alt

উপ-সম্পাদকীয়

বিয়ের কিছু লোকাচার ও অপব্যয় প্রসঙ্গে

বাবুল রবিদাস

: বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪

সমাজে ‘বিবাহ অনুষ্ঠান’ একটি অনাবশ্যকীয় বিষয়। যে অনুষ্ঠান পালন করতে নেক সময় অর্থের অপচয় হয় মাত্র। এ আধুনিক যুগেও আমরা আদিকালের ধ্যান-ধারণা পোষণ করছি। অথচ বর্তমানে আমরা আধুনিক সমাজে বসবাস করছি বলে দাবি করি; কিন্তু পুরনো কালের রীতি-নীতি আঁকড়ে ধরে রেখেছি। যেমন হিন্দু ধর্মের বিধান মতে বিবাহ অনুষ্ঠানে ‘লগ্ন’ মতে হওয়ার কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে ‘লগ্নের সময়’ মতে হতে দেখা যায় না। বিয়ের অনুষ্ঠানে সাত দিন ধরে শুরু করা হয়। অনুষ্ঠান শুরু হলে বিভিন্ন জায়গার মেয়েরা একত্রিত হয়ে মধুর কন্ঠে বিয়ের গান বা গীত গাওয়া শুরু করে। বরের এবং কনের বাড়িতে বিয়ের বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠান চলে আর তার মধ্যে বিয়ের দিন ঠিক হওয়ার পর বিয়ের গীত গাওয়ার ধুম পড়ে যায়। ‘গীত’ গেয়ে থাকে।

প্রশ্ন হলো এ বিয়ের লোকাচার ও গীতগুলো থেকে কোন লাভ হয় কী? ঠান্ডা মাথায় জ্ঞান-বুদ্ধি দিয়ে একবার চিন্তা-ভাবনা কেউ করেছেন কি? যে সবাই গীত বা গানের কোন অর্থই হয় না সেগুলো পালন করার কোন মানেই হয় না। আমরা এগুলোকে অনাবশ্যকীয় লোকাচার বলতে পারি মাত্র। বিয়ের অনুষ্ঠানে অর্থাৎ গীত যদি বিয়েতে না গাওয়া হয় তবে কুসংস্কারের মতে বিশ্বাস হলো দম্পতির সন্তানেরা নাকি বোবা বা কালা হয়ে জন্মগ্রহণ করে। এটা মূলত অবৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণা মাত্র।

বিয়েতে বর ও কনে উভয়পক্ষ বিপুল অংকের টাকা ব্যয় করে ব্যান্ড পার্টি ভাড়া করে আনেন। ব্যান্ড পার্টির বাজনার তালে তালে ছেলেমেয়েরা নাচগান করে। ফলে সমাজের অনেক লোক উপস্থিত হয়ে তা উপভোগও করেন। আবার গান বাজনা, বা ঢাক-ঢোল তবলা, হারমনিয়াম, খঞ্জনী ইত্যাদির শব্দে এলাকায় শব্দ দূষণ হয়, বহুদূর পর্যন্ত শব্দ হওয়ায় বিভিন্ন লোকজন ঘটনাস্থলে না গিয়েও জানতে পারেন শব্দ উৎপত্তির স্থলে বিয়ে হচ্ছে। অর্থাৎ শব্দ উৎপন্ন ও মাইকে গান বাজিয়ে সবাই সমাজের মানুষকে বর কনে রূপে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দানের জ্ঞাত করানো হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা যায় ধান, দুর্বা ও গায়েহলুদ মাখানোর একটি পর্ব। প্রচলিত রয়েছে হলুদ গায়ে ব্যবহার করলে গায়ের রং ফর্সা ও উজ্জ্বল হয়। তাই অনেকেই বাসায় অবস্থান করাকালীন মুখে হলুদ ব্যবহার করে থাকেন; কিন্তু শরীরে সমস্ত অঙ্গে হলুদ ব্যবহার করলেই কি দ্রুত ফর্সা ও উজ্জ্বল হবে; মোটেই নয়। প্রকৃতপক্ষে হলুদ হচ্ছে এক প্রকার খাদ্য ও ঔষধি গাছ। এ কারণে বিয়েতে হলুদ ব্যবহার করা কি ঠিক? বিয়েতে গায়েহলুদ ব্যবহারের প্রথা কুসংস্কারের অন্তর্ভুক্ত বলা যায়। হিন্দু ধর্মে আবির ছিটানো বা মাখানো হয়, বিয়েতে রং ছিটানো হয়। ফলে শরীরের জামা কাপড় নষ্ট হয়। এমনকি অনেক সময় কাপড়ের রং উঠে না। ফলে নতুন কাপড়-চোপড় নষ্ট হয়ে যায়। মূল্যবান জামা-কাপড় টাকাপয়সা দিয়ে ক্রয় করে ব্যবহার করতে দেখা যায়। তাই অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ ঘটে। অনেক সময় বর-কনে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদও হয়।

