তবে কেনো ধনী-গরিব, বড়লোক-ছোটলোকের বিভেদ সৃষ্টি হবে?

তবে কেনো এ সমজে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি হবে? পৃথিবীর সকল সম্পদ কেনো কিছু লোকের করায়ত্ত হবে?

এমনি মতাদর্শ নিয়ে শ্রেণী-বৈষম্যহীন, উঁচু-নিচু, ধনী-দরিদ্রহীন এক সমাজ ব্যবস্থার সৃষ্টির কল্পে আজীবন লড়াই করলেন আমাদের সেই প্রগতির পতাকাবাহী হায়দার আকবর খান রনো।

যে সমাজ ব্যবস্থার জন্য রনো ভাই মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বর্বরদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার তুলে নিয়েছিলেন, জানি না সে সমাজ রনো ভাই ওপার থেকে কবে দেখতে পাবেন।

জানি না আমরা কবে রনো ভাইয়ের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে পারবো? আজ বড় বেদনার সাথে বলতে হয়, হায় রনো ভাই তোমার পতাকা বইবার মতো কোনো কর্মী তো চোখে পড়ে না রনো ভাই!

আমাদের বয়স হয়েছে, চোখে ছানি পড়েছে, ভালো করে কিছু ঠাওরও করতে পারি না। কিন্তু সমাজে যে তরুণ প্রজন্ম রয়েছে, যাদের টগবগে তারুণ্য রয়েছে তারা তো দেখি প্রায় সবাই অর্থে লোভে নিজের জন্মদাত্রীকেও এরা চার হিসেবে ব্যবহার করে।

আপনি যে এত বড় যুবরাজ রেখে গেলেন, আপনার অসমাপ্ত আত্মকর্ম সমাধা করবে সেও তো দেখি লাঙ্গুল হিন্দোল করে ক্ষণে ক্ষণে নিজ অবস্থান দৃঢ় করতেই ব্যাস্ত!

তাহলে এই বাংলায় আপনার উত্তরসূরি কেউ কি জন্মাবে না? রনো ভাই আপনি আপনার রচিত পুস্তক ‘পলাশী থেকে মুক্তিযুদ্ধ’-এর, উৎসর্গে লিখেছেন ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবনদান করেছেন তাদের স্মরণে-শ্রদ্ধাভরে...’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আপনার সহযোদ্ধা কমরেড আজাদ বেতিয়ারা যুদ্ধে শহীদ হলেন, কতই বা তার বয়স ছিলো, ২২-২৩ টগবগে তরুণ সেই সন্তানদের আত্মহুতি কি আপনার স্বপ্নপূরণের সহায়ক হয়েছে?

জন্ম থেকে প্রায় বিরাশি বছর আপনি সংগ্রাম করলেন, লড়াই করলেন, বর্বর পাকিস্তানির হাতে বন্দি হলেন, জেল খাটলেন... তো রনো ভাই এই বাংলাদেশ চেয়েছিলেন বুঝি!

আপনিই একদিন বলেছিলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠসন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একবার এক হিটলিস্ট থেকে আপনার নাম কেটে আপনার প্রতি তার অপার স্নেহের পরশ বুলিয়ে ছিলেন। সেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠসন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- পৃথিবী আজ দু’ভাগে বিভক্ত, শোষক ও শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।

আপনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতাদর্শে শোষিতের অধিকারের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন; আপনার সাথে সতেজ-সবল বুদ্ধিদীপ্ত কমরেড না পেয়ে কি রণে ক্ষান্ত দিলেন রনো ভাই!

কবি কিশোর সুকান্তের মতো বলতে ইচ্ছে করেÑ ‘চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/ প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল/ এ বিশ্বকে এ শিশুর বাস যোগ্য করে যাব আমি/ নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার...।’ আপনার এই জঞ্জাল সরানো শেষ না হতেই শেষ হলো আপনার পালা।

আপনার এ যাওয়া তো অসময়ে যাওয়া রনো ভাই। যাওয়ার আগে আপনার কি একবারও মনে হলো না- আজ বাঙালি বাঙালিকে খুন করছে! বাঙালির হাতে বাংলার মা বোনের সম্ভ্রম বিনষ্ট হচ্ছে- পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সৈনিকদের মতো। অর্থের লোভে আজ এরা দেশমাতৃকার সম্মান পর্যন্ত ধুলোয় বিকিয়ে দিচ্ছে! এমনি এক সময়ে আপনার রণেভঙ্গ দিয়ে চুপিসারে চলে যাওয়াটা কি শোভন হলো!

আপনাকে যে আমাদের বাংলার শোষিতের জন্য, বঞ্চিত হতদরিদ্র জনগণের জন্য দরকার আছে, কারণ সোনার বংলা গড়ার যুদ্ধটা এখনো শেষ হয়নি রনো ভাই...।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top