alt

উপ-সম্পাদকীয়

জ্ঞানই শক্তি

বাবুল রবিদাস

: সোমবার, ১০ জুন ২০২৪

উন্নয়ন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপ্রিয় দেশ গড়তে প্রয়োজন হয় শিক্ষা। এই শিক্ষা গ্রহণ করা হয় বই পুস্তক থেকে এবং অভিজ্ঞতা থেকে। বই পুস্তক থেকে লেখাপড়া ও অভিজ্ঞতা অর্জন করলে তাকে জ্ঞানী গুনি লোক বলা হয়। জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইচ্ছা করলে সমাজের কুসংস্কার দূর করে গোটা সমাজকে পাল্টিয়ে দিতে পারে। এজন্যই বলা হয় জ্ঞানই শক্তি। জ্ঞান অর্জন করলে পৃথিবীর লোকজন তাকে খুঁজে বেড়ান, খোঁজেন। তিনি হয়ে ওঠেন সূর্যের কিরণের মতো উজ্জ্বল। তার কাছে দেশ-বিদেশ বা আপন-পর থাকে না।

বিশ্বজুড়ে মানুষের জ্ঞান একসময় খুব ধীরগতিতে বৃদ্ধি পেত। নতুন জ্ঞান সৃষ্টির কথা সমাজের মানুষ ভাবত না। অজ্ঞ ও অশিক্ষিত সমাজের জনগণ ছিল মূলত অবিচল ও অপরিবর্তী। আকস্মিকভাবে নতুন জ্ঞানের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলে তা নতুন জ্ঞানের উৎস হিসেবে কাজ করত। কিন্তু নতুন অভিজ্ঞতার লাভের ঘটনা শুধু বিরলই ছিল তাই না, নতুন জ্ঞানকে মানুষ ভয়ও পেত। পরীক্ষা নিরীক্ষা, সত্যতা যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ ইত্যাদির ভেতর দিয়ে, নতুন জ্ঞানকে গ্রহণযোগ্য করার পরিবর্তে অন্ধবিশ্বাস ও সন্দেহের চোখে দেখা হতো, কোন নতুন জ্ঞানকে।

আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে গ্যালিলিওর সময় থেকে। যখন অভিজ্ঞতার পরিপূরক হিসেবে সচেতনভাবে পরিচালিত পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালিত পর্যবেক্ষণ থেকে নতুন তথ্য আহরিত হতে শুরু হলো। যন্ত্র উদ্ভাবনের ভেতর দিয়ে মানুষের জ্ঞানের ক্ষমতা ও সীমানা বর্ধিত হতে শুরু করল।

শুধু প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা পর্যবেক্ষণ নয়; নিয়ন্ত্রিতভাবে ঘটনা কেন ঘটল, উক্ত ঘটনার কারণ কী, তার সূক্ষ বিচার-বিশ্লেষণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা ও পরিমাপ চালিয়ে নতুন তথ্য-উপাত্ত উদ্ঘাটন করেন বিজ্ঞানীরা।

বস্তুত; মানুষের কল্পনা ও স্বতঃলদ্ধ জ্ঞান, পর্যবেক্ষণ, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংগ্রহ এবং গাণিতিক ভাবনার সূচনা ঘটেছিল। অনেক দিন আগে অর্থাৎ আর্কিমিডিসের যুগে। কিন্তু তখন দর্শন, প্রকৃতি, বিজ্ঞান ও কৃত কৌশল সর্ম্পূণ বিছিন্নভাবে মুষ্টিমেয় প্রতিভাধর মানুষের প্রায় ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণার প্রয়াস ছিল। জ্ঞানের জগতের আধিপত্য ও পা-িত্য ছিল বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