সবচেয়ে উত্তম পন্থা হলো উভয়পক্ষ আদালতে বা কোর্টে উপস্থিত হয়ে কোর্ট ম্যারেজ রূপে এফিডেভিট করে নেয়া। এতে বিজ্ঞ অ্যাডভোকেটের মাধ্যমে শপথ করে ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা এফিডেভিট অনুমোদন করা হয়। আধা ঘণ্টার মধ্যে সম্পূর্ণ বিয়ের এফিডেভিট প্রস্তুত করা যায়। এছাড়াও ম্যারেজ রেজিস্ট্রার দ্বারা সম্পন্ন করার বিধান আছে। এতে ঝামেলা কম, অর্থ ও সময় বাঁচে। যৌতুক প্রথা অভিশাপ। এর কুফল সম্পর্কে কন্যার পিতামাতারা অবগত আছেন। তাই সমাজ থেকে এ কুপ্রথা নির্মূল করা আবশ্যক। এটা পারে একমাত্র শিক্ষিত তরুণ সমাজ।

বরযাত্রা : তিন দিন ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করে বরপক্ষ লোকজনসহ বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার নিয়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হয়। বর ও কনে উভয়পক্ষ বিবাহ কার্য সম্পন্ন করে কনেকে গাড়িতে করে বরের বাড়ি আনেন। এতে প্রচুর অর্থ ঋণ করে ব্যয় হয়। এটা ঘোড়া রোগ ছাড়া আর কিছুই না।

বৌভাত : বর কনেকে বাসায় এনে পুনরায় বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই বৌভাতে হাজার হাজার টাকা ব্যয় হয়। যে টাকা ব্যয় হয় সেই টাকার দান সামগ্রী উঠে না। এই কুপ্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। এই কুপ্রথা পরোক্ষভাবে সমাজ ও মানুষকে ধ্বংস করে।

আতশবাজি : বিয়ের অনুষ্ঠানে আতশবাজি প্রচলন দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে আতশবাজি শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ করে, আগুন যে কোন জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই বিবাহ অনুষ্ঠানের আতশবাজি ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ যে কাজ করলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, সবাইর ক্ষতির কারণ ঘটায় তা পরিত্যাগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ নয় কি?

গেট তৈরি ও ডেকোরেশন দিয়ে লাল, নীল, হলুদ বাতি জ্বালানো কৃত্রিম ও সাময়িক অনুষ্ঠান মাত্র। এগুলো লোক দেখানো অনুষ্ঠান আর এতে অর্থ ক্ষতির কারণ ঘটায়। এগুলো মূলত অপব্যয়।

এসব কুপ্রথা বা কুসংস্কার এবং অপচয় আমাদের সমাজে দীর্ঘদিন চলে আসছে। আধুনিক সভ্য সমাজে এর পরিবর্তন জরুরি।

[লেখক: আইনজীবী]

দক্ষ মানবসম্পদ ও সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার

আফ্রিকায় হঠাৎ কেন যুক্তরাষ্ট্রের ঝোঁক?

ঢাকা মহানগর ও বুড়িগঙ্গা

জামাই মেলা : উৎসব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টির রঙিন চিত্রপট

হারিয়ে যাওয়া ক্লাস, কঠোর মূল্যায়ন আর প্রশ্নের জটিলতায় নুয়ে পড়া এক প্রজন্ম

বৈষম্য দূর করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলুন

চিকিৎসা যেন বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত না হয়

পথশিশু ও বাংলাদেশে সামাজিক চুক্তির ব্যর্থতা

মেগা প্রকল্প : প্রশ্ন হওয়া উচিত স্বচ্ছতা নিয়ে

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি

স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : উপগ্রহ চিত্র ও ওয়েবসাইটের অপরিহার্যতা

ক্ষমতা ও জনপ্রশাসন : আমলাতন্ত্রের ছায়াতলে আমজনতা

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

tab

উপ-সম্পাদকীয়

বিয়ের কিছু লোকাচার ও অপব্যয় প্রসঙ্গে

বাবুল রবিদাস

বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪

সমাজে ‘বিবাহ অনুষ্ঠান’ একটি অনাবশ্যকীয় বিষয়। যে অনুষ্ঠান পালন করতে নেক সময় অর্থের অপচয় হয় মাত্র। এ আধুনিক যুগেও আমরা আদিকালের ধ্যান-ধারণা পোষণ করছি। অথচ বর্তমানে আমরা আধুনিক সমাজে বসবাস করছি বলে দাবি করি; কিন্তু পুরনো কালের রীতি-নীতি আঁকড়ে ধরে রেখেছি। যেমন হিন্দু ধর্মের বিধান মতে বিবাহ অনুষ্ঠানে ‘লগ্ন’ মতে হওয়ার কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে ‘লগ্নের সময়’ মতে হতে দেখা যায় না। বিয়ের অনুষ্ঠানে সাত দিন ধরে শুরু করা হয়। অনুষ্ঠান শুরু হলে বিভিন্ন জায়গার মেয়েরা একত্রিত হয়ে মধুর কন্ঠে বিয়ের গান বা গীত গাওয়া শুরু করে। বরের এবং কনের বাড়িতে বিয়ের বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠান চলে আর তার মধ্যে বিয়ের দিন ঠিক হওয়ার পর বিয়ের গীত গাওয়ার ধুম পড়ে যায়। ‘গীত’ গেয়ে থাকে।

প্রশ্ন হলো এ বিয়ের লোকাচার ও গীতগুলো থেকে কোন লাভ হয় কী? ঠান্ডা মাথায় জ্ঞান-বুদ্ধি দিয়ে একবার চিন্তা-ভাবনা কেউ করেছেন কি? যে সবাই গীত বা গানের কোন অর্থই হয় না সেগুলো পালন করার কোন মানেই হয় না। আমরা এগুলোকে অনাবশ্যকীয় লোকাচার বলতে পারি মাত্র। বিয়ের অনুষ্ঠানে অর্থাৎ গীত যদি বিয়েতে না গাওয়া হয় তবে কুসংস্কারের মতে বিশ্বাস হলো দম্পতির সন্তানেরা নাকি বোবা বা কালা হয়ে জন্মগ্রহণ করে। এটা মূলত অবৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণা মাত্র।