নতুন আবিষ্কার বা উদ্ভাবন এমনকি নতুন কিছুর পরিবর্তন আমাদের অগ্রগতির বিকল্প পথ উন্মোচিত করে। নানা প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা যেখানে রুদ্ধ করে রেখেছে উন্নয়ন ও বিকাশের পথ বস্তুত উদ্ভাবন ও আবিষ্কার তত বেশি প্রয়োজন সেখানেই। অথচ পশ্চাৎপদ সমাজের এটাই লক্ষণ যে, পা-িত্য ও প্রতিষ্ঠিত জ্ঞানের সমাদর তবু যতটা লক্ষ্য করা যায়, নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সাধনা, উদ্ভাবন ও আবিষ্কার সে তুলনায় অনেক বেশি অবহেলিত।

উন্নত দেশগুলোতে আধুনিক বিজ্ঞানের উদ্ভব ও শিল্পবিপ্লবের আড়ালে অনেকগুলো কারণ অবশ্যই প্রভাব রেখেছে। যার উৎস সামাজিক, অর্থনৈতিক, প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশগত হয়ে থাকবে। কিন্তু যে, কারণ মুখ্য তা হলোÑ শিক্ষা ব্যবস্থা, জ্ঞানের সাধনা এবং নতুন জ্ঞান সৃষ্টি সর্ম্পকে নতুন মূল্যবোধ। বিশ্বজগতের উপলদ্ধি, পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহ ও শিল্পসামগ্রীতে রূপান্তরিত করা একটি বড় কর্মকা- ও আয়োজনের একটি অংশ হয়ে উঠেই আধুনিক শিল্প সভ্যতাকে সম্ভব করেছে।

তথ্য-প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা অত্যন্ত দ্রুত সংঘটিত হচ্ছে। মানুষের জ্ঞান অর্জন করতে একসময় সেখানে দশ সহ¯্র বছর নিত দ্বিগুণ হতো, এখন তা দশ কী পনেরো বছরে দ্বিগুণ হচ্ছে। এর ফলে একটি নতুন পরিবর্তিত এসেছে জ্ঞানের গঠন ও বিন্যাসে। কঠোর পরিশ্রম, সময়ের মূল্য, সচেনতা, চেষ্টা জ্ঞান আহরণের পথ। আবিষ্কৃৃত জ্ঞান সর্ম্পকে কোন লুকানো রহস্য ও দৃঢ়তা গ্রহণযোগ্য হয় না। বিজ্ঞানীদের কাজ সত্যকে শুধু আবিষ্কার করা নয়, আবিষ্কৃত সত্যকে বোধগম্যরূপে প্রকাশ করাও তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। বস্তুত; যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুধু মঞ্চে নয়, বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্বও বিজ্ঞানীদের ওপর বর্তায়। এজন্য যথাসম্ভব, সহজ-সরল, স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষ হওয়া চাই।

[লেখক : আইনজীবী, জজকোর্ট, জয়পুরহাট]

অতীত থেকে মুক্তি এবং ইতিবাচক জীবনযাপন

মুক্তি সংগ্রামে তিনটি ধারা

বাসযোগ্যতার সূচকে ঢাকা কেন পিছিয়ে

শুধু নিচেই নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর

উপেক্ষিত আটকে পড়া পাকিস্তানিরা

রম্যগদ্য : সিন্দাবাদের বুড়ো ও আমরা

নেই কেনো সেই পাখি

বায়ুদূষণ থেকে মুক্তি কোন পথে

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : রাষ্ট্র সংস্কারের দুর্গম পথ

পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র

বিজয়ের প্রেরণা

মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকার পুনর্বীক্ষণ

সিদরাত জেবিনের মৃত্যু অথবা প্রশ্নহীন বায়ুদূষণ

বিজয়ের গৌরব ও সম্ভাবনাময় তরুণ সমাজ

ছবি

মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধুদের অবদান

ছবি

বিজয় সংগ্রামের সূচনার সন্ধানে

মানসম্মত কনটেন্ট ও টিআরপির দ্বৈরথ

জিকা ভাইরাস রোধে প্রয়োজন সচেতনতা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার গুরুত্ব

ঢাকার বাতাস বিষাক্ত কেন

চরের কৃষি ও কৃষকের জীবন

নিম্ন আয়ের মানুষ ভালো নাই

সবার আগে নিজেকে পরিবর্তন করা দরকার

পুলিশ কবে পুলিশ হবে

জীবন ফিরে আসুক বাংলার নদীগুলোতে

কান্দন সরেন হত্যা ও ভূমি বিরোধ কি এড়ানো যেত না

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র: রাষ্ট্র বিনির্মাণে সমস্যা কোথায়?