বিয়েতে বর ও কনে উভয়পক্ষ বিপুল অংকের টাকা ব্যয় করে ব্যান্ড পার্টি ভাড়া করে আনেন। ব্যান্ড পার্টির বাজনার তালে তালে ছেলেমেয়েরা নাচগান করে। ফলে সমাজের অনেক লোক উপস্থিত হয়ে তা উপভোগও করেন। আবার গান বাজনা, বা ঢাক-ঢোল তবলা, হারমনিয়াম, খঞ্জনী ইত্যাদির শব্দে এলাকায় শব্দ দূষণ হয়, বহুদূর পর্যন্ত শব্দ হওয়ায় বিভিন্ন লোকজন ঘটনাস্থলে না গিয়েও জানতে পারেন শব্দ উৎপত্তির স্থলে বিয়ে হচ্ছে। অর্থাৎ শব্দ উৎপন্ন ও মাইকে গান বাজিয়ে সবাই সমাজের মানুষকে বর কনে রূপে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দানের জ্ঞাত করানো হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা যায় ধান, দুর্বা ও গায়েহলুদ মাখানোর একটি পর্ব। প্রচলিত রয়েছে হলুদ গায়ে ব্যবহার করলে গায়ের রং ফর্সা ও উজ্জ্বল হয়। তাই অনেকেই বাসায় অবস্থান করাকালীন মুখে হলুদ ব্যবহার করে থাকেন; কিন্তু শরীরে সমস্ত অঙ্গে হলুদ ব্যবহার করলেই কি দ্রুত ফর্সা ও উজ্জ্বল হবে; মোটেই নয়। প্রকৃতপক্ষে হলুদ হচ্ছে এক প্রকার খাদ্য ও ঔষধি গাছ। এ কারণে বিয়েতে হলুদ ব্যবহার করা কি ঠিক? বিয়েতে গায়েহলুদ ব্যবহারের প্রথা কুসংস্কারের অন্তর্ভুক্ত বলা যায়। হিন্দু ধর্মে আবির ছিটানো বা মাখানো হয়, বিয়েতে রং ছিটানো হয়। ফলে শরীরের জামা কাপড় নষ্ট হয়। এমনকি অনেক সময় কাপড়ের রং উঠে না। ফলে নতুন কাপড়-চোপড় নষ্ট হয়ে যায়। মূল্যবান জামা-কাপড় টাকাপয়সা দিয়ে ক্রয় করে ব্যবহার করতে দেখা যায়। তাই অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ ঘটে। অনেক সময় বর-কনে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদও হয়।

সবচেয়ে উত্তম পন্থা হলো উভয়পক্ষ আদালতে বা কোর্টে উপস্থিত হয়ে কোর্ট ম্যারেজ রূপে এফিডেভিট করে নেয়া। এতে বিজ্ঞ অ্যাডভোকেটের মাধ্যমে শপথ করে ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা এফিডেভিট অনুমোদন করা হয়। আধা ঘণ্টার মধ্যে সম্পূর্ণ বিয়ের এফিডেভিট প্রস্তুত করা যায়। এছাড়াও ম্যারেজ রেজিস্ট্রার দ্বারা সম্পন্ন করার বিধান আছে। এতে ঝামেলা কম, অর্থ ও সময় বাঁচে। যৌতুক প্রথা অভিশাপ। এর কুফল সম্পর্কে কন্যার পিতামাতারা অবগত আছেন। তাই সমাজ থেকে এ কুপ্রথা নির্মূল করা আবশ্যক। এটা পারে একমাত্র শিক্ষিত তরুণ সমাজ।

বরযাত্রা : তিন দিন ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করে বরপক্ষ লোকজনসহ বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার নিয়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হয়। বর ও কনে উভয়পক্ষ বিবাহ কার্য সম্পন্ন করে কনেকে গাড়িতে করে বরের বাড়ি আনেন। এতে প্রচুর অর্থ ঋণ করে ব্যয় হয়। এটা ঘোড়া রোগ ছাড়া আর কিছুই না।

বৌভাত : বর কনেকে বাসায় এনে পুনরায় বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই বৌভাতে হাজার হাজার টাকা ব্যয় হয়। যে টাকা ব্যয় হয় সেই টাকার দান সামগ্রী উঠে না। এই কুপ্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। এই কুপ্রথা পরোক্ষভাবে সমাজ ও মানুষকে ধ্বংস করে।

আতশবাজি : বিয়ের অনুষ্ঠানে আতশবাজি প্রচলন দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে আতশবাজি শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ করে, আগুন যে কোন জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই বিবাহ অনুষ্ঠানের আতশবাজি ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ যে কাজ করলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, সবাইর ক্ষতির কারণ ঘটায় তা পরিত্যাগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ নয় কি?

গেট তৈরি ও ডেকোরেশন দিয়ে লাল, নীল, হলুদ বাতি জ্বালানো কৃত্রিম ও সাময়িক অনুষ্ঠান মাত্র। এগুলো লোক দেখানো অনুষ্ঠান আর এতে অর্থ ক্ষতির কারণ ঘটায়। এগুলো মূলত অপব্যয়।

এসব কুপ্রথা বা কুসংস্কার এবং অপচয় আমাদের সমাজে দীর্ঘদিন চলে আসছে। আধুনিক সভ্য সমাজে এর পরিবর্তন জরুরি।

[লেখক: আইনজীবী]

back to top