মানবাধিকার দিবস : মানুষের অধিকার নিয়ে কেন এত কথা?

আমলাতান্ত্রিক স্বচ্ছতা : সংস্কারের পথে নাকি পুনরাবৃত্তি?

খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কিছু কথা

ছবি

বেগম রোকেয়া : নারী জাগরণের অগ্রদূত

দুর্নীতির সর্বগ্রাসী বিস্তার বন্ধ করতে হবে

মা তোর বদনখানি মলিন হলে

ব্যবসায়ী নেতৃত্বশূন্য ই-ক্যাব

মূল্যস্ফীতির হিসাব নির্ণয়ে নতুন পদ্ধতির প্রাসঙ্গিকতা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

জ্ঞানই শক্তি

বাবুল রবিদাস

সোমবার, ১০ জুন ২০২৪

উন্নয়ন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপ্রিয় দেশ গড়তে প্রয়োজন হয় শিক্ষা। এই শিক্ষা গ্রহণ করা হয় বই পুস্তক থেকে এবং অভিজ্ঞতা থেকে। বই পুস্তক থেকে লেখাপড়া ও অভিজ্ঞতা অর্জন করলে তাকে জ্ঞানী গুনি লোক বলা হয়। জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইচ্ছা করলে সমাজের কুসংস্কার দূর করে গোটা সমাজকে পাল্টিয়ে দিতে পারে। এজন্যই বলা হয় জ্ঞানই শক্তি। জ্ঞান অর্জন করলে পৃথিবীর লোকজন তাকে খুঁজে বেড়ান, খোঁজেন। তিনি হয়ে ওঠেন সূর্যের কিরণের মতো উজ্জ্বল। তার কাছে দেশ-বিদেশ বা আপন-পর থাকে না।

বিশ্বজুড়ে মানুষের জ্ঞান একসময় খুব ধীরগতিতে বৃদ্ধি পেত। নতুন জ্ঞান সৃষ্টির কথা সমাজের মানুষ ভাবত না। অজ্ঞ ও অশিক্ষিত সমাজের জনগণ ছিল মূলত অবিচল ও অপরিবর্তী। আকস্মিকভাবে নতুন জ্ঞানের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলে তা নতুন জ্ঞানের উৎস হিসেবে কাজ করত। কিন্তু নতুন অভিজ্ঞতার লাভের ঘটনা শুধু বিরলই ছিল তাই না, নতুন জ্ঞানকে মানুষ ভয়ও পেত। পরীক্ষা নিরীক্ষা, সত্যতা যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ ইত্যাদির ভেতর দিয়ে, নতুন জ্ঞানকে গ্রহণযোগ্য করার পরিবর্তে অন্ধবিশ্বাস ও সন্দেহের চোখে দেখা হতো, কোন নতুন জ্ঞানকে।

আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে গ্যালিলিওর সময় থেকে। যখন অভিজ্ঞতার পরিপূরক হিসেবে সচেতনভাবে পরিচালিত পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালিত পর্যবেক্ষণ থেকে নতুন তথ্য আহরিত হতে শুরু হলো। যন্ত্র উদ্ভাবনের ভেতর দিয়ে মানুষের জ্ঞানের ক্ষমতা ও সীমানা বর্ধিত হতে শুরু করল।

শুধু প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা পর্যবেক্ষণ নয়; নিয়ন্ত্রিতভাবে ঘটনা কেন ঘটল, উক্ত ঘটনার কারণ কী, তার সূক্ষ বিচার-বিশ্লেষণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা ও পরিমাপ চালিয়ে নতুন তথ্য-উপাত্ত উদ্ঘাটন করেন বিজ্ঞানীরা।

বস্তুত; মানুষের কল্পনা ও স্বতঃলদ্ধ জ্ঞান, পর্যবেক্ষণ, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংগ্রহ এবং গাণিতিক ভাবনার সূচনা ঘটেছিল। অনেক দিন আগে অর্থাৎ আর্কিমিডিসের যুগে। কিন্তু তখন দর্শন, প্রকৃতি, বিজ্ঞান ও কৃত কৌশল সর্ম্পূণ বিছিন্নভাবে মুষ্টিমেয় প্রতিভাধর মানুষের প্রায় ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণার প্রয়াস ছিল। জ্ঞানের জগতের আধিপত্য ও পা-িত্য ছিল বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

নতুন আবিষ্কার বা উদ্ভাবন এমনকি নতুন কিছুর পরিবর্তন আমাদের অগ্রগতির বিকল্প পথ উন্মোচিত করে। নানা প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা যেখানে রুদ্ধ করে রেখেছে উন্নয়ন ও বিকাশের পথ বস্তুত উদ্ভাবন ও আবিষ্কার তত বেশি প্রয়োজন সেখানেই। অথচ পশ্চাৎপদ সমাজের এটাই লক্ষণ যে, পা-িত্য ও প্রতিষ্ঠিত জ্ঞানের সমাদর তবু যতটা লক্ষ্য করা যায়, নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সাধনা, উদ্ভাবন ও আবিষ্কার সে তুলনায় অনেক বেশি অবহেলিত।

উন্নত দেশগুলোতে আধুনিক বিজ্ঞানের উদ্ভব ও শিল্পবিপ্লবের আড়ালে অনেকগুলো কারণ অবশ্যই প্রভাব রেখেছে। যার উৎস সামাজিক, অর্থনৈতিক, প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশগত হয়ে থাকবে। কিন্তু যে, কারণ মুখ্য তা হলোÑ শিক্ষা ব্যবস্থা, জ্ঞানের সাধনা এবং নতুন জ্ঞান সৃষ্টি সর্ম্পকে নতুন মূল্যবোধ। বিশ্বজগতের উপলদ্ধি, পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহ ও শিল্পসামগ্রীতে রূপান্তরিত করা একটি বড় কর্মকা- ও আয়োজনের একটি অংশ হয়ে উঠেই আধুনিক শিল্প সভ্যতাকে সম্ভব করেছে।

তথ্য-প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা অত্যন্ত দ্রুত সংঘটিত হচ্ছে। মানুষের জ্ঞান অর্জন করতে একসময় সেখানে দশ সহ¯্র বছর নিত দ্বিগুণ হতো, এখন তা দশ কী পনেরো বছরে দ্বিগুণ হচ্ছে। এর ফলে একটি নতুন পরিবর্তিত এসেছে জ্ঞানের গঠন ও বিন্যাসে। কঠোর পরিশ্রম, সময়ের মূল্য, সচেনতা, চেষ্টা জ্ঞান আহরণের পথ। আবিষ্কৃৃত জ্ঞান সর্ম্পকে কোন লুকানো রহস্য ও দৃঢ়তা গ্রহণযোগ্য হয় না। বিজ্ঞানীদের কাজ সত্যকে শুধু আবিষ্কার করা নয়, আবিষ্কৃত সত্যকে বোধগম্যরূপে প্রকাশ করাও তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। বস্তুত; যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুধু মঞ্চে নয়, বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্বও বিজ্ঞানীদের ওপর বর্তায়। এজন্য যথাসম্ভব, সহজ-সরল, স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষ হওয়া চাই।

[লেখক : আইনজীবী, জজকোর্ট, জয়পুরহাট]

back to